নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে রেললাইনের দোরগোড়ায় আমার ঝুপড়ি ঘর হলেও কোনদিন মনের খায়েশ মেটানোর অভিপ্রায়ে রেলগাড়ীতে ওঠা হয়নি আমার।
এ কথা শুনে ভাবতে পারেন এটা আবার কোন কথা হলো? এ আর এমন কি ব্যপার টুক করে রেলগাড়ীতে উঠে পড়লেই তো হলো।
টুক করে রেলগাড়ীতে কতই তো উঠি কিন্তু বাবুরা অনেক সময় রেগে গালাগাল করে নামিয়ে দেন,তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। আর এভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত হয়ে রেলগাড়ী চড়াকে কি রেল ভ্রমণ বলে?
আমি সেই অর্থে রেলগাড়ী চড়াকে বোঝাতে চেয়েছি যেমনটি সবাই মিলে দুরে কোথাও বেড়াতে যায় আত্নীয় পরিজন নিয়ে।
আত্নীয় পরিজন!
কথাটা শুনতে বেশ।কিন্তু আমার নিজের আত্মীয় পরিজন বা আপনজন বলতে এ পৃথিবীতে কেউই নেই।
বাবা কোথায় থাকে কি করে বা করতেন তা জানি না। জানা সম্ভবও না কোনকালে,তো সেই সূত্রে কোন আত্নীয় থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
আর মা? সে তো পাগলী ছিল তাকে সবাই দুলু পাগলী বলে ডাকতো। এমন অদ্ভুত নাম তার কি করে হলো তা না জানতে পারলেও এটুকু অনুমান করতে পারি যে সে পাগলামির সময় মা দুলে দুলে গান গাইতো।তাই তার নাম দুলু পাগলী।
সেই দুলু পাগলীর কখনও বিয়ে হয়েছিল কিনা কেউ সেটা বলতে না পারলেও তার গর্ভে আমি হয়েছি এটা কিন্তু সবাই জানে। তাই জ্ঞানত দুলুই আমার মা।
সেই মা আমায় জন্ম দিলেন ঠিকই কিন্তু পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে জন্ম হয়নি আমার।বোঝাতে পারলাম না হয়তো।আসলে জন্মের থেকে আমার দুই পা নেই।
অদ্ভুত!
এটাই নিয়তি। আরেকটু বড় যখন হলাম তখন একটা দূর্ঘটনায় আমার ডান চোখে খোঁচা লাগলো। কী যে যন্ত্রণা বলে বোঝাতে পারবো না আমি। দিনগুলো অনেক কষ্টে গেছে।
অনেকদিন লেগে ছিল ক্ষত শুকাতে।ক্ষত তো শুকালো।কিন্তু আমি একচোখে দৃষ্টি হারালাম।
বাবুমশাইরা নিজের কথা অনেক বললাম।প্রতিদিনই বলি বলতে হয়।আজ আর বলতে পারছি না বাবুমশাই। মাথাটা ঝিমঝিম করছে।পেট জ্বলে যাচ্ছে। খুব খিদে পেয়েছে।খুব....
গতকাল থেকে কিছু খাইনি,শরীর জুড়ে প্রচন্ড জ্বর আর ক্লান্তি।একটু সাহায্য চাইছি।
দুটো টাকা অথবা কিছু খাবার হবে কি বাবুমশাইরা?
হঠাৎ একজন মোটাসোটা লোক আমার দিকে তেড়ে এলো।
-নাম! নাম বলছি।
-নামবো কেন আমি কি করেছি অমন করছেন কেন?
-নামতে বলছি নেমে যা।
-একটু কিছু সাহায্য করুন।আমার পা নেই এক চোখ অন্ধ। আমি অক্ষম মানুষ। একটু সাহায্য চাইছি...
ওকি? একি করছেন? আমায় মারছেন কেন? কি করছি আমি? চুরি তো করিনি? আমি লুলা অক্ষম মানুষ একটু দয়া করবেন তা না আমায় মারছেন।কেন মারছেন? এ কেমন বিবেক আপনাদের?
তারা আমায় মারতে মারতে ট্রেন থেকে নামিয়ে দিলেন। কে একজন বলল,
-কোন কমন সেন্স আছে এই বেহায়াগুলোর? করোনা নিয়ে উঠেছে ট্রেনে এই রাস্কেলগুলোর জন্য তো করোনা ছড়াচ্ছে।
কি করে বোঝাই এদের আমি যে আমার করোনা হয়নি। একটু জ্বর হয়েছে। আর খুব খিদেও পেয়েছে।
একটু সাহায্য চাইছি বাবুমশাইরা।......
আমি পরবর্তী ট্রেনের অপেক্ষা করতে লাগলাম... যদি কিছু খাবার অথবা টাকা মেলে।
ক্ষুধার জ্বালার মত নিষ্ঠুর কিছু এই পৃথিবীতে নেই। এ কথা কি করে বোঝাই.........
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
১৯ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:১৪
ইসিয়াক বলেছেন: কিছু কিছু মানুষের জীবন চলার পথ এতটাই কঠিন দেখলে ভীষণ খারাপ লাগে । আল্লাহ আমাদের কত ভালো রেখেছেন অথচ তাঁর শুকরিয়া আদায় করতে গেলে আমাদের কতই না কুন্ঠাবোধ হয়।
ভালো থাকবেন প্রিয় ব্লগার।
২| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:১০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কী কঠিন জীবন যাপন আমাদের । আল্লাহ অসহায়দের সহায় হোন
১৯ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:১৫
ইসিয়াক বলেছেন: আমিন।
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৪৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বাস্তবতা বড়ই নির্মম। মানুষে মানুষে যতটুকু মানবিকতা আমরা দেখি তা শুধু স্বার্থের সম্পর্কের কারনে মানবিকতার প্রলেপ।যেখানে স্বার্থের সম্পর্ক নেই সেখানে মানবিকতা দেখাই যায়না বা পাশবিকতা বড়ই নির্মম ভাবে ফুটে উঠে আমাদের আচরনে-ব্যবহারে।
আর ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৩৬
ইসিয়াক বলেছেন: যথার্থ বলেছেন প্রিয় ব্লগার।
পাঠে ও মন্তব্য অনুপ্রেরণা পেলাম।
কৃতজ্ঞতা রইলো।
৪| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫২
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনের গল্পের নায়কের যা প্রোফাইল, তাতে করে এই রকমের বিশুদ্ধ বাংলা কি তার মুখে মানায়? দিন দিন আপনার গল্পগুলো শাণিত হচ্ছে, এসব দিকে নজর দেয়া দরকার। আজকাল আপনার গল্পে কোলকাতার বাংলার কিছু টার্ম চলে আসছে। যেমন এই গল্পে.....বাবুমশাই!! আগের গল্পেও দেখলাম। ঘটনা কি? ওইপাড়ে মাইগ্রেট করার চিন্তা-ভাবনা??
মানবিক গল্প। ভালো হয়েছে।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৪২
ইসিয়াক বলেছেন: গল্পের নায়ক পশ্চিমবঙ্গের কিনা তাই এমন শুদ্ধ উচ্চারণ হা হা হা... এবার থেকে চরিত্রের সংলাপের ভাষাগত দিকটি আরও ভালো ভাবে খেয়াল রাখবো নিশ্চয়।
#গল্পটা পশ্চিম বঙ্গের একটি জনপ্রিয় সাইটের জন্য লেখা। আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতায় আমি মুগ্ধ।
শুভ কামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৫| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চোখের কোন জল আনার মতো
মানবিক নাকি অমানবিক গল্প!!
ধন্যবাদ ইসিয়াক ভাই !!
২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩
ইসিয়াক বলেছেন: মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন প্রিয় ব্লগার।
শুভ কামনা সতত।
৬| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গল্পটা কষ্টের। একজন আর্ত মানুষকে সাহায্য করা মানবিকতা কাজ। মানবিক কারণে গল্পে বিষণ্ণ ভালোলাগা রইলো। কিন্তু কথা হলো বাসে বা ট্রেনের ভিতরে উঠে ভিক্ষা করলে আমার নিজেরই খুব খারাপ লাগে। শুধুমাত্র চিকিৎসা সাহায্য প্রার্থী উপযুক্ত কাগজ পত্র দেখালে সেই আবেদনে সাড়া দিই। কিন্তু ভিক্ষুকদের গাড়িতে নয় রাস্তায় বা বাড়িতে ছাড়া ভিক্ষা দিইনা।
আরেকটি কথা। গল্পের কথাগুলো এমন ছড়ানো ছড়ানো লিখেছেন কেন? এমন ভঙ্গিতে গল্প লেখাকে অনুকরণ করবেন না। বরং সম্ভব হলে প্রতিষ্ঠিত কথাসাহিত্যিকদের লেখা হাতের কাছে থাকলে পাতা উল্টিয়ে দেখে নিন।
শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫০
ইসিয়াক বলেছেন:
আমারও বাস ট্রেনে সাহায্য প্রার্থী উঠলে বিরক্ত লাগে।বিশেষ করে তাদের একটানা বকবক মাথা ধরিয়ে দেয়। যাত্রা পথে আসলে ক্লান্তি জনিত মাথা ব্যাথা থাকে,তাই অস্বস্তিটা বেশি হয়।আর সেজন্য বোধকরি অযাচিত বক্তব্য আরও অসহ্য লাগে।
#চমৎকার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় দাদা।
শুভ কামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩২
অপু তানভীর বলেছেন: গল্প পড়ে চরিত্রের জন্য মন খারাপ হল ।
কী নির্মম নিয়তি !