নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
তোজো ভাত নিয়ে বসেছে ঠিকই কিন্তু দু এক লোকমা মুখে দিয়েছে কি দেয়নি অমনি আনমনা হয়ে আবার কি যেন ভাবতে বসে গেছে।
সে যে অন্যজগতে বিচরণ করছে তা তার বিষন্ন চেহারা আর আঙুল দিয়ে চুপচাপ ভাত মাছ নাড়াচাড়া করা দেখেই বোঝা যাচ্ছে ।
জোবাইদা খানম কয়েকবার গভীরভাবে লক্ষ করলেন, কিছুটা সময় নিলেন তারপর গলার স্বরটা ভারি করে বললেন,
-কি হলো খাচ্ছো না কেন?ভাতে তো পানি উঠে যাবে।
-মা তুমি এত বড় একটা ব্যাপার এতটা বছর ধরে কেন গোপন করে রাখলে?
-প্রয়োজন ছিল,আবশ্যকও ছিলো তাই গোপন করেছি। যা করেছি তোমার ভালোর জন্য করেছি।আমার ধারণা আমাদের অবস্থানে যদি তুমি থাকতে তবে তাই করতে নিশ্চয় ।
- না অবশ্যই করতাম না।
-যা করা হয়েছে তোমার ভালোর জন্য করা হয়েছে।
-আমার বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেছে।
-তোজো আমি তোমার সাথে এই ব্যপারে আর আলোচনা করতে চাচ্ছি না।
-কেন? কেন আলোচনা নয়?
-প্রয়োজন মনে করছি না তাই ।
-জ্ঞান হওয়া অবধি অন্য একজনকে কি করে আমার বাবা বলে পরিচয় করিয়ে দিলে বলতো? ছি! কিভাবে এটা পারলে?
-এই সামান্য একটা ব্যপার নিয়ে কেন এত পেঁচাচ্ছো? বুঝতে পারছি না তো কিছু ।কি চাও তুমি?
-এটা মোটেও সামান্য ব্যপার নয়।আমার শিকড় আমার পরিচয় আমার মান সম্মান সব এর সাথে জড়িত।
জোবাইদা খানম অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালেন।এখন কিছু কড়া কথা তাকে বলতে হবে। তিনি বুঝতে পারছেন না, বলা ঠিক হবে কি না।তবুও তিনি শুরু করলেন।
-শোন তোজো তোমার উচিত তোমার বর্তমান নিয়ে ভাবা।নিজের ক্যারিয়ারের প্রতি যত্নশীল হওয়া। ভবিষ্যৎ জীবন কীভাবে সাজাবে সেসবের দিকে বেশি নজর দেওয়া তা না করে তুমি শিকড়, পরিচয়, অতীত এসব নিয়ে বিশ্লেষণ করে নানা ভাবনা ভেবে ভেবে অযথা সময় নষ্ট করছো। যে লোকটা এতদিন ধরে এত মাস এত বছরের এত এত মূল্যবান সময় তোমার পিছনে ব্যয় করলো নিঃস্বার্থভাবে, তার কি কোন মূল্য নেই। তুমি কি বুঝতে পারছো না যে এতে করে সেই লোকটিকেই অসম্মানিত করা হচ্ছে। যাকে তুমি এতকাল নিজের বাবা বলে জেনে এসেছো।
কে আমার বাবা কে আমার বাবা বলে এতবার বলার কি আছে?এত ঘাটাঘাটি করারই বা কি আছে।যারা তোমাকে যত্ন করে এত বড় করেছে সুন্দর জীবন দেবার চেষ্টা করেছে তাদের দিকটা তোমার ভাবা উচিত ছিল।
যে বা যারা তোমাকে এই সব সত্যি মিথ্যা মেশানো তথ্যর সন্ধান দিয়েছে তবে তার কাছেই যাও। অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে যে তোমাকে বিভ্রান্ত করেছে তার কথাই গুরুত্বপূর্ণ আর বিশ্বাসযোগ্য হয়ে গেল। আর আমাদের কথা সব মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্য উঠে পড়ে লাগলে। আমরা বুঝি সব বেনোজলে ভেসে এসেছি? কোন মূল্য নেই আমাদের কথার?
- মা! এভাবে বলছো কেন?
- মা বলার দরকার নেই। তোমার মুখে মা ডাক শোনার ইচ্ছা আমার মরে গেছে।
- মা প্লিজ, ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড।
-তুমি লোকের কথায় নাচছো তোজো।
-আমি মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি এই সব নানা ভাবনায়। আমি সমাজে কি করে মুখ দেখাবো বল তো? আ'ম জাস্ট শকড।
আমি ভাবতেই পারছি না আমার মায়ের দুই স্বামী। কেন তুমি বাবাকে ছেড়ে দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে? কি করেছিল বাবা?
-এবার কিন্তু তুমি আমায় অপমান করছো।
-তুমি ভুল বুঝছো মা।
-এত দিনের ভালোবাসা অধিকারের সম্পর্কের কোনই কি মূল্য নেই? সব তুচ্ছ?
-তার জন্য আমি উনার কাছে কৃতজ্ঞতা।
-শুধু এটুকুই। ব্যস!
-আর কি করতে হবে।গায়ের চামড়া দিয়ে জুতো বানিয়ে ঋণ শোধ করতে হবে?
-অনেক বড় বড় কথা বলে ফেলছিস তোজো।আমাকে দুঃখ দে সে ঠিক আছে। লোকটিকে এভাবে অপমান করিস না প্লিজ।
- আমার বাবা কি এতই খারাপ ছিল? কি করেছিল সে, তাকে ছেড়ে তুমি ইনাকে বিয়ে করলে কেন? আমি সত্যটা জানতে চাই।
-তোজো আমি জানি না তুমি কার কথায় এসব বলছো বা করছো। তুমি হয়তো ঠিক এখন হয়তো সময় এসেছে সত্য প্রকাশিত হবার। তবে তাই হোক। সত্য প্রকাশিত হোক।সবটা শুনলে তুমি পারবে তো সইতে?
-কেন পারবো না। আমি তো তোমারই ছেলে নাকি?
-তবে আগে প্রথম সত্যটি শুনে রাখো, আমি তোমার গর্ভধারিনী মা নই। আর তুমি এখন যাকে বাবা বলে জানো তিনি আমার একমাত্র স্বামী এবং আমার বিয়ে একবারই হয়েছে। আমি বা উনি কেউই তোমার বায়োলজিকাল প্যারেন্টস নই।
তোমার আসল মা আর আমার নাম একই বলে তুমি অন্যরকম কিছু ভেবে বসে আছো। এমনকি তুমি আমার চরিত্রের প্রতি কটাক্ষও করেছো। উপকারের প্রতিদান এমন হবে যদি জানা থাকতো তবে হয়তো সেই সময় অন্য কিছু ভাবতাম।......
তোজোর মাথাটা ক্রমশ নিচু থেকে নিচু হয়ে এলো।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৭
ইসিয়াক বলেছেন: তাড়াহুড়ো তো করিনি। সময় নিয়ে লিখেছি।
গল্পে একটা ম্যাসেজ আছে সম্ভবত ধরতে পারেন নাই। পুরো পোস্টটি পড়েছেন কি?
# কমেন্ট ব্যান থেকে মুক্ত হয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। জমিয়ে ব্লগিং করুন। শুভ কামনা রইলো।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৬
ইসিয়াক বলেছেন: অনু গল্পটি মূলত বর্তমান সমাজের পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের গল্প।
বর্তমান প্রজন্মের বেশির ভাগ ছেলে মেয়েরা গুরুজনের খুব সহজে অবজ্ঞা অবহেলা করে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসাটুকুকে দূর্বলতা ভাবে।তাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। তাদের নিয়ে কেউ কেউ বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে হাসি ঠাট্টা মজা করে।
কখনও কখনও বাবা মায়ের সাথে তর্কে বিতর্কে জড়িয়ে যায়। নানা কৈফিয়ত চায়।এসবকে তারা স্মার্টনেস ভাবে। দিন শেষে এর ফলাফল কখনও ভালো হয় না।
২| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৪
আমারে স্যার ডাকবা বলেছেন: গল্পটা আরও সুন্দর করে উপস্থাপন করা যেতো, অনুগল্পের মতো না লিখে ছোটগল্পের মতো লিখলে আরো উপভোগ্য হতো।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১
ইসিয়াক বলেছেন: আপনাকে আমার পাতায় স্বাগতম।
#অনু গল্পের উপস্থাপন তো এমনই হয়।অব্যক্ত যা কিছু পাঠক কল্পনায় ভেবে নেয়। সেই ভাবনায় ইচ্ছে খুশি রঙ লাগায়।
শুভ কামনা।
৩| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ঠিক আছে। প্রচেষ্টা চালিয়ে যান.....
২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৯
ইসিয়াক বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সবসময়।
৪| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক,
ভালো হয়েছে অল্পের মধ্যেও।
গল্পের মেসেজটা আরো পরিষ্কার করা হলে ভালো হতো।
২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৫০
ইসিয়াক বলেছেন: শুভ কামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময়।
৫| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: আমার কাছে ভাল লেগেছে-তবে ব্লগারদের মতামত অবহেলা করার মত নয়!
একটু কোথাও খামতি আছে হয়তো
২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন: আমিও ভাবছি সমস্যা কোথায়, কিন্তু বুঝতে পারছি না। যাহোক,আপনার ভালো লেগেছে জেনে একটু ভরসা পেলাম।
শুভ কামনা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
৬| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:১০
আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্প ভাল লেগেছে। প্লাস দিলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: লেখার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না।
শব্দ চয়নে মনোযোগী হোন।