নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
টিভিতে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের উপর ভিত্তি করে জমজমাট একটা সিনেমা চলছে। সাংসারিক হাজার ব্যস্ততার মাঝেও কিছু অংশ রূপাও দেখছিল আর সকলের সাথে।
আহা!
নায়িকার সেকি দূর্গতি বলে বোঝানো যাবে না। রূপার ইচ্ছে ছিল ছবিটা শেষ অবধি দেখা কিন্তু রাতের খাবারের সময় হয়ে গেছে বলে তাকে রান্নাঘরে খাবার বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হলো।
তবে তার কান ছিল টিভির স্পীকারে আর ড্রইং রুমে। রান্নাঘর থেকে সে শুনতে পারছে তার শ্বাশুড়ির উত্তেজিত নানা কথাবার্তা। মাঝে মাঝে হাসিও আসছে তার ওদের উত্তেজিত ভাবসাব দেখে।নায়িকার পক্ষে জোহরা বেগম স্ক্রীনের এপারে বসে তুমুল ঝগড়া করছেন। তিনি নায়িকার মায়ের প্রতিনিধি হয়েছেন যেন!
ছবির মাঝামাঝি দৃশ্যে নায়িকাকে যখন গ্যাসের আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে তখন তিনি এবং রূপার একমাত্র ননদ জবাও তীব্র উত্তেজনায় ছটফট করতে লাগলেন।
ইশশ!
কী নির্মম!
কীভাবে পারে এত নিষ্ঠুর হতে মানুষ?
এই ধরনের নানান শব্দের বন্যা বয়ে যেতে লাগলো ড্রইং রুমে।
হঠাৎ সিনেমাটির চরম মুহূর্তে কেবল লাইনে কি একটা ঝামেলার কারণে চ্যানেলে সমস্যা দেখা দিলো। জোহরা বেগম আর জবার সেই মুহুর্তের ভাব দেখে মনে হলো পারলে টিভিটা এখনি আছড়ে ভাঙে তারা।
যাহোক রূপা ততক্ষণে টেবিলে খাবার পরিবেশন করেছে। কয়েক পদের রান্না, সবাই টেবিলে খেতে এল।এক ফাঁকে জবা তার একমাত্র ভাই সুজনকে ডেকে নিল।
রূপার এখন বসা নিষেধ সে পরে খাবে,সবার খাওয়া শেষে। ভাত বেড়ে দেওয়া, তরকারীর পাত্র এগিয়ে দেওয়া পানির গ্লাসে পানি ঢালা এইসব টুকটাক কাজ করছিল রূপা। খেতে খেতে হঠাৎ রূপার শ্বাশুড়িমা তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
-বৌমা তোমাকে একটা কথা বলেছিলাম সেদিন মনে আছে তো নাকি ভুলে বসে আছো?
রূপা চুপ করে রইলো। আসলে এই মুহুর্তে কি বলবে বা কি উত্তর দেবে সে বুঝতে পারছে না। সে ভালো করেই জানে তার শ্বাশুড়ি কিসের ইঙ্গিত করছেন।
কিছুটা সময় নিয়ে জোহরা বেগম আবার তাগাদা দেন
- কি হলো কথা বলছো না কেন?
- মা আমি বাবাকে বলেছি।
-তা কবে দিতে পারবেন টাকাটা?
- মা গ্রামে এখন তো ডাল সিজন,কারো হাতেই তেমন পয়সা নেই তাই বাবা জমি বেঁচতে পারছেন না । খরিদ্দার পেতে একটু সময় লাগবে বলেছেন।
-ঢং, ওই কটি টাকার জন্য আবার জমি বেঁচা লাগে নাকি।
- মা এক লক্ষ টাকা আপনাদের কাছে সামান্য হতে পারে আমার বাবার কাছে সেটা মোটেও সামান্য নয়।
- আর ফকিরগিরি করো না তো। কত আর নিচে নামবে।
- যতটুকু আপনারা নিচে নামাবেন।
- কী আমার মুখে মুখে তর্ক? যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা। অসভ্য, বেয়াদব। বাপ মা সহবত কিছু শেখায়নি নাকি?
- মা আমাকে যা বলার বলুন এর মধ্যে আমার বাবা মাকে টানছেন কেন?
সুজন এতক্ষণ চুপচাপ খাচ্ছিলো চট করে উঠে এসে বলা নেই কওয়া নেই রূপাকে দমাদম গুটিকয়েক চড় কষে দিল।
বলল,
-শুধু মুখে মাখে তর্ক না? এই সব শিখায়েছে তোর বাপ মা?
তৎক্ষনাৎদেরি না করে রূপাও ভাতের চামচ তুলে নিয়ে সজোরে স্বামীর পিঠে দুচার ঘা বসিয়ে দিল কায়দা মত।
রূপা আগেই ঠিক করে রেখেছিল এ বাড়িতে তার উপর হওয়া অন্যায়গুলো সে আর মেনে নেবে না। সব কিছুর একটা সীমা আছে।
এদিকে প্রথমে হতভম্ব হয়ে গেলেও দ্রুত একজোট হয়ে রূপার স্বামী শ্বাশুড়ি ননদ সবাই তার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো।
রূপা চিৎকার দিয়ে বলল,
- আসো মারতে আসো ওই দেখ ফেসবুক লাইভ চলছে। প্রতি দিন নির্যাতন করে পার পেয়ে যাও।আজ মোবাইল সেট করে রেখেছি। তোমাদের সকল অপকর্ম এখন সারা দুনিয়া দেখছে।
এ যেন আগুনে পানি ঢালা হলো।মুহুর্তে কেন্নোর মত গুটিয়ে ঘর ছাড়লো সকলেই।
সমাপ্ত
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক
২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৪০
ইসিয়াক বলেছেন:
সত্যি আপু অনেক অনুপ্রাণিত হলাম। এরকম মন্তব্য পেলে আরো লিখতে ইচ্ছে হয়।
ভালো থাকুন সবসময়।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৪৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ এমনই হওয়া দরকার। ঘরে ঘরে নির্যাতিত রূপারা উঠে দাঁড়াক। এমন বদ স্বামী শাশুরি ননদকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া দরকার। যদিও পরবর্তীতে এরা রূপার অবস্থা কী করবে কে জানে। রূপাকে চলে যাওয়া উচিত সংসার ছেড়ে
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন: আবারও ফিরে এসে চমৎকার মন্তব্যে জন্য ধন্যবাদ আপু।
শুভ কামনা রইলো।
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৪২
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
গল্প ভালো হয়েছে।
***আপনাদের আয়রন সেফ ভাঙ্গলে জানাবেন কি কি পাওয়া গেছে।
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:৫৮
ইসিয়াক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মাহমুদ ভাই। গল্প ভালো লেগেছে জেনে অনুপ্রাণিত হলাম।
#আয়রন সেফ ভাঙ্গলে কি কি পাওয়া যায় অবশ্যই আপনাকে জানাবো প্রিয় ব্লগার।
দোয়া রইলো্।
৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গল্পটা ভালো লিখেছেন।এটা কি রিপোস্ট? গল্পটা পড়েছি কিছুদিন আগেই। কিন্তু কোথায় পড়েছি মনে করতে পারছি না। বর্তমান সময়ের সাথে প্রাসঙ্গিক।পনপ্রথার নগ্ন রূপ সমাজ থেকে কবে যাবে কে জানে।
পোস্টে চতুর্থ লাইক।
শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:০৫
ইসিয়াক বলেছেন: সর্বগ্রাসী পাঠক হলে এমনই হয় । ফেসবুকে একটা গ্রুপের প্রতিযোগীতায় এই গল্পটি দেওয়া ছিল । তখন পড়েছেন। এটা সামুতে প্রথম পোস্ট দিলাম।
আপনাকেও এক গুচ্ছ সবুজ গোলাপের শুভেচ্ছা।
৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩
হাবিব বলেছেন: আপনি তো সব্যসাচী হয়ে উঠছেন দিন দিন
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:০৬
ইসিয়াক বলেছেন: এই একটু চেষ্টা করছি গল্প লেখার । আমার জন্য দোয়া করবেন।
ভালো থাকুন প্রিয় হাবিব ভাই।
শুভকামনা সতত।
৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক,
ঢিল ছুঁড়লে পাটকেলটি খেতে হয়...........
সামাজিক বার্তা সম্বলিত গল্প। চমৎকার লেখা ।
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:১৮
ইসিয়াক বলেছেন:
আপনি ঠিকই বলেছেন প্রিয় ব্লগার।ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়। মানুষ এত আধুনিক হচ্ছে মন ও মননে কিন্তু এইসব নোংরা মানসিকতাগুলো কিছুতেই ত্যাগ করতে পারছে না। কি অদ্ভুত।
শুভকামনা রইলো।
৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি গল্পকার না কবি? না শিক্ষক?
গল্প ভালো হয়েছে। নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন কোন বই পড়েছেন?
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:২০
ইসিয়াক বলেছেন: আমি যে কে তাই তো বুঝতে পারছি না............. নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি .......।যা হোক আপনার কাছে লাইটার হবে? লাইটার?
৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:৪৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে সুন্দর লিখেছেন
২৫ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:২১
ইসিয়াক বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ প্রিয় মহী ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৩৬
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপনার গল্পগুলো আমার খুবই ভালো লাগে ইসিয়াক ভাইয়া।
গল্পটি পড়িনি এখনো কিন্তু