নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হতাশাগ্রস্ত মানুষের কদর্যতাই একমাত্র অস্ত্র।

ইসিয়াক

যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফেরে ( তৃতীয় ও চতুর্থ পর্ব)

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৯




১ম পর্ব
২য় পর্ব
(৩)
যত রাত জাগুক না কেন সুলতানার অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমানোর অভ্যাসটা নেই। নানা রকম শব্দে দিনের বেলার ঘুম তার কাছে কখনোই আরামপ্রদ নয়। অন্যদিকে তার জীবিকার প্রধান শর্তই হলো রাত জেগে মানুষের মনোরঞ্জণ করা।প্রদর্শনী চলাকালীন সময়ে নিজের আরামকে হারাম করে তাকে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।এটাই বাস্তবতা।এই তার নিয়তি।
সে এই ভর দুপুরে হারমোনিয়াম নিয়ে বসেছে।নতুন একটা গান তুলতে হবে।কেন জানি যত ভালো হোক এক গান কখনোই তার বারবার গাইতে ইচ্ছে করে না,আর নতুন কিছু উপস্থাপন না করলে টাকা খরচ করে মানুষ তার নাচ, গান, অভিনয় দেখতে আসবে কেন?
- কি করো গোলাপ সুন্দরী?
কথা আর বলার ভঙ্গিতে খিলখিল করে হেসে উঠলো সুলতানা। তার এই হাসিটুকু দেখার জন্য যত নকশা করে জামশেদ। সুলতানা হাসি যেমন রহস্যময় তেমনি সুলতানার চরিত্রের মধ্যে রহস্যময়তা লাকিয়ে আছে।
না হলে শুধু মাত্র কৃতজ্ঞতার জন্য জামিলুর রেজার মত জোকারকে সহ্য করে কি করে কে জানে?
- কথা কই হাসো কেন? কথার বদলে কথা বলতে হয় সুন্দরী।
সুলতানা মিষ্টি করে গেয়ে উঠলো,
- তুমি সখা আমার বন্ধু লাগো আমি সখা তোমার বন্ধু লাগি।
- তোমার গানের গলা খুব সুন্দর। আমি যত শুনি তত ফিদা হই।
- এত প্রশংসা কেন গো সখা। বিশেষ কোন আর্জি?
- আমি ভালোরে ভালো আর কালো রে কালো বলতে পছন্দ করি।
- কি মতলবে আসলা সেইটা বল। সব বুঝি আমি। তুমি ভালো করে জানো জামিল তোমারে পছন্দ করে না। তোমারে এইখানে দেখলে খবর আছে।
- তুই আর কতদিন ওরে সহ্য করবি?
- জানি না।
- তুই আমার লগে চল।
হঠাৎ আবার খিলখিল হাসিতে গড়িয়ে পড়লো সুলতানা তারপর ভ্রু জোড়া নাচিয়ে বলল
- মেহেরবান মে শাদীসুদা হু। নজর মাত লাগা।
-ওই ব্যাটা তরে দলে লইছে এর লাইগা ওর লগে তোর থাকতে হইবো।এপডা কোন কথা?
- জামিলুর রেজা কিন্তুক তোমারেও দলে নিছে।
-আমিও কম করি নাই! আমি ফকিন্নি না।শুধু পরিচয় দেই না তাই।বাদ দে। জামিলুরের লাইগ্যা তুইও করছোস আমিও করছি।হের দেনা দায় শোধ । ফ্রি টাকায় এমন সুন্দরী নায়িকা কই পাইবো?তোরে সারাজীবন খাটাইবো।শেষে ভিক্ষার ঝুলি লইয়া লোকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হইবো। ভিইষ্যত আছে নিকি কোন।
- অভিশাপ দিলা হিরো?
- অহন বহুত হইছে চল আমরা দল ছাড়ি। অনেক দুরে যাই যেহানে গেলে জামিল আমাগো খুঁইজ্যা পাইবো না।
সুলতানা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো শুধু তারপর বলল
- মাঝে মাঝে কি মনে হয় জানো হিরো?
- কি?
- সত্যি কইরা কমু?
- মিছা কবি ক্যান?
- আমি ভাইবা দেখছি আমার এই রূপ আমার কাল। মুখটারে পুড়াইয়া দেখতে মন চায়। কতজন আমারে ভালোবাসে। এরপর অদ্ভুতভাবে হেসে ওঠে প্রিন্সেস সুলতানা। যার অপর নাম রাতের রাণি।
জমশেদ থতমত খেয়ে যায়।
সুলতানা বলে চলে
- সেই ন্যাদা কাল তন রাস্তায় রাস্তায় বেড়াই কেউ ফিইরাও তাকায় না।কত দিন না খাইয়া রইছি। জামিলুর দয়া কইরা নিজের দলে জায়গা দিছে খাওন দিছে। কেমনে ভুলি সেই কথা।
উঠে দাঁড়ায় জমশেদ ।
কাজ আছে।মাথায় একটা জব্বর বুদ্ধি আসছে। যে কোন উপায়ে হোক সুলতানারে তার চাই।যে কোন উপায়!
(৪)
যাত্রাপালা জগতে আশির দশকের শুরুর দিকে তখন জামিলুর রেজার ব্যাপক দাপট। তার রচিত পালা মানে আপামর দর্শকের ঢল। গ্রাম্য জনপদে চরম উত্তেজনা। এক কথায় হৈহৈ কান্ড রৈ রৈ ব্যাপার।এই সাফল্য অবশ্য হঠাৎ করেই আসে নি।বহু দিন ও রাতের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল স্বরূপ আজকে যাত্রাপালা জগতে জামিলুর রেজার এই অবস্থান।বর্তমানে জামিলুর রেজা রচিত ও নির্দেশিত যাত্রাপালা গ্রাম গঞ্জের লোকের মুখে মুখে ফেরে। তার রচিত নির্দেশিত যাত্রাপালা দেখবার জন্য গ্রাম গঞ্জের দুর দুরান্ত থেকে লোকজন উন্মত্ত হয়ে ছুটে আসে।এমন কি সীমানা পেরিয়ে ও গান পাগল লোকজন জড়ো হয় রাতের আঁধারে।রাত ভোর করে ফেলে চরম উত্তেজনায় আর ভরপুর বিনোদনের জটিল আবর্তে।টিকিট বিক্রি হয় অগ্রীম।কখনও কখনও টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কালোবাজারির অভিযোগও ওঠে তবে সেসব ব্যাপারে তার কোন দায়িত্ব বা মাথা ব্যথা কোনটিই নেই ।দল চালাতে গেলে অত কিছু দেখতে গেলে চলে না।তাছাড়া বাজারে রটনা থাকা ভালো।এই যেমন তাকে আর প্রিন্সেস সুলতানাকে নিয়ে নানা কেচ্ছা কাহিনি বাজারে চলছে এক্ষেত্রে জামিলুর রেজা বা সুলতানার কারো কোন হেলদোল নেই। লোকে যে যা বলে বলুক।যত রটনা তত আলোচনা সমালোচনা।আলোচনা সমালোচনা মানে লোকের মুখে মুখে প্রচার। প্রচারে প্রসার।নিষিদ্ধ জিনিসের দিকে মানুষের বরারবই অন্যরকম আকর্ষণ থাকেই।ছুটে আসে অমোঘ আকর্ষণে।
এদিকে জামিলুর রেজার রচিত পালায় প্রচ্ছন্ন নকলবাজির অভিযোগ আছে। তবে সেই সব আলোচনা নিতান্ত সুশীল সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ।সাধারণ মানুষের ওসবে আগ্রহ নেই। সুশীল বাবুরা অবশ্য কোনদিন কোন যাত্রাপালা দেখতে আসেন না।শুধু সমালোচনা করেই খালাস।আরো নাকি বলে যাত্রা দেখে ফাত্রারা।হাস্যকর কথাবার্তা।সাধারণ মানুষ নকল ফকল বোঝে না,ভারি ভারি সমালোচনাও বোঝে না।তারা চায় বিনোদন।নির্মল আনন্দ,হাস্যরস।ব্যাক্তিগত দুঃখ কষ্ট ভুলে থাকার জন্য চাই নানা মজাদার উপাদানের রসদ। কে কোথেকে কন্টেন্ট চুরি করলো কি করলো না, তাতে তাদের কিছু আসে যায় না।
প্রথম থেকে জামিলুর রেজার এত জনপ্রিয়তা ছিলো না। অনেক কাঠ খড় পুড়াতে হয়েছে এই অবস্থানে আসার জন্য। সহ্য করতে হয়েছে অনেক তুচ্ছ তাচ্ছিল্য,অপমান। এর পেছনে অবশ্য তার গুরু স্থানীয় বন্ধু তপন চক্রবর্তী অবদান অনস্বীকার্য। অকাল মৃত তপন চক্রবর্তীর অবদানগুলোকে সে কখনও অস্বীকার করে না।কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বরণ করে সবসময় ।তপন চক্রবর্তীর নামে গোটা পাঁচেক পালাও উৎসর্গ করা হয়েছে ইতিমধ্যে।
প্রথম অবস্থায় দি রয়েল বেঙ্গল অপেরা বিখ্যাত পালাকার ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়, ব্রজেন্দ্রকুমার দেও, ভোলানাথ কাব্যশাস্ত্রী ,সৌরীন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায়ের পালা মঞ্চস্থ করতো। কিন্তু বর্ডার পেরিয়ে ওপার বাংলা থেকে যাত্রাপালা দেখে আসা পাবলিকের সামনে চর্বিত চর্বন উপস্থাপনে সাড়া মেলে না তেমন। তার ওপর ওপার বাংলার শিল্পীদের অভিনয়ের সাথে এপার বাংলার শিল্পীদের অভিনয়ের তুলনা চলে না।দর্শক এখন অনেক চালাক সুক্ষ্ম পার্থক্যও তাদের দৃষ্টি এড়ায় না।সস্তা চালাকিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দর্শক আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।বরাবর নতুন কিছু দেখতে চায় তারা।তাদের আর দোষ দিয়ে কি লাভ?পৃথিবীর আদি থেকে সবাই নতুন আর সুন্দরের পূজারি।
একসময় তরুণ চক্রবর্তীর উৎসাহে জামিলুর রেজা ছোট ছোট পদ/ অঙ্ক রচনা করতে শুরু করেছিল তার সাথে মিলিয়ে জোড়া দিয়ে দিয়ে এদিক সেদিক করে প্রথম যাত্রাপালা “রুপের রানি চোরের রাজা” দারুন হিট হয়ে যায় সৌভাগ্যক্রমে।সেখানে অবশ্য সুলতানা প্রথম অভিনয়ও ।তার রূপের ঝলকে যুুব সমাজে সাড়া পড়ে যায়। দারুণ হিট করে সে প্রথম এন্ট্রিতেই।লম্বা রেসের ঘোড়া বলে সম্বোধন করে কেউ কেউ তাকে।
সেই শুরু যদিও সে সব যাত্রাপালাগুলো কখনওই বিশুদ্ধ কোন রচনা ছিলো না। তবুও পাবলিক দেখতো নেশাগ্রস্তের মত। চটুল কথা ঝুমুর নাচ এ ধরনের পালার প্রধান উপজীব্য ছিল। অবশ্য নারী দর্শক কমতে থাকে দ্রুত।তাতে কিছু যায় আসে না দি রয়েল বেঙ্গল অপেরার।নতুন নতুন বায়না পড়ে লাইন ধরে। এই সাফল্যের সাথে সাথে জামিলুর রেজার যেমন কিছু বন্ধু শুভাকাঙ্ক্ষী জুটলো তেমনি শত্রুও কম জোগাড় হলো না দিনে দিনে।খোদ নিজের যাত্রা দলের লোকজনরাও সুযোগ পেলে তার পেছনে লাগে আড়ালে তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টাও করে।ক্ষতি করতে চায়।সবই জানে সে।সব খবরই থাকে তার কাছে,রাখতে হয় আর কি। দল চালাতে গেলে হাজারটা চোখ লাগে।অনেক বুদ্ধি খাটাতে হয়।
আগে এসব নিয়ে বিরক্ত হলেও এখন আর এসব নিয়ে তার তেমন হেল দোল নেই তার বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বরং হাসিই পায়।তবে এতে লাভও আছে কিছু।বাস্তবের মানুষের চরিত্রের নানা দিক তার যাত্রাপালায় জীবন্ত হয়ে ধরা দেয় মাঝে মধ্যেই।সব চেয়ে বড় কথা লেখনীর কৌশলে জীবন্ত চরিত্রগুলোর মুখ দিয়ে তাদেরই কীর্তিকলাপ বেরিয়ে এলে চরিত্রটি প্রাণ পায় আরও বেশি আবার এক ধরনের প্রতিশোধও নেওয়া হয় প্রচ্চন্নভাবে।এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কিল খেয়ে কিল হজম করা ছাড়া উপায় থাকে না।নাটাই যে জামিলুর রেজার হাতে ।ব্যপারটা বেশ উপভোগ্যও বটে।
এই যেমন "পরকীয়ার ফাঁদে বিরোহীনি রাধা কাঁদে" জামিলুুর রেজার সম্প্রতি রচিত নির্দেশিত যাত্রা পালাটিতে জমশেদের করা পার্টটা তার নিজের বাস্তব চরিত্রের রোল প্লে করছে।অথচ প্রথমদিন এই চরিত্রের বিস্তারিত পড়ে কিছুটা কাচুমাচু হয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেও বুদ্ধিমান বলে গুরুত্ত্বপূর্ণ রোলটা জামশেদ হাত ছাড়াও করে নি।ইতিমধ্যে ফলও মিলেছে দারুণ। আট নয় জায়গায় মুহুর্মুহু করতালি আর শিষ গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। জামিলুর রেজা অবশ্য বিকল্প ব্যবস্থাও রেখেছিল।এই অযুহাতে দল থেকে জামশেদকে ছাড়িয়ে দিতে চেয়েছিল সে।কারণ তার কাছে খবর আছে জামশেদ তার ঘর ভাঙতে চায়।যাহোক অহংকারী জামশেদকে জব্দ করার মধ্যে মজাই আলাদা। তৃপ্তিটা এখানেই।
জামিলুুর রেজার গুনের কথা হলো এবার দোষের কথা কিছু জানা যাক। তার সবচেয়ে বড় দোষ সে যা আয় রোজগার করে তা ফুৎকারে উড়িয়ে দিতে দিধা করে না। সঞ্চয় বলতে কিছু নেই।
কাজ না থাকলে মদ নিয়ে বসে আর জুয়া খেলে উড়িয়ে দেয়,সুলতানা অবশ্য মানা করে কিন্তু জামিলুর রেজা বরারবই তার নিজের মর্জি মত চলতে পছন্দ করে ।হাতে কাজ না থাকলে তার নেশার মাত্রা দ্বিগুন বেড়ে যায়। সুলতানা হুমকি ধামকি মাথার কিরা কোন কিছুতে কোন কাজ হয় না ।সু্লতানাকে সে পাত্তাই দেয় না।আসলে সুলতানা আর জামিলুর রেজার সম্পর্কটা ঠিক স্বামী স্ত্রী রুপ কোনদিনই পায় নি। সুলতানা নানা কারণে জামিলুর রেজার কাছে অদৃশ্য সুতার জালে বন্দী।এহেন মানুষের দয়ার পাত্রী সুলতানা তার কথার আবার দাম কি!
জামিলুর রেজার প্রথম বৌ তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মদটা ধরেছিল সে।সুলতানা জামিলুর রেজার প্রথম বৌকে দেখেছে । তখন সুলতানা সবে এসে জুটেছে দি রয়েল বেঙ্গল অপেরায়। দি রয়েল বেঙ্গল অপেরা মুলত জামিলুর রেজার শ্বশুর জহির আব্বাসের নিজ হাতে গড়া দল।জহির আব্বাসের একমাত্র মেয়ে প্রিন্সেস শাবানা দেখতে যেমনই হোক, ছিলো দারুণ লাস্যময়ী ।দর্শক তার ঝুমুর নাচের দারুণ ভক্ত ছিলো।তার একটু বেশি খোলামেলা নাচ টাকা আনছিল স্রোতের মত।জহির আব্বাস নিজ হাতে জামিলুর আর শাবানার বিয়ে দিয়েছিলো। সংসার ভালোই চলছিলো কিন্তু কি থেকে যে কি হলো জহির আব্বাসের মৃত্যুর পর হঠাৎ করে দলের একজন ছেলে অমলের হাত ধরে ইন্ডিয়ায় পালিয়ে গেল শাবানা। কোন এক রহস্যময় কারণে সাত দিনের মাথায় তার মৃত্যু সংবাদ আসে।কি থেকে কি হয়ে গেল? মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অবলম্বন প্রয়োজন জামিলুরের একাকী জীবনে প্রিন্সেস শাবানা ছিলো সেই অবলম্বন।সে এই অবসরে কেমন যেন খ্যেপাটে হয়ে যায়।দল ভাঙনের মুখে পড়ে। সুলতানার মনে এই সময় জামিলুরের জন্য মায়া জন্মায় তবে অনেকে বলে সুলতানা সবদিক বিবেচনা করে নিজের খুটির জোর শক্ত করে সুযোগ বুঝে।
আহারে লোকটার কত কষ্ট। জামিলুরও দুঃখ ভোলার জন্য খড় কুটোর মত আকড়ে ধরলো সুলতানাকে।সবচেয়ে বড় কথা সুলতানার রূপ যৌবনকে কে অস্বীকার করবে?এতকাল হয়তো আশ্রয়দাতা হিসাবে যেটুকু দ্বিধা ছিল, চক্ষু লজ্জা ছিল সেই পর্দা উঠে গেল এক ঝটকায়। তবে শাবানার স্মৃতি তাকে সব সময় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। যার কারনে জুয়া আর মদকে খুব বেশি আকড়ে ধরে জামিলুর তবে সুলতানাকেও সাথে রাখে সে। নারীসঙ্গ বিবরর্জিত সাধু পুরুষ নয় সে কোন কালেই। জুয়ায় জামিলুরের হাত বেশ ভালো। বেশিরভাগ সময় জিতে আসে সে। তবু জুয়া তো জুয়াই, জুয়ার টাকা কোন বরকত কোনদিনই হয় না। তো টাকা যা আসে তা চলে যায় নিমেষে। সাথে নিয়ে যায় জমানো যা কিছু।
------------
হাতে ধরে রাখা বিড়িটা নর্দমায় ছুড়ে ফেলে আনমনে সুর ভাজে জমশেদ শিষ দেয় " জিয়া বেকারার হে আয়ি বাহার হে। আজা মোরে বালমা তেরা ইন্তেজার হে"
জামশেদের মাথায় " পরকীয়ার ফাঁদে বিরোহীনি রাধা কাদে" নাটকটির একটা অংশ দারুণভাবে গেঁথে গেছে।দারুণ এক বুদ্ধি এসেছে। এই জন্য জামিলুর রেজা ধন্যবাদ পেতেই পারে।লোকটার মাথায় মগজ আছে। শুধু মাত্র খ্যাপাটে স্বভাবের জন্য লোকজন তাকে এড়িয়ে চলে।
- কিরে জামশেদ? মাস্তিতে আছোস মনে লয়?
- কান্দনের মত কিছু হইছে নি?
-লাইন ক্লিয়ার হয় নাই অহনও?
- জুয়ার দান পাতবি শুক্রবারে। আজকা শো শেষ।কাজ শুরু করতে হইবো। বাকি কথা রাতে কমু এরপর মাইশলা বর্ডারে কাজ হইবো এক সপ্তাহ বাদে।ছুটির ফাকে উড়াল দিমুনে। পেলান পরে কমুনে।
- হায় হায় জামিলুর রেজা ওরফে কুটু মিয়া তো শেষ!
- শেষ হইলে শেষ।
- পাখি?
- পাখি সহ উড়াল দিমু। পাক্কা।
আত্নবিশ্বাসে চোখ চকচক করে ওঠে জামশেদের। সুলতানা তার হবেই আর ধ্বংস হবে কুটু মিয়া।
চলবে
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৪৬

শেরজা তপন বলেছেন: ধারাবাহিক লেখার মাঝে অন্য লেখা ঢুকে পড়লে পাঠকের পড়ার ধারাবাহিকতা হারিয়ে যায়।
আমার লেখার ব্যাপারেও হরহামেশা হয়- যা নিয়ে বেশ বিব্রত আমি। চেষ্টা করুন যে কোন ধারাবাহিক একটানে শেষ করতে।
পড়ার জন্য তোলা রইল।

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৫৮

ইসিয়াক বলেছেন: আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত ভাইয়া।

আগের দুটো গল্প আগেই লেখা ছিল তাই পোস্ট দিয়ে দিয়েছিলাম। এই গল্পটা আর এক পর্ব আছে আশা করি এই সপ্তাহে শেষ করে দিবো।
আপনার উপদেশ মনে থাকবে। শুভকামনা রইলো।

গল্পটা কেমন লাগছে জানাবেন প্লিজ।

২| ০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৪২

ককচক বলেছেন: আপনার গল্প বলার ধরন বেশ সম্মৃদ্ধ হয়েছে। ভালো লেগেছে...

১৭ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:০৯

ইসিয়াক বলেছেন:




ককচক আপনাকে আমার পাতায় স্বাগতম। দেরিতে প্রতিমন্তব্যের জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।
মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম।

শুভকামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.