নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একদা এসেছিলাম তোমাদের সান্নিধ্যে। ভালো মন্দ মিশিয়ে কেটেছে বেলা। বিদায় বেলায় শুধু এটাই জানিয়ে যাওয়া বড় ব্যথা জাগে মনে পেলে অবহেলা।

ইসিয়াক

আমার লেখা কবিতা আপনার পছন্দ হলে হোয়াটসঅ্যাপ এই চ্যানেলটি ফলো করুন প্লিজ Follow the রফিকুল ইসলাম এর কবিতা সমগ্র। channel on WhatsApp: https://whatsapp.com/channel/0029VbBPuTzBA1epLIRBZX1x

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ অন্য রকম ক্রিসমাস

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৪



শব্দ সংখ্যা ৮১৩

আজ ক্রিসমাস ডে। বছরের একটা বিশেষ দিন। উৎসব হাসি আনন্দে মেতে উঠবার দিন।কোনখানে কোন ভেদাভেদ নেই। সবাই এই উৎসবে সামিল হবে।আপাত দুঃখ কষ্ট সরিয়ে খুশির জোয়ারে ভাসবার একটা দিন।
প্রতিবছর  ক্রিসমাস এলে লিপিকার একটা কথা খুব বেশি মনে পড়ে সেটা হলো  প্রত্যেক ক্রিসমাসে অরুন তাকে সান্তাক্লজ বেশে কিছু না কিছু গিফট দেবেই দেবে এর কোন ব্যত্যয় হয়নি আজ অবধি। সেই পরিচয় হবার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত। ব্যপারটায় লিপিকার অভ্যাস হয়ে গেছে।
সেই কবেকার কথা একই স্কুল আর একই গির্জায় যাওয়া আসার পরিপেক্ষিতে অরুণ আর লিপিকার বন্ধুত হতে সময়  লাগেনি। এক্ষেত্রে সেম কমিউনিটিও একটা ফ্যাক্টর ছিল।আর মনের মিল তো ছিলই।
সেই এক সাথে পথ চলা,ধীরে ধীরে  বেড়ে ওঠা। অন্যদিকে ওদের সম্পর্কের হাত ধরে দুটি পরিবার আরও কাছাকাছি চলে আসে অল্প সময়ের ব্যবধানেই।
সময় গড়িয়ে গেলেও মেলামেশায় বাধা আসে নি তেমন কারণ অরুণ আর লিপিকা দু'জনের পরিমিত বোধ ছিল অসামান্য ।
তারা জানতো কোথায় থামতে হয়।সম্পর্ক কিভাবে টিকিয়ে রাখতে হয়।কথাটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি  আবেগের বশবর্তী হয়ে তেমন কোন কাজ তারা করে নি যাতে তাদের সম্ম্ানের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়। এমনকি যৌবনের  বাঁধ ভাঙা জোয়ারের সময়ও তারা নিজেরা নিজেদেরকে লক্ষ্মণ রেখা অতিক্রম করতে দেয় নি।
ওরা  ছোটবেলা থেকেই জানতো যে নির্দিষ্ট সময়ে ওরা দুজন দুজনার চির দিনের সঙ্গী হবে।চার হাত দুুই পরিবার থেকে এক করে দেবে উপযুক্ত বয়স হলেই । তাই অত তাড়াহুড়ো ছিল না কোন।শর্ত ছিল লক্ষ অর্জন করা।পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া। ভালো চাকরি বা নিজের প্রতিষ্ঠা। ওরা সেদিকে মনোযোগ দিয়েছে।

লিপিকা অবশ্য বেশিদুর পড়াশোনা করতে পারেনি। তার আগ্রহ ছিল গানবাজনার প্রতি।ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর সে সেদিকে চেষ্টা করেছে। এবং গায়িকা হিসাবে বেশ নামডাক আছে তার।আর অরুন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বড় একটা চাকরি পেয়েছে যথা সময়ে । মোটামুটি নিরবিচ্ছিন্ন জীবন কোন ঝুট ঝামেলা নেই অনেক কটা বছর দিব্যি সুখে কাটলো তাদের  কিন্তু সেই সুখের সংসারে অকস্মাৎ উঠলো  ঝড়। এমনই আচমকা যে দুজনেই বিষ্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেল। কি করে সম্ভব। ঈশ্বর এত নিষ্ঠুর হতে পারে না। কিন্তু কিন্তু মাঝে মাঝে ঈশ্বর বড্ড নিষ্ঠুর হন। কেন হন তিনিই জানেন।
প্রথমে ঘুসঘুসে জ্বর তারপর নানা উপসর্গ দেখা দিল আস্তে আস্তে তারই ধারাবাহিকতায়  একসময় অরুনের ক্যান্সার ধরা পড়লো। খুব ভেঙে পড়লো লিপিকা। আসলে সে, অরুন  আর তাদের একমাত্র কন্যা তমালিকা ছাড়া তাদের আপন বলতে এ পৃথিবীতে আর কেউ তেমন নেই।
বিভিষীকাময় একটা অধ্যায় শুরু হলো।লড়াই চলল জোরসে তবে ক্যান্সার ধরা পড়ার পর অরুণকে খুব বেশি দিন ধরে রাখা গেল না।ডাক্তার আগেই জানিয়েছিলেন  লাস্ট স্টেজ আর বড় জোর তিন মাস কি চার মাস।অরুণ যথাসময়ে চলে গিয়েছিল । আজ প্রায় ছয় মাস হলো অরুন চলে গেছে।
আবার ফিরে এসেছে ক্রিসমাস কিন্তু অরুন আর কোনদিন ফিরবে না এটাই নিয়তি।আর  কেউ কোনদিন  সান্তাক্লজের আবরণে ভালোবেসে উপহার পাঠাবে না ।  মনটা ভার হয়ে এলো লিপিকার।আহা ফিরতো যদি সে সব দিন।এমন ক্রিসমাস সে কোনদিন চায়নি।
লিপিকার দুচোখ বেয়ে জলের স্রোত নেমে এলো । কেউ মুছিয়ে দেবার নেই। এই বুঝি শুরু হলো বিষন্ন ক্রিসমাস।অসময়ে চলে যাবে বলেই হয়তো অরুন এত হাসি গানে ভরে দিয়েছিল তার জীবনটা।
যখন মন ভীষণ খারাপ লাগে তখন লিপিকা একাকীত্ব কাটাতে গান গায় এতে যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হয়।
সে এই বেলা গান ধরে
" তুমি শুনিতে চেয়ো না আমার মনের কথা।দখিনা বাতাস ইঙ্গিতে কহে, কহে যাহা বনলতা..."
এমন সময় ডোর বেলটা বেজে উঠলো। তমালিকা এলো মনে হয়।  তমালিকা তাদের একমাত্র কন্যা।বড্ড লক্ষী মেয়ে।  ঢাকার একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম বি এ  করছে।
দরজা খুলে লিপিকা বেশ  একটু ভড়কে গেল দরজার সামনে একটা বড়সড় গিফট বক্স।
কে পাঠালো? চট করে মনে হলো অরুন?তারপর মনে হলো যা এটা কখনও সম্ভব নয়।

সে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। হয়তো সবটুকু মায়া। সে বিভ্রান্ত হয়ে  দরজা বন্ধ করতে যাবে তখন সিদ্ধান্ত বদলালো। গিফট বক্সে হাত দিয়ে দেখল না সত্যি বক্স। মরিচিকা বা হ্যেলুসিনেশন নয়। তুলতে গিয়ে দেখলো বেশ ভারিও।
তবুও একটু দ্বিধা শেষে কৌতুহলের জয় হলো
বক্সের উপরে একটা চিরকুট আটকানো।
লিপিকা চিরকুটটা মেলল।আরে অবাক কান্ড এতো অরুণের হাতের লেখা। সে আবার দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলল। নাহ কোথাও কেউ নেই।  গিফটটা তোলার সময়ই তো অরুন দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরতো। এবার তো সেরম কেউ এলো না!
আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দরজা বন্ধ করে। দ্রুত হাতে চিরকুটটা মেলল
প্রিয়তমা,
জানি তুমি ভালো নেই। আর তোমাকে ছাড়া আমিও ভালো নেই। কতদিন হয়ে গেল তাই না? এতদিনে বেশ একা একা থাকতে শিখে গেছি। কি অদ্ভুত তাই  না। মানুষ সবচেয়ে বেশি অদ্ভুত প্রাণী যে সকল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে পারে।  তবু মন বলে একটা কিছু আছে তাকে আর অস্বীকার করি কি করে। তোমার কষ্ট আমি বুঝি কিন্তু নিয়তির ওপর আমাদের কোন হাত নেই। তবু তোমাকে খুশি রাখার জন্য খুশি দেখার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আমি "নবোদয় এজেন্সিতে " ওদের কিছু ইভেন্ট আছে তার আওতায় ক্রিসমাসের এই গিফট পাঠানোর ইভেন্ট অগ্রিম বুক করে রেখেছিলাম। ওরা তোমাকে আমার তরফ থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ক্রিসমাস গিফট পৌছে দেবে আশা করি তুমি আমার উপহার গ্রহণ করবেন ও সুখী হবে। ভালো থেকো। স্বরণে রেখো।
ইতি
তোমার প্রিয়তমা
অরুন ডি কস্টা।
চিঠিটা হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ বসেছিল লিপিকা।লোকটা তাকে নিয়ে এতটা ভাবতো এতো ভালোবাসতো তা তার জানা ছিল না। জানালা দিয়ে আকাশ দেখা যাচ্ছিল।সেদিকে তাকিয়ে উদাস হলো লিপিকা।
বলল,
" মেরি ক্রিসমাস অরুন।যেখানে থাকো ভালো থেকো। Mother Merry  আমাদের সকলের ভালো করুক। 
ডোর বেলটা আবার বাজলো। এবার বুঝি তমালিকা এলো।....
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪১

নাহল তরকারি বলেছেন: সুন্দর

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

ইসিয়াক বলেছেন:






মেরি ক্রিসমাস প্রিয় ব্লগার।
বড়দিনের শুভেচ্ছা রইলো।

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০৮

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: বিয়োগাত্নক ছোট গল্প দারুন হয়েছে! বিশেষ করে শেষে দারুন চমক ছিল, মনে হয় শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২৩

ইসিয়াক বলেছেন:





ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
বড়দিনের শুভেচ্ছা রইলো।

৩| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পড়াশোনা করে আবার আসছি।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:০৮

ইসিয়াক বলেছেন:



অপেক্ষা করছি কিন্তু....

৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

সত্যিকার ভালোবাসাটা মানুষ অনুভব করে অনেক পরে।

আপনি ভালো লেখেন। ভালো লিখেছেন। ভালো থাকবেন।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:০৯

ইসিয়াক বলেছেন:





আন্তরিক মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন প্রিয় ব্লগার।
শুভেচ্ছা সতত।

৫| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:১২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: খুবই বিষন্নের লেখা।ক্রিস্ট মাসে ভালো গল্প লিখেছেন।
দয়া করে কিছু মনে করবেন না। বাক্যের মধ্যে 'এবং' ব্যবহার করবেন। দু একটা জায়গায় টাইপো আছে। আরেকবার দেখে নিন।

ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা আপনাকে।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৭

ইসিয়াক বলেছেন:





ওকে বস।আপনার আদেশ শিরোধার্য।
শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন সব সময়।

৬| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৪০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মেরি ক্রিসমাস।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৮

ইসিয়াক বলেছেন:





মেরি ক্রিসমাস প্রিয় কবি।
ভালো থাকুন।

৭| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। শুভেচ্ছা আপনাকে ।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৯

ইসিয়াক বলেছেন:




ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা মহী ভাই।
শুভকামনা রইলো।

৮| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫১

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: ভালো লাগলো। অমিতাভের Goodbye সিনেমাটি দেখেছেন কি? কাকতালীয়ভাবে ওই সিনেমাতে এ ধরণের একটা ঘটনা আছে।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

ইসিয়াক বলেছেন:




আপনাকে আমার পাতায় স্বাগতম!
দুঃখিত প্রিয় ব্লগার অমিতাভ বচ্চনের Goodbye ছবিটি আমার দেখা হয় নি।আগে অনেক মুভি দেখলেও ইদানীং কোন মুভি দেখতে ভালো লাগে না। ধৈর্য অনেক কমে গেছে।
শুভকামনা সতত।

৯| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:১৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ভালো লেগেছে গল্পটা।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪

ইসিয়াক বলেছেন:






কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় ব্লগার।
শুভেচছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.