নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনা হল, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যটি ভারতের সংসদে সবচেয়ে বেশি সাংসদ পাঠায়। এই রাজ্যের ভোট কোন্ দিকে পড়ছে সেটা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দিন ধরেই বিজেপি তাই এই রাজ্যটির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে চলছে। ১৯৯০-৯২-এর রাম জন্মভূমি আন্দোলন তার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছয় যখন ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর সঙ্ঘের জঙ্গিরা বাবরি মসজিদটিকে ধ্বংস করে দেয়, আর তারই ফলশ্রুতিতে সারা ভারত জুড়ে, বিশেষ করে উত্তর ভারত আর মুম্বাইয়ে, বিরাট সব সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধায়। এর ফল হিসেবে আবার প্রতিবেশী পাকিস্তান ও বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়াশীল মুসলিম ধর্মান্ধদের হাত শক্ত হয়—তারা হিন্দু মন্দির ও হিন্দুদের সম্পত্তি ধ্বংস করে, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ চালায়।
১৯৯৫ সালে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে একটা স্বল্পস্থায়ী জোট-সরকারে ঢুকতে সমর্থ হয়। এর ফলে ঐ রাজ্যে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তারা বেশ ভাল ফল করে। ১৯৯৭ সালে তারা আবার “দলিতদের” দল কাঁসিরাম ও মায়াবতীর ‘বহুজন সমাজ পার্টি’ (বিএসপি)-র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করে। ঠিক হয়েছিল, প্রথম ছ’ মাস মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তারপর বিজেপি। কিন্তু ১৯৭৭-র শেষাশেষি বিএসপি সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেয়। তা সত্ত্বেও বিজেপি পেশীশক্তি ও টাকার জোরে প্রচুর “ঘোড়া কেনাবেচা” করে সরকারে যেতে সমর্থ হয়। নতুন যারা বিজেপি-র সাথে আসে তাদের মন্ত্রীত্ব দিয়ে তুষ্ট রাখা হয়। সে জন্য নতুন নতুন মন্ত্রকও তৈরি করতে হয়। বোঝাই যায়, নাগপুরের সদর দপ্তর থেকে আরএসএস-এর এইসব কাজকর্মে মদত দেওয়া হয়।
“বাজপেয়ী ও বিজেপি-র অন্য নেতারা এখনও বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্থানে রাম মন্দির গড়তে চান। এই বইটি প্রকাশিত হওয়ার সময়ে মোদী ও যোগী সরকারের আনুকূল্যে তা অনেকদূর এগিয়ে গেছে, এবং ১৯৯২ ডিসেম্বরের মসজিদ ধ্বংস ও দাঙ্গার সমস্ত দোষীকে আদালত অপরাধ থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছে। রক্ষণশীল উচ্চ জাতের হিন্দুদের কাছে সঙ্ঘের দেওয়া শপথ অযোধ্যায় রাম মন্দির। বাজপেয়ী কি নাগপুর থেকে আসা নির্দেশ অমান্য করবেন? তার বিশেষ সম্ভাবনা নেই। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আবার উত্তরপ্রদেশেরই মথুরায় কৃষ্ণের জন্মস্থানকে “মুক্ত” করার জন্য আরেকটি আন্দোলন শুরু করতে উন্মুখ। মায়াবতী কাঁসিরামের পার্টি বিএসপি সেটা চায় না। এখন উত্তরপ্রদেশে বিরোধী দল মুলায়ম ও অখিলেশ যাদবের পার্টি। তারা কোন্ অবস্থান নেয়, তা বলা যায় না। (ক্রমশঃ)
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২০
গায়েন রইসউদ্দিন বলেছেন: ছবিটা এই ওয়েবসাইটে ওভাবেই সেট হয়েছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে।
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এর আগে সম্ভবতো আপনি কাশ্মির নিয়ে লেখা আরেকটি বই এই ভাবে টাইপ করে শেয়ার করা শুরু করেছিলেন। সেটিকি শেষ হয়ে ছিলো?
আমিও অনেক কিছুই শুরু করে শেষ করতে পাইি নাই।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬
গায়েন রইসউদ্দিন বলেছেন: সহৃদয় পাঠক-লেখক বন্ধু, ধন্যবাদ কাশ্মীর প্রসঙ্গে আমার লেখা মনে রাখার জন্য। ১৪টি পর্বে আমি তা সামু কর্তৃপক্ষ ও পাঠকবন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করেছিলাম। তবে, পাঠকমনে অবশ্যই মনে হবে, আরও কিছু ণিখলে ভাল হত। এই অসম্পূর্ণতার অনুভূতি আমার মধ্যে ছিল। কিন্তু সময়ের প্রেক্ষাপটে তা শেষ করতে হয়েছিল। তবে প্রত্যাশা রেখেছিলাম, এবিষয়ে ভবিষ্যতে আলোকপাত করার জন্য। আর সে-জন্যেই আজকের এই বইটি পরবর্তী কাশ্মীর প্রসঙ্গে আলোচনার সহায়ক হবে আশা করি। তাই এই পুস্তকটি সম্পূর্ণ প্রকাশ করা খুবই প্রয়োজন। ভাল থাকবেন।
৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০১
গায়েন রইসউদ্দিন বলেছেন: ইন্ দ্য বেলী অফ্ দ্য বীস্ট
প্রিয় পাঠক-লেখক বন্ধুরা,
আপনারা কি ‘IN THE BELLY OF THE BEAST’ বইটির কথা শুনেছেন বা পড়েছেন কি? ১৯৯৮ সালে AJANTA BOOKS INTERNATIONAL, DELHI থেকে এই প্রকাশিত হয়েছিল। লেখক- ডঃ পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়। এটির বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে ‘দানবের পেটে দু’দশক’ নামে। আসুন, আমরা দেখি, বইটিতে কী এমন আছে যে-কারণে বিদগ্ধ মহলে এবং বিদেশে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। এমনকি, AMERICA LIBRARY OF CONGRESS, বইটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণের জন্য তালিকাভুক্ত করেছে।
এই বইটির ভূমিকা লিখেছেন—তনিকা সরকার। ভূমিকা-‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই বইটি আমাদের সব বাঙালির অবশ্যপাঠ্য একটি প্রয়াস। লেখক পারিবারিক সূত্রে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সঙ্গে আগের প্রজন্ম থেকে যুক্ত। নিজেও দু’দশক ধরে নিষ্ঠাভরে কাজ করেছেন। এমন একজন স্বয়ংসেবক কেন সঙ্ঘ ছাড়লেন, এবং শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে বিরোধিতা করা উচিত মনে করলেন, তা আমাদের আজকের পরিপ্রেক্ষিতে খুঁটিয়ে বোঝা উচিত। প্রসঙ্গত, সঙ্ঘ হলো ভারতীয় জনতা পার্টির জনক ও শিক্ষক। দুটি প্রতিষ্ঠান আলাদা নয়, ঘনিষ্ঠভাবে পরস্পর সংযুক্ত।
বইটিতে আছে সঙ্ঘের বিশ্লেষণ এবং তার ধ্বংসাত্মক ও হিংসাত্মক রাজনীতির সাহসী সমালোচনা। যে রাজনীতির জন্য বহু চিন্তা করে অবশেষে লেখক তাঁর একদা-প্রিয় সঙ্ঘের সঙ্গে নাড়ির টান ছিঁড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। একজন উদারপন্থী ভারতীয় ও বাঙালি হিসেবে, একজন রবীন্দ্র অনুরাগী হিসেবে, তাঁর পক্ষে অন্য কিছু করা সম্ভব ছিল না।
বইটিতে আমরা আরও পাই সঙ্ঘের কার্যাবলীর বিশদ আলোচনা, যা অন্য এ ধরনের আলোচনায় বিরল। লেখক, সঙ্ঘের বিপজ্জনক রাজনীতির শক্তির উৎস কোথায়, তার সন্ধান করেছেন। যেসব রাজনৈতিক দল নিজেদের সেক্যুলার বলে দাবি করেন, তাঁরা আশা করি এর থেকে এখনো কিছু শিখতে চেষ্টা করবেন’।
আসুন, এখন লেখকের প্রারম্ভিক কিছু কথা শোনা যাক— ‘আজ ২০২১ সালে ভারত এক চরম সঙ্কটকালীন অবস্থায়। যে আরএসএস একসময়ে এক প্রান্তিক উপহাস্যাস্পদ শক্তি ছিল, অথবা অবজ্ঞার বিষয় ছিল, তা আজ সত্যিই এক ভয়ঙ্কর দানবের মতো ভারতবর্ষকে গ্রাস করে ফেলেছে। ঘৃণা, বিভেদ, হিংসা, ভয় ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে তারা তাদের রাজনৈতিক ফ্রন্ট বিজেপি’র মাধ্যমে ভারতের শাসন ক্ষমতায় প্রবলভাবে জাঁকিয়ে বসেছে, এবং একদিকে তাদের ধর্মান্ধ হিন্দুত্ববাদী ডক্ট্রিন্ ও অন্যদিকে গণতন্ত্রবিরোধী, বহুধর্ম ও বহুজাতিত্ব-বিরোধী ফ্যাসিস্ট্ কার্যকলাপের মাধ্যমে সহনশীল, শান্ত দেশকে চিরকালের মতো ধ্বংস করে দিতে উদ্যত। তাদের একসময়ের প্রচারিত স্বদেশী অর্থনীতি থেকে আজ তারা বহুদূরে—বহুজাতিক ও ভারতীয় ওয়ান পার্সেন্ট আজ দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ গ্রাস করেছে। বাংলার মতো উদারপন্থী, রবীন্দ্র-নজরুল-লালন-বাউল-কীর্তণ-ভাটিয়ালির দেশেও তারা তাদের বিষবৃক্ষের ফল ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। বাঙালি মনন, বাঙালি ইতিহাস, বাঙালি চেতনা ও বাঙালি জীবন দর্শন আজ এক খাদের কিনারায়। ঠিক এই ক্রান্তিকালীন সময়ে বাংলায় এই বইটি প্রকাশের জরুরি প্রয়োজন ছিল। বন্ধু ডাঃ সুমিতা দাসের অকৃপণ সহায়তায় এবং উচ্চমানের অনুবাদ-দক্ষতায় বইটি বাংলায় প্রকাশ করা সম্ভব হলো। বাংলার মানুষ—হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, আস্তিক, নাস্তিক সকলেই বইটি পড়ুন, এবং রামমোহন-বিদ্যাসাগর-রামকৃষ্ণ-রবীন্দ্রনাথ-সত্যজিতের বাংলা নবজারণকে সম্পূর্ণ বিস্মৃতি ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করায় অঙ্গীকারবদ্ধ হোন, লেখক হিসেবে, রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে এই আমার আশা। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, ফ্যাসিস্ট দানবদের নির্মম, রক্তলোলুপ হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করুন’।
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়
জানুয়ারি, ২০২১
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২২
রাজীব নুর বলেছেন: ছবিটা কাঁত হয়ে আছে কেন?