নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি রইসউদ্দিন গায়েন। পুরনো দুটি অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করতে না পারার জন্য আমি একই ব্লগার গায়েন রইসউদ্দিন নামে প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছি এবং আগের লেখাগুলি এখানে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য আবার প্রকাশ করছি।

গায়েন রইসউদ্দিন

গায়েন রইসউদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

দানবের পেটে দু\'দশক (মূল গ্রন্থ- IN THE BELLY OF THE BEAST) পর্ব-২৩

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৫২


(২) হিন্দু সাম্রাজ্য দিনোৎসব
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ত্রয়োদশীর দিন এই উৎসব উদযাপিত হয়। এ দিনটি হল মারাঠা হিন্দু রাজা শিবাজীর রাজ্যাভিষেকের দিন। শিবাজীর জীবন ও কর্মকে গৌরবান্বিত করতে সঙ্ঘে যে সংস্কৃত গানটি গাওয়া হয় তার অর্থ হল: যিনি হিন্দু জাতি ও ধর্মের সেবা করেছেন, ব্রাহ্মণ ও গোমাতাকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন”। বিপদ মানে, বলা বাহুল্য, মুসলমান আক্রমণকারী। এই গানে পরের দিকে বলা হয়েছে যে ঐ আক্রমণকারীরা হিন্দুর রক্ত পান করতে চায়, তাই উন্নত চরিত্র সবার বুকে তারা আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
ভূপভূষণম অভিবায়ামি
রাষ্ট্রধর্ম সেবকম্
শিবাভিধাম বিপৎপতিত
ধেনু বিপ্রাক্ষকম্...
সজ্জানামানা দাবাগ্নি
হিন্দুরুধিরপানেপ্সু...
নানা কারণে ‘হিন্দু সাম্রাজ্য দিবস’ সঙ্ঘ পরিবারের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আরএসএস-এর মারাঠা-প্রধান নেতৃত্ব ছত্রপতি শিবাজীর গৌরবগাথা গাইতে বিশেষ উৎসাহী—মহারাষ্ট্রের হিন্দু যোদ্ধা শিবাজী তাঁর সাহস, গেরিলা ধরণের রণকৌশল ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে মুঘলসম্রাট আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য খ্যাত। তাই মুসলমানদের বর্বরতা ও হিন্দু-বিরোধী অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি আরএসএস-এর এক প্রধান আইকন। যেসব বীর যোদ্ধাদের আরএসএস জাতীয় প্রতীকে পরিণত করেছে তাদের মধ্যে শিবাজী বোধ হয় সবার ওপরে। এই হিন্দু সংগঠনটির কাছে শিবাজী শৌর্যের প্রতীক, হিন্দুত্বের “পুরনো গৌরব” ফিরিয়ে আনা ও মুসলমানদের “অত্যাচার ও নৃশংসতা”-র পরাজয়—এই ‘প্রধান লক্ষ্যে’-র প্রতীক। শিবসেনা ও আরএসএস তাই আদর্শগতভাবে খুবই কাছের।
এসবের মধ্যে যেটা খেয়াল করা হয় না সেটা হল যে শিবাজী ছিলেন আসলে একজন ছোট মাপের সামন্ততান্ত্রিক মারাঠা সর্দার বা রাও। তাঁর এলাকায় তিনি যে স্বেচ্ছাচারী শাসন চালাচ্ছিলেন সেটাই তাঁকে মুঘল সম্রাটের নজরে আনে। এক রাজপুত শাসক শিবাজীকে পরাজিত করে আরঙ্গজেবের কাছে পাঠিয়ে দেন। শিবাজীর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র শম্ভাজী তাদের গোষ্ঠীর নেতা হন। নেতা হিসেবে তিনি উপযোগী ছিলেন না। কিছুদিনের মধ্যে এই মারাঠা গোষ্ঠীটি ভেঙে যায়। পরে আবার এই মারাঠা গোষ্ঠীটি বাংলাসহ ভারতের নানা অংশ অধিকার করে।– এই নিষ্ঠুর অত্যাচারী বর্গীরা কীভাবে বাংলাকে লুঠ করেছিল তা আজও বাংলা লোকগান ও ছড়া থেকে জানা যায়।
“ছেলে ঘুমলো পাড়া জুড়োলো বর্গী এলো দেশে, বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেবো কীসে?”
আজও সঙ্ঘ পরিবার শিবাজীর জীবন ও কাজকর্মের ওপর নতুন নতুন বই ও মারাঠী থেকে অনুবাদ-গ্রন্থ বের করে চলেছে। অতি দক্ষিণপন্থী শিবসেনা এখন বিজেপি-র সঙ্গে জোট করে মহারাষ্ট্রের সরকারে আসীন। শিবসেনা অ-হিন্দু সবকিছুরই বিরোধী এবং তাদের নেতা বাল ঠাকরে খোলাখুলিভাবেই হিটলার ও না৭সী জার্মানির ভক্ত। বম্বের রাস্তা থেকে সম্প্রতি মুসলমান পরিযায়ী শ্রমিকদের যে উচ্ছেদ করা হয়েছে, শিবসেনা সরকার তার জন্য দায়ী। আরএসএস ও বিজেপি, শিবসেনা বা ঠাকরের এইসব কাজে আপত্তি করেছে—তেমন কোনও খবর নেই।...(ক্রমশ)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.