![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মহাকাশপ্রেমী
অামি এই মহাবিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতর কণিকাগুলোর একটি, নাম ফোটন। অামরা বোসন শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত। অাকারে ক্ষুদ্রতর হলেও গতিতে অামরাই সেরা। জন্মলগ্ন থেকেই অামরা ছুটে চলেছি এক অবিশ্বাস্য গতিতে, প্রতি সেকেন্ডে প্রায় তিন লক্ষ কিলোমিটার। অামাদের কোন ভর নেই, তাই অামাদের জীবনকালও অনন্ত। অামরাই এই অন্ধকার মহাবিশ্বকে অালোকিত করেছি, পৃথিবীকে করেছি জীবন্ত। মহাবিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অামরা প্রতিনিয়ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বহন করে চলেছি। অামাদের যাত্রাকালের কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। অামরা কোটি কোটি বছর মহাশূন্যে ভ্রমণ করতে পারি, পাড়ি দিতে পারি কোটি কোটি অালোকবর্ষ দূরত্ব। মহাবিশ্বের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে অামাদের বিচরণ। অামাদের জন্মও হয়েছে বিভিন্ন সময়ে মহাবিশ্বের বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। উদাহরণস্বরূপ, অামার জন্ম হয়েছিল সূর্যের কেন্দ্রে, এক জটিল ফিউশন বিক্রিয়ার ফলে। সূর্যের কেন্দ্রে প্রচন্ড তাপমাত্রা ও চাপে হাইড্রোজেন পরমানু থেকে ইলেকট্রন ছিটকে বেরিয়ে যায়, শুধু প্রোটন অবশিষ্ট থাকে। প্রোটনগুলোর সমধর্মী চার্জ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রের প্রচন্ড চাপে দুটি প্রোটন পরস্পরের সন্নিকটে অাসে। এসময় একটি প্রোটন পরিবর্তিত হয়ে নিউট্রনে পরিণত হয় এবং প্রোটন-নিউট্রন মিলে ডিউটেরিয়াম পরমানু গঠন করে। এই ডিউটেরিয়াম পরমানুর সাথে অাবারও প্রোটনের ফিউশন বিক্রিয়ায় প্রথমে হিলিয়াম-৩ এবং পরবর্তীতে হিলিয়াম-৪ পরমানু গঠিত হয়। এই বিক্রিয়াকে প্রোটন-প্রোটন চেইন বিক্রিয়া বলা হয় যা অত্যন্ত ধীর গতির একটি বিক্রিয়া এবং ফোটনের অন্যতম প্রধান উৎস। অামার জন্মও হয়েছিল এই বিক্রিয়া থেকেই। জন্মের পর সূর্যের কেন্দ্র থেকে রেডিয়েটিভ,কনভেক্টিভ, ফটোস্ফেয়ার পেরিয়ে এর পৃষ্টভাগে পৌছতে অামার সময় লেগেছে প্রায় এক লক্ষ বছর। এই দীর্ঘ সময় সূর্যের মাঝেই অাটকে ছিলাম। সূর্যের কেন্দ্রে প্রতি সেকেন্ড শত কোটিবার বিভিন্ন পরমানুর সাথে সংঘর্ষ হতো। অামার মত যেসব ফোটন নক্ষত্রের কেন্দ্রে জন্ম নেয়, তাদের প্রত্যেককেই এভাবে নক্ষত্রটির কেন্দ্র থেকে বাইরে বেরনোর পথ খুজে নিতে হয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে অামি সফল হয়েছি। অাজ অামি মুক্ত, স্বাধীন। বিশাল মহাবিশ্বে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। এই যাত্রার কোন শেষ নেই। এভাবেই ছুটে বেড়াবো মহাবিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। শত শত কোটি বছর যাত্রা করে হয়ত একদিন পৌছে যাবো দূরের কোন এক গ্রহে, যেখানে মানুষের মতই কেউ একজন অপেক্ষায় থাকবে অামার কাছ থেকে সূর্যের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের অাশায়। ততদিনে হয়ত সৌরজগতের চিত্র পুরোপুরি বদলে যাবে। বদলে যাবে মহাবিশ্বের বর্তমান রূপ। অার এই বদলে যাওয়া মহাবিশ্বের তথ্য নিয়েই অামার মত অগণিত ফোটন মহাবিশ্বে ছুটে বেড়াবে। মহাবিশ্বের বর্তমান রূপ অামাদের মাঝে অতিত হিসেবে বিদ্যমান থাকবে, কারন অামরাই মহাবিশ্বের অাত্মজীবনী।
২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫
পুলহ বলেছেন: আপনার লেখার ধরণটা ভালো লেগেছে। অভিনব স্টাইলের লেখা।
সাধারণ একজন পাঠক হিসেবে আপনাকে একটা সাজেশন দিতে পারি। আপনার এই লেখা পড়ে মনে হলো- বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের নয়- এমন অনেকেই হয়তো লেখাটা পড়ে অনেকাংশেই বুঝতে পারবে। লেখক হিসেবে আপনার টার্গেট যদি সে মানুষগুলো হয়, তাহলে টেকনিক্যাল ডিটেইলিং লেখায় কমিয়ে পরে রেফারেন্সে যুক্ত করে দিতে পারেন, যেনো কেউ আগ্রহী হলে সেখান থেকে দেখে নেয়। উদাহরণস্বরূপ- এই লেখায় সূর্যের ফিউশানের বর্ণনাটা থেকে কিছু ডিটেইলিং বাদ দিয়ে সেটা রেফারেন্সে যুক্ত করে দেওয়া যেতো। এতে বোধহয় সাধারণ পাঠকদের আগ্রহটাও ধরে রাখা যায়।
আপনার টার্গেট অডিয়েন্স যদি হয় ফিজিক্স ব্যাকগ্রাউণ্ডের লোকজন, তাহলে অবশ্য ওপরের কথাগুলো সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
শুভকামনা ভাই আপনার জন্য। পোস্টে +++++
৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:১৩
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: ধন্যবাদ। অাপনার পরামর্শটি অামার ভাল লেগেছে। পরবর্তী পোস্টগুলোতে বিষয়টি মাথায় রাখবো
৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৩৫
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
ব্লগার পুলহ এর মন্তব্যটাই করতে চাচ্ছিলাম। উনি করে দেওয়ায় আমি বেঁচে গেলাম।
লেখাটা আমার ভাল লেগেছে। অন্তত গতানুগতিক অন্যান্য লেখা থেকে আলাদা আছে। +
৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:০২
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ১৩ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০
অবলাল রশ্নি বলেছেন: ভালো লিখেছেন,চালিয়ে যান।
একটা প্রশ্ন ছিল লাইট কিংবা মোমবাতি বা আগুণ থেকে বের হওয়া আলো কি ফোটন কনা না ??
৮| ১৩ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৩
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: ধন্যবাদ। হুমম, সেগুলোও ফোটন।
৯| ১৬ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৩০
স্বতু সাঁই বলেছেন: শত শত কোটি বছর যাত্রা করে হয়ত একদিন পৌছে যাবো দূরের কোন এক গ্রহে, যেখানে মানুষের মতই কেউ একজন অপেক্ষায় থাকবে অামার কাছ থেকে সূর্যের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের অাশায়।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে যেমন লক্ষ্য নক্ষত্র আছে, ঠিক তেমনি লক্ষ লক্ষ গ্রহে মানুষ স্বরূপ জীবও আছে। পৃথিরীর মানুষ কয়টা নক্ষত্রের ফোটন কণার সন্ধান পেয়েছে?
১০| ১৬ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৫০
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: অগণিত
১১| ১৭ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:০২
স্বতু সাঁই বলেছেন: সেটা নিয়ে একটা পোস্ট দেন। তবে নক্ষত্রের নাম উল্লেখ কইরেন কিন্তু।
১২| ১৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:২১
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: যতগুলো নক্ষত্র টেলিস্কোপ দিয়ে অাজ পর্যন্ত দেখা গেছে, তার সবগুলোর ফোটনই পৃথিবীতে এসেছে। না এলে তো অামরা কোনদিন সেগুলোকে দেখতেই পারতাম না। এখন অাপনি নিজেই বসে বসে সেই সংখ্যা হিসাব করতে থাকুন।
১৩| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:০৩
আল আমিন জিহাদ বলেছেন: কিযে ভাল লাগল,বুঝাইতে পারব না
১৪| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:২৮
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪
অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: ফোটনের আত্মজীবনী ভাল্লাগছে।