নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"আমি সেই অবহেলা, আমি সেই নতমুখ, নিরবে ফিরে যাওয়া অভিমান-ভেজা চোখ, আমাকে গ্রহণ কর\"- রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

রাকিব আর পি এম সি

একজন মহাকাশপ্রেমী

রাকিব আর পি এম সি › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশু মহাবিশ্বের প্রথম সেকেন্ড

০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৮


বিগ ব্যাং তথা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব মহাবিশ্বের উৎপত্তিকে ব্যাখ্যাকারী এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব। প্রায় ১৩৭৭ কোটি বছর পূর্বে অামাদের এই মহাবিশ্বটি সৃষ্টি হয়েছিল। এর সৃষ্টি প্রক্রিয়াটি ছিল নানা নাটকীয়তায় ভরপুর। সৃষ্টির প্রথম সেকেন্ডে অামাদের মহাবিশ্বে কি কি ঘটেছিল, তা নিয়েই অাজকের লেখাটি সাজিয়েছি। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক শিশু মহাবিশ্বটির প্রথম সেকেন্ডের ঘটনাগুলো।

১) প্ল্যাঙ্ক কাল(Planck Epoch): মহাবিশ্ব সৃষ্টির পরবর্তী ১০^-৪৩ সেকেন্ড পর্যন্ত সময় কালকে প্ল্যাঙ্ক কাল বলা হয়। এটাই ছিল সময়ের সূচনা মূহূর্ত্ব এবং এই কাল থেকেই পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো কার্যকারিতা লাভ করে। এই সময় প্রকৃতির চারটি মৌলিক বল (মহাকর্ষ বল, সবল নিউক্লিয় বল, দুর্বল নিউক্লিয় বল এবং তড়িৎ-চৌম্বকীয় বল) একীভূত অবস্থায় ছিল বলে ধারণা করা হয়। প্ল্যাঙ্ক কালে মহাবিশ্ব খুব সামান্য পরিমাণ সম্প্রসারিত হয়েছিল, প্রায় ১০^৩৫ মিটার। এসময় মহাবিশ্বের তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০^৩২ ডিগ্রি K।


২) পরম একীভূতকরণ কাল(Grand Unification Epoch): এর স্থায়ীত্ব ছিল মহাবিস্ফোরণ পরবর্তী ১০^-৪৩ সেকেন্ড থেকে ১০^-৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত। এসময় মহাবিশ্বের অাকার বৃদ্ধি পাওয়ায় তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। এই কালেই মহাকর্ষ বল অন্য তিনটি মৌলিক বল (সবল নিউক্লিয় বল, দুর্বল নিউক্লিয় বল এবং তড়িৎ-চৌম্বকীয় বল) থেকে পৃথক হয়ে যায়। কণা-প্রতিকণাগুলো এই সময় তৈরী হতে শুরু করে।


৩) স্ফীতি কাল(Inflationary Epoch): এর স্থায়ীত্ব ছিল ১০^-৩৬ থেকে ১০^-৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত। এই কালে মহাবিশ্বটি খুব দ্রুত সম্প্রসারিত হতে শুরু করেছিল, যাকে মহাজাগতিক স্ফীতি বলে। মহাজাগতিক স্ফীতির ফলে প্ল্যাঙ্ক কালে যেই মহাবিশ্বটির অাকার ছিল ১০^-৩৫ মিটার, স্ফীতি কালে তা ১০ সেন্টিমিটার হয়ে যায়। পরম একীভূত কালে সৃষ্ট কণিকাগুলোর অবশিষ্টাংশ, যা কোয়ার্ক-গ্লুওন প্লাজমা নামে পরিচিত, মহাবিশ্বে বন্টিত হয়।


৪) তড়িৎ-দুর্বল কাল(Electro-Weak Epoch): এই কালটির স্থায়ীত্ব ছিল মহাবিস্ফোরণ পরবর্তী ১০^-৩২ সেকেন্ড থেকে ১০^-১২ সেকেন্ড পর্যন্ত এবং এসময় তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০^২৮ ডিগ্রি K। এই তাপমাত্রায় সবল নিউক্লিয় বল অপর দুটি বল (দুর্বল নিউক্লিয় বল এবং তড়িৎ-চৌম্বকীয় বল) থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে মৌলিক কণিকাগুলোর মিথষ্ক্রিয়ায়(interaction) বিপুল পরিমাণ W ও Z বোসন এবং Higgs বোসন তৈরী হতে থাকে।


৫) কোয়ার্ক কাল(Quark Epoch): এই কালের স্থায়ীত্ব ছিল ১০^-১২ সেকেন্ড থেকে ১০^-৬ সেকেন্ড পর্যন্ত। এসময় কোয়ার্ক, ইলেকট্রন এবং নিউট্রিনো বিপুল পরিমাণে তৈরী হতে থাকে এবং মহাবিশ্বের তাপমাত্রা ১০^১৬ ডিগ্রি K এর নিচে নেমে অাসে। এই কালেই কোয়ার্ক এবং প্রতি-কোয়ার্কের মাঝে সংঘর্ষ ঘটে এবং ব্যারিওজেনেসিস নামের একটি প্রক্রিয়ার ফলে কিছু কোয়ার্ক অবশিষ্ট থাকে।


৬) হ্যাড্রন কাল(Hadron Epoch): এই কালের স্থায়ীত্ব ছিল ১০^-৬ থেকে ১ সেকেন্ড পর্যন্ত। এসময় মহাবিশ্বের তাপমাত্রা অারও কমে ১০^১২ ডিগ্রি K এ দাঁড়ায়। এই তাপমাত্রায় কোয়ার্কগুলো যুক্ত হয়ে হ্যাড্রন কণিকা যেমন: প্রোটন, নিউট্রন তৈরী করেছিল।

এটাই ছিল শিশু মহাবিশ্বের প্রথম ১ সেকেন্ডের জীবনবৃত্তান্ত। অাশা করি অাপনাদের ভাল লেগেছে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কল্পনাও থেমে যায় !

সৃষ্টির মৌলিক গবেষণা এগিয়ে যাক । জ্ঞানই ধর্ম। :)

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৫

রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৪০

কানিজ রিনা বলেছেন: হ্যা জ্ঞানই ধর্ম, আল্লাহ্ মহাবিশ্বে সর্বস্থানে
সমান ভাবে নিহীত বা বিস্তির্ন। আর এই ত্বত্থ
ধরে বিজ্ঞানী মার্কনী প্রথম শব্দ রেডিও
আবিস্কার করেছিলেন। মহানাস্তিক এনথনিফ্লু
স্বীকৃতি দিয়েছেন বিগব্যাং বিস্ফোরন
সুপরিকল্পিত সুনিয়ন্ত্রীত সুনিপুন সত্ব্যায় বিদ্যমান
রয়েছে। সেই এবং অসংখ্য বস্তুবাদী দার্শনিকের
মতে। হাবেল বলেছেন কোন সেই শক্তির সত্ব্যা
চীরস্থায়ী বিদ্যমান।
নিয়ন্তৃত ক্রম ধারা বিগব্যাং থিয়রীর সাথে
একমত হয়েছেন। শেষে আইনস্টাইন পুর্ব
ধারনায় ভুল প্রমানে একমত। একই মতে
ফ্রেডহোয়েল,জর্জগামা,আর্নাড ফ্রিন্সিয়া,
হুইলসন, ডেনিসস্কীয়ামা, আর্থার এরিংটন,
হিউক্লস, পলডে ডেভিন্স,স্টিফিন্স হকিন্স।
এতসব বিজ্ঞানী জতীর্বিজ্ঞানী দার্শনীকগনের
থিয়রী পর্যালচনায় একীভূত মতপ্রকাশ
কোন সেই শক্তিসত্বা যা সুনিপুন পরিকল্পিত
নিয়ন্ত্রনে চিরবিদ্যমান। মহাবিশ্ব সৃস্টি কর্তা
এক অদ্বিতীয়। বিজ্ঞানই দর্শন, দর্শনই ধর্ম
জ্ঞান। আপনার বিগব্যাং দর্শন লেখায়
অসংখ্য ধন্যবাদ।

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:৩০

রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: অাপনার সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:১২

রাশিদুল ইসলাম লাবলু বলেছেন: হ্যা জ্ঞানই ধর্ম সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.