নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক অবহেলিত বালক

রাকিব হাসান তৌফিক

আমি লিখার চেয়ে পড়তে বেশি ভালোবাসি কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু লিখতে ইচ্ছে করে তখন কি বোর্ডের সামনে বসে পড়ি, মনোভার প্রাকাশ করে যত্ন করে এম.এস. ওয়ার্ডে সেভ করে রাখি। সেই সেভকৃত ফাইল এই ব্লগের মাধ্যমে ধীরেধীরে প্রাকাশ পাবে

রাকিব হাসান তৌফিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অখ্যাত ব্যক্তিত্বের সাথে বিখ্যাত সেলফি

১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২০

প্রেক্ষাপট 2007 সাল। আমাদের ব্যাচের এস.এস.সি পরীক্ষা শুরু হলো। ঐ সময় পরীক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প খরচে আমাদের স্কুল থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হতো এবং মেক্সিমাম পরীক্ষার্থী ঐ বাসে চড়ে পরীক্ষা দিতে যেত।
যথারীতি আমাদের ব্যাচের জন্যও বাসের ব্যবস্থা করা হলো। পরীক্ষার দিন ঐ বাসে চড়ে পরীক্ষার হলে পৌছলাম। দুটি বাস ছিলো একটি ছেলেদের জন্য ও আরেকটি মেয়েদের জন্য। আমাদের বাসের ড্রাইভাই গোমড়া বা নিশ্চুপ প্রকৃতির ছিলো কিন্তু কন্টাকডার ছিলো অনেক সরস ব্যক্তিত্ব এবং তার হাসানোর দক্ষতাও ছিলো অসাধারণ।
প্রায় 35 উদ্ধ ব্যক্তি আমাদের সবার সাথে প্রথম দিনেই সেটেল হয়ে গেল। সে তার কাজেও ছিলো অনেক দক্ষ। সামনে যানজট থাকলে সে দৌড়ে গিয়ে ট্রাফিকের ভূমিকা পালন করে তা ছুটিয়ে দিয়ে বাসের রাস্তা ক্লিয়ার করতো। আর যাতায়াতের সময় আমাদের সাথে কথার ফুলঝুড়ি ছড়াত আর আমাদের মজা বা রসিকতায় অংশগ্রহণ ও করতো।
যাইহক এস.এস.সি পরীক্ষা শেষ হলো। কলেজ ও অনার্সও পায় শেষ হয় হয় কিন্তু ঐ কন্টাকডারকে আমি আর কোথাও দেখিনি।

প্রেক্ষাপট বর্তমান সময়। গত শুক্রবার (06.03.2015) এর ঘটনা। ফুফাতো ভাই ল্যাপটপ কিনবে তাই সকাল সকাল আই.ডি.বি তে গেলাম। ল্যাপটপ কিনে বাসায় আসার সময় গুলিস্থান থেকে বাসে উঠলাম। লোকালে দেরি হবে তাই সিটিং বাসে উঠলাম।
সময় মধ্যদুপুর, অল্প সময়ের মধ্যে অনুভব করলাম এই বাস সহজে ভরবে না এবং পুরো না ভরলে বাস ছারবে না। নেমে যাব কিনা চিন্তা করছি এমন সময় হেলপারের সহকারী বাসে উঠে সবাইকে একপ্রকার এনটারট্রেইনমেন্ট করতে লাগলো। তার কথা বার্তা ছিলো অনেকটা এই রকম,
“ভাই, আর একটু বসেন। এহনি বাস ছাইড়াদিমু। এই কয়ডা সিট ভরলেই বাস ছাইড়া দিমু।”
তার বলার ভঙ্গিটা দেখলে প্রয়াত কমেডি কিং দিলদারেও হিংসা হতো কারণ তার এই সামান্য কথাতেই 50% প্লাস যাত্রীদের দাত বের করে হাসতে দেখলাম।
কিছু মানুষ আছে যারা চিৎকার করেও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে না আর কিছু মানুষ আছে যাদের এটিচিউর্ডই সবার দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম। ঐ ছেলেটির নাম আকাশ এবং তার এটিচিউর্ডই ছিলো যথেষ্ঠ।
বাসথেকে নেমেই যেতাম কিন্তু ঐ বিচ্ছুটি কিছুখন পর পর বাসে উঠে সবাইকে একচোট হাসিয়ে নিচে নেমে যাত্রী ডাকতে যায়। তার জন্যই বিরক্তি চেপে রেখে বসে রইলাম। প্রায় ২০ মিনিট পর বাস ফিল আপ হলো। তারপর বাস ছাড়লো। আমাদের সামনের সিটে কাপল বসেছিলে এবং আকাশ নামের ঐ অ্যাশিষ্টেন্ট হেলপার বালকটি তাদের নিয়েই মূলত মজা করছিলো।
কিছুখন পরপরই সে তাদের নিয়ে কমেন্ট করে আর আমরা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ি। কমেন্টগুলো নোংরা ছিলোনা এমনকি বেশি হাস্যকর ও ছিলোনা কিন্তু তার পাঞ্চলাইন ছিলো মজবুত। এক ভদ্রলোকত তাকে খুশি হয়ে 20 টাকা উপহার দিয়ে বসলো।
যাইহক, তার সাথে ছবি তুললাম এবং অনেক উপভোগ্য একটি জার্নি শেষ করে বাস থেকে নামলাম। নামার সময় তার মাথায় হাতবুলিয়ে আসলাম। অখ্যাত এক আকাশের নিয়ে আমরা ভাবার সময় পাইনা। বিখ্যাত কোন ব্যক্তির সাথে সেলফি তুলতে পারলে আমরা অনেক খুশি হই। অখ্যাত এক আকাশের সাথে সেলফি তুলে আমি তার চেয়েও বেশি খুশি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.