নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবি ও লেখক।

কবি রাকিবুল ইসলাম

কবি রাকিবুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্তঃপুরের ট্রেনযাত্রা

১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:২৯



বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রিশাত।অন্য সব দিনের মতো আজ বিকেলেও ক্যাম্পাসের ভেতরে বন্ধু শাকিলের সাথে ঘুরছে।তবে আজ একটু ভিন্ন ভাবে ভিন্ন আয়োজনে সেই সময় ধরা দিল তার কাছে।আজ ছাত্রী হোস্টেলের সামনে দিয়ে যেতে সময় দেখল জিন্স প্যান্ট আর টাইট ফিটিং শার্ট পড়া একটা মেয়ে হোস্টেলের গেট পার হয়ে ভিতরের দিকে গেল।কি অদ্ভুত সুন্দর এক মেয়ে!কিন্তু এমন মেয়েকে এত রুক্ষ সাঁজে বেশ বেমানান লাগে।
মেয়েটিকে দেখা মাত্রই রিশাত শাকিলকে বলল কিরে মেয়েটাকে আগে কথনো দেখেছি বলে মনে হয়।
হুম আগেও দেখেছিস তাই এমন মনে হচ্ছে।
মানে?
মানে এ হলো রাজনৈতিক দলের সেই নেত্রী শান্তা।যাকে বিভিন্ন পোষ্টারে তুই দেখেছিস।
হুম..কিন্তু বাস্তবে যতটা সুন্দর তার একাংশও তো ছবি দেখে মনে হয়নি,বাহ কি চোখ আর কি দারুণ রুপ।তবে হ্যাঁ মানুষকে খুন করার জন্য ওর তো কোন অস্ত্রের প্রয়োজন নেই ঐ দুচোখ ই যথেষ্ট।ঠিক যেমন আমি এই মূহুর্তে খুন হয়ে গেলাম।
শাকিল বলল,কিরে তোর কি মাখা খারাপ নাকি এমন ভয়ঙ্কর এক মেয়েকে ভেবে এমন আবেগের কথা বলছিস?

যাকে ভালোবাসি তাকেই তো আবেগের কথা শুনাব রে....

ঠিক এভাবেই বেশ কয়েকদিন শান্তাকে ফলো করর রিশাত।একদিন শান্তা বিষয়টি খেয়াল করে অমনি রিশাতের কাছে গিয়ে বলল,কি ব্যাপার বেশ কয়েকদিন ধরে বুঝতে পারছি তুই আমাকে ফলো করছিস।রাজনৈতিক নেত্রী তাই এমন কর্কশ ভাষাতেই রিশাতের কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে বলল,
তোকে কে পাঠিয়েছে বল?
রিশাত কিছুটা ভয় পেলেও আবেগী ভাবে বলল,মন পাঠিয়েছে।
শান্তা অবাকভাবে কপাল থেকে পিস্তল সরিয়ে নিল।
বলল মন পাঠিয়েছে মানে?
মানে আপনাকে আমার খুব ভালো লেগেছে তাই দেখার জন্য ফলো করি।
শান্তা বলল,বাহ তোর তো ভালোই সাহস দেখছি,যে আমাকে এমন কথা বলছিস?
হুম শুধু সাহস ই নয় ভালোবাসাও আছে।
শুনে শান্তা অদ্ভুত চাহনিতে চুপ করে রইল।
রিশাত আবারো বললো,
প্লিজ আপনি যদি কিছু মনে না করেন তবে আপনার হাতটা একবার ছুঁয়ে দেখতে পারি?
শান্তার মায়াবী চোখদুটো হঠাত একশ ভোল্টেজের বাল্বের মতো জ্বলে উঠল।অমনি বলল,কি?
না আসলে সবাই বলে আপনার হাত নাকি খুব শক্ত যে হাতে আপনি মানুষের কপালে পিস্তল ঠেকান।তাই আমি একবার ছুঁয়ে দেখতে চাই যদি কিছু মনে না করেন তো।
দ্যাখ তোকে বলছি,এসব আজেবাজে কথা বন্ধ করে আমার চোখের সামনে খেকে দূর হ...
নইলে কিন্তু....
নইলে কি গুলি করবেন?আমি তো আপনার দুচোখ দেখেই এমনি খুন হয়েছি।নতুন করে আর কি লাভ?
শান্তা বলল,বুঝেছি তুই যাবিনা আমাকেই যেতে হবে।বলেই অস্থির শান্তা চলে গেল।
তবে এরপর অবশ্য শান্তাও একবার ভেবেছিল রিশাতের কথা।শান্তা অবশ্য এখনো রিশাতের নামও জানেনা।তবু আশ্চর্যের বিষয় হলো আজ পর্যন্ত কেউই সাহস করে শান্তাকে এভাবে খোলামেলা ভাবে কোন কথাই বলেনি।এই বিষয়টি নিয়েই ভাবলো শান্তা।তবে খুব বেশী একটাও ভাবেনি।পরদিন ই ভুলে গেল সব।
কিন্তু রিশাত পুরোপুরি ভুলতে দিলনা।প্রতিদিন ই দুর থেকে ফলো করতে থাকে।এতে কখন ও বা শান্তা ভীষণ রেগে যায় আবার কখনো বা মনে মনে মুচকি হাসে।

হঠাত করেই একদিন রিশাত আর ফলো করতে এলনা।শান্তা মনে মনে বহুবার খুঁজল রিশাতকে।
এভাবেই দুই দিন তিন দিন করে সাত দিন ও পার হয়।কিন্তু শান্তা মনে মনে অস্থির হয়েও কোন রকম খোঁজ নিতে পারলনা।কারণ যার নাম ও অজানা তাকে খুঁজে পাওয়া এতটা সহজ নয়।

এভাবেই নিজের মতই চলছিল শান্তা।কিন্তু একটা বিষয় হলো যে শান্তার ভেতরে মন খারাপের একটা হাওয়া বইতে থাকে।এমনটা কখনো আগে হয়নি।
এ ঘটনার কয়েকদিন পর শান্তার খুব কাছের বন্ধু রিদিতা একটা রাজনৈতিক অপারেশনে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেল।রিদিতার মৃত্যুতে শান্তা অনেকটাই ভেঙে পড়ল।তার কাছে সবকিছুই কেমন অস্বাভাবিক মনে হতে খাকে।
আরেকদিন রোড অ্যক্সিডেন্টে এক প্রেমিকার মৃত্যুতে প্রেমিকের কান্না শান্তাকে আরো বেশী রিশাতের কথা মনে করাতে থাকে।কিন্তু রিশাতের কোন খোঁজ পেলনা শান্তা।
এর কয়েকদিন পর হঠাত একদিন রিশাতের সাথে দেখা।
শান্তা কাছে গিয়ে বলল কি ব্যাপার মাঝে এতগুলো দিন দেখা নেঈ যে আমাকে ভুলে গেছ বুঝি?
যে আমাকে ভালোবাসেনা তাকে ভেবে কি হবে।
শান্তা দ্বিধা ভরা কন্ঠে বলল আসলে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসিনা।
শান্তা হঠাত রিশাতের কপালে পিস্তল ঠেকাতেই রিশাত বলল এভাবে জোর করে ভালোবাসা হয়না।
এ শুনে শান্তা নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকাতেই রিশাত বলল আমি জানি এত সাহস তোমার নেঈ.
এই বলেই রিশাত চলে যাওয়ায় শান্তা সত্যি সত্যি নিজেকে শুট করে বসল.
গুলির শব্দ পেয়ে ঘুরে তাকিয়ে দেখে শান্তা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে,
অমনি দৌড়ে এসে রক্তাক্ত শান্তাকে জড়িয়ে ধরে বলল.এই আমি তো তোমাকে ভালোবাসি।এতক্ষণ তো এমনি বলছিলাম।তাই বলে তুমি?
শান্তা অভিমানে মুচকি হেসে বলল জানোত আজ আমার খুব আনন্দের দিন।সেদিন খুব খুশি লেগেছিল যেদিন তুমি বলেছিলে ,,
এরপর আর কিছুই বলতে পারলো না।রিশাত শুধু কাঁদলো আর শান্তা চলে যায় অন্তপুরের ট্রেন যাত্রায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.