![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান সমাজে নাস্তিকরা সশস্ত্র জিহাদ করলে সেটা হয় বিপ্লব আর তা যদি মুসলিম করে সেটা হয় জঙ্গি । সুতরাং ক্যাস্ট্রো সবার কাছে বিপ্লবী নেতা হলে ও মুসলিম হলে জঙ্গি পরিচয় হত ।
সারা বাংলা এখন ক্যাস্ট্রো জ্বরে কাঁপছে। আপাতত তিনিই সব। শয়নে স্বপনে ঘরে বাইরে কেবল তিনিই। সবার উপরে তিনিই সত্য, তাহার উপরে নাই।
সুর্যসেন কিংবা ক্ষুদিরামের চেয়ে ক্যাস্ট্রো আর চে গুয়েভারা বেশী জনপ্রিয় ফেসবুক বিপ্লবীদের কাছে।
এটাই এখন বাঙালী জাতের হৃদয় নিংড়ানো আন্তরিক অনুভূতি। সে পরলোক গমন করেছে,সেটা দুঃখের বটে।
তবে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ছিল একনায়ক্তন্ত্রবাদ। মুক্তির দিশারী না তবে সমকালীন অন্যান্য নেতাদের মধ্যে প্রতিবাদের স্পৃহার যে অভাব ছিল সেটা তাঁর মাঝে ছিল।
এটাকে বিপ্লবের প্রতীক বলা যায়।
তবে বাঙালী রা লেগে গেছে তার জন্য #রেস্ট_ইন_পিস (মাগফিরাত) আর দোয়ার হ্যাঁ/না নিয়ে।
খুব ক্ষুদ্র সেন্সে বলেন তো?
এই তর্ক কি অর্থবহ!
সম্মান প্রদর্শন করতে করতে নিজেরা নিজেরাই ঢিল ছুঁড়াছুঁড়ি !!
ক্যস্ট্রো নামক বস্তু, বস্তুতে রুপান্তরিত হয়ে গেল। যেহেতু তার মতে পরকাল বলে কিছু নাই অতএব এই "রেস্ট ইন পিসের" ভন্ডামী না করেই বরং এই ডিক্টেটরের প্রতি কমরেডীয় লাল সালাম দেয়া হয়। অথবা "হ্যাপী ট্রান্সফর্মেশন টু ব্যাকটেরিয়া" এই টাইপের উইশ করা যায়।
এখন জাহেলিয়াত তথা বেকুবদের জামানা। তাই গণতান্ত্রিক সন্ত্রাসী ওয়াশিংটন, লিংকন কিংবা সাম্যবাদী ডাকাত চে, কাস্ত্রো, লেনিন, মাও এরাই হিরো। এদের নাম নেওয়া হয় নাভীর গোড়া থেকে আবেগ প্রবাহিত করে। অথচ এদের তুলনায় ইয়াজিদ কিংবা হাজ্জাজ বিন ইউসুফ রীতিমত মহামানব। তাই ক্যাস্ট্রো বাবু মরে শান্তি পাচ্ছেন কিনা জানি না তবে একটা ব্যাপারে নিশ্চয়ই শান্তি পাচ্ছেন যে তার জন্ম বাংলা মুলুকে হয় নাই। কারণ এই মুলুকে মরেও শান্তি নেই। এখানে মরা মানুষকে নিয়ে যে পরিমান টানাটানি করা হয় অন্য কোথাও তা করা হয় না। ক্যাস্ট্রো বিয়োগে তার জাতি যত না শোকাহত তার চেয়ে কয়েক গুন বেশি আহত এই বাঙালি জাত। ফিদেলের কাছে কেউ গনতন্ত্র চায় নাই। একচুয়ালি, ফিদেল কাস্ট্রোর প্রতি কারো বিদ্বেষ আছে বলেও মনে হয় না। তবে দিনরাত সাতান্ন ধারা, বাকস্বাধীনতা আর জনগণের নাগরিক অধিকার নিয়ে ফেসবুক গরম করা পাবলিকরা যখন ক্যাস্ট্রোর পক্ষে বলতে গিয়ে বাকস্বাধীনতা আর গনতন্ত্রকে ফালতু জিনিস অভিহিত করে, তাদেরকে ক্যাস্টর অয়েল খাওয়ানো উচিৎ। কোন সর্বহারা কোনদিন একনায়ক হতে পেরেছে জগতে তার কোন নজির নাই। 'সর্বহারার একনায়কতন্ত্রের' মসলাদার শ্লোগান ৬০ আর ৭০ দশকে লোকে খুব খেত। কিন্তু দেখা গেল সর্বহারার ভেক ধরে যারা বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা পেল তারা হিটলারের চেয়েও বড় স্বৈরশাসক হয়ে বসেছে। আর অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে চন্ডীদাসেরা তাকে মহাবিপ্লবী বানিয়ে অহর্নীশি পূঁজা করে যাচ্ছে ।।
পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীদের কাছে ক্যাস্ট্রো :
ক্যাস্ট্রো বাবুর মৃত্যুতে একটা ব্যবসায়িক দিক রয়েছে। তার চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে আজিজ সুপার মার্কেট এবং ঢাবি ক্যাম্পাসে চলবে তার ছবি সংবলিত টি শার্টের রমরমা ব্যবসা। তার ছবি বিক্রি হবে হরদম। বাড়তি ইনকামের জন্য মুক্তমনা সাহিত্যিক ও গবেষকেরা তাকে নিয়ে লিখবে নানা ফিচার। সভা সেমিনার করে নিজেকে জাহির করার সুযোগও কেউ হাত ছাড়া করবেন না। পরিচালকরা ও পিছিয়ে থাকবেন না, তাকে নিয়ে সিনেমাও তৈরি হবে। কারণ এখনই সময়, লোকে এখন ভালো ভাবেই গিলবে। আদর্শকে যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন সেখানে ব্যবসা ব্যাপারটা থাকবেই।
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্যাস্ট্রো :
ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বড় ২ দল ক্যাস্ট্রো বন্ধনায় ফেসবুক গরম করেছে। আওয়ামিলীগ সমর্থিত ফেসবুকিস্টরা ইতিমধ্য ক্যাস্ট্রো এর সাথে শেখ মুজিব এর সাথে শেয়ার করা ভিডিও ও ছবি দিয়ে ফেসবুক হিট করে ফেলছে। সাথে ক্যাস্ট্রো এর ডায়লগতো আছে, "আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্বে এবং সাহসিকতায়, এই মানুষটিই হিমালয়! তাই উনাকে দেখেই আমার হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে।"
বিএনপি ও পিছিয়ে নেই তারা ও জিয়াউর রহমান এর সাথে থাকা ক্যাস্ট্রো এর ছবি শেয়ার করছে।
ধর্ম ব্যবসায়ীরা ও পিছিয়ে নেই:
ইসলামপন্থীরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই তারাও ক্যাস্ট্রো বাবুর বিপ্লব থেকে প্রেরণা নিচ্ছেন। তার বিপ্লবের পদ্ধতির একটা ইসলামী ভার্সন দেয়া যায় কিনা সেটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন। ইতোমধ্যে তারা প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে ফেসবুকে তার প্রশংসায় গদগদ হয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। তার জীবনী নিয়ে পাঠচক্র করার চিন্তা করছেন। তিনি ইরাক যুদ্ধে আমেরিকার বিরোধীতা করেছিলেন তাই তিনি ইসলামপন্থীদের খালাত ভাই মামাত ভাই জাতীয় কিছু একটা হবেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রপন্থীদের চোখে ক্যাষ্ট্রো :
ক্যাস্ট্রো এর মৃত্যুতে ট্রাম্প বলেছেন, সৈরচারী শাসকের বিদায়। ক্যাস্ট্রো বাবুকে সুনামে যারা ব্যাস্ত তারা আবার হয়ে যাচ্ছেন সম্রাট ট্রাম্পের দেশের দালাল। বাঙালীর কাছে দালাল শব্দটা খুব পছন্দের। তাই যাকে তাকে দালাল বলে। যে যাকে দালাল বলছে সেও হয়ত কারো না কারো দালাল। এই বাংলা মুলুক দালালে ভরা। তবে বাংলার দালাল একজনও খুজে পাওয়া যাবে না। সবাই কেবল ভিনদেশী দালাল। যেমনকি অনেকের চোখে বর্তমানে রোহিঙ্গা দের দালাল। আর আমরা যারা ম্যাংগো পিউপল তারা সবার দিকেই তাকায়ে থাকি। আর জ্বর যতদিন থাকে ততদিন বলতে থাকি জয় বাবা ক্যাস্ট্রো নাথ। আপনি অমর হোন.....
ফিদেল ক্যাস্ট্রো এর ভাল ও মন্দ গুণ ঃ
কিউবার জন্য ফিদেল ক্যাস্ট্রো অনেক ভুমিকা রেখেছেন, যে দেশে আছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষিত'র হার ৯৯.৮%,গড় আয়ু ৭৯.১, যে দেশে ক্যাস্ট্রোর নামে কোনও রাস্তা নেই, কোনও মূর্তি নেই। ক্যাস্ট্রোর ছোট্ট একটি দ্বীপ কিউবা বিশ্বের সবচেয়ে পাওয়ারফুল দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং টিকে থেকেছে। কতবার ক্যাস্ট্রোকে খুন করতে চেয়েছে আমেরিকা, পারেনি। কথিত আছে, বিপ্লবের পর CIA উনাকে ৬৩৮ বার ব্যর্থ হত্যাচেষ্টা করেছিল। পুঁজিবাদের স্বর্গরাজ্য আমেরিকার নাকের ডগায় বসে প্রায় অর্ধশত বছর উনি যেভাবে সমাজতান্ত্রিক কিউবাকে শাসন করেছেন তা এক বিস্ময়। আমেরিকার অনেক কিছু শেখার আছে কিউবা থেকে। সবার জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার ব্যবস্থা কবে করবে আমেরিকা? কিউবা যা পেয়েছে আমেরিকা কি পারবে কখনো?
অবশ্য তার প্রথমদিকে দেশপ্রেম থাকলে ও শেষের দিকে তিনি জনগণের উপর সৈরচারী আগ্রাসন চালান যার কারণে কিউবার অনেকে তার মৃত্যুতে নেচে গেয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে। সত্যি হল কিউবায় এখনও স্বৈরতন্ত্র চলছে। সে দেশের মানুষের জীবন যাত্রা আমাদের চেয়েও খারাপ অবস্থা। ক্যাস্ট্রো একজন পরকীয়া প্রেমিক ও বটে। নাতালিয়ার সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল এবং এর সুত্র ধরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়।
ফিদেল ক্যাস্ত্রোর দেশে নিষিদ্ধ ৯ জিনিস:
১) বাসা বাড়ীতে এবং ব্যাক্তিগত মোবাইল থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার
২) কেবল টিভি
৩) সরকারের স্পেশাল পার্মিশন ব্যতিত রাজধানী হাভানায় বসবাস
৪) যে কোন ধরণের গণজমায়েত
৫) রাজনৈতিক দল গঠন, একদেশ একদল ‘কিউবা কমিউনিস্ট পার্টি’
৬) মাঝারি এবং বড় ধরনের ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা
৭) ওয়্যারলেস মাইক্রোফোন, ওয়াকিটকি ইমফোর্ট
৮) সরকারের অনুমতি ব্যতিত কোন বিদেশীকে দাওয়াত করা
৯) কোন বিদেশীকে ব্যক্তিগত গাড়ীতে উঠানো যায় না।
যেসব মুসলিম ভাইরা ক্যাস্ট্রো এর #রেস্ট_ইন_পিস চাইতেছেন তাদের কাছে অনুরোধ ইহুদীদের জয় হতে কোন উপাদান লাগে না আপনারাই যথেষ্ট।
আল্লাহ বলেন, “مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ”
“নবী এবং মুমিনদের কারো জন্য এটা শোভা পায় না যে তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যদিও তার নিকটাত্মীয় হোক না কেন। এ বিধান তখন, যখন তাদের জাহান্নামবাসী হওয়া নির্ধারিত হয়ে যাবে (অর্থাৎ, মৃত্যুর পর)।” (৯:১১৩)
প্রখ্যাত হাদীসবেত্তা, মুসলিম শরীফের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যখ্যাতা, ইমাম নববী রহ. তার ‘আযকার’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “অমুসলিমের জন্য হিদায়াত, সুস্থতা ও রোগমুক্তির জন্য দোয়া করা যাবে। (সুস্থতা ও রোগমুক্তির জন্য এ আশায় দোয়া করবে যে, আল্লাহ তাকে রোগমুক্ত করে হিদায়াতের তাওফীক দিবেন।) তবে ক্ষমা প্রার্থনা করা যাবে না। (কেননা, যাকে সে বিশ্বাস করে না, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা তার জন্য নিরর্থক।) ” মৃত মানুষদের,গুণী মানুষদের সম্মান করুন অর্থবহ উপায়ে।
©somewhere in net ltd.