নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মাদ ইউসুফ রানা

মোহাম্মাদ ইউসুফ রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস ( সংখ্যালঘু হিসাবে নির্যাতনের রেকর্ড ও জাতি হিসাবে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত)

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৩৩


পৃথিবীতে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন ও জুলুমের স্বীকার হচ্ছে তা হল "মুসলিম জাতি"। কই-কখনও তো শুনিনি লক্ষ-লক্ষ হিন্দুকে মারা হচ্ছে, কিংবা ক্রিশ্চান/জিউষ্টদের উপর অত্যাচার জুলুম হচ্ছে এমন তো শুনি না। অথচ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলো সব অমুসলিমদের দখলেই তাই তাদের কিছু হওয়ার আগে মিডিয়াতে চলে আসে । কিন্তু মুসলিমদেরটা প্রচার হয় না। আর হ্যা, অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়। তবে তা মুসলিমদের তুলনায় গৌণ। আর তাদের মিডিয়াগুলো দু'একটা গৌণ ব্যাপার নিয়েই তুলপাড় করে। অথচ মুসলিমদের উপর যে পাহাড় সম নির্যাতনও হয় তা কারও চোখে পড়ে না। আর সমস্ত মিডিয়া ও সুশীলরা এমন কৌশল এঁটেছে যখনি কোনও মুসলিম এসব প্রচার করিবে তখনি জঙ্গি/ সন্ত্রাসী ট্যাগ দিবে। একটা খুব কমন বিষয়ঃ পৃথিবীর প্রত্যেক দেশের যুদ্ধ নিয়ে চিন্তা করুন। হিটলারের বিশ্বযুদ্ধ, ম্যারিকা বনাম ভিয়েতনামী যুদ্ধ, প্যালেস্টাইন বনাম ইসরাঈল, চীনের স্নায়ূযুদ্ধ। সবই কিন্তু এক একটি জাতি অন্যের উপর প্রাধান্য দিতেই এতসব আয়োজন। কিন্তু একটু ভাবুন, এই অমীমাংসিত দেশ-জাতি ও তাদের বিজ্ঞদাতারা কিন্তু সকলে ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে একজোট। নিশ্চয় এসব যুদ্ধা ও অমিমাংসিত জাতিগুলো ইসলামের মর্মকথা বুঝতে সমর্থ হয়েছে। এতে একটা বিষয় স্পষ্ট প্রতিয়মান হয়, ইসলাম/মুসলিম এমন কিছু একটা যা তাদের ভিঁত নাড়িয়ে দেবে; ইসলাম পৃথিবীতে থাকলে তাদের রাজত্ব চূরমার করে দিবে। তাই সর্বোমূলে ইসলামের বিরোধীতায় সকলে বেশ জোড়েসুড়েই মেতে উঠেছে। এতেও কী প্রমাণ হয় না "ইসলাম" সত্য?

রোহিঙ্গাদের ইতিহাস :
রোহিঙ্গারা পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন স্টেটের উত্তরাংশে বসবাসকারী একটি জনগোষ্ঠী। ধর্মের বিশ্বাসে এরা অধিকাংশই মুসলমান। রাখাইন স্টেটের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হল রোহিঙ্গা। মায়ানমারের সরকারী হিসেব মতে, প্রায় আট লক্ষ রোহিঙ্গা আরাকানে বসবাস করে। রোহিঙ্গারা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীগুলোর একটি। মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মায়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। মায়ানমার সরকার ১৩৫ টি জাতিগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, রোহিঙ্গারা এই তালিকার অর্ন্তভুক্ত নয়। মায়ানমার সরকারের মতে, রোহিঙ্গারা হল বাংলাদেশী, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মায়ানমারে বসবাস করছে। যদিও ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে।

ইতিহাস বলে, রোহিঙ্গারা আরাকান রাজ্যের আদি বাসিন্দা। রোহিঙ্গারা মায়ামারে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে। সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আরবে যখন থেকে ইসলামের আবির্ভাব হয়, তখন থেকে চট্টগ্রামের ন্যায় এখানেও ইসলামের বিস্তৃতি ঘটে আরব বণিক ও মুহাদ্দিছ ওলামায়ে দ্বীনের মাধ্যমে (থিসিস পৃঃ ৪০৩)। অনেকে সূফীদের কথা বলেন। কিন্তু এটা ভুল। কেননা ইসলামের প্রাথমিক ও স্বর্ণযুগে কথিত সূফীবাদের কোন অস্তিত্ব ছিল না। ৭৮৮ খ্রিষ্টাব্দের বহু পরে তিববত হয়ে মিয়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবেশ ঘটে। প্রাথমিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যীয় মুসলমান ও স্থানীয় আরাকানীদের সংমিশ্রণে রোহিঙ্গা জাতির উদ্ভব। পরবর্তীতে চাঁটগাইয়া, রাখাইন, আরাকানী, বার্মিজ, বাঙালী, ভারতীয়, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষদের মিশ্রণে উদ্ভুত এই সংকর জাতিতে রুপ নেয় মায়ানমার। এয়োদশ-চর্তুদশ শতাব্দীতে রোহিঙ্গারা পূর্ণাঙ্গ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পঞ্চদশ শতাব্দী হতে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত আরাকানে রোহিঙ্গাদের নিজেদের রাজ্য ছিল। ইতিহাস এর পিছনের পাতায় গেলে জানা যায় আরকান রাজ্য প্রাচীন রাহমী রাজ্যভুক্ত এলাকা বলে ধারণা করা হয়। রাহমী আরবী নাম যাকে এখন ‘রামু’ বলা হয়। তৎকালীন রাহমী রাজা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্য এক কলস আদা উপঢৌকন হিসাবে পাঠিয়েছিলেন। যা তিনি ছাহাবীগণকে বণ্টন করে দেন (থিসিস, পৃঃ ৪২৫)।এতে ধরে নেওয়া যায় যে, তখন থেকেই এখানে ইসলাম প্রচারিত হয়েছে এবং স্থানীয় রাজাসহ সাধারণ অধিবাসীরা ইসলামকে সাদরে বরণ করেছে। জাহায ডুবির কারণেও বহু আরব এখানে এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিয়ে-শাদী করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। ইসলাম আগমনের বহু পরে ভারত থেকে ব্রাহ্মণদের অত্যাচারে বিতাড়িত হয়ে বৌদ্ধরা তাদের আদি বাসভূমি ভারত ছেড়ে থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, তিববত, মিয়ানমার, চীন, জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে অভিবাসী হয়। ভারত এখন প্রায় বৌদ্ধশূন্য বলা চলে। মধ্যযুগে আরাকানের রাজধানীর নাম ছিল ম্রোহাং। সেটারই অপভ্রংশ হ’ল রোহাং বা রোসাঙ্গ এবং সেখানকার অধিবাসীরা হ’ল রোহিঙ্গা। ১৪৩০ থেকে ১৭৮৫ খৃঃ পর্যন্ত সাড়ে তিনশ’ বছরের অধিক সময় আরাকানের রাজধানী ছিল রোসাঙ্গ। এখানকার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশী মুসলমান। আর মুসলিমদের শতকরা ৯২ জন হ’ল রোহিঙ্গা। ১৪৩৪ থেকে ১৬৪৫ খৃঃ পর্যন্ত দু’শো বছরের অধিক কাল যাবৎ কলিমা শাহ, সুলতান শাহ, সিকান্দার শাহ, সলীম শাহ, হুসায়েন শাহ প্রমুখ ১৭ জন রাজা স্বাধীন আরাকান রাজ্য শাসন করেন। তাদের মুদ্রার এক পিঠে কালেমা ত্বাইয়িবা ও অন্য পিঠে রাজার নাম ও সাল ফারসীতে লেখা থাকত। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় তখন বাংলা ভাষার চরমোন্নতি সাধিত হয়। কবি আলাওল, দৌলত কাযী, মরদান শাহ প্রমুখ কবিগণ আরাকান রাজসভা অলংকৃত করেন। আজকে যেমন বাংলা ভাষার রাজধানী হ’ল ঢাকা, সেযুগে তেমনি বাংলা ভাষার রাজধানী ছিল রোসাঙ্গ। এক সময় আকিয়াবের চাউল বন্যা উপদ্রুত বাংলাদেশের খাদ্যাভাব মিটাতো। মগদস্যুদের দমনে শায়েস্তা খাঁকে তারাই সাহায্য করেছিল। যার ফলে মাত্র ৩৬ ঘণ্টায় তাঁর পক্ষে চট্টগ্রাম জয় করা ও মগমুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল। তাই রোহিঙ্গাদের নিকট বাংলাভাষা ও বাংলাদেশের ঋণ অনেক বেশী। আজ তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমাদের নিকট আশ্রয়প্রার্থী। প্রশ্ন জাগে, কোলকাতার বাঙ্গালীদের প্রতি সরকার ও আমরা যতটা গলাগলি করি, আরাকানের বাঙ্গালীদের প্রতি তার বিপরীত কেন? তারা নির্যাতিত মুসলমান, তাদের গায়ের রঙ কালো, তারা সুশীল এর কাতারে পড়ে না, সেজন্যেই কি?

১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে শায়েস্তা খান কর্তৃক চট্টগ্রাম দখল করে নেওয়ার আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম আরাকান রাজ্যভুক্ত ছিল। তাছাড়া প্রাকৃতিক দিক দিয়ে দুর্গম ইয়োমা পর্বতমালা আরাকানকে বার্মা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। সেকারণ নাফ নদীর তীরবর্তী টেকনাফ, বান্দরবন, কক্সবাজার ও সমগ্র চট্টগ্রাম অঞ্চল আরাকানের সবচাইতে নিকটতম ও সুগম্য এলাকা। কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ ভারত ছেড়ে যাওয়ার আগে ভেদবুদ্ধি সম্পন্ন বৃটিশ ও ভারতীয় হিন্দু নেতারা কাশ্মীর, জুনাগড়, হায়দরাবাদ প্রভৃতি ভারতবর্ষের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য সমূহের ন্যায় আরাকান রাজ্যকেও ১৯৩৭ সালে বার্মার সাথে জুড়ে দেয়। অথচ ধর্ম, ভাষা ও ভৌগলিক কারণে এটা বাংলাদেশেরই অংশ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে এখানে কাষ্মীরের ন্যায় স্থায়ীভাবে রক্ত ঝরানোর ব্যবস্থা করা হয়। দেখা গেল যে, ১৯৪২ সালের এক অন্ধকার রাতে ইয়োমা পাহাড় ডিঙ্গিয়ে বর্মী শাসকদের উস্কানীতে নিরীহ আরাকানী মুসলমানদের উপর অতর্কিতে হামলা চালালো হিংস্র মগ দস্যুরা এবং মাসাধিককাল ব্যাপী হত্যাযজ্ঞে প্রায় এক লাখ মুসলমানকে তারা হত্যা করল। বিতাড়িত হ’ল কয়েক লাখ মুসলমান। এরপর ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারী বৃটিশের কাছ থেকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হ’তে নির্যাতনের মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলে। তাদের জন্য বার্মার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। ফলে তারা নিজ গৃহে পরবাসী হয়ে যায়। এইভাবে শত শত বছর ধরে মুসলিম ও বৌদ্ধ একত্রে বসবাসকারী নাগরিকদের স্রেফ রাজনৈতিক স্বার্থে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকারে পরিণত করা হয়। বার্মিজ বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা আরাকানী বৌদ্ধ রাখাইনদের সাথে মিলে আরাকানকে মুসলিমশূন্য করার মিশনে নেমে পড়ে। আদি ফিলিস্তীনীদের হটিয়ে যেমন সেখানে বাইরের ইহুদীদের এনে বসানো হচ্ছে, একইভাবে আদি রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করে সেখানে রাখাইনদের এনে বসানো হচ্ছে। অথচ পৃথিবী নির্বিকার।

মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের জীবন যাপনঃ
মায়ানমার সরকারের দাবি, রোহিঙ্গারা হল ভারতীয়, বাঙালী ও চাঁটগাইয়া সেটলার, যাদেরকে ব্রিটিশরা আরাকানে এনেছে। মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার না করায় সকল প্রকার নাগরিক ও মৌলিক সুবিধা হতে বঞ্চিত রোহিঙ্গারা। মায়ানমারে ভ্রমণ, শিক্ষা, চিকিৎসার জন্য পরিচয় পত্র থাকাটা খু্ব জরুরি বিষয়। কিন্তু মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের পরিচয় পত্র ইস্যু করে না, ফলে, এমনিতেই পিছিয়ে পড়া রোহিঙ্গারা আরো পিছিয়ে পড়ছে। মায়ানমার সরকারের ভূমি ও সম্পত্তি আইন অনুসারে বিদেশীরা কোন সম্পত্তি ও ভূমি মালিক হতে পারে না। রোহিঙ্গারা মায়ানমার সরকারের দৃষ্টিতে অবৈধ অভিবাসী তথা, বিদেশী। তাই, তারা কোন ভূমি বা, স্থায়ী সম্পত্তির মালিক হতে পারে না। বর্তমানে যেসকল ভূমিতে রোহিঙ্গারা বসবাস করছে, মায়ানমার সরকার যেকোন মুহুর্তে সেগুলো দখল করে নিতে পারে। এখানে শেষ নয়, মায়ানমার সরকার আইনের মাধ্যমে রীতিমত অসহনীয় করে তুলেছে রোহিঙ্গাদের জীবন। রোহিঙ্গারা সরকারী চাকুরী করতে পারে না, সরকারী কোন দপ্তরে রোহিঙ্গা কোন সেবা পায় না, ব্যাংকে লেনদেন করতে পারে না, সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্রের সেবা গ্রহণ করতে পারে না, উপযোগ সেবার (বিদ্যুত, পানি, জ্বালানী) জন্য আবেদন করতে পারে না, স্বপরিচয়ে শিক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভর্তি হতে পারে না। প্রায় ৮০% রোহিঙ্গা বাস্তবিক অর্থে অশিক্ষিত। প্রায়ই মায়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা নিপীড়ণের খবর পাওয়া যায়। রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে খাটানো হয়। প্রায়শ স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন লোকালয়ে হানা দেয়। শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধন, সরকারী জমি অধিগ্রহণের নামে রোহিঙ্গাদের অনেকগুলো মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়। এর মধ্যে প্রাচীন কিছু মসজিদও আছে। অনেক রোহিঙ্গাদের ব্যবসায় দখল/বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য 'গ্যাটো' জাতীয় বিশেষ ধরণের ব্যবস্থা করেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বেশ কয়েকটি বিশেষ বসবাসের স্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা থেকে ওরা অনুমতি ছাড়া বের হতে পারে না। সেই গ্যাটোগুলোর ভিতরে আবদ্ধ মানবেতর জীবনযাপন করে রোহিঙ্গারা। চিকিৎসা, শিক্ষা ও উপযোগ সেবার ব্যবস্থা এই গ্যাটোগুলোতে থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ও নিম্নমানের। রোহিঙ্গাদের বিয়ে করার জন্যও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নেয়া লাগে। এছাড়া দুটোর বেশি সন্তান নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে বিয়ে করায় ও দুজনের বেশি সন্তানের জন্ম দেয়ায় রোহিঙ্গা পরিবারের সন্তানদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এদের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার। এইসব পরিবারের সন্তানরা সরকারের 'গ্যাটো ব্যবস্থা' তালিকাভুক্ত নয়, ফলে, এদের জীবন ফোঁড়ার উপরে বিষ এ ঘা এর মত। এরা গ্যাটোগুলোতে থাকতে পারে না। আবার, গ্যাটোর বাইরেও থাকতে পারে না, কারণ, মায়ানমারের নাগরিক নয় ওরা। অবস্থাটা ওদের এমন যে, মায়ানমার সরকার ওদের কোন অস্তিত্বই স্বীকার করে না। এইসব পরিচয়হীন রোহিঙ্গারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের পথে পা বাড়ায়। নৌপথে সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে অসংখ্য রোহিঙ্গা ঢুবে মারা গেছে। মায়ানমার সরকারের নিপীড়ণের সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। রোহিঙ্গা বিরুদ্ধে রাখাইনসহ অন্যান্য বৌদ্ধ আরাকানীদের উস্কানি দিচ্ছে মায়ানমার সরকার। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বে বৌদ্ধ মৌলবাদকে সরাসরি ইন্ধন ও মদদ যোগাচ্ছে মায়ানমার সরকার। মায়ানমার সরকারের মনে রাখা দরকার, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর মাঝে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সুসংগঠিত অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। রোহিঙ্গাদের ক্রমাগত নিপীড়ণ করে ওদেরকে চরমপন্থার দিকেই ক্রমশ ঠেলে পাঠাচ্ছে মায়ানমার সরকার।

রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশঃ

বিগত কয়েক দশক ধরে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ সীমান্তে পুশ ইন করছে। রুটিনমাফিক নির্যাতন করে রোহিঙ্গাদের বাধ্য করছে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে। বর্তমানে সাত লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রিত অবস্থায় বসবাস করছে। যদিও রিফিউজি হিসেবে বাংলাদেশে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা আরো কম। যুলুম ও অত্যাচারের এমন কোন দিক নেই, যা এই নরপশুরা চালিয়ে যাচ্ছে না নিরীহ মযলূম মুসলমানদের উপরে। যার ফলে বিগত দিনেও তারা প্রতিবেশী বাংলাদেশ-এর টেকনাফ অঞ্চলে আশ্রয়ের জন্য ছুটে এসেছে। এবারও স্বাভাবিকভাবে তারা এদেশমুখী হয়েছে। সর্বস্বহারা মানুষগুলো যখন বাঁচার আশায় নৌকায় ভেসে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশী দ্বীপগুলোর দিকে ছুটছে, তখন বর্বর বর্মী সেনাবাহিনী তাদেরকে পিছন থেকে গুলি করছে, নৌকাসহ ডুবিয়ে মারছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের আধা সামরিক বাহিনী বিজিবি তাদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছে পুনরায় বধ্যভূমি আরাকানের দিকে। ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত মানুষগুলি এভাবেই সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে অথবা ডুবে মরছে। সভ্য সমাজে এদৃশ্য কল্পনাতীত। ২০১২ সালের আগে বাংলাদেশ কখনো তাদের তাড়িয়ে দেয়নি। বরং আশ্রয় দিয়েছে নিঃসন্দেহে মানবিক কারণে। কিন্তু এবার এ নিয়মের ব্যতিক্রম হল। তাই বলতে হয়, অসহায় ডুবন্ত মানুষকে বাঁচানোই প্রথম কাজ, না তাকে নিয়ে রাজনীতি করাই প্রথম কাজ? পৃথিবীর সকল দেশ প্রতিবেশী দেশের নির্যাতিত আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দিয়ে থাকে। আমাদের জনগণও বিগত দিনে ভারতে এবং বর্তমান সময়ে ইরাক, লিবিয়া ও অন্যান্য হাঙ্গামাপূর্ণ দেশ থেকে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে আশ্রয় নিয়েছে। অথচ আজ আমরা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিয়ে যে অমানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম, তাতে আমাদের ভবিষ্যত কি হবে আল্লাহ ভাল জানেন ।

নোটঃ
১।১৯৪২,১৯৭৮,১৯৯২,২০১২-এর মত ২০১৬-তে এসে তারা আবারও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হ’ল।
২।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান বার্মা দখল করলে বার্মিজ জাতীয়তাবাদী ও জাপানীরা মিলে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, জাতিগত ধোলাই শুরু করে। এসময় প্রায় পঞ্চাশ হাজার রোহিঙ্গা ভারত উপমহাদেশের বিভিন্নি অঞ্চলে পালিয়ে আসে।
৩।জেনারেল নে উইনের সময় আশির দশকে আদমশুমারির সময় রোহিঙ্গাদের বিদেশী ঘোষণা করে নিপীড়ণ করা।এসময় প্রায় দুই লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। উদ্বাস্তুরা গণহত্যা, ধর্ষণ, সন্তান চুরিসহ নানান ধরণের জাতিগত ধোলাইয়ের অভিযোগ আনে। ১৯৬০ সালে গভর্ণর যাকির হোসাইনের দৃঢ় ও সাহসী ভূমিকায় ভীত হয়ে অত্যাচারী জেনারেল নে উইন তার ঠেলে দেওয়া বিশ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্ত্তকে ফিরিয়ে নিতে ও তাদের বাড়ীঘরে সম্মানজনক পুনর্বাসনে বাধ্য হয়েছিল। ৪।১৯৯১-৯২ সালে The State Law and Order Restoration Council (SLORC) এর মাধ্যমে মায়ানমার সরকার উত্তর রাখাইন স্টেটে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দমনের নামে রোহিঙ্গাদের জাতিগত ধোলাই শুরু করে। এসময় মায়ানমারের সৈন্য ও স্থানীয় রাখাইনরা রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ, শিশু চুরি, গ্যাটোতে স্থানান্তর, মসজিদ ভেঙে দেয়া, ধর্মপালনে বাধা দেয়া, বাংলাদেশে পুশইনসহ সামরিক ক্যাম্পে বাধ্যতামূলক শ্রমে বাধ্য করে। এসময় বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে।

জাতিসংঘ ও মায়ানমার ঃ
অনলাইনে সুচির নোবেল প্রাইজ নিয়ে বেশ আলোচিত হচ্ছে । জাতিসংঘের ভুমিকা নিয়ে ও প্রশ্ন আসতেছে । জাতিসংঘ নামক যে নপুংসক সংস্থাটি আছে, এক সময় তার মহাসচিব ছিল উথান্ট। সেই উথান্ট হলো মায়ানমার এর। সেই সংস্থাটি কি করতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি যে, জাতিসংঘ সহ বৃহৎ রাষ্ট্রবর্গ বাংলাদেশের উপর চাপ সৃষ্টি করছে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার জন্য। অথচ অত্যাচারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে না। আবার শান্তি রক্ষী বাহিনী পাঠাচ্ছে না আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মত। এতে ধরে নেওয়া যায় যে, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক দাবাড়ুদের ইঙ্গিতেই মিয়ানমার সরকার এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। কারন? একটাই!! মার খাচ্ছে মুসলমানরা। ঐ অমুসলিম/বুদ্ধিষ্ট/নাস্তিক/হিন্দুরা সব সময় মুসলমানদের শত্রু ভাবে। তাই মুসলমানদের বিরুদ্ধে যদি কোন ঘটনা পায় তবে কুকুর যেমন হাড্ডি নিয়ে রাস্তায় কামড়া-কামড়ি করে ঠিক একইভাবে তারাও ঝাপিয়ে পড়ে। অপরদিকে প্রকৃত মুসলমানরা কখনই তাদের শত্রুভাবে না। ভাবে ওরা তো আমার ভাই। তাই তার দোষ খুজেঁ লাভ কি ? বিষয়টা খুব স্বাভাবিক, কেউ আপনার উপর আঘাত করলো, আপনি যদি তার আঘাতের পাল্টা উত্তর না দেন তবে আঘাত খেতে খেতে এক সময় আপনি দুর্বল হলে তার কাছে হেরে যাবেন, যেটা এখন মুসলমানদের ক্ষেত্রে হচ্ছে। কিন্তু মুসলমানরা যদি একবার পাল্টা আঘাত করতে পারতো, তবে দুষ্টুচক্র লেজ গুটিয়ে পালাতো। কিন্তু মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গীতেই ভুল, এ কারণেই সমস্যা। তারা মসজিদ ছেড়ে এখন মন্দিরে আর ফেসবুকে প্রার্থনা করে।
আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের কি হ’ল যে, তোমরা আল্লাহ্র পথে লড়াই করছ না? অথচ দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুরা প্রার্থনা করে বলছে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এই অত্যাচারী জনপদ হ’তে মুক্ত কর এবং আমাদের জন্য তোমার পক্ষ হ’তে অভিভাবক প্রদান কর এবং আমাদের জন্য তোমার পক্ষ হ’তে সাহায্যকারী প্রেরণ কর’ (নিসা ৪/৭৫)।

প্রত্যেক মুসলিম অন্তরে জিহাদের তামান্না রাখে,রাখা উচিত ,না হয় মুনাফেকী মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। নামাযের জন্যে যেমন শর্ত আছে ঠিক তেমনি জিহাদের জন্যেও শর্ত আছে। মসজিদের ঈমাম যে কেউই হতে পারে। জিহাদের ঈমাম যে কেউ হতে পারে না,জিহাদের ঈমাম অবশ্যই রাষ্ট্রে শাসক হতে হবে । আপনি জিহাদের ঈমামত আর নামাযের ঈমামত কে একাকার করে পেলেছেন। জিহাদের জন্যে জিহাদের ঈমামকে রাষ্ট্রীয় শাসক হতে হবে কেন জানেন ? মুজাহিদেরা অনেক মূল্যবান। মহান আল্লাহ মুজাহিদ ভাইদের মাধ্যমে ইসলাম কে রক্ষা করেছেন। এই মুজাহিদ ভাইদেরকে নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে,সেই জন্যেই জিহাদের ঈমামতের জন্যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থাকা শর্ত করা হয়েছে।তথাকথিত জিহাদী সংগঠন গুলোর কারণে কাফেরেরা এক ডিলে বহু পাখি শিকার করছে। দেখুন সৌদির নেতৃত্বে জিহাদ হচ্ছে,সেখানে কয়জন মুজাহিদ নিহত হয়েছে? হলেও খুবই সামান্য । আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাহীন তথাকথিত জিহাদে কয়জন তথাকথিত মুজাহিদ বেচে আছে ? যে কয়েকজন বেছে আছ,তাও মুসলমানদের রাষ্ট্র দখল আর কাফেরদেরকে তেল সাপ্লাই করার কারণে। কাফেরদের ভূখণ্ড মায়ানমার, ইসরাঈল, রাশিয়া বা ভারত দখল বা হামলা করলে দেখা যাবে ,কতক্ষণ টিকে থাকে। য়াই এস, দাইয়েস,তালেবান,বুকোহারাম,আল কায়েদা,জামাত ইখয়ানি ইত্যাদি সংগঠনের অস্তিত্ব টিকে আছে শুধু মুসলিম শাসকদের বিরোধিতা ও মুসলিম দেশগুলো অস্থিতিশীল করার কারণে। কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করে,দেখি কয় দিন অস্তিত্ব টিকে থাকে। তাই বলি তোমাদের কার্যক্রম জিহাদ নয়,ফাসাদ। কারণ এই ফাসাদের কারণে লাখ লাখ সাধারণ মুসলিম মারা যাচ্ছে। তথাকথিত জিহাদের নামে
(১) ইসলাম প্রিয় তরুণ যুবকদেরকে শেষ করে দিচ্ছে।
(২)মুসলিম রাষ্ট্র গুলিকে অস্থিতিশীল করছে।
(৩)কাফেরদের মুসলিম রাষ্ট্র থেকে ফায়দা লুটার পথ করে দিচ্ছে।

হে আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে প্রকৃত জিহাদ নছিব কর। আল্লাহর এই একান্ত আহবান অবিশ্বাসী-কাফের সুচি-মোদি-হুজিনতাওদের প্রতি নয়, বরং এ আহবান ইসলামে বিশ্বাসী মুসলিম রাষ্ট্রের শাসক ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাদের প্রতি। যার হাতে বর্তমানে আল্লাহ বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা অর্পণ করেছেন। এক্ষণে যদি আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করি, তাহ’লে আল্লাহর গযবে ধ্বংস হয়ে যাব। যে গযবের হাত থেকে ফেরাঊন-নমরূদরা বাঁচতে পারেনি। তাই শুধু আমরাই নই, বিশ্বের যে প্রান্তে যে মুসলমান বসবাস করছে, বিশেষ করে মুসলিম রাষ্ট্রনেতাগণ ও মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেরগণ এবং অর্থ-সম্পদের অধিকারী দেশের ব্যবসায়ী ও ধনিকশ্রেণী ও মানবতাবাদী সকল মানুষকে সর্বশক্তি নিয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানাই। সেই সাথে আমাদের সরকার ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের একান্ত আহবান, রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করুন!
সুশীলদের প্রতি অনুরোধ রোহিঙ্গাদের প্রতি অন্যায় মানুষের প্রতি অন্যায়। মুসলিমদের উপর নির্যাতন হচ্ছে না, রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। জাতিগত দাঙ্গা আর ধর্মীয় সহিংসতা এক নয়। বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভরশীল নিজের দৃষ্টিভঙ্গির উপর। মেহেরবানী করে এটাকে আপনাদের ইসলামী আন্দোলনের সাথে মিলিয়ে নিবেন না। তাইলে এই অসহায় জনগোষ্ঠীটি সারা দুনিয়ার মানুষের সহমর্মিতা হারাবে।
ফেসবুকে কিছু প্রশন ও উত্তরঃ
১। আমাদের দেশে সংখ্যালঘুরা কি নিরাপদ ?
উত্তরঃ
সংখ্যালঘুরা সব জায়গায় নির্যাতিত এটা চরম সত্য । তবে পার্শবর্তী দেশ মায়ানমার ও ভারত এর তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ ।তারপর ও আমার দেশের কিছু সুশীল বার্মার দাঙার সাথে আমাদের দেশের তুলনা করে দেখে অবাক হয় !!!! কিসের সাথে কি পান্তা ভাতে ঘি? গত কয়েকদিন ধরে রোহিঙ্গা সমস্যা বৃদ্ধির পর থেকে বাংলাদেশের নাস্তিক ও হিন্দুরা ‘রোহিঙ্গাদের তুলনা করছে বাংলাদেশের হিন্দুদের সাথে’। দাবি করছে- দু’টো দলই নাকি নির্যাতিত। ১৯৪২,১৯৭৮,১৯৯২,২০১২ তে-বার্মাতে হাজার হাজার লাশ পড়েছিল এই ২০১৬ তে ও আছে। আর বর্তমানে ও কি করুণ পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখতেছেন। তাছাড়া ভারতে ১৯৪৮ এ হায়দ্রাবাদ এ লাখ লাখ মুসলমানকে হত্যা, ১৯৯২ সালে সারা ভারত জুড়ে লক্ষ লক্ষ মুসলিম হত্যা, ২০০২ সালে গুজরাটে গণহত্যা , স্বাধীনতার পর থেকে ভারতে মুসলিম নিধনে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সংখ্যা প্রায় হাজার হাজার। অপরদিকে বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দু বিরোধী দাঙ্গার সংখ্যা কত ? কতজন হিন্দুকে দাঙ্গা করে হত্যা করা হয়েছে ? আপনি কি বার্মার মত গণলাশ দেখাতে পারবেন ? কাশ্মীরের মত গণলাশ দেখাতে পারবে্ন ? গুজরাটের মত গণলাশ দেখাতে পারবেন ? যদি না পারেন তবে দয়া করে শুধু কয়েকটা ভাঙ্গামূর্তি, ভাঙ্গা হান্ডি-পাতিল আর গালে হাত দেওয়া হিন্দু নারীর ছবি দেখিয়ে আলগা ইমোশন তৈরী করো না। কারণ সেটা এখন রাজনৈতিক কারণ বা নিজেদের দাঙাতে ও হয় । সবচেয়ে বড় কথা হল মসলিমদের বিনাঅপরাধে একটা কাফেরকে মারাও অনেক বড় অপরাধ। তাছাড়া আমাদের দেশে সব সংখ্যালঘুরা একজোট সাথে নাস্তিক, এন্টি ইসলামিক, সুশীল, সুবিধাবাদী মুসলিমরা নিজেদের জনপ্রিয়তার জন্য একজোট। এই দেশে প্রতিনিয়ত মুসলিমদের মারা হলে ও সেটা মিডিয়া ও সুশীলদের আলোকপাত করে না, কিন্তু কোন কারণে একজন সংখ্যালঘু যদি ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক কারণে ও নির্যাতিত হয় আর সেটা যদি কেউ ফেসবুকে ৪২০ নাম্বার বিপদ সংকেতে লাইক, শেয়ার ও কমেন্টের ঝড় উঠবে, অথচ বিভিন্ন কাফের দেশ ও নিজ দেশে যে অন্যায়ভাবে মুসলিমদের মারা হয় সেটা নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নাই।
২। মায়ানমার এর এমন দশা কেন? সেখানে সৌদি কি করছে?
উত্তরঃ
বার্মা,ফিলিস্তিন সিরিয়াসহ নির্যাতিত মুসলমান দের জন্যে কোন মুসলিম রাষ্ট্র কিছু করে থাকলে,একমাত্র সৌদি আরবই করছে। বার্মার নির্যাতিত মুসলিমদেরকে আশ্রয় দিয়েছে এবং বাঙালীদের ফেরত দিলে ও রোহিঙাদের ফেরত পাঠায় না। রোহিঙা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘে কথা বলছে। এর ছেয়ে তাদের বেশি কিছু কি করার আছে কারণ তারা মায়ানমার থেকে অনেক দূরে ।আর তাছাড়া শুধু যে তারা মুসলিম তা কিন্তু না আমরা পার্শবর্তী ৩য় মুসলিম রাষ্ট্র হয়ে আমরা কি করছি? তাদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত । রাষ্ট্রীয়ভাবে মায়ানমার সরকারকে কোন চাপ দিচ্ছি না ।
সমস্ত ব্লগ পড়তে নিচে ক্লিক করুন
ইউসুফ রানা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.