![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম
সাধারণত একজন মুসলিম যখন আর একজন কাফের বা অন্য ধর্মের অনুসারীকে দাওয়াত দেয় বা ইসলামের পথে আহব্বান করে সেটাকে তাবলীগ বলে । আর যদি একজন মুসলিম এক মসজিদ থেকে বের হয়ে আর এক মসজিদে গিয়ে তার মুসলিম ভাইকে দাওয়াতে কথা বলে সেটাকে বলা হয় তালীম । আসুন নিচে বিস্তারিত জেনে নিয়....
০১। তাবলীগী জামাআত কী?
তাবলীগ আরবী শব্দ যার অর্থ প্রচার করা। আর জামাআতও আরবী শব্দ যার অর্থ দল, সঙ্ঘ, সম্প্রদায় ইত্যাদি। অতএব তাবলীগ জামাআত অর্থ হলো প্রচারের দল। প্রচারকারী দল বিভিন্ন রকমের হতে পারে। ইসলাম প্রচারের দলকে ইসলামী তাবলীগী জামাআত অথবা দাওয়াতে ইসলামী’ নাম হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু দুনিয়ায় ইসলামের শত্রুরা তো বটেই এমনকি অনেক নামধারী ঈমানের দাবীদাররা ইসলাম শব্দটাকে সহ্য করতে পারে না, তাই মনে হয় তারা ইসলাম শব্দটি বাদ দিয়ে তাবলীগ জামাআত প্রচার করে তার নিসাব প্রতিষ্ঠা করার কৌশল অবলম্বণ করেছেন।
০২। তাবলীগী জামাআত কী প্রচার করে?
সার্বিকভাবে মূলতঃ তারা পূর্ণাঙ্গ ভাবে ইসলাম প্রচার করে না। তারা ইসলামের কথা মুখে বললেও মূলতঃ তারা মাযহাবের নামে ফিরকা ও তরীকার নামে তাসাউফের দিকে আহবান করে থাকে। ঈমানের দাওয়াতের নামে তারা মুলতঃ ওহাদাতুল ওজুদ অর্থাৎ সর্ব ইশ্বর বাদের দিকে আহবান করে যা মুলতঃ কুফর, মুসলমানদের সালাতের দাওয়াত দেন, সৎ কাজের উপদেশ দেন, ও অসৎ কাজ হতে দূরে থাকার আনুরোধ করেন। কিন্তু সমাজ সংস্কারের জন্য কুরআন জানা ও তাঁর বিধি-বিধানকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোন চেষ্টা করা হয় না। কুরআনকে শুধু তুতার বুলিরমত তিলাওয়াত পর্যন্ত সিমাবদ্ধ রাখা হয়। তাঁকে অর্থসহ জানা ও তাফসীর জানার প্রতি উৎসাহ তো দূরের কথা উপরন্ত আরো নিরুৎসাহীত করা হয়। বরং অত্যান্ত সজ্ঞানে ও কোশলে কুরআনকে মাসজিদ থেকে বের করার ইহুদী-নাসারার চক্রান্তে তারা সহযোগী বলে মনে হয়। কারণ মাসজিদ গুলোতে এখন কুরআনের দরস বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এখন মসজিদে ‘ফাযালেলে আ‘মলের’ তালিম হয়। আল-কুরআনের দরস তারা শুনতে চায় না বরং তারা বলে ১৫টি ভাষায় পারদর্শি না হলে কুরআন বুঝা সম্ভব নয়, এভাবে নানান অজুহাত দেখিয়ে তারা লোকদেরকে কুরআনের পথ থেকে নিবৃত করছে।
০৩। তাবলীগী জামাআতের প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি
হিন্দুস্থানের উত্তর পশ্চিম সীমান্তের একটি রাজ্যের নাম হবিয়ানা এখনকার পূর্বের নাম পাঞ্জাব। হিন্দুস্থানের রাজধানী দিল্লীর দক্ষিণে হরিয়ানায় একটি এলাকার নাম মেওয়াত। যার পরিধি দিল্লীর সীমান্ত থেকে রাজস্থান রাজ্যের জয়পুর জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মেওয়াতে (১৩০৩) হিজরীতে এক হানাফী সূফি বুজুর্গের জন্ম হয়। তাঁর ঐতিহাসিক নাম ‘‘আখতার ইলিয়াস’’। কিন্তু পরবর্তিতে তিনি শুধু ‘ইলিয়াস’ নামে পরিচিত হন। ইনি ১৩২৬ হিজরীতে দেওবন্দ মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাহমূদুল হাসান সাহেবের কাছে বুখারী ও তিরমিযী গ্রন্থদয় শ্রবণ করেন। তাঁর দু’বছর পরে ১৩২৮ হিজরীতে তিনি সাহারানপুরের মাযাহিরুল উলুমের শিক্ষক হন। ১৩৪৪ হিজরীতে তিনি দ্বীতীয় বারে হজ্জে যান। এই সময়ে মাদ্বীনায় থাকা কালীন অবস্থায় তিনি (গায়েবী) নির্দেশ পান যে, আমি তোমার দ্বারা কাজ নেব। অত:পর ১৩৪৫ হিজরীতে তিনি দেশে ফিরে এসে মেওয়াতের একটি গ্রামে ‘নাওহে’ তাবলীগী কাজ শুরু করেন। পরিশেষে ১৩৬৩ হিজরীর ২১ শে রজব মোতাবেক ১৩ই জুলাই ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন। (আবুল হাসান আলী রচিত ‘হযরত মাওঃ ইলিয়্যাস আওর উনকী দ্বীনি দাওয়াত, ৪৮, ৫৭,৬১ ও ১৯৩ পৃঃ, গৃহীত ইলিয়্যাসী তাবলীগ দ্বীন ইসলামের তাবলীগ পৃঃ ৯)
০৪। তাবলীগের উদ্দেশ্য কি ?
তাবলীগের উদ্দেশ্য অনেক মহৎ । তারা মানুষকে ভাল কাজের দিকে আহব্বান করে, মানুষকে ভাল ভাল কথা বলে, সালাত আদায়ের জন্য বলে এবং তারা নিজেরা ও সময়নুযায়ী সালাত আদায় করে । অথচ অনেক বড় আলেমরা ও দেখা যায় সঠিকভাবে সময়ানুযায়ী সালাত পড়ে না। কিংবা যোহর পড়লে ফজর পড়ে না। অথচ কাফির আর মুসলমানের মধ্য পার্থক্যকারী হচ্ছে সালাত। এই হাকীকাত বা বাস্তবতাকে কিভাবে অস্বীকার করা যায় যে, ছোট একটি তাবলীগী জামা‘আত দ্বীনের দা‘ওয়াত নিয়ে হিন্দুস্থানের বতী জনপদ (দিল্লীর) নিজামউদ্দ্বীন থেকে সর্বপ্রথম কাজ শুরু করে এবং পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন প্রত্যেক গ্রামে-গঞ্জে, জনপদে গাস্তের প্রচলন এবং রাতের বেলায় মাসজিদে কিয়াম (অবস্থান) বা শবগুযারী প্রসিদ্ধ। এছাড়া বাংলাদেশের রাজধানীর তুরাগ নদীর তীরে টুঙ্গির ইজতেমায় লক্ষ লক্ষ মানুষের যে গণজমায়েত, পাকিস্তানের শহর লাহোর সংলগ্ন রায়েবন্ডের ইজতিমায় যে জনসমুদ্র দেখা যায়, তা কোন দুনিয়াবী বা পার্থিব উদ্দেশ্যে জমা হয় না। বরং সকলের অন্তরে একটাই পিপাসা বা ব্যাকুলতা আর বাসনা। তা হল আমাদের রব আমাদের প্রতি খুশী হয়ে যাক এবং নাবী (সাঃ) -এর বারাকাতময় তরীকা আমাদের জিন্দেগীতে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই পথভোলা বা বিপথগামী মানুষগুলো যাতে পুনরায় সঠিক পথের সন্ধান পায় অর্থাৎ সিরাতে মুস্তাকিমের পথ পাক সেই জযবা বা আবেগ ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য তাদেরকে মাজবুর বা বাধ্য করে। স্বীয় মাল সম্পদ খরচ করা, নিজের বিছানা নিজে উঠানো, অলি-গলিতে আল্লাহর যিক্র করা এবং মুখালিফ বা বৈরীর সঙ্গে সদাচরণ ও সহানুভূতি, জযবায়ে ঈছার আত্মদান ও দ্বীনের জন্য ত্যাগ ছাড়াও এই ধরনের অন্যান্য সৎগুণ তাবলীগ জামা‘আতের সাথীদের মধ্যে পাওয়া যায়। এই জাতীয় গুণাবলী একজন মুসলিমের মধ্যে থাকা দরকার বা আবশ্যক। কিন্তু এই সকল গুণাবলী সত্ত্বেও একটি অত্যাবশ্যকীয় এবং মৌলিক বিষয়ে ভুল থেকে যায়, আর তা হল আক্বীদার সংশোধন বা বিশুদ্ধ আক্বীদাহ। আক্বীদাহ যদি সঠিক না হয়, তাহলে সমস্ত নেক ‘আমাল নিস্ফল হয়ে যায়। আর নেক ‘আমালের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে তাওহীদের বা একত্ববাদের উপর। কারণ তাওহীদ নেই তো কিছুই নেই।
০৫। তাবলীগী নিসাব পরিচিতি
তাবলীগী জামাআতের মূল গ্রন্থ হলো ‘তাবলীগী নিসাব’ তাবলীগ অর্থ প্রচার এবং নিসাব অর্থ নির্দ্দিষ্ট পাঠ্যসূচী অর্থাৎ তাবলীগী নিসাবে যা কিছু আছে তা তাবলীগের অনুসারীদের জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচি এবং পালনীয়। জামাআতের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইলিয়াস এর নির্দেশে ভারতেরই এক রাজ্য উত্তর প্রদেশের সাহারামপুর জেলার কান্ধেলাহ নিবাসী ও মাযাহিরুল উলুম সাহারানপুরের সাবেক শাইখুল হাদীস যাকারিয়া হানফী নয় খানা বই লেখেন উর্দু ভাষায়। বইগুলির সমষ্টিগত পূর্ব নাম তাবলীগী নিসাব এবং বর্তমান ফাযায়েলে আমাল নামে পরিচিত, নয়টি বই এর আলাদা নাম নিম্মরূপ- ১। হেকায়েতে সাহাবা। ২। ফাযায়েলে নামায, ৩। ফাযায়েলে তাবলীগ, ৪। ফাযায়েলে যিকর। ৫। ফাযায়েলে কুরআন, ৬। ফাযায়েলে রমাযান। ৭। ফাযায়েলে দরূদ। ৮। ফাযায়েলে হজ্জ। ৯। ফাযায়েলে সাদাকাত-১ম, ২য় খন্ড। পরবর্তীকালে কোন কারণ না দর্শিয়ে খলিফা ইহতিশামুল হাসান সাহেব রচিত ‘‘মুসলমান’’ কী পুস্তীকা ওযাহিদ ইলাজ’’ নামক বইটি সন্নিবেশিত করা হয়। গ্রন্থগুলি একত্রিত করে তাবলীগী নিসাব বর্তমানে দু’টি গ্রন্থের রূপ দেওয়া হয়েছে, ১ম টি ফাযায়েলে আমল যা ৮ খন্ডে মিলে একটি। আর দ্বিতীয়টি ফাযায়েলে সাদাকাত যা দু’খন্ডে মিলে একটি গ্রন্থ। দু’টি হচ্ছে আম বা অনির্দিষ্ট। এছাড়াও তাদের খাস বা নির্দিষ্ট দু’টি গ্রন্থ আছে একটি ইমাম নবভীর রচিত ‘রিয়াদুস সালেহীন’ যা শুধু আরবদের জন্য খাস বা নির্দিষ্ট গ্রন্থ। অন্যটি জনাব ইলিয়াসের পুত্র মুহাম্মাদ ইউসুফ কান্ধলভী প্রণীত ‘হায়াতুস সাহাবা’ সর্বমোট তাদের নিসাব গ্রন্থ ৫টি তার মধ্যে দুটি আসল বা আম আর দুটি খাস গ্রন্থ।
৩। গ্রন্থ চতুষ্টয়ের অবস্থা : সৌদি আরবের এক বিখ্যাত আলেম আবূ মুহাম্মাদ নাযযার ইবনে ইব্রাহীম আল জাররা বলেন, (ইলিয়াসী) তাবলীগী জামাআত তাঁদের দাওয়াতী কাজে তিনটি কিতাবের উপর নির্ভর করেন। তা হলো :
১। ইমাম নবভীর ‘রিয়াদুস সালেহীন’ যা শুধু মাত্র আরবদের জন্য নিদিষ্ট। (যেহেতু আরবরা জাল যঈফ হাদীস গ্রহণ করে না তাই তাদের জন্য এই বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থখানা যার মধ্যে অধিকাংশ হাসান ও সহীহ হাদীসের সমাহার ঘটেছে যদিও সামান্য কিছু দূর্বল হাদীস মুহাক্কীকদের নিকট ধরা পড়েছে।
২। মুহাম্মাদ যাকারিয়া কান্ধালভীর ‘তাবলীগী নিসাব’ বা বর্তমান ‘ফাযায়েলের আমল’ যেটি তাবলীগী জামাআতের আসল বই। যা ভারত উপমহাদেশসহ অন্য প্রায় দেশে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। এবং মাসজিদ গুলিতে কুরআন সুন্নাহর তা‘লীমের স্থানে ঐগ্রন্থদয় পঠিত হচ্ছে (ফাযায়েলে আমাল ও সাদাকাত) এই বই এর মধ্যে কুরআনের ও হাদীসের কিছু কথা থাকলেও তার অধিকাংশ অপব্যাখ্রায় ভরপুর। এবং অনেক কথা আছে যা আল কুরআন ও সহীহ হাদীসের সাথে সংঘষিক। এছাড়া গ্রন্থদ্বয়ে বহু জাল ও যঈফ হাদীস ছাড়াও ভ্রান্ত সূফিদের স্বপ্নের কিচ্ছা কাহানীর উদ্ভট তথ্য সহ অনেক শিরক বিদআত যুক্ত ভ্রান্ত আক্বীদার বিষয়ও রয়েছে। যা আমরা সংক্ষিপ্ত হলেও আপনাদের হাতের গ্রন্থটিতে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি।
৩। মুহাম্মাদ ইলিয়াসের পুত্র মুহাম্মাদ ইউসূফ কান্দালভী প্রনীত হায়াতুস সাহাবা। এর ত্রুটিও আগেরটির মতো মনগড়া কাহিনী এবং জাল ও যঈফ হাদীসে পরিপূর্ণ। (আকফাতুন মাআ জামাআতিত তাবলীগ, ৯-১০ পৃ:, বিয়ায ছাপা, ২য় সংস্কারণ, ১৪১০ হিজরী গৃহীত প্রাগুক্ত ১২ পৃ
০৬। বিশ্ব ইজতেমা কি ?
‘ইজতেমা’ শব্দের অর্থ সমাবেত করা, সভা-সমাবেশ বা সম্মেলন। ধর্মীয় কোন কাজের জন্য বহুসংখ্যক মানুষকে একত্র করা, কাজের গুরুত্ব বোঝানো, কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া এবং ব্যাপকভাবে এর প্রচার-প্রসারের জন্য বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করা ইত্যাদি বিষয়কে ইসলামের পরিভাষায় ইজতেমা বলা হয়। তাবলীগ জামা‘আতের বড় সম্মেলন হচ্ছে ‘বিশ্ব ইজতেমা’।
০৭। বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস কি ?
১৯৪৪ সালে প্রথম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার কাকরাইল মসজিদে। ১৯৪৮ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে এবং ১৯৫০ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে। ১৯৬৫ সালে টঙ্গীর পাগার নামক স্থানে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল খুব ছোট পরিসরে। এরই মধ্যে তাবলীগের কার্যক্রম বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে, শহর-বন্দরে, ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ইজতেমায় দেশি-বিদেশী বহু মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। ১৯৬৭ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার স্থান নির্ধারণ করা হয়। তখন থেকেই বিশ্ব ইজতেমা সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশের পরিণত হয়! ১৯৭২ সালে সরকার টঙ্গীর ইজতেমাস্থলের জন্য সরকারী জমি প্রদান করেন এবং তখন থেকে বিশ্ব ইজতেমার পরিধি আরো বড় হয়ে উঠে। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার এ জায়গায় ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয় এবং অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন ঘটায়। উক্ত ইজতেমার বিশেষ আকর্ষণ হল এই আখেরী মুনাজাত!
০৮। আখেরী মোনাজাত কি ?
মানুষ এখন ফরয ছালাত আদায়ের চাইতে আখেরী মুনাজাতে যোগদান করাকেই অধিক গুরুত্ব দেয়। আখেরী মুনাজাতে শরীক হবার জন্য নামাজী, বে-নামাজী, ঘুষখোর, সন্ত্রাসী, বিদ‘আতী, দুস্কৃতিকারী দলে দলে ময়দানের দিকে ধাবিত হয়। কেউ ট্রেনের ছাদে, কেউ বাসের হ্যান্ডেল ধরে, নৌকা, পিকআপ প্রভৃতির মাধ্যমে ইজতেমায় যোগদান করে। তারা মনে করে সকল প্রাপ্তির সেই ময়দান বুঝি টঙ্গির তুরাগ নদীর পাড়ে। মানুষ পায়খানা-পেসাব পরিষ্কার করেও সেখানে সওয়াবের আশায় থাকেন। এ যেন সওয়াবের ছড়া ছড়ি, যে যতো কুড়ায়ে থলে ভরতে পারবে তার ততোই লাভ। ট্রেনের ছাদের উপর মানুষের ঢল দেখে টিভিতে সাংবাদিক ভাইবোনগণ মাথায় কাপড় দিয়ে বার বার বলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আজ তাদের পাপের প্রাশ্চিত্ত করতে ছুটে চলছেন তুরাগের পাড়ে! পরের দিন বড় হেডিং দেখে যারা এবার যেতে পারেননি তারা মনে মনে ওয়াদা করে বসবেন যে আগামীতে যেতেই হবে। তা না হলে পাপীদের তালিকায় নাম থেকেই যাবে! এভাবে পঙ্গোপালের মতো এদের বাহিনী বড়তে থাকবে। এদের আর রুখা যাবে না। কেননা স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে, বিরোধীদলিয় নেত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণও সেখানে গিয়ে আঁচল পেতে প্রার্থনা করেন। টিভিতে সরাসরি মুনাজাত সম্প্রচার করা হয়। রেডিও শুনে রাস্তার ট্রাফিকগণও হাত তুলে আমিন! আমিন! বলতে থাকে। কি সর্বনাশা বিদ‘আত আমাদের কুড়ে কুড়ে গ্রাস করছে তা আমরাও জানি না! আরাফার মাঠে হজ্জ এর সময় লক্ষ লক্ষ লোক সমাগম হয়। সেখানে কেন সম্মিলিত মুনাজাত হয় না? যেখানে আল্লাহ নিজে হাযির হতে বলেছেন, যেখানে তিনি অগণিত মানুষকে ক্ষমা করে দেন। এই প্রশ্নের জবাব যারা বুঝতে চেষ্টা করেছে তারাই বুঝতে পারবে কেন বিশ্ব ইজতেমা বিদ‘আত? সম্মিলিত মুনাজাত এর কারণেই বিশ্ব ইজতেমা বিদ‘আত। যদি আখেরী মুনাজাত না হত তবে অন্তত বলা যেত ইসলামিক আলোচনার জন্য বিশ্ব ইজতেমা। তাছাড়া এই ইজতেমা বিদ‘আতী কিতাব থেকে বয়ান করা হয়। অনেকে আবার এই ইজতেমাকে ২য় হজ্জ বলে উল্লেখ করেন! (নাঊযুবিল্লাহ)।
০৯। বিশ্ব ইজতেমা বিদাত কেন?
আরাফার মাঠে হজ্জ এর সময় লক্ষ লক্ষ লোক সমাগম হয়| আরাফার মাঠে স্বয়ং আল্লাহ হাজির হতে বলেছেন| আরাফার মাঠে কেন সকলে সম্মিলিত মুনাজাত করে না? যেখানে আল্লাহ নিজে হাজির হতে বলেছেন , যেখানে আল্লাহ অগণিত মানুষকে ক্ষমা করে দেন সেখানে কেন সকলে একসাথে মুনাজাত ধরে না? এই প্রশ্নের জবাব যারা বুঝতে চেষ্টা করেছে তারাই বুঝতে পারবে কেন বিশ্ব ইজতেমা বিদাত| সম্মিলিত মুনাজাত এর কারণেই বিশ্ব ইজতেমা বিদাত| যদি আখেরী মুনাজাত না হত তবে অন্তত বলা যেত ইসলামিক আলোচনার জন্য বিশ্ব ইজতেমা| তাছাড়া এই ইজতেমা বিদাতি কিতাব থেকে বয়ান হয় যদিও সহিহ কথাও কিছু বয়ান হয়| এখানে তিন দিন একাধারে অবস্থান করা অনেকটা হজ্জ এর সদৃশ| আপনি বলবেন এটাকে হজ্জ এর সাথে তুলনা করছেন কেন? আমরা বলি আপনি হজ্জ এর সদৃশ এমন জমায়েত বানালেন কেন? আপনি তিন দিন, পাচ দিন, সাত দিন, একদিন এমনভাবে বানাতেন! অনেক মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা পৌছে যাচ্ছে| অনেকেই মনে করছেন এই ইজতেমায় বসলে আসলে সওয়াব আছে| আসলে আছে গুনাহ| কারণ বিদাতি কাজে সহযোগিতা সওয়াব নয় বরং গুনাহ| কারণ বিদ‘আতীদের সঙ্গ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। বিদ‘আতী লোকেরা ক্বিয়ামতের দিন হাউয কাওছারের পানি পান করতে পারবে না (ছহীহ মুসলিম হা/৪২৪৩)।
পত্রিকাগুলো খুলে দেখলেই পাবেন সাংবাদিকরাই শিক্ষিত লোকেরাই বলছে মুসলিম উম্মাহের ২য বৃহত্তম জমায়েত| ধর্মের মধ্যে এই ২য জমায়েত বানানো হলো কেন? বুঝার বিষয় আছে এখানে| ধর্ম নিয়ে ভালো কথা বললেও অনেক সময় গুনাহের কারণ হয়ে যায়| নামাজ পড়া ভালো কাজ অজু ছাড়া নামাজ কি ভালো কাজ? রোজা রাখা ভালো কাজ কিন্তু রাত্রেও যদি কেউ রোজা রাখে ? এতে কি সওয়াব হবে না গুনাহ হবে? বুঝতে হবে| হুট হাট কথা শুনেই মাথা আওলিয়ে ফেললে নিজেরই ক্ষতি|
তাহলে ওমর (রা কেন জামায়াতে তারাবিহ এর সালাত নিয়ে বললেন, ''এত সুন্দর বিদাত''?
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বুঝার চেষ্টা করতে হবে| রামাযানের প্রতি রাতে নিয়মিত জামা‘আতে তারাবীহ পড়াকে অনেকে বিদ‘আত মনে করেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মাত্র তিনদিন জামা‘আতে তারাবীহ পড়েছিলেন আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৯৮ ‘রামাযান মাসে রাত্রি জাগরণ’ অনুচ্ছেদ-৩৭। দেখেন রাসুল (সা কিন্তু তিন দিন জামাতে তারাবিহ পড়ে দেখিয়ে দিয়েছেন| ফরজ হয়ে যাওয়ার আশংকায় তিনি আর জামাতে সকলকে নিয়ে পড়েন নি |
এবং ওমর ফারূক (রাঃ) নিয়মিত জামা‘আতে তারাবীহ চালু করার পরে একে ‘সুন্দর বিদ‘আত’( ﻧِﻌْﻤَﺖِ ﺍﻟْﺒِﺪْﻋَﺔُ ﻫٰﺬِﻩِ ) বলেছিলেন। বুখারী হা/২০১০; ঐ, মিশকাত হা/১৩০১ অনুচ্ছেদ-৩৭; মির‘আত হা/১৩০৯, ৪/৩২৬-২৭।
এর জবাব এই যে, তিনি এজন্য বিদ‘আত বলেন যে, এটিকে রাসূল (ছাঃ) কায়েম করার পরে ফরয হওয়ার আশংকায় পরিত্যাগ করেন।মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২৯৫ ‘রামাযান মাসে রাত্রি জাগরণ’ অনুচ্ছেদ-৩৭; আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৯৮।
১০। ইলায়াসী তাবলীগ বনাম রাসূলের তাবলীগ এর পার্থক্যসমূহ জানতে লিংকে ক্লিক করুন
১১। তাবলীগী জামঅাতের সমস্ত কিচ্ছা কাহিনী ও কবর পুজার ঘঠনার রেফারেন্স ও দলিল সহ জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন
১২। তাবলীগের কোন বইয়ের কত পৃষ্ঠায় কি শিরক আছে তা জানার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন
১৩। তাবলীগ জামাতের গোঁমর ফাঁস এর কিছু প্রমাণ
১৪। তাবলীগ জামা'আতের কিতাব “ফাযায়েলে আমাল” সম্পর্কে শায়েখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদের ফতোয়া
১৫। বিশ্ব বরেণ্য আলেমদের দৃষ্টিতে তাবলীগ জামাত ও ফাযায়েলে আমল - সঊদী অরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের সদস্য শাইখ সালেহ বিন ফাওযান (রহঃ) নিষিদ্ধকরন ফতোয়া
১৬। তাবলীগে চিল্লা দেওয়া ও পুর্ব অভিজ্ঞতার বর্ণণা পড়ার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন
১৭। ফাজায়েলে আমল বা তাবলীগী নিসাব সম্পর্কে #ডাঃ_জাকির_নায়েক এর মতামত নিম্নরূপঃ
১৮। তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের ''মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের'' ভ্রান্ত বক্তব্যঃ
১৯। তাবলীগ এর কিতাবগুলোতে কি কি শিরকি কথা আছে তা কিতাবের ছবি সহ দেখার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন
২০। ফাযায়েল আমল ডাউনলোডের লিংক দেওয়া হল । যাচাই করুন
২১। নিচে যাচাই করার জন্য সহীহ হাদীসসমুহ ডাউনলোডের ২ টি লিংক দেওয়া হল
তাবলীগ জামাত ভাল কিছু করে এটা যেমন সত্য তেমনি তাদের আকীদা বা ফাযায়েল আমলে শিরক আছে এটা ও সত্য । আমি চেষ্টা করেছি তাবলীগের মুল জিনিসগুলো খুব গুছালোভাবে উপস্থাপন করতে । আসলে শুধু তাবলীগের খারাপ দিক তুলে ধরা আমার উদ্দেশ্য ছিল না । তাই ভাল খারাপ ২ টাই তুলে ধরেছি। আমি ছেয়েছি বাস্তব ও দলিল ভিত্তিক কিছু কথা উপস্থাপন করতে । কতটুকু সফল হয়েছি জানি না । তবে চেষ্ঠা করেছি । যেহেতু মানুষ ভুল করে সুতরাং আমার ও অনেক ভুল হতে পারে। আপনারা আমার ভুলগুলি আংগুল দিয়ে ধরিয়ে দিলে খুশি হব । কারণ আমি ভুল সংশোধনের জন্য যে কোন মুহুর্তে প্রস্তুত । তবে দয়া করে সম্পুর্ণ শেষ না করে তর্কে লিপ্ত হবেন না । আর আমি যা লিখছি তা বমানতে হবে বলে কোন কথা নাই । শেষের দিকে ফাযায়েল আমল সহ বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থের লিংক দেওয়া আছে । আপনারা নিজেরাই মিলিয়ে নেন । কারণ আর একজনের উপর নির্ভর করে আর কতদিন । যদি তাতে ও সমস্যা হয় তাহলে যে কোন মসজিদে ফাযায়েল আমল সহ অন্যন্য হাদীস গ্রন্থ পাওয়া যায় । আর যদি এতে ও সমধান না হয় তাহলে আমার সাহায্য নিতে পারেন । যে কোন হাদীস গ্রন্থ লাগলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারেন বা লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন । আমি কোন দল করি না । সুতরাং আমি কোন দলের বিরোধীতা ও করি না । তবে আমি সবসময় শিরক আর বিদাত বিরোধী । যেহেতু শিরক ক্ষমার অযোগ্য তাই সেটা কখন ও মেনে নেওয়া সম্ভব না । তাই অনুরোধ করছি একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পড়ুন এবং আপনার মতামত বা পরামর্শটা আমাকে জানান । আশা করি কুরান হাদীসের বিরোধী কোন মত না হলে আমি খুব সহজে মেনে নিব । এক সাপ্তাহ ধরে অনেক কাজ বাদ দিয়ে লিখতে বসেছি । যদি মনে করি যে একজন ভাইকে হলে ও শিরক মুক্ত করতে পারলে ও লিখাটা সার্থক । সবাই দোয়া করবেন আর ও কার ও মতের বিরুদ্ধে গেলে ক্ষমা করবেন ।
https://www.youtube.com/watch?v=HFEv7OfTlUg
©somewhere in net ltd.