নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ আমি আমার কেন পাখির মত মন

রশীদ আবরার িরয়াদ

পাখি আমি আমার কেন মানুষ মানুষ মন?

রশীদ আবরার িরয়াদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

র‍্যাগ এবং একজন পুরুষ মানুষের জীবন

২৫ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:৪২

বাঙালীদের জীবনে সব চেয়ে বড় র‍্যাগের মৌসুম হচ্ছে বিবাহ পরবর্তী সময়। বিবাহ পরবর্তী জীবন হচ্ছে একটি চলমান র‍্যাগ কেন্দ্রিক জীবন ব্যবস্থা। যেমন ধরেন বিবাহের পূর্বে কন্যা পক্ষের লোক জন এসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখবে আপনার শারীরিক জিনিস পত্র সব ঠিক ঠাক আছে কি না,কোন কিছুতে ডিফেক্ট আছে কই না।ছেলে বিড়ি সিগারেট খায় কি না,ছেলের ঠোঁট কালো কি না।ভার্সিটি লাইফে আমরা যারা র‍্যাগের শিকার আমরা জানি র‍্যাগের নিওম ই হচ্ছে “আপনি যে দিকেই যাবেন সেদিকেই বাঁশ খাবেন” । র‍্যাগের এমন নীতিতে ঠোঁট কালো হলে ছেলে সিগারেট খায় আর লাল হলে লিপস্টিক খায়(চীন আবার ফ্লেবার যুক্ত লিপস্টিক বানানো শুরু করছে। তারা বুঝে গেছে মেয়েদের ঠোঁটের লিপ্সটিকের শেষ পরিণতি আসলে কোথায়)।

যাই হোক ছেলে হলে এই সব টুক টাক ব্যাপার ছাড়া তেমন কোন জটিলতা নাই। মেয়ে হলে বিপদ আছে। বরপক্ষ অতি উৎসাহী হলে গাইনী ডাক্তারের শরনাপন্ন পর্যন্ত হতে পারে। যাই হোক এই ব্যাপারে পরবরতীতে পোস্ট দিব। আমি আমার কন্যা দেখার সময় কি কি করিবো সেটা বলা হইবে। সব কিছু চিন্তা ভাবনা করে রাখতেছি। দিন দুনিয়া খারাপ। একটা বেনসনের দাম এগারো টাকা।কিছু দুস্টু প্রকৃতির দোকানদার বার টাকাও নেয়। আগের মত নয় টাকা দিয়ে কিনে এক টাকায় একটা লজেন্স আর চাইলেও চুষে খাওয়া যায় না।উলটা এক টাকা দিতে হয়।আফসোস। বিরাট আফসোস।

টপিকে ফিরে আসি। বিবাহের দিনে আপনার সুন্দরী প্রিয়তমা শ্যালিকারা যখন আপনাকে ঘিরে ঢলা ঢলি করবে এবং আপনি নির্মল আনন্দ উপভোগ করবেন এবং আপনার বারবার মনে হবে এদের ছেড়ে আপনি কোন ভুলে পাশে বসা পেত্নিকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন ঠিক তখনই ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন আপনার পাশে বধূ বেসে বসে থাকা সেই ফুলন দেবী কৃত্তিম হাসি দিচ্ছে। পৃথিবীতে সব চেয়ে ভয়ানক দশটা ব্যাপারের যদি লিস্ট করা যায় তবে তাতে প্রেমিকা/বউ এর কৃত্তিম হাসি অবশ্যই থাকিবে। এর চেয়ে ভয়ানক ব্যাপার আর কিছু নেই। এবং তার এই কৃত্তিম হাসির প্রতিক্রিয়া বাসর রাত থেকে আপনার উপর প্রভাব ফেলা শুরু করবে।

শ্যালিকাদের সাথে যদি বেশি ইটিশ পিটিশ করেন তবে ঝড়ের সম্ভাবনা আছে।

- এই অনন্যা যখন তোমার পাশে বসে কথা বলতেছিল তখন ওর হাত ধরেছো কেন? কি? হাত না ধরলে ভাল লাগে না? সুন্দরী দেখলে মাথা ঠিক থাকে না? বিয়ের আগে কতজনের হাত ধরা হয়েছে শুনি?
- হাত ধরি নাই। হাত ধরলাম কই?
- ওহো। এখন তো মনে থাকবে না। আমি নিজের চোখে দেখছি তোমার ডান হাতের অনামিকা আঙুল ওর হাতে লাগছে।
- এটাকে হাত ধরা বলে?
- এটাকে হাত ধরা বলে না? আরও ভাল মত হাত ধরা লাগবে? এই ইচ্ছা তোমার মনে? ডাকবো অনন্যাকে? অন্যনা...অনন্যা...


তারপর বিবাহ পরবর্তী র‍্যাগ শুরু। বউ বলিবে “আজকে বাপের বাড়ির সবার সাথে পরিচিত হয়ে আসবা। সালাম দিবা। তোমার তো আবার সালাম দেয়ার অভ্যাস নাই।”
-কে বলছে নাই? আজকে সালাম দিয়ে সব কিছু ভাসায় দিব। আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহে ওয়া বারাকাতুহ। আব্বাজান ভাল আছেন? পাইলসের ব্যাথা কমেছে?
-ফাজলামি কর তুমি আমার সাথে? সব কিছু তোমার কাছে ফাজলামি? পুরা সালাম দেয়ার দরকার নাই। ঠিক মত ভদ্র ভাবে সালাম দিবা। শার্টের বোতাম খোলা ক্যান? বোতাম লাগাও। চুলের অবস্থা এই রকম ক্যান? দাড়ি কাটাও নাই ক্যান? দেবদাস? তুমি দেখাতে চাচ্ছো তোমার বউ তোমাকে খুব জ্বালায়? হুম?
- নাহ। আমার বউ খুব ভাল। একটুও জ্বালায় না। এমন বউ ঘরে ঘরে দুইটা করে দরকার। যাতে একটা চলে গেলে আর একটা থাকে।
- কি বললা? কি বললা তুমি?

এই “কি বললা” এর রিপ্লাই দেয়ার সাহস শুধু মাত্র বীরপুরুষদের থাকে। বাকিরা “কিছু বলি নাই” বলে চালায় যায়।

এমনি ভাবে বউ এর বাবা-মা থেকে শুরু করে বোন,ভাই,চাচা,ফুফু,খালা,নানা,নানি,ফুফাতো ভাইয়ের জ্যাঠতো ভাই, দূরসম্পর্কের মাসতুতো ভাই এর পিসতোতো নানীর সাথেও আপনার নিজে গিয়ে পরিচিত হয়ে আসা লাগবে এবং সবাই আপনাকে সার্কাসের জোকারের মত ট্রিট করে লেম লেম জোকস বলবে এবং সেটা শুনে আপনাকে আবার হাসতেও হবে আবার বেশি হাসাও যাবে না। বেশি হাসলে বউ রাগ করবে। বউ রাগ করলে বিপদ আছে। সব মিলিয়ে আপনি অতল সাগরের মাঝে থাকবেন।

অনেক আত্মীয় স্বজন আবার ডাইরেক্ট অপমান করবে। বিশেষ করে গ্রামের আত্মীয়।

- শুনলাম জামাই বাবাজি ডাক্তার। অতি উত্তম। তা বাবা আমার শরীর ভাল না। ম্যাজিম্যাজানি ব্যারাম। অনেক ডাক্তার দেখাইছি লাভ হয় না। এখন তো ডাক্তার ঘরের মধ্যেই। দেখো তো কি করা যায়।
- বাবা আমি ওই ডাক্তার না। আমি ফিজিক্সে পিএইচডি।
- ওহ

এমনভাবে “ওহ” বলবে যে আপনি যে একটা ভুয়া ডাক্তার এটা খুব ভাল মত সে বুঝতে পারছে। ডাক্তার চিকিৎসা জানে না এ কেমন ডাক্তার?এ কার হাতে কন্যা তুলে দিলাম?

- তা জামাই এর বেতন কত? দেশে চাকরীর অবস্থা তো খুব একটা ভাল না।
- ইয়ে মানে...ত্রিশ হাজারের মত।
- ডাক্তার হয়ে ত্রিশ হাজার?(ভুয়া ডাক্তার প্রমাণিত) আমাদের নুরুল কসাই এর ব্যাটা তো ট্রাক চালায় চল্লিশ হাজার আয় করে। তা বাবা ঘুস টুশ নাই? হে হে হে
- আব্বাজান আমাকে প্রকৃতি সুরেলা কন্ঠে ডাক দিতেছে। একটু আসি?
- আচ্ছা যাও। কি আর করবা? বাঙালি দুইটা কাজ ই ভাল পায়। হাগামুতা করা আর বাচ্চা পয়দা করা। আফসোস।

যাই হোক বিবাহ করেন। র‍্যাগ খান। পৃথিবীতে পুরুষ হয়ে জন্ম নিয়েছেন। কি আর করবেন বলেন?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.