![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অর্ণব। রম্য গল্প লিখতে ভালোবাসি। নিজে সবসময় হাঁসি খুশি থাকি এবং অন্যদের রাখার চেষ্টা করি।
আন-নো নাম্বার থেকে কল আসতেই রিসিব করে জিজ্ঞেস করলাম, "হ্যালো কে বলছেন?
.
অমনিই ওপাশ থেকে মধুর কন্ঠে এক ললনা উত্তর দিলেন, "জ্বী আমি অনন্যা। আপনি অর্ণব বলছেন?
.
ললনার কথা শুনে শরীর কেমন ঢিংকাচিকা ঢিংকাচিকা নাচ দিয়ে উঠলো। মনে মনে কইলাম, "অবশেষে আমারো মনে হয় একটা হিল্লে হলো
.
তো আমিও দু হাতে মোবাইলটা আলতো করে কানের সাথে টিপে ধরে উত্তর দিলাম, "জ্বী জ্বী আমিই অর্ণব
.
"আপনার বাবা কি করে?
.
প্রশ্নটা শুনে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো।কোথায় প্রথমে দুজন দুজনার একটু জানা শুনা হবে, একটু মধুর আলাপ হবে তা না উনি আমার বাপের চাকরি হাতাইছেনে। লোভী মেয়ে কোথাকার হু। তো বললাম, "কেন? বিয়ের পর কি আমার বাবা আপনাকে খাওয়াবে? নাকি আমি খাওয়াবো?
.
"সরি কি বললে বুঝলাম না।
"না বুঝার মত কিছু বলিনাই হু।অভিমানি কন্ঠে উত্তর দিলাম।
"বলুন আপনার বাবা কি করেন?
.
বুঝলাম মেয়ে যেহেতু লোভী সেহেতু প্রেমে ফেলানোর ক্ষেত্রে এই লোভটাকেই টোপ হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। তো বললাম, "ব্যাংকে চাকরি করে। ম্যানেজার
.
"বাৎসরিক ইনকাম কত?
"কত আর হবে এই ধরেন ৯-১০ লাখ। চলবে?
"চলবে মানে?
"নাহ কিছুনা
"তো আপনারা কয় ভাই বোন?
"আমার ছোট বোনের একমাত্র আদরের বড়ভাই আমি।
"সুখি ফ্যামিলি।
"হ্যা আপনিও খুব সুখে থাকবেন এখানে।
"কি বললেন?
"ক কই কি কিছু নাতো.
"আপনাকে ফোন করার উউদ্দেশ্য কি জানেন?
"নাতো।
"আপনি একটা প্যাকেজ জিতেছেন প্রতি ৬ মাসে ব্যাংকের মাধ্যমে ৪৮০০ টাকা পাওয়ার। সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে বিকাশের মাধ্যমে ৫০০ টাকা পে করতে হবে।
.
এবার ১০০% শিওর হয়ে গেলাম এ মেয়ে একটা ধান্দাবাজ। তো দিলাম এক গালি, "সালির বেটি সালি, আমার লগে ধান্দাবাজি? মাইয়া হইয়া এসব করোস লজ্জা লাগেনা? তোর ঐ টাকা তোর ব্যাক সাইডে লোড দিবো। মানুষ চিনোস?
.
ললনা বললো, "দেখুন আপনি কিন্তু না জেনে বুঝে খারাপ ভাষা ব্যবহার করে ঠিক করছেন না।
.
"আরে রাখ তো ঠিক বেঠিক। কথা শুইনা তো ভালো ঘরের মাইয়াই মনে হয়। অবশ্য এসব ধান্দায় কথাবার্তা এমনেই বলা লাগে, আগেও পরছি তো তাই জানা আছে। তো এই ধান্দায় কতদিন?
.
টু টু টু টু
.
ললনা ফোনটা কেটে দিলো। বুঝলাম বেচারি ধরা খেয়ে কথার লোডটা নিতে পারেনি। এদিকে আমিও চরম ছ্যাঁকা খেয়ে বেকা হয়ে গেলাম। ইস ভাবছিলাম, অবশেষে প্রিয়তমার দেখা পেলাম বুঝি। কিন্তু কথায় আছে ফাটা কপালে আঠা লাগেনা। আমার অবস্থাটাও হল তেমন। যত যা চোর বাটপার সব আমার কপালে
.
যাকগে, একরাশ বিরহ বুকে নিয়া পরের দিন কলেজে গেলাম। প্রথম ক্লাসের পর ২য় ক্লাসে স্যার রুমে ঢুকলেন। বললেন, "গতকাল কার কার নাম্বারে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে ফোন করে পরিবারের খবরা-খবর নিয়েছে?
.
কথাটা শুনে কেমন খটকা লাগলো। ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে মানে? আমি কিছু বলার আগে পাশে থেকে কয়েকজন হাত তুললো। বললো, "স্যার স্যার আমায় দিছিলো এক আপায়।
.
স্যার বললো, "যাদের যাদের নাম্বারে ফোন করেছে তারা সবাই সেমিস্টার ভিত্তি ৪৮০০ টাকা বিত্তি পেয়েছে। তো তোমরা ঠিক ঠিক উত্তর দিয়েছোতো? বলেছো তো গরীব এবং পরিবারের সদস্য অনেক তাই খরচ বহন করা সমস্যা হয় বাবার?
.
সবগুলা পাশে থেকে চিৎকার দিয়ে উঠলো, "জ্বে স্যার, জ্বে স্যার বলছি।
.
এদিকে আমি ভেজা বেড়াল হয়ে কাঁচুমাচু করে ঘাপটি মেরে আবুল হয়ে হা করে বসে রইলাম, "হায় হায় করছিডা কি আমি?
©somewhere in net ltd.