নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাঁসি খুশি বিনোদন, এটাই আমার জীবন।

Raz Arnob

আমি অর্ণব। রম্য গল্প লিখতে ভালোবাসি। নিজে সবসময় হাঁসি খুশি থাকি এবং অন্যদের রাখার চেষ্টা করি।

Raz Arnob › বিস্তারিত পোস্টঃ

কপাল কপাল, সবই কপাল।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৪

সেদিন কানে হেটফোন গুজে ডিংকাচিকা ডিংকাচিকা গান শুনতে রাস্তা দিয়ে হাঁটতেছিলাম। চক্ষু দৃষ্টি ছিলো চতুস্কোণ মোবাইলের দিকে। ভদ্র ছেলেরা চোঁখ উপর দিকে দিয়ে হাঁটে না তাই এই ব্যবস্থা। কিছুদূর যেতেই কপালগুণে এক ললনার সাথে খেলাম ইয়া জোড়ে ধাক্কা। কিছু বুঝে উঠার আগেই ললনার হাতের সাথে আমার গালের চম্বুকীয় আকর্ষনের ফলে চড়াৎ করে শব্দ হয়ে উঠলো। হেটফোন খুলে গিয়ে পরলো প্রায় পাঁচ হাত দূরে। ললনা বিকট জোরে চিৎকার করে বললো- লুচ্চা হারামি ঘরে কি মা বইন নাই? মেয়ে দেখলেই ধাক্কা খেতে ইচ্ছা করে না? বদমাইশ……
.
আমি ঐদিকে কান দিলাম না। আবুল হয়ে গালে হাত দিয়ে ভিতরের দাঁত গুনার চেষ্টা করলাম,“বত্রিশটা ঠিক আছে কিনা।দেখলাম, না ঠিকই আছে। একটাও পরেনি। তবে দু একটা নড়বড় হলেও হতে পারে। ললনা কিছুক্ষন আমার দিকে রক্ত গরম চোঁখে তাঁকিয়ে থেকে ভুদভুদ করে হেঁটে চলে গেলো। আমি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে থেকে ভাবলাম, “মাথা নিচু কইরা হাঁটাও দেহি বিরাট সমেস্যা। ভালা মানুষের দাম নাইরে অরনইব্বা। প্রতিশোধ নেয়া লাগবো। চরম প্রতিশোধ…..
.
আজ প্রায় দুই মাস পরে সেই ললনার সাথে কাহিনির ঠিক উল্টা করে দেখা। আমি খোলামেলা রাস্তার এক পাশে দাড়িয়ে হাওয়া বাতাস খাচ্ছিলাম। অমনি সেই ললনা কোথা থেকে উধাও হয়ে এসে চিৎপটাং হয়ে পরলো গায়ের উপর। আমার চিনতে বিন্দু পরিমাণ ভুল হলোনা,“এটা সেই ললনা।ভুল হওয়ার কথাও না। কেননা, আর যাইহোক দজ্জাল এই মেয়েকে ভুলে যাওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা। অমনি আমিও ললনাকে শরীর থেকে দাক্কা মেরে সরিয়ে বিদ্যুৎ বেগে চড়াৎ করে চর একটা বসিয়ে দিয়ে বললাম,“ ঘরে কি বাপ ভাই নাই? ছেলে দেখলেই গায়ে পরতে ইচ্ছা হয় না? বেয়াদ্দপ মাইয়া…..
.
ললনা আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাঁকিয়ে রইলো। চোঁখ দিয়ে পানি বের হওয়ার উপক্রম। বেচারার দিকে তাঁকিয়ে বড্ড মায়া হলো, ইস কি মায়াবী চোঁখ। কি সুন্দর গাল। এত সুন্দর টসটসে গালে কেমন পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ বসে গেছে। যা মোটেই মানাচ্ছে না। প্রতিশোধ নেয়াটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। কিন্ত কে জানতো এই চর-ই যে আমার জীবনে ঘূর্ণিঝড় হয়ে দেখা দিবে? অমনি ললনা পিছনের দানবের মত ছেলে দুইটা আমার উপর বাঘের মত ঝাপিয়ে পরলো, “হারামি তোর কত্তবড় সাহস আমাগো সামনে আমাগো বইনেরে মারোস। মার মাতারিরে মার। আর কি দেড়ি আছে? পরতে শুরু হলো একের পর এক উষ্ঠা কিল গুতা বাপরে। আমি তো হাতে পায়ে ধইরা কানতে কানতে অস্থির- এ ভাই ভুল হইয়া গেছে। চরম ভুল হইয়া গেছে। ছাইড়া দে মোরে ছাইড়া দে….
.
কে শুনে কার কথা? পরছে তো পরছেই। আধ মরা করে উপুত করে ছেড়ে দিয়ে অবশেষে বললো,“ বাইচা গেলি বোইনে ছাড়তে কইলো দেইহা। নইলে তোরে আজ মাইরাই ফালাইতাম । চল বইন চল.....................
.
দানব দুইটা বইনরে নিয়ে চলে গেলো। আমি মনে মনে বললাম, "ঐদিন নিজে ভুল বসে ধাক্কা খাইয়া মাইর, আর আইজ হেতি উল্টা ধাক্কা দিয়া তাতেও মাইর। জোর যার মুল্লুক তার। এ কেমন বিচার? যাইহোক, অতি কষ্টে শুয়া থেকে উঠে কুয়াতে কুয়াতে বাসায় আসতেই বাপের সাথে দেখা। বাপে বললো,“ কিরে তোর ফেইস কাটিং দিলদারে মত দেহা যায় ক্যান? কার লগে মারামারি করছোস?
.
আমি কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম। রুমে আসতেই ক্রিং ক্রিং করে ফোন বেঁজে উঠলো। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বললো,“ আব্বু রিসিভ করলা কেন? ফোনে টাকা নেই তারাতারি ব্যাক করো....টুট টুট টুট
.
মেয়ের মুখের মধুর আব্বু ডাক শুনে ব্যথা সব ভুলে গিয়ে ফোন ব্যাক করলাম- কি আম্মু? কি হয়েছে বলো...
.
ওপাশ থেকে বিকট চিৎকার ভেঁসে আসলো,“ ঐ হারামি কে তোমার আম্মু?
.
“ছিঃ বাবাকে হারামি বলতে নেই আম্মু। ‍পাপ হয় পাপ। তুমি না ফোন ব্যাক করতে বললা?
“কিহহহ তুমি বিয়ে করছো? আবার মেয়েও আছে?
“হ্যা তুমিই তো আমার মেয়ে আম্মু..
“হ্লা লুচ্চা বদমাইশ। এতদিন প্রেম কইরা বউ বউ কইরা এখন মেয়ে বানাই দিলি? যা ফহিন্নি তোর সাথে ব্রেকাপ টুট টুট টুট...
.
ফোনের স্কিনের দিকে তাঁকাতেই মাথায় এবার আকাশ ভেঙে পড়লো। ওহ আল্লাহ রিসিভ কলের নাম্বারে ফোন ডুকাইতে গিয়া, ভুলে মিস কলে থাকা গার্লফ্রেন্ডের নাম্বারে কল ডুকাই দিছি। এখন কি হবে? হঠাৎ করে মনে পরলো, আয় হায় আমিতো বিয়াই করি নাই। আমার মাইয়া আসলো কই থাইকা? বুঝলাম, মাইরে লোডটা শরীরে নিতে পারেনি। একটু বেশিই হয়ে গেছে, তাই মাথায় উল্টাপাল্টা কাজ করছে। তারচেয়ে বড় কথা আব্বু ডাক শুনে একটু বেশিই আবেগে পরে হায় মাতাল হয়ে গেছি। তো দিলাম রিসিভ কলে থাকা নাম্বারে ফোন- এই যে হ্যালো, বিয়া করলাম না। অাপনি ডাউনলোড হইলেন কই থাইকা ?
.
“ঐ কি বলছেন আবল-তাবল?
“ওমা আবল-তাবল বলবো কেন? আপনি না একটু আগে আব্বু আব্বু করলেন?
“ইয়ে মানে সরি ভাইয়া, আসলে অাব্বুকে কল দিতে গিয়ে ‍ভুলে আপনার নাম্বারে চলে গেছে।
“বাহরে। প্রথমে অাব্বু, অার এখন আব্বু থেকে সরাসরি ভাইয়া? কি যুগ আসলোরে বাবা...
“জ্বী আসলে সরি। কিছু মনে করবেন না কেমন?
“আমি না হয় কিছু মনে করলাম না। কিন্তু আপনার লাইগা আমিও যে ভুলে গার্লফ্রেন্ডেরে আম্মু ডাইকা ফালাইছি তার কি হবে?
“সরি বুঝলাম না....
“ওহ আপনার বুঝা লাগতোনা। সয়তানের খলিফা হইয়া আমার সোনার সংসার ভাঙতে আইছেন আরকি...
“আজীব। পাগল নাকি আপনি? কি সব বলছেন?
“হ অামি পাগল। অামার চৌদ্দ গুষ্ঠি সুদ্ধ পাগল। যা আকাম করার তা তো করছেনই। রাখেন ফোন রাখেন বলে ঠুস করে ফোন কেটে দিয়ে গভীর রাগে গার্লফ্রেন্ডের নাম্বার ফোন দিলাম...
.
গার্লফ্রেন্ড ওপাশ ফোন থেকে রিসিভ করতেই শুরু করলো চিল্লানি - গোলামের পুত গোলাম, তুই আবার ফোন দিছোস ক্যান? রাখ ফোন রাখ হালা টুট টুট টুট...
.
এর পর যত বারই কল দিলাম কাজ হইলো না। ততবারই ওপাশ থেকে ভেঁসে আসতে লাগলো,“এই মুহূর্তে আপনার কাঙ্খিত নাম্বারে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছেনা। অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর ট্রাই করুন......
.
এইডাও কি কপালে ছিলোরে নরেণ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.