নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডক্টর এ.বি.এম. রেজাউল করিম ফকির, অধ্যাপক, জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় e-mail: [email protected]

রেজাউল করিম ফকির

অধ্যাপক, কোবে গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়

রেজাউল করিম ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ একটি স্বীকৃত রাজনৈতিক মতবাদ

১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৪৩



নিম্নের এই কোরআনের আয়াত ও হাদীস গুলো প্রমাণ করে যে, বিশ্বে মুসলিম উম্মাহ এক হলেও, এই উম্মাহ নানান জাতিতে বিভক্ত। আর কোনও জাতির জাতিসত্ত্বায় নিহিত আদর্শ হলো জাতীয়তাবাদ। সে অর্থে বাঙ্গালী জতির স্বকীয় রাজনৈতিক দর্শন হলো বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ। কাজেই কোরআন ও হাদীসের আলোকেও প্রমাণিত যে বাঙ্গালী জাতি ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ কোরআন ও হাদীস সম্মত, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ কোনও কুফুরী মতবাদ নয়।
প্রত্যেক জাতি বা কওমের উদ্দেশ্যে নবী-রাসূল প্রেরণের বিষয়টি কুরআন ও হাদীসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে এ সম্পর্কিত আয়াত ও হাদীসগুলো উপস্থাপন করা হলো:
কুরআনের আয়াতসমূহ
সূরা ফাতির (৩৫:২৪)
"وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ"
অর্থ: "আমি প্রত্যেক উম্মতের কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুত (শয়তান/অসত্য) থেকে দূরে থাকো"।
সূরা ইউনুস (১০:৪৭)
"وَلِكُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولٌ فَإِذَا جَاءَ رَسُولُهُمْ قُضِيَ بَيْنَهُم بِالْقِسْطِ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ"
অর্থ: "প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন রাসূল রয়েছে। যখন তাদের রাসূল আগমন করেন, তখন তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করা হয় এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হয় না"।
সূরা আন-নাহল (১৬:৩৬)
"وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ"
অর্থ: "আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি যেন তারা আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাগুতকে বর্জন করে"।
সূরা আল-মু'মিনুন (২৩:৪৪)
"ثُمَّ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَىٰ كُلَّ مَا جَاءَ أُمَّةً رَّسُولُهَا كَذَّبُوهُ"
অর্থ: "এরপর আমি রাসূলদের একের পর এক পাঠিয়েছি। যখনই কোনো উম্মতের কাছে তাদের রাসূল আসতেন, তারা তাকে মিথ্যা বলত"।
সূরা হুজুরাতের সমর্থন:
"হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যেন তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার" (৪৯:১৩)
— এই আয়াত জাতিগত বৈচিত্র্যকে আল্লাহর ইচ্ছাকৃত সৃষ্টি হিসেবে উল্লেখ করে।
সূরা রূমে ভাষাগত স্বীকৃতি:
"আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আসমান ও জমিনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য" (সূরা রূম ৩০:২২)
হাদীসসমূহ
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত:
নবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেন:
"كَانَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ تَسُوسُهُمُ الأَنْبِيَاءُ، كُلَّمَا هَلَكَ نَبِيٌّ خَلَفَهُ نَبِيٌّ"
অর্থ: "বনু ইসরাঈলকে নবীগণ পরিচালনা করতেন। যখন একজন নবী ইন্তেকাল করতেন, তখন অন্য এক নবী তার স্থলাভিষিক্ত হতেন"।
আবু যর গিফারি (রা.)-এর বর্ণনা:
নবী (সা.) বলেন:
"নবীদের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৪ হাজার, তন্মধ্যে ৩১৫ জন রাসূল"।
— এটি ইঙ্গিত দেয় যে, আল্লাহ প্রত্যেক জাতির জন্য নবী প্রেরণ করেছেন।
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত:
নবী (সা.) বলেন:
"আমিই সর্বশেষ নবী; আমার পরে কোনো নবী আসবে না"।
— এটি নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা শেষ হওয়ার প্রমাণ, কিন্তু পূর্ববর্তী সকল জাতির কাছে নবী প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
ব্যাখ্যা ও গুরুত্ব
সার্বজনীনতা: কুরআন ও হাদীসে প্রত্যেক জাতির কাছে নবী-রাসূল প্রেররণের কথা বলা হয়েছে, যা আল্লাহর ন্যায়বিচার ও হিদায়াতের সার্বজনীনতার প্রমাণ।
উদ্দেশ্য: নবী-রাসূলগণ প্রেরিত হয়েছেন তাওহীদ (একত্ববাদ) প্রতিষ্ঠা, শিরক থেকে বিরত রাখা এবং ন্যায়বিচার কায়েম করার জন্য।
শেষ নবী: মুহাম্মাদ (সা.)-কে সর্বশেষ নবী হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে, যা নবুওয়াতের ধারাবাহিকতার সমাপ্তি টানে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.