নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

লকডাউন ( ১ )

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০১

ঢাকার কোন এক হাউজিং প্রজেক্টে সদ্য নির্মিত একটি সাত তালা বিল্ডিং। বিল্ডিংয়ের দেয়ালে এখনও নতুন রঙের গন্ধ লেগে আছে। বিল্ডিংটার সিক্স ফ্লোর, মানে সাত তলার একপাশে খোলা ছাদ, অন্যপাশে ফ্লাট। আর গ্রাউন্ড ফ্লোরের এক পাশে গ্যারেজ । এই নিয়ে মোট বারোটা ফ্লাট । সব ফ্লাটে এখনও ভাড়াটিয়া উঠে নাই, সামনের মাসেই উঠে পড়বে ইনশাআল্লাহ ! এই সাততলা বিল্ডিংয়ের বাড়িওয়ালা একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা।
যাই হোক গতমাসে উঠা সাততলার ভাড়াটিয়া ছেলেটি চার,পাঁচদিন ধরে সর্দি কাশিতে ভুগছে। সাথে গলা ব্যথা। কাল ভোর রাতে হঠাৎই তার অসুস্থতা বেড়ে যায়। ছেলেটি ঘাবড়ে কাক-ডাকা ভোরে বাসা থেকে বের হয়। প্রজেক্টের গেটে সিকিউরিটি আটকায়। ছেলেটি তার অসুস্থতার কথা জানিয়ে বলে, মনে হয় তার করোনা হয়েছে । সে হাসপাতালে যাচ্ছে। সিকিউরিটির লোকজন মুহূর্তে ছিটকে সরে দাঁড়ায়, তারপর দ্রুত এম্বুলেন্স ডেকে আপদ বিদায় করে। ছেলেটি হাসপাতালে পৌঁছালে তার কথা শুনে এবং প্রাথমিক অবসার্ভেশনে ডাক্তারদেরও সন্দেহ হয়, তারা দ্রুত ছেলিটির করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে আর তাকে আইসোলেশনে ওয়ার্ডে রাখে।
অন্যদিকে এই বিল্ডিংয়ে করোনা রুগী থাকার খবর দ্রুতই প্রজেক্টে ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িওয়ালার কাছে এক এক ফোন আসতে থাকে । প্রথম ফোনটা আসে প্রজেক্টের হাউজিং সোসাইটির সভাপতি সাহেবের কাছ থেকে,
: ঘটনা কী সত্য ?
: অনেকটা সেরকমই সভাপতি সাহেব, আসলে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
: তা ঠিক, তা ঠিক। তো রুগী কোথায় ?
: হাসপাতালে গিয়েছে।
: ভেরি গুড । আচ্ছা রাখি, ভাল থাকবেন, সালামুলাইকুম।
: আপনিও ভাল থাকবেন, অলাইকুম আস্সালাম । বাড়িওয়ালা লাইন কাটেন । পরবর্তী একঘন্টায় আরও দশ,বারোটা ফোন আসে । সবার এক প্রশ্ন - ঘটনা কি সত্য ? কয়জনের ধরা পড়ছে ? ফোন রিসিভ করতে করতে বাড়িওয়ালা কিছুটা বিরক্ত হন, কিন্তু তিনি তখনও বুঝতে পারেন নি - খেলা এখনও শুরু হয় নি !
খেলা শুরু হয় পুলিশের আগমন দিয়ে ।সকাল নয়টায় স্থানীয় থানা থেকে কায়েকজন কনেষ্টেবলসহ এক পুলিশর অফিসার এসে হাজির।
: আপনার বিল্ডিংয়ে করোনা পেসেন্ট পাওয়া গেছে ?
: জ্বি, আমার সাত তলার ভাড়াটিয়া।
: চলুন, তার সংক্রামকের ইতিহাস জানতে হবে, মানে তাদের ফ্লাটে বিদেশ ফেরত কেউ এসেছিল কি না ? সে কি করে ? গত কয়দিনে সে কোথায় কোথায় গিয়েছে ? বা কাদের সাথে মিশেছে ? সব জানতে হবে।
: সে হাসপাতালে এসব বলে নি ?
: ভিকটিম ভুল তথ্যওতো দিতে পারে ! পারে না ? পুলিশ অফিসার পাল্টা প্রশ্ন করেন ।
: হ্যাঁ, তা পারে। চলুন....
বাড়িওয়ালা পুলিশ অফিসারকে নিয়ে সাত তলায় যান। যাবার আগে অফিসার দু’জন কন্সটেবলকে গেটে রেখে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের উপস্থিতির খবর বিল্ডিং ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকেই যে ক’টা ফ্লাটে ভাড়াটিয়া উঠেছে, তারা সবাই কেমন যেন আবোলতাবোল হয়ে যায় !
: কী সর্বনাশ ! এই ছ্যামড়াতো পত্তেইক দিন লিফটটে সাত তলায় উঠছে । লিফটটের সুইচ টিপছে, হেন্ডেল ধরছে ! সিড়ির রেলিং ধইরা উঠানামা করছে কি না কে জানে ? আয় হায় ! সেতো গেইটও ধরছে !
অহন ?
অই বদের বদ, তোরে কে কইছে এই বিল্ডিংয়ে ভাড়া নিতে ? আর নিছস যহন, তহন একতলা ভাড়া নিলি না ক্যান তুই ? অহন যে পুরা বিল্ডিংয়ে করোনা ছড়াইলি ! অহন কী হইব, ক ? বাড়িওয়ালারও কুনু আক্কল নাই, হেরে ভাড়া দিসে কেরে ? কুলসুম ? অই কুলসুম ?
: জ্বে খালা ?
: খালার বাচ্চা ! কই থাহছ ? এদিকে আয়, কালকে যে সাত তলার বৌ-ডা আইছিল, তহন কি অই ছ্যামড়াও লগে আইছিল, হে-ই কি কলিং বেল টিপছিল ? দরজার হাতল কি হেই ছ্যামড়াই ধরছিল ?
: আমি ক্যামনে কমু, আমি কি দেখছি ?
: দেহস না কেরে হারামজাদী, কই থাহছ তুই ? যা, সামনে থিকা যা, বাইর হ । নাহ, এই বাসায় আর থাহন যাইত না । এই বাসা ছাইড়া যাওনই লাগবো ।
: ক্যামনে যাইবেন ? গেইটে দুই পুলিশ বেডা বন্দুক লইয়া দাঁড়াইয়া আছে, কাউরে বাইরাইতে দেয় না, ঢুকতেও দেয় না। কুসুম ঠোঁট বাঁকায়।
: অই, কে আছিস আমারে ধর, ধইরা বোয়া। আমার মাথা পাক দিতাছে ।
( ৩ পর্বের ১ম পর্ব সমাপ্ত )

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৫

সাইন বোর্ড বলেছেন: বোঝাই যাচ্ছে, সব খানেই করুণ অবস্থা, কোন কিছুতেই আর বিশ্বাস রাখা যাচ্ছে না ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৫

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ । এটা একটি সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা । সাথে থাকার জন্য আবারও ধন্যবাদ ।

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
করোনা প্যানিক !!
সার্কাস সবে মাত্র শুরু
আরো ২ পর্ব বাকী।
থাকলাম গাত্তা মাইরা
দেখিনা কি করে !!

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৬

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ । দ্রুতই পাবেন, ইনশানল্লাহ ! সাথে থাকার জন্য আবারও ধন্যবাদ ।

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩৮

মিন্টু ভাই বলেছেন: ভালোই হইছে লেখা পরের পর্বের আশায় থাকলাম,জানিনা এই আশা পূরন হতে হতে আরো কত কি ঘটনা ঘটে । শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৬

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ । দ্রুতই পাবেন, ইনশানল্লাহ ! সাথে থাকার জন্য আবারও ধন্যবাদ ।

৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: সাথে আছি। চালিয়ের যান।

৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.