নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীরবতা .

জুবায়ের আহসান

জানিনা কি লেখুম...

জুবায়ের আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীর ক্যারিয়ার-১

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০১

গতবছর কামিল ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে রিক্সা নেবার
আগে দেখলাম হাবিবাকে।
চেহারায় অতিরিক্ত দুর্বলতার ছাপ নিয়ে ক্লাসমেটের
সাথে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ব্যাপারে কথা বলছে ।
ওর অনাগত সন্তানের জন্য অসম্ভব রকমের মন খারাপ
হয়ে গেল…
হায় ক্যারিয়ার…
অসহায় মাতৃস্নেহে বঞ্চিত শিশু। প্রতিবাদে অক্ষম।
তাই নিষ্ঠুর মায়েরা শিশুদের নিজ ক্যারিয়ার গঠনে
বাঁধা মনে করেন না।
কিছুদিন আগে হিন্দুস্তান টাইম সূত্রে একটি গবেষণার
শিরোনাম ছিল,
”নারীর ক্যারিয়ার সন্তান নয়, স্বামীরাই নষ্ট করেন”।
আসলেই কি তাই?
কামিল প্রথম বর্ষের ফাইনালে দেখেছি আরেকজনকে।
১৬দিনের বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষার হলে !
সিজারের রোগী। বোন, স্বামী বাচ্চা নিয়ে ছিল।
বাসায় ফেরার সময় একজনের সাথে শেয়ার করলাম,
বোকাটা ফরমফিলাপ করলো কেন ?
উত্তর দিল, কোনো মেয়ে কি এই কষ্ট স্বেচ্ছায় করে ?
তাও আবার ওর মত ২ পয়েন্টের ছাত্রী ?
স্বামী তো বসিয়ে রাখবে না। বিয়ে করেছে চাকরির
শর্তেই…
ফাজিলের মার্কশীট তোলার সময় মেয়েটার সাথে
দেখা হয়েছিল।
স্বামীকে বলছিল, রেজাল্ট ৩.৫০ ।
আমি তো অবাক… ফাজিলে এই পয়েন্ট ?
রেজাল্টশীটে দেখলাম, ২.১৭
ওকে দেখানোর পরে সযত্নে এড়িয়ে গেল…
লোভী পুরুষ চাকরির শর্তে বিয়ে করলে গরীব বাবার
কালো মেয়েকে বুঝি এভাবেই সত্য লুকিয়ে, কষ্ট করে
চলতে হয় !!!
পাঠক, হাবীবা স্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে। তবে নিজ
ক্যারিয়ার সম্পর্কে মারাত্মক সচেতন ।
আর গরীব মেয়েটি অসহায়… তার লোভী স্বামী তো
হাবিবাদেরকেই উপমা দেবে ।
বড়গলায় বলবে,
‘আমি আমার স্ত্রীকে ঘরে বন্দী করে অসম্মান করিনি,
তার প্রাপ্য মর্যাদাই দিয়েছি । ক্যারিয়ার গঠনে
আদর্শ স্বামীর ভূমিকা পালন করেছি !’
এভাবেই উচ্চবিত্তদের বিলাসিতার শিকার হয়
নিম্নবিত্তরা।
নামমাত্র সম্মান পায় উচ্চবিত্ত ।
নিম্নবিত্ত সম্মান তো পায় না বরং সীমাহীন কষ্ট
স্বীকার করে পথে নামে ।
পশ্চিমা সভ্যতা নারীকে ক্যারিয়ার গঠনে উস্কে
দিচ্ছে আকাশমিডিয়ার মাধ্যমে।
নিত্য নতুন চাকচিক্য ডায়লগের আমদানি করছে।
দু পয়সা আয় করে স্বাবলম্বী হওয়া যেন পৃথিবীর
সর্বোচ্চ সম্মানের মাপকাঠি।
আয়ের উৎস- রাস্তার ঝাড়ুদার, টয়লেট ক্লিনার, অথবা
দেহ ব্যবসা হলেও কোনো অসম্মানের হয় না !
ড. শায়েখ বাহজাহ আলবায়তারকে আমেরিকান
প্রসিদ্ধ এক লেখিকা নিজেদের অবস্থার কথা
বলেছিলেন,
“একজন আমেরিকান নারী বাহ্যত দেখা যায় স্বাধীন,
আসলে সে পরাধীন।
ছোট ছোট বিষয়ে তারা নারীকে সম্মান দিচ্ছে, কিন্তু
বড় বড় বিষয়ে তারা তাকে লাঞ্ছিত ও বঞ্ছিত করে ।
গাড়ি থেকে নামার সময় হাত ধরে নামাচ্ছে, ঘরে বা
অন্য কোথাও প্রবেশের সময় তাকে আগে প্রবেশ করতে
দিচ্ছে। কখনো কখনো ট্রামে বাসে পুরুষ দাঁড়িয়ে
গিয়ে নারীকে বসতে দিচ্ছে। কিন্তু এর বিপরীতে
অনেক অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে নারীর সাথে
অনেক হীন আচরণ করা হয়, যা অসহনীয় ও ভাষায়
প্রকাশের অযোগ্য।
এখানে একটি মেয়ে যখন প্রাপ্তবয়স্কা হয়, পিতা তার
থেকে হাত গুটিয়ে নেয়। আপন কন্যাকে বলে, যাও
কামাই করে খাও। বেচারী একাই জীবন সাগরে ঝাঁপ
দেয়। জানেনা সে সাগরের গভীরতা। জানে না ঢেউ
স্রোতের প্রবণতা । জানে না কুমির-হাঙ্গরের
হিংস্রতা। কিন্তু তার পরিবারের তাতে কিছুই যায়
আসে না ।
সে শ্রমের বিনিময়ে খাবে না শরীরের বিনিময়ে, তা
তাঁদের ভাবার বিষয় নয়।
আর এটা শুধু আমেরিকার কথা নয়, গোটা পশ্চিমা
বিশ্বের চিত্র।
প্রফেসর ড. ইয়াহিয়া আশশাম্মা’ আমাকে আজ থেকে
৩৩ বছর আগে (তিনি প্যারিস থেকে লেখাপড়া শেষ
করে ফেরার পরপরই) বলেছেন,
তিনি একটি বাসায় গেলেন ভাড়া নেয়ার জন্য। প্রবেশ
করার সময় দেখলেন, একটি মেয়ে চোখ মুছতে মুছতে
বের হচ্ছে। তিনি কারণ জিজ্ঞেস করে জানলেন, সে এ
বাড়িরই মেয়ে । পিতা তাকে রুম ভাড়া দিতে রাজি
হয়নি কারণ মেয়েটি ২০ ফ্রাঙ্ক দিতে চাচ্ছে অথচ
ভাড়া ৩০ ফ্রাঙ্ক !”
[ সূত্র- মাসিক আল কাউসার।]
আসলে পশ্চিমারা কখনো নারীকে সম্মান দেয়নি।
দেবেও না।
বরং, তাদের মিশন হলো, পশ্চিমা নারীদের মত
বিশ্বের সকল নারী যেন ভোগের সামগ্রী হয়।
অর্থ উপার্জনে পরিবার, সমাজে নারীর অবস্থান যদি
মজবুত হয় তাহলে আজকে তরুণ প্রজন্ম
মাদকাসক্ত কেন ?
নারী ক্যারিয়ারের পিছনে দিনে ৮-১০ ঘন্টা ঘরের
বাইরে। পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে সন্তানকে সময় দেয়
কতটুকু ?
তাদের সন্তান মানুষ হচ্ছে কার স্নেহে ?
নিশ্চয় কাজের বুয়া ?
নারী, তুমি আদালতের বিচারপতি হয়ে কি লাভ হলো,
যদি তোমার নাড়িছেঁড়া সন্তান অশিক্ষিত,
নিম্নশ্রেণীর নারীর হাতে গড়ে উঠে ?
তুমি ভাবছো, অর্থই সব।
তোমার উপার্জিত অর্থে হাই সোসাইটির ইংলিশ
মিডিয়াম স্কুলে সন্তান পড়ালেখা করে আদর্শ মানুষ
হবে ? কখনো নয়।
বরং, তোমার দক্ষ যত্নের অভাবে সে বখাটে
মাদকাসক্ত হবে। একটু চোখ খুললেই এর উদাহরণ পেয়ে
যাবে।
তুমি ডিগ্রিধারী হয়ে চাকরি না করলে সমাজের
কোনো ক্ষতি হবে না।
কিন্তু সন্তানকে যদি আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে
তোলো, তাহলে সে একা গোটা সমাজকে বদলে দেবে।
একজন মুসলিমাহর ক্যারিয়ার তো এই যে, সন্তানকে
আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।
একজন মুসলিমাহ সমাজে প্রচলিত ছোট বড় সকল পাপ
থেকে নিজেকে বিরত রেখে আল্লাহর সাথে
সন্তানের সম্পর্ক সুদৃঢ় করার দ্বায়িত্বে সদা সতর্ক
থাকবেন, এই তার ক্যারিয়ার ।
এখানে যতটুকু সফল হবেন, ক্যারিয়ার ততটা উজ্জ্বল
হবে। আর ব্যর্থতার পরিমাণ অনুযায়ী ধ্বস নেমে আসবে
সাধের ক্যারিয়ারে।
অর্থের প্রাচুর্যে, মাতৃস্নেহ-সুশাসনের অভাবে সন্তান
আদর্শবান হয় না।
বাহ্যিক চাকচিক্যময় মিথ্যে ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত
অবস্থান করলেও নিজ জীবনে একজন ব্যর্থ হিসেবেই
পরিচিত হবে। ব্যর্থতার গ্লানি টেনে শেষ নিঃশ্বাস
ত্যাগ করতে হবে ।
সত্যিকারের ক্যারিয়ার গঠন করেছিলেন যেসব
মুসলিমাহ, তাঁদের নাম ইতিহাসের পাতায় সোনালি
অক্ষরে লেখা।
তাঁরাই নারীজাতির আদর্শ ।
হাজার বছর পরেও মানুষ তাঁদের নাম উচ্চারণ করে
শ্রদ্ধার সাথে…

পোষ্ট ভদ্রতায় :-p : মহীয়সী মাহমুদা খাতুন তামান্না

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.