নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শুধু একদিন ভালোবাসা, মৃত্যু যে তারপর... যদি তা-ও পাই, আমি তা-ই চাই, চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।
তসলিমা নাসরিন যখন কুরআন সংশোধনের দাবি জানায় তখন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা তো একটি টু শব্দও করে নি। আর সরকারের কথাই বা কী বলবো! এরাই তো ওকে লাইসেন্স দিয়ে রেখেছিল। এরপর এ পরিসি'তিতে হক্কানি ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে ধর্মপ্রাণ দীনদার আপামর জনগণ তসলিমার এ খোদাদ্রোহিতার প্রতিবাদে যখন হরতাল ডাকে, তখন ধর্মনিরপেক্ষবাদী সেই মহল হরতাল প্রতিরোধের জন্য দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানায়। ভাবখানা যেন এমন- তসলিমা কুরআন অবমাননা করে কোনো অপরাধ করে নি; যারা এর প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে তারাই কুরআন হেফাজতের কথা বলে অপরাধ করেছে। তাই এদের সেই ধর্মনিরপেক্ষভাবকে আরো চমকপ্রদ করে আরো ফুটিয়ে তোলার জন্য কুরআন হেফাজতকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা হরতাল ডাকে। এতেও কি ‘ধর্মনিরপেক্ষতার মূল রূপ ধর্মহীনতা’- একথা প্রমাণ হয় না।
সবচে’ বড়ো কথা, যারা ইসলামের পক্ষে কথা বলে; কুরআনের পক্ষে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে বৈরী রাষ্ট্রগুলোর গোমর ফাঁক করে দেয়, তাদেরকে এরা স্বাধীনতা বিরোধী, মানবতা বিরোধী, ফতোয়াবাজ, মৌলবাদী বলে গালিগালাজ করে সমাজে ইসলাম, মুসলমান, আলেম-ওলামাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ায়। সত্যকথা তো এটাই-ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতার বাহ্যিক লেবেল মাত্র। উভয়ের মাঝে কোনো তফাৎ নেই। আর একেই ইংরেজিতে বলে সেক্যুলারিজম।
আমি বুঝি না; বুঝে আসেও না-শতভাগ ধর্মবিশ্বাসী নাগরিকের দেশে ধার্মিক হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের দেশে, ৯০ ভাগ মুসলমানদের দেশে কেন, কার ইশারায় মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর পূর্ণবিশ্বাস ও আস্থা তুলে দিয়ে বস্তাপঁচা সেক্যুলারিজম আর বিশ্বজুড়ে প্রত্যাখ্যাত সমাজতন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হল? ৯০ ভাগ মুসলমানদের সংবিধানে হাজার হাজার শব্দ আছে, একটি বার মাত্র আল্লাহ শব্দটি কি ধারণ করার মতো উদারতা ও সহনশীলতা সে রাখে না? এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কেন এমন হীনম্মন্যতার শিকার? কেউ কি এর জবাব দিবেন?
সবকথার এককথা, সেক্যুলারপূর্ণ শিক্ষা এড়াতে মাদরাসাশিক্ষা ছাড়া কোনো উপায়ান্তর নাই। একমাত্র মাদরাসাশিক্ষাই নির্ভেজাল। যাদের প্রতিটি দিন শুরু হয় আল্লাহর ওপর পূর্ণবিশ্বাস ও আস্থা রেখে। তাই বলবো, আপনার কোমলমতি শিশু হয়তো একদিন স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির গণ্ডি পেড়িয়ে একজন শিক্ষিত লেবাসধারী হবে, কিন' সে সুশিক্ষিত সুন্নতি লেবাসধারী হতে পারবে না; হতে পারবে না একজন হাফেজ, মওলানা হতে কিংবা মুফতি, মুহাদ্দেস হতে। পক্ষান্তরে মাদরাসাপড়ুয়া ছাত্র ইচ্ছা করলে এগুলো হওয়ার পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষায়ও শিক্ষিত হতে পারে। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, হাসিনাপুত্র জয় কেন মাদরাসা ছাত্র কমানোর আন্দোলনে মত্ত হয়ে উঠেছে! কারণ মাদরাসাপড়ুয়া ছাত্র কমলেই এদের কুমতলবগুলো বিনা বাধায় হাসেল হবে।
এজন্য ইহুদিপ্রদত্ত এ ‘জয় মতবাদ’ কঠোরভাবে বর্জন করে আমাদের কোমলমতি শিশুদের মাদরাসা শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে দেশ ও জাতিকে নাসি-কতার কালো থাবা থেকে রক্ষার পথ সুগম করার উদ্বাত্ত আহ্বান করছি। তাছাড়া আল্লাহ যাদেরকে পছন্দ করেন, তাদেরকেই এ দীনিলাইনে (মাদরাসাশিক্ষায়) আকড়ে রাখেন। এটাই সবচে’ বড়ো কথা।
আগেই বলেছি- Forgotten roots বা শেকড় ভোলার কথা। আবারো বলছি খোলাসা করে, আমাদের কিন' শেকড় ভুললে চলবে না। আমরা কোত্থেকে এসেছি, কোথায় থেকে কোথায়, পানি থেকে রক্ত; রক্ত থেকে জমাট তারপর অসি'; ধীরে ধীরে অসি-ত্ব-এসব মনে রাখতে হবে। আরো বিশ্বাস ও পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে এসব সৃষ্টিকর্তার ওপর। আর তাঁকেই উৎসর্গ করে সমৃদ্ধি করতে হবে জ্ঞানের রাজ্য। এক্ষেত্রে একজন আধ্যাত্মিকগুরুর নিতান্তই প্রয়োজন, যে ভালো-মন্দ ফারাক করে দেবে, সবধরনের পরামর্শ দিবে এবং দিবে অস্তিত্বের সন্ধান। কারণ সেক্যুলারের অর্থই হলো ধার্মিকতা ও আধ্যাত্মিকতার উল্টো দিক। তাই সেক্যুলার এড়াতে একজন আধ্যাত্মিকগুরুরও দরকার আছে।
চারিদিকে যখন সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার স্লোগান শুনি, নিজেকে তখন প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে অস্তিত্বহীন মনে হয়। কবে পাব এ থেকে নিস্তারণ, কে টেনে তুলবে আমায় এ ভিড় থেকে আর দিবে অসি-ত্বের সন্ধান? কেউ কি আছেন?
পুনশ্চ : প্রবন্ধ বা থিসিস যাই বলি- তা কাউকে না কাউকে উৎসর্গ করে হয়। আমার এ প্রবন্ধ যারা ‘নাস্তিকতা ও সেক্যুলারিজমের নিপাত যাক’-এ স্লোগানের সোচ্চার হবেন কিংবা নাসি-কতা ও সেক্যুলার দমনের সাধনায় ব্রতী হবেন তাদেরকেই উৎসর্গ করলাম।
©somewhere in net ltd.