নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিন্দুর মাঝে সিন্ধু দর্শনের আশায় পথ চলি...

রিদওয়ান হাসান

শুধু একদিন ভালোবাসা, মৃত্যু যে তারপর... যদি তা-ও পাই, আমি তা-ই চাই, চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।

রিদওয়ান হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মহীনতা, সেক্যুলারিজম কিংবা ধর্মনিরপেক্ষতা (শেষ পর্ব)‎

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৮

তসলিমা নাসরিন যখন কুরআন সংশোধনের দাবি জানায় তখন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা তো একটি টু শব্দও করে নি। আর ‎সরকারের কথাই বা কী বলবো! এরাই তো ওকে লাইসেন্স দিয়ে রেখেছিল। এরপর এ পরিসি'তিতে হক্কানি ওলামায়ে কেরামের ‎নেতৃত্বে ধর্মপ্রাণ দীনদার আপামর জনগণ তসলিমার এ খোদাদ্রোহিতার প্রতিবাদে যখন হরতাল ডাকে, তখন ধর্মনিরপেক্ষবাদী ‎সেই মহল হরতাল প্রতিরোধের জন্য দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানায়। ভাবখানা যেন এমন- তসলিমা কুরআন অবমাননা করে ‎কোনো অপরাধ করে নি; যারা এর প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে তারাই কুরআন হেফাজতের কথা বলে অপরাধ করেছে। তাই ‎এদের সেই ধর্মনিরপেক্ষভাবকে আরো চমকপ্রদ করে আরো ফুটিয়ে তোলার জন্য কুরআন হেফাজতকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা ‎হরতাল ডাকে। এতেও কি ‘ধর্মনিরপেক্ষতার মূল রূপ ধর্মহীনতা’- একথা প্রমাণ হয় না।



সবচে’ বড়ো কথা, যারা ইসলামের পক্ষে কথা বলে; কুরআনের পক্ষে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে বৈরী রাষ্ট্রগুলোর গোমর ফাঁক ‎করে দেয়, তাদেরকে এরা স্বাধীনতা বিরোধী, মানবতা বিরোধী, ফতোয়াবাজ, মৌলবাদী বলে গালিগালাজ করে সমাজে ইসলাম, ‎মুসলমান, আলেম-ওলামাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ায়। সত্যকথা তো এটাই-ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতার বাহ্যিক লেবেল মাত্র। ‎উভয়ের মাঝে কোনো তফাৎ নেই। আর একেই ইংরেজিতে বলে সেক্যুলারিজম।



আমি বুঝি না; বুঝে আসেও না-শতভাগ ধর্মবিশ্বাসী নাগরিকের দেশে ধার্মিক হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের দেশে, ৯০ ভাগ ‎মুসলমানদের দেশে কেন, কার ইশারায় মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর পূর্ণবিশ্বাস ও আস্থা তুলে দিয়ে বস্তাপঁচা সেক্যুলারিজম আর ‎বিশ্বজুড়ে প্রত্যাখ্যাত সমাজতন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হল? ৯০ ভাগ মুসলমানদের সংবিধানে হাজার হাজার শব্দ আছে, একটি বার ‎মাত্র আল্লাহ শব্দটি কি ধারণ করার মতো উদারতা ও সহনশীলতা সে রাখে না? এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কেন এমন ‎হীনম্মন্যতার শিকার? কেউ কি এর জবাব দিবেন?‎



সবকথার এককথা, সেক্যুলারপূর্ণ শিক্ষা এড়াতে মাদরাসাশিক্ষা ছাড়া কোনো উপায়ান্তর নাই। একমাত্র মাদরাসাশিক্ষাই নির্ভেজাল। ‎যাদের প্রতিটি দিন শুরু হয় আল্লাহর ওপর পূর্ণবিশ্বাস ও আস্থা রেখে। তাই বলবো, আপনার কোমলমতি শিশু হয়তো একদিন ‎স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির গণ্ডি পেড়িয়ে একজন শিক্ষিত লেবাসধারী হবে, কিন' সে সুশিক্ষিত সুন্নতি লেবাসধারী হতে পারবে না; ‎হতে পারবে না একজন হাফেজ, মওলানা হতে কিংবা মুফতি, মুহাদ্দেস হতে। পক্ষান্তরে মাদরাসাপড়ুয়া ছাত্র ইচ্ছা করলে এগুলো ‎হওয়ার পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষায়ও শিক্ষিত হতে পারে। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, হাসিনাপুত্র জয় কেন মাদরাসা ছাত্র ‎কমানোর আন্দোলনে মত্ত হয়ে উঠেছে! কারণ মাদরাসাপড়ুয়া ছাত্র কমলেই এদের কুমতলবগুলো বিনা বাধায় হাসেল হবে। ‎



এজন্য ইহুদিপ্রদত্ত এ ‘জয় মতবাদ’ কঠোরভাবে বর্জন করে আমাদের কোমলমতি শিশুদের মাদরাসা শিক্ষার আলোয় আলোকিত ‎করে দেশ ও জাতিকে নাসি-কতার কালো থাবা থেকে রক্ষার পথ সুগম করার উদ্বাত্ত আহ্বান করছি। তাছাড়া আল্লাহ যাদেরকে ‎পছন্দ করেন, তাদেরকেই এ দীনিলাইনে (মাদরাসাশিক্ষায়) আকড়ে রাখেন। এটাই সবচে’ বড়ো কথা।



আগেই বলেছি- Forgotten roots বা শেকড় ভোলার কথা। আবারো বলছি খোলাসা করে, আমাদের কিন' শেকড় ভুললে চলবে ‎না। আমরা কোত্থেকে এসেছি, কোথায় থেকে কোথায়, পানি থেকে রক্ত; রক্ত থেকে জমাট তারপর অসি'; ধীরে ধীরে অসি-ত্ব-‎এসব মনে রাখতে হবে। আরো বিশ্বাস ও পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে এসব সৃষ্টিকর্তার ওপর। আর তাঁকেই উৎসর্গ করে সমৃদ্ধি ‎করতে হবে জ্ঞানের রাজ্য। এক্ষেত্রে একজন আধ্যাত্মিকগুরুর নিতান্তই প্রয়োজন, যে ভালো-মন্দ ফারাক করে দেবে, সবধরনের ‎পরামর্শ দিবে এবং দিবে অস্তিত্বের সন্ধান। কারণ সেক্যুলারের অর্থই হলো ধার্মিকতা ও আধ্যাত্মিকতার উল্টো দিক। তাই ‎সেক্যুলার এড়াতে একজন আধ্যাত্মিকগুরুরও দরকার আছে।



চারিদিকে যখন সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার স্লোগান শুনি, নিজেকে তখন প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে অস্তিত্বহীন মনে হয়। কবে ‎পাব এ থেকে নিস্তারণ, কে টেনে তুলবে আমায় এ ভিড় থেকে আর দিবে অসি-ত্বের সন্ধান? কেউ কি আছেন?‎



পুনশ্চ : প্রবন্ধ বা থিসিস যাই বলি- তা কাউকে না কাউকে উৎসর্গ করে হয়। আমার এ প্রবন্ধ যারা ‘নাস্তিকতা ও ‎সেক্যুলারিজমের নিপাত যাক’-এ স্লোগানের সোচ্চার হবেন কিংবা নাসি-কতা ও সেক্যুলার দমনের সাধনায় ব্রতী হবেন ‎তাদেরকেই উৎসর্গ করলাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.