নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিন্দুর মাঝে সিন্ধু দর্শনের আশায় পথ চলি...

রিদওয়ান হাসান

শুধু একদিন ভালোবাসা, মৃত্যু যে তারপর... যদি তা-ও পাই, আমি তা-ই চাই, চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।

রিদওয়ান হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথ কি সাম্প্রদায়িক ছিলেন!

২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫০

আমার কাছে সাম্প্রদায়িকতা একটা নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত বিধিসম্মত মনে হয়। কারণ প্রত্যেকটা মানুষই সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা। নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি তার সামান্য হলেও সেন্সরিটি থাকবে। কিন্তু এর বাইরে অন্য সম্প্রদায়কেও সমীহ করবে—এটাই বিধিসম্মতার প্রান্তসীমা। যখন অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি গণহারে নেতিবাদিচর্চায় যাবে, সেটাই প্রকৃত সাম্প্রদায়িকতা।

এখন যদি রবীন্দ্রনাথের ‘অগ্নিস্নানে শূচি হোক ধরা’কে সাম্প্রদায়িক মনোভাবের বলি, সেক্যুলাররা তেঁতিয়ে উঠবেন। কিন্তু যখন তাদের বলা হবে, উযুর পানিতে শূচি হোক ধরা—তখন তারা বলবে এটা সাম্প্রদায়িক। এখানে ‘উযুর পানি’ যদি নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের বিশ্বাস হয়ে থাকে, তাহলে ‘অগ্নিস্নান’ কিভাবে সার্বজনীন হলো?

এই কথার প্রেক্ষিতে একজন সেক্যুলার বলল—রবীন্দ্রনাথে আপনার নানা কারণেই অরুচি থাকতে পারে, সেটাকে পুঁজি করে কোনো কিছুর বিচার করা ঠিক নয়, তাতে নিজের কর্মটিরই খুঁত তৈরি করা হয়। আর আরেকটি কথা আপনি যদি সেক্যুলার না হতে পারেন তাহলে মানবিক মানুষ হতে পারেননি। ইভেন মুসলমান হতে গেলেও সেক্যুলার হতে হবে।

আমি বললাম—আমার উপরের আলোচনার কোথাও রবীন্দ্রনাথে অনাগ্রহ বা অরুচি তুলে ধরিনি। আমি কেবল আমার সপক্ষে একটি উদাহরণ এনেছি মাত্র। কারণ, প্রত্যেক মানুষই কোনো না কোনো সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা। রবীন্দ্রনাথও সম্প্রদায় থেকে এসেছেন, সে অর্থে তিনিও ‘সাম্প্রদায়িক’ বললে অত্যুক্তি হয় না।

হয়ত এই কারণেই তার নিজস্ব ধর্মের আদলে অগ্নিস্নানে ধরাকে শুচি করতে চেয়েছেন। এতে আমি মন্দ কিছুই পাইনি। কিন্তু আমি একজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী হিসেবে আমিও উযুর পানিতে পৃথিবী শুদ্ধ করতে চাইব—এটাই আমার ধর্মীয় আবেদন। আর ‘মানবিক’ আবেদন তো কেবল পৃথিবী শুদ্ধ করা। তাই আদতে মানবীয় ও ধর্মীয় অনুভবে কোনো ব্যবধান নাই, ব্যবধান শুধু পদ্ধতিগত।

তো যাই হোক, সেক্যুলার বলতে আপনি কী বোঝেন! সেক্যুলারের জন্ম ইতিহাস বলে, যার সাথে কোনো ধর্মীয় অনুভবের সংশ্লিষ্টতা নেই। কিন্তু এ সংজ্ঞা তখন অতটাও ধোপে টেকেনি এই কারণে যে, আপনি যেই দল ও মতই প্রকাশ করছেন—তা পৃথিবীর প্রায় পাঁচ হাজার ধর্মের কোনো না কোনো ধর্মের সাথে পরোক্ষ-প্রত্যক্ষভাবে মিলেই যাচ্ছে।

তাই ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রগত কোনো চিন্তাই ধর্মাতীত হওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে আধুনিক বুদ্ধিজীবীরা সেক্যুলারের অর্থগ্রহণ করেছে—যার যার ধর্ম পালনে নিজ নিজ স্বাধীনতা। এ সংজ্ঞার প্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথের অগ্নিস্নানে ধরাকে শুচি করতে চাওয়াটা উক্ত ধর্মের ব্যানারেই কেবল মানানসই। কিন্তু এটা যখন সেক্যুলাররা একটি রাষ্ট্রের সকলকে মানতে বাধ্য করেন, তখনই সেক্যুলাররা তাদের নাড়িপরিচয় থেকে বেরিয়ে আসেন এবং বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এখন এই বিবাদে জড়িয়ে পড়াটা কি আপনি মানবিক বলবেন, যেখানে মানবিক আবেদন ছিল শুধু পৃথিবীকে শুদ্ধ করা!

আসলে সবসময় আমাদের বিবাদটা হয় পদ্ধতি ও আদর্শ নিয়ে। তো, থাকুন না আপনি আপনার আদর্শ নিয়ে। কেন নিজের আদর্শ অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন, এটা তো সেক্যুলারের ভীত নয়। তাই আবারও বলছি, নিজ আদর্শে চলা মানেই কিন্তু প্রচলিত সাম্প্রদায়িকতা নয়। সাম্প্রদায়িকতা হলো, নিজের আদর্শ অন্যের ওপর চাপাতে গিয়ে অন্য আদর্শকে কুক্ষিগত করা।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৬

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: কী যে বোঝালেন???:(

লেখকদের জাতী, ধর্ম, বর্ণের উর্দ্ধে রাখা উচিত।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৮

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: তাই যদি হয় তাহলে হুমায়ুন আজাদের কবিতা সংকলনে কেন আল মাহমুদ ও আব্দুল মান্নান সৈয়দকে সাম্প্রদায়িকতার দোহাই দিয়ে ঠাই দিলেন না?

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:২৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আল মাহমুদকে সবাই পছন্দ করে।
আব্দুল মান্নান সৈয়দেরর লেখা পড়িন নি।

হুমায়ুন আজাদের রাজনীতি বিষয়ক গল্পগুলো সমীহ করার মত। কিন্তু ধর্ম নিয়ে তিনি বেশী ত্যানা পাকিয়েছেন।

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৩১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের একবার একটি অধিবেশনে শান্তিনিকেতনের বিনয় ভবনে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার ঠিক এরকম বিষয় উপস্থাপনের উত্তরে বিশ্বভারতীর যিনি উপদেষ্টা ছিলেন, বিভিন্ন ভাবে কবির সঙ্গে দারিদ্র্য প্রীতিরর যে চিত্র তুলে ধরেছিলেন, তাতে করে আমারও ধারনা বদলে গেছিল।আমার ঠিক ওনার নামটি আজ মনে নেই তবে যেহেতু মুসলিমররা আর্থিকভাবে বেশি দরিদ্র, তাই কবি একদিকে শিলাইদহতে প্রজাদের দিয়ে ছোট ছোট সমিতি গড়ে ছিলেন,অপর দিকে তার লেখায় বেশি বেশি নিপীড়ত হিসাবে তাদের ব্যবহার করেছেন।এটাকে বোধহয় সাম্প্রদায়িক হিসাবে দেখা ঠিক হবেনা।

৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪০

শাহিন বিন রফিক বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দু ধর্মের অনেক গোড়ামী তুলে ধরেছেন তার লেখায়, তাঁর গোরা উপন্যাসটি পড়লে মোটামুটি তাঁর আর্দশ কিছুটা বোঝা মনে হয় সম্ভব।

আপনার লেখাটি বেশ ভাল লাগল।

৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৩১

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: আপনার সাথে এ বিষয়ে একমত যে নেতিবাদিতার চর্চা না হওয়া পর্যন্ত সাম্প্রদায়িকতা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। ঐটুকু সাম্প্রদায়িকতা তেমন কোন বড় বিষয় নয়।

"লেখকদের জাতী, ধর্ম, বর্ণের উর্দ্ধে রাখা উচিত"

মোটেই নয়। মানুষকে তার সকল বৈশিষ্ট দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। তার দেবত্ব কিংবা পশুত্ব সবই তার বৈশিষ্ট।


৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২৮

যুক্তি না নিলে যুক্তি দাও বলেছেন: সাদা পাজামা পান্জাবীতে এক বিন্দু কালো কালির দাগ, এতে পোষাকের সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়না। ভালো লাগল + দিলাম

৭| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: কোলকাতাতে কেউ কেউ রবীন্দ্রনাথকে ঈশ্বরের সমতুল্য মনে করে।

৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩

টারজান০০০০৭ বলেছেন: "সাম্প্রদায়িক" শব্দটিই নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপিত হয়। আদতে সব মানুষই সাম্প্রদায়িক, কারণ নিজসম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব সব মানুষের ভিতরেই থাকে। ইহা দোষেরও নহে।তবে অন্য সম্প্রদায়কে হেয় করা, তাহাদের ন্যায্য অধিকারকে হরণ করা, নিজ সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, আচার, নিয়ম অন্য সম্প্রদায়ের উপর চাপাইয়া দেওয়াই নিন্দনীয়।হজরত মুহাম্মদ স. বিদায় হজ্জের ভাষণে প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করিবে বলিয়া ঘোষণা দিয়াছিলেন।তিনি অন্য ধর্মের দেবদেবীকেও গালি দিতে নিষেধ করিয়াছেন।ইহাই যুক্তিযুক্ত, ইহাই অসাম্প্রদায়িকতা।

আমাদের পাঁঠা সম্প্রদায় ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পন্ন ব্যাক্তি মাত্রকেই সাম্প্রদায়িক চিহ্নিত করিয়া থাকে। যাহা সঠিক নহে।রবি ঠাকুর, বঙ্কিম , বিদ্যাসাগর, শরৎচন্দ্র সবাই নিজ নিজ সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করিয়াছেন কারণ নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি তাহাদের মমত্ব ছিল।বরং আমাদের মুসলমান কবি সাহিত্যিকদেরই নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতিত্ব কম , কিছু কিছু ক্ষেত্রে আত্মধ্বংসীই দেখা যায়।যাহারা পক্ষপাতিত্ব দেখাইয়াছেন, তাহারাই সাম্প্রদায়িক হিসাবে চিহ্নিত হইয়াছেন , এমনকি আহমেদ ছফাও। অথচ এক বঙ্কিম ছাড়া, রবি ঠাকুর, বিদ্যাসাগর, শরৎচন্দ্র কাহাকেও সাম্প্রদায়িক বলিতে শুনি না ! যাহা হউক কবি সাহিত্যিকদের সাহিত্য জীবন ও ব্যাক্তিজীবনকে আলাদাভাবেই মূল্যায়ন করা উচিত। তলস্তয় ধর্ষক ছিলেন বলিয়া তাহার সাহিত্যকর্ম অপাঙেক্তয় হইয়া যায় নাই ! বঙ্কিম মুসলিম বিদ্বেষী ছিল বলিয়া তাহার "কপালকুণ্ডলা" সাহিত্য মূল্য হারায় নাই !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.