নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পৃথিবী

এভাবেই ভালোবাসা পুড়ে পুড়ে যায়..

রোদেলা

আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।

রোদেলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হৃদয়ের ডাক্তার

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮

আধা ঘন্টার ওপোরে হয়ে গেলো একটা বাসো আসছেনা।বলতে গেলে এটাই ২য় স্টপেজ,এখান থেকে অন্তত পক্ষে বাদুর ঝোলা দিয়ে অফিসে যেতে হয় না।কিন্তু হরতালের ডাক পড়লেই শুরু হয়ে যায় বাস সংকট। প্রায় চল্লিশ মিনিট পর পর একটা গাড়ী আসে।কিযে অসয্য লাগে মিতার,দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ধরে যায়। প্রত্যেক বাস স্ট্যান্ডে একটা বেঞ্চ দিলে মন্দ হতো না। কি যে আবোল-তাবোল ভাবনা; নিজেই হাসি পায়।যে দেশে রাস্তায় বের হলে জীবনের নিরাপত্তাই থাকে না ,সেখানে আবার বসার নিরাপত্তা।হঠাৎ পিছন থকে কেউ একজন বললো-এটা কি বিহঙ্গের লাইন?



মিতার ঠিক ঘাঢ়ের উপোর দিয়েই শব্দটা ভেসে আসে,মিতা সঙ্গে সঙ্গেই ঘাঢ় ঘোরায়-হুম,এটা বিহঙ্গ -আশীর্বাদ সব কিছুরি লাইন।



আকাশী স্ট্রাইপ পড়া ভদ্র গোছের লোক একটু মুচকি হাসে।মিতা পুনরায় রাস্তায় চোখ রাখে,শীতের কুয়াশা গায়ে মেখে একটি বিহঙ্গ এগিয়ে আসতেই মিতা সরে গিয়ে জায়গা করে দেয়।কিন্তু লোকটা বাসে না উঠে উলটো প্রশ্ন করে-আপনি যাবেন না?



-নাহ,এটায় অনেক ভীড়।আমি আশীর্বাদেই যাব।আপনি যান।



কি অদ্ভুত ব্যাপার , ঘাঢ়ে ভারী ব্যাগ হাতে লোকটা কিছুতেই বাসে উঠলোনা,বরং পেছনের সবাইকে জায়গা করে দিলো।



মিতার অবাক চোখের উত্তরে মুচকি হেসে বললো-আমিও আশীর্বাদেই যাবো। ওখানে বসার জায়গাটা একটু বড়।



প্রায় একবছরের বেশী সময় ধরে মিতা এ রাস্তায় আসা-যাওয়া করছে,আজ অবধি কেও যেচে পড়ে কথা বলতে আসেনি। কিন্তু এই মানুষটাকে দেখেতো মনে হচ্ছে-সে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে চাইছে,কেবল বাহানা করছে।



বেশি দূর ভাবতে হলো না,আশীর্বাদ চলে এলো,অমনি পেছন থেকে আওয়াজ এলো-আপনার আশীর্বাদ চলে এসেছে।



মিতা কপোট চোখে পিছনে একবার তাকালো,তারপর দ্রুত উঠে গেলো বাসে।কিন্তু বিধাতা তার জন্যে এমন কোন সীট খালি রাখেনি যে সে আরাম করে বসতে পারবে।কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর খানিকটা ধাক্কাধাক্কি করেই তৃতীয় সারির সীটতা পেয়ে বসে পরলো মিতা আর অমনি কোথা থকে সেই ভদ্র লোক তার ডান পাশের সিটটা নিয়ে নিলো।



মিতা দেখেও এমন একটা ভাব করলো যে এর সাথে কথাই হয়নি।



ভদ্রলোক আবার কথা বলতে আরম্ভ কোরলো-আপনি কোথায় নামবেন?



মিতা ঠিক কোরলো সব উত্তর এক শব্দের মধ্যে দিবে।



-শুক্রাবাদ।



-আপনার বাসা কি এখানেই।



এবার মনে মনে একটা গালি না দিয়ে পারলো না(ওরে গাধা; এখানে না হলে এই স্ট্যান্ডে আরছি ক্যানরে)



মুখে বললো-হুম।



আবার প্রশ্ন -আপনারা কতোদিন হলো এখানে আছেন?



-৩০ বছর?



-এতোদিন ?আমার বাসাতো ২১ নম্বরেই,।২২ নম্বরেও আমার একটা বাড়ী আছে,কিন্তু আপনাকেতো দেখিনি কখনো?



এবার মেজাজ আর ঠিক থাকলো না-আপনি কি এই এলাকার সব্বাইকে চিনেন?আমাদের বাড়ী এই এলাকার ৩ নম্বর বাড়ী।আর আমি যখন কলেজে পড়ি তখন এখানে রিক্সাও পাওয়া যেতো না ,বাসতো অনেক দূরের কথা ।



কথাটা বলেই মিতা এই প্রথম লোকটির মুখের দিকে তাকালো,পুরো চেহারাতেই যেন দুষ্টুমী খেলা করছে,স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে -এই লোক আর পিছু ছাড়ছে না।



গাড়ী শ্যামলী এসে দীর্ঘ জ্যামে পড়লো।লোকটি আবার আরম্ভ করলো-আপনি কি করেন,অফিস কোথায়?



নিতান্ত ভদ্রতা না দেখালেই নয়-একটা আই টি অফিসে কাজ করি।পান্থপথ।



-ও তাহলেতো অনেক দূর যাবেন,আমি কলেজ গেইট নেমে যাবো।আপনার পাশে একজন মহিলাকে বসিয়ে দেই।



ভয়ঙ্গকর বিরক্ত হলো মিতা-আমার বাসে চড়ার অভ্যেস আছে,আর যে সব ছেলেরা বিরক্ত করে তাদেরকে থাপ্পর মাড়ার অভ্যাসো আমার আছে।



এবার যে কি এক বিরাট হাসি দিলো মানুষটা,যে হাসীর কোন অর্থই নেই । মিতার মনে হলো বাস থেকে নাম্বার কোন তাড়াই এঈ মানুষটার নেই,কলেজ গেইট এসে যাচ্ছে আর লোকটা বার বার বলেই চলেছে-আমি হৃদরোগ হাসপাতালে আছি,ওইযে লাল বিরলিংটা ওখানেই বসি।আপনিতো আমার সেল নম্বরটা নিলেন না, তাড়াতাড়ি নিয়ে নেন।



মিতাতো অবাক,নাম জানা নাই , ধাম জানা নাই-সেল নম্বর কেনো নিবে?



কিন্তু এই নাছোড়বান্দাতো নামে না,কন্টাকটর যতোই হাঁক দিচ্ছে –কলেজ -গেইট কলেজ -গেইট ,এই লোক ততোই বলছে-আপনার মোবাইল বের করেন,নম্বর লিখেন-০১৭...



এবার মিতা শক্ত করেই বললো-আপনি বলেন ,আমার মুখস্থ থাকবে। লোকটার বিস্বাস হল না মনে হয়,মুখটা কেমন পাঙ্গশু হয়ে গেলো।নামতে নামতে একবার শুধু নম্বরটা ছূঁড়ে দিতে পারলো মিতার দিকে।



ততোক্ষনে ছেড়ে দিয়েছে আশীর্বাদ,মিতা বা দিকে তাকিয়ে দেখলো শত শত লোকের ভিড়ে আকাশী স্ট্রাইপ মুহূর্তে মিলিয়ে গেলো।সাথে সাথেই একটা দুষ্টুমী মাথায় চাপলো মিতার ,নিজের মেধাকে একবার ঝালাই করা দরকার।মানুষটার একবার বলে যাওয়া নম্বরটা ডায়াল করে ফেলে একটা মিস কল দিলো, একটু ভয় হচ্ছিলো যদি অন্য নম্বরে চলে যায়,তাহলে কি বলবে ... উত্তরে।



ভাবনার মাঝ পথেই মিতার মোবাইলে নম্বরটি বাজে উঠলো ।মিতা ধরবে কি ধরবেনা এরি মধ্যেই বাটনে চাপ দিতেই রিসিভ টোনে ভেসে এলো পরিচিত কন্ঠস্বর-আপনার মাথা এতো শার্প,একবারেই নম্বরটা মনে রেখেছেন।



এবার মিতার অপ্রস্তুত হবার পালা,ছোট্ট করে বললো –হুম।



-আবার কথা হবে-বলে লোকটা লাইন কেটে দিলো।মিতা বুঝতে পারছেনা নম্বরটা সে কি নামে সেভ করবে। এই মানুষটা কি করে , কি নাম কিছুইতো সে জানে না,কালো ব্যাগটা দেখে মনে হল ডাক্তার।



তাই নামের জায়গায় লিখে ফেললো-হৃদরোগ।



----------------------------------------

Click This Link

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

আমিনুর রহমান বলেছেন:



মোটামুটি মানের গল্প । তবে বাস্তবতা মিশ্রিত :)

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

রোদেলা বলেছেন: এই লেখাটা খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে লিখেছি,তাও পড়েছেন।ভালো লাগ্লো।

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৭

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ভালো লাগলো!

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

রোদেলা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৫

ডরোথী সুমী বলেছেন: ভাল লেগেছে। সাদামাটা পথের গল্প, তবে মিষ্টি।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯

রোদেলা বলেছেন: হুম,চেষ্টা করেছি কিছু লিখতে।ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.