নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পৃথিবী

এভাবেই ভালোবাসা পুড়ে পুড়ে যায়..

রোদেলা

আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।

রোদেলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

“নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের অর্জন ও ব্যর্থতা।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮

বেশ কিছু দিন ধরে পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালেই দেখতে পাচ্ছি নারীর উপর সহিংসতার খবর আর ঠিক তার পাশাপাশি উঠে আসছে নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক জোট হবার খবর।ব্যক্তিগত ভাবে আমি কখনো এ ধরনের মিটিং কিংবা মিছিলে অংশগ্রহন করিনি,কারন আমার সব সময়ি মনে হয়েছে এই বিষয়টি একেবারেই রুট লেবেল থেকে হওয়া উচিত।
প্রথমত বুঝতে হবে , যে নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে তাকে,সে যদি বয়সে শিশু হয় তবে তাকে আগলে রাখার দ্বায়িত্ব তার অভিভাবকের ওপরেই পড়ে। আজকের খবরের কাগজে দেখলাম , পিতা তার কন্যা সন্তানকে কামড়ে মেরে ফেলেছে, তাকে পরবর্তিতে মানসিক বিকারগ্রস্থ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।কোন মা তার স্বামীকে হত্যাকারী হিসেবে ভাব্বেন না স্বাভাবিক,কিন্তু তার স্বামী যদি বেশ কিছু দিন ধরে এমন কোন আচরন করেন যা সন্দেহের তালিকায় পড়ে তাহলে অবশ্যই ভেবে দেখবার বিষয়।কিন্তু গ্রামের মেয়েরা নিজেদের কন্যা শিশুর ব্যাপারে অনেকখানি উদাসীন।এটা বংশ পরম্পরায় হয়ে আসছে।কারন সে নিজেও ছোট বেলা থেকেই মা-বাবার কাছে অবহেলায় বড় হয়।তার সচেতনতার জায়গাটা তৈরি করতে পারে এন জি ওর সদস্যরা এবং মিডিয়া।এটা হতে হবে একদম প্রতিটা ঘরের কোনায়।কেউ অন্দরমহলে ঢু্কতে দেবে না এটা যেমন সত্য, তেমন সত্য প্রতিটা নারীকে তার নিজের ব্যাপারে-সন্তানের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
একজন ডাক্তার যার নিজের শিক্ষার কোন অভাব নেই,সে জানে স্বামীর বাড়ি তার জন্যে নিরাপদ নয় তাও তিনি পি জি হাসপাতালের কাজ শেষ করে সেই বাড়িতেই অবস্থান করছেন সন্তানের জন্যে ,হয়তোবা সমাজের জন্যে।ফলাফল তার লাশ,পত্রিকায় সুন্দর মুখশ্রী-সবার হা পিত্তেশ।
গত ২৭ শে নভেম্বর বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংস্থার উদ্যোগে প্রেস ক্লাবে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিষয় ছিল-“নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের অর্জন ও ব্যর্থতা।“
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর আপার সভাপতীত্বে পুরো তিন ঘন্টা জুরে বেশ কিছু বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
নারী নির্যাতন রোধে এন জি ও গুলোর সফলতা সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে একজন বলেন, একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে পুরুষদের যদি প্রশ্ন করা হয় তাহলে উত্তর আসে-আমরা আর বৌয়ের গায়ে হাত তুলি না আপা।
মহিলাদেরকে আড়ালে নিয়ে জানতে চাইলে উত্তর আসে-গায়ে হাত তুলে না,কিন্তু চোখ দিয়া ঠিক বুঝায় দেয়।
তার মানে দাঁড়াচ্ছে অত্যাচারটা রয়ে গেছে কিন্তু ধরনটা কেবল বদলে গেছে।এখানে আমি একটু যোগ করি-পূর্বের দিনে নারীদের বাইরে কাজ করতে দেওয়ার পার্মিশন ছিল না,কিন্তু আজকে মেয়েরা বাইরে কাজ করছে।কিন্তু তার আয়ের পুরোটার উপর দখল দিচ্ছে তার স্বামী ।এই চিত্র এই আধুনিক ঢাকা শহরেও রয়েছে।সেটার মাত্রা যে খুব কম তাও কিন্তু না।
উক্ত সেমিনারে আর একটা বিষয়ে প্রশ্ন এসেছিল যার উত্তর আমরা এখনো ক্লীয়ার নই সেটা হচ্ছে-যেখানে নারী নির্যাতনের ব্যাপারে নারীরা নিজেরাই দায়ী তার প্রতিকার কি?আমরা না হয় পুরুষদেরকে কসম কাটিয়ে,মাথার দিব্যি দিয়ে ,ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা আদায় করলাম আর বউ পিটাইশ না, কিন্তু তার মা –তার বোন যারা নিভৃতে নীরবে প্রতিনিয়ত তাদের ঘরের বউকে অপমান অপদস্থ করে যাচ্ছে তার কি হবে?ব্যাপারটা অনেক টা নিজের মাংস নিজে খাওয়ার মতোই।
উক্ত সেমিনারে পুরুষবক্তাদের অংশগ্রহন আমাকে সত্যিই খুব পুলকিত করেছে।উনি ঘরের ভেতরে কি করেন তা জানার উপায় আমাদের নেই ,কিন্তু খোলা ময়দানে মিডিয়ার সামনে নারীদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন সেটা সত্যি প্রশংসনীয়।এন জি ও কর্মী নাহিদ আপা বলছিলেন –অনেক সময় অত্যাচারের মাত্রা কমে গেলেও সেটাকে তেমন ভাবে মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়না।কারন এখানে রুটি-রুজির একটা প্রশ্ন চলে আসে।হুম,সেটা নিয়েও তর্ক –বিতর্ক কিছু কম ছিলনা।এতো অল্প পরিসরে তা লেখা সম্ভব নয়।তবে মেয়েরা নিজেদের ব্যাপারে অনেকটাই এখন সাবধান এটা মানতেই হবে।
সবচেয়ে ঝামেলা হয়ে গেলো সেমিনারের একদম শেষটায় এসে।আমি নাম উল্লেখ করছিনা ,তবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির একজন গূরুত্বপূর্ন সদস্য হঠাত বলে উঠলেন –“মেয়েদের রাত ১০ টায় কাজ ছাড়া বাইরে যাবার দরকার টা কি?সেদিন বসুন্ধরায় দেখলাম একটি মেয়ে একটি ছেলের গায়ের উপর হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে।আর ছেলেটা খুব লজ্জা পাচ্ছে।তোমরা কাপড় পরার সময় সচেতন থাকবা।“
উনি বোধ করি আরো কিছু বলতে চেয়েছিলেন ,কিন্তু আমাদের তীব্র চিতকারে পুরো পরিবেশটাই অন্যরকম হয়ে যায়।পরিশেষে রোকেয়া আপা বিষয়টিকে উল্লেখ করে বলেন-এভাবে যদি আমরা ভাবি তাহলে যে অপরাধী তার দিকে জাস্টিস চলে যায়।একটি মেয়ে যখন ধর্ষন কিংবা এসিডদগ্ধ হয় সেখানে অন্যায়কারীর মানসিক অবস্থা বা মেয়েটার পরনের কাপড় কখোনই আলোচনার বিষয় হতে পারে না।তাহলে শিশু বা পর্দানশীল মহিলারা এই লিস্টে পড়তো না।
অন্যায় অন্যায়ই,এটার দায় তার নিজের,জোর করে অন্যের ঘাড়ে তা চাপানো যাবে না।
একটি মেয়ে বড় হতে হতে তাকে অনেক সাবধানের বানী শোনানো হয়-এটা কোর না ,ওটা করোনা।কিন্তু ছেলেদের শেখানো হয়-মেয়েদের মতো কান্না করোনা।তারমানে তুমি কেঁদে নিজেকে হালকা না করে পশুর মতো হিংস্র হউ।
কান্না একটা সাধারন প্রবৃত্তি যা মানুষকে অনেক বেশি রাগ থেকে দূরে সড়িয়ে রাখে।এখন এটা শেখানোর দায়টা কার।অবশ্যই আমি বলবো-মায়ের।এখনো আমাদের দেশে স্কুলের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা মায়েরা বসে থাকেন ।ছেলের পড়াশোনার উন্নতি সাধনের চিন্তায় তাদের মুখে শত বলিরেখা। কিন্তু কয়জন মা তার ছেলেকে পই পই করে শিখিয়ে দেন-তোমার মেয়ে বন্ধুর সাথে এটা করোনা,ওটা করোনা।সাবধানের বুলি কি কেবলি মেয়েদের জন্যে,ঐসব কোমল ছেলেদের কি তার মার কাছ থেকে শেখার কিছু নেই।বার বার মার কথা বলছি কারন বাবাদের চেয়ে মায়েরা সময় বেশি দিবে বাচ্চাদের –এটাই স্বাভাবিক।এই বিষয়ে নারীবাদী হয়ে উঠবার কিছু নাই।বাবারা কোনদিন সন্তানের আত্বার কাছা কাছি যেতে পারে না।যে যেতে পারে তাকে অবশ্যই আমি সেলুট করি।
সর্বপোরি ,সেমিনার শেষ করার পর আমার মনে হয়েছে।অনেক কিছুই আলোচনায় আসতে পারতো-যেমন সেক্স এডুকেশন।এখোন এ বিষয়ে কেন জানিনা এ দেশে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই।আর একটা ব্যাপার হচ্ছে আইনের অজ্ঞতা।অনেক শিক্ষিত ছেলেরাই জানে না দেন মোহর কি,কিভাবে পরিশোধ করতে হয়।মেয়েরা তালাক দিলেও ইদ্দতকালীন সমর ৯০ দিনের খরচ তাকেই বহন করতে হবে এটা মানতেও অনেকে নারাজ।আর শুধুমাত্র স্ট্যাটাস বাড়ানোর জন্যে অনেক অভিভাবক তার মেয়ের দেন মোহর ১০-২০ লক্ষ দেখান যা কোন দিন ছেলেটার পক্ষে পূরন করা সম্ভব হয় না।পরবর্তীতে আইনের প্যাচে ছেলের পরিবার হেনস্থা হয়।সুতরাং আইন শিক্ষা প্রত্যেকটি ছেলে মেয়ের জন্যে বাধ্যতামূলক।
যাই হোক,নারী নির্যাচন নিয়ে অনেক কিছু বলে ফেললাম।কিন্তু পুরুষরাও যে নারীদের দ্বারা অনেক ভাবে বিপদের সম্মুক্ষীন হন সে গল্প না হয় আর একদিন বলবো, অন্য এক পরিসরে।







মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২

মামুন রশিদ বলেছেন: সচেতনতা বাড়ুক । শিক্ষার প্রসার আর আইনের শাসন প্রতিষ্টা হোক ।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

রোদেলা বলেছেন: সে্টাই আশা করি সবার কাছ থেকে।

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩০

তুষার কাব্য বলেছেন: নির্যাতন রোধে প্রথমত নিজেদের মূল্যবোধ,সহমর্মিতা,সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই...আর এসবের সাথে সাথে তাই শিক্ষাটাও চলে আসে আগে...যদিও শিক্ষিত হলেই যে সত্যিকারের মানুষ হয়ে যাবে তাও নয় সেজন্য মন টাকেও শিক্ষিত করে তোলা খুব দরকার,সাথে আইনের ভয়টাও যদি আমাদের বোধ কে নাড়া দেয় তবেই এসব থেকে বেড়িয়ে আসা সম্ভব...

শুভকামনা...

৩| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৫

রোদেলা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫৫

বাঘ মামা বলেছেন: হুমায়ুন আজাদের নারী বইটায় প্রথম লাইনটাই ছিলো এমন- কেউ নারী হয়ে জন্মায়না,ক্রমশ নারী হয়ে উঠে।

এই নারী করে তৈরীতে যার সবচেয়ে বেশি অবদান সেও একজন নারী,অদ্ভুদ ভাবে একজন নারী এই শিশুটিকে নারী হিসেবেই শুধুই নয়,তাকে তৈরী করা হয় মন মজানো এক মৌহ করে।এই কাজে সহযোগীতা সব চেয়ে বেশি করে সেই শিশুটির মা।তার শিশুটিকে নরম কোমল করে তোলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন পরিবারের সমাজের প্রতিটি মানুষ।শিশুটির মগজ গঠনে কেউ মরিয়া না হয়ে পুরো শরীরটাকে মুরমুরে করে তোলাই সবার লক্ষ্য । এই নারী কারিগর নারী গুলো এখানেই ক্ষান্ত নয়,তারা তাদের ছেলে কিংবা ভাই পুরুষটার জন্য এমনি এক বস্তু ঘরে তুলেন।

পাত্রী দেখার অনুষ্ঠানে যারা সবচেয়ে সরব থাকে তারা নারীই।পাত্রী নামের পনিরটার শরীর মসৃণতায় যারা হাত বুলিয়ে দেখেন তারাও নারী। তার নিচের পাটির ঠোট মোটা নাকি চিকন,নাকটা বেরিয়ে আসছে নাকি ভোচা কিংবা ভিতরে ,চুল কোমড় চুলো নাকি ঘাড়। সব দাঁতের সহবস্থান সঙ্গত নাকি অসঙ্গত তা সব টুকু খুতিয়ে দেখেন এই নারীরাই।

নারীকে না না করে এতটা নামিয়ে দেয়া হয় কিংবা দুর্বল করে দেয়া হয় যে অশীষ কুমার লৌহর মত রোগা পুরুষটিও মুয়ুরীর মত নারীকে ধর্ষণ করে মাসল নাচাতে নাচাতে বাড়ি ফিরে।
আর ধর্ষনে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় পোষাক পরিচ্ছেদ কে,এই যায়গায় আমি হো হো কোরে হেসে উঠি।অদ্ভুদ এই সমাজ ব্যবস্থা কিংবা পুরুষতন্ত্র সমাজ এখানেও নারীকে আরেকবার পদদলিত করে।একজন ধর্ষককে ধর্ষক করে তুলতে সেই ধর্ষকের নোংরা শরীর আর বিকৃত মনটাই কি যথেষ্ট নয়?
বিষয়টা এমন যে একজন নারী তার রুচি অনুযায়ী ফ্যশন নিয়ে হেটে যাচ্ছে আর আমি উত্তেজিত হয়ে তাকে ধরে নিয়ে শরীরি স্বাদ নিলাম,আর দুইহাত তুলে বললাম আমার কোন দোষ নাই,সব দোষ এই নারীর।

এসব নিয়ে বলতে গেলে পাতায় পাতায় বলা যাবে,শুধু একটি কথায় বলবো জগতের সকল মা কে -কোলের শিশুটির ফিমেল মেলে নজর না দিয়ে মানুষ করে তুলুন।বাবাকে বলবো আপনার দেখা সমাজের সকল অসঙ্গতি থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে সন্তানকে শিক্ষা দিন, শিক্ষা দিন ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে দিনে রাতে একলা পথে কিভাবে বাড়ি ফিরতে হয়,কিভাবে নিজের পায়ে দাড়াতে হয়। এমন শিক্ষা সন্তানকে দিবেননা যেন জীবনে এক মুহুর্তের জন্য কারো আশ্রয় কিংবা মুখাপেক্ষি হয়ে বাঁচতে হয়।হোক সে মেয়ে কিংবা ছেলে।

সুন্দর দেশ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে আমার ভালো লাগে, ভালো লাগে বলতে যা আমার বোধ থেকে,জীবন থেকে।

আপনার ভাবনা গুলো আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাক ভবের উচ্চ স্তরে।

শুভ কামনা সব সময়

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৬

রোদেলা বলেছেন: এমন নিখুঁত করে ভাবতে পারে কয়জন।নিয়মের মারপ্যাচে সবাই আটকে গেছে,কিন্তু বোঝেনা এই নিয়ম টা আমাদের নিজেদেরই তৈরী।প্রয়োজন বোধে তা ভেঙ্গে ফেলার দায়িত্ব আমাদেরি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.