![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।
বেশ অনেক সময় ধরেই নীলিমা জি-মেইল ঘাটাঘাটি করছিলো।নতুন কোন ই-মেইল এলো কিনা , নতুন কোন নোটিফিকেশন আছে কিনা-এইসব।আসলে ছুটির দিন, বাড়ীতে বসে একরকম বেকার বসে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার নাই।তাই চোখের সামনে থাকে ল্যাপটপ যেখানে ইউটিউব ,স্কাইপে আর ফেইসবুক সারাক্ষন খোলা ।ইনবক্সের একটা মেসেজ ক্রমাগত উঁকি মারছিলো,
-আপনি কি ব্যস্ত?
সাংঘাতিক ব্যাপার।এতো দূরে থেকেও শুদ্ধ বাংলা।এবার নীলিমা নড়েচড়ে বসলো,
-না,একদম না।আজ আমার ছুটির দিন।
-এর আগেও আপনাকে নক করেছিলাম।মনে হয় খুব ব্যস্ত থাকেন।
-তা না,আসলে ইনবক্সে অপরিচিত কারো সাথে তেমন কথা হয়না।
-কি করেন আপনি?
-তেমন কিছুনা,একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে আছি।একটু ভেবে আবার বলে ,
-আপনার ওখানে এখন কয়টা বাজে?
-রাত একটা।
-এতো রাত জেগে থাকেন,পাশের মানুষের অসুবিধা হয় না।
-আমার পাশে কেউ নেই,আমি একাই থাকি।
-তবে যে দেখলাম ছেলে মেয়ে দিয়ে টাইম লাইন ভরা।
ওপ্রান্তে অনেক্ষন হাসির শব্দ।
নীলিমার মনে একটা প্রশ্ন উঁকি দিতে থাকে,কিন্তু তা আর করা হয় না।কারন কথার শুরুতেইতো আর বলা যায় না-আপনার বউ কোথায়?
এর মধ্যেই হঠাত আরমান তার ফোন নম্বর চায়।দুম করে নিজের নম্বরটা লিখে দেয় ইনবক্সে।
কিছুসময়ের মধ্যেই ফোন ।ওপাশ থেকে কন্ঠটা একদম পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে।নীলিমা আরো বেশি অবাক হয় ,বিদেশে থেকেও এতো ভা্লো বাংলা বলছে কিভাবে মানুষটা।নীলিমার মুগ্ধতা বাড়তে থাকে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে কথার গতি।
দুপুর গড়িয়ে এখন বিকেল চারটা ।ফোন ছেড়ে এখন স্কাইপেতে কথা হচ্ছে, মনেই হচ্ছেনা এরা দু’জন মাত্র পরিচিত হলো।আরমানের পরিপাটি ঘর দেখা যাচ্ছে চার বাক্সের মাঝ দিয়ে ,হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে আছে ,চোখ নীলিমার দিকে স্থির।নিঃসংগ জীবনের সাথে মিতালী পড়াতে এসেছে বহু মানুষ।কেও নীরবে,কেউবা স্বরবে।কিন্তু এভাবে টানেনি কেউ।এই টানটা ওই মানুষের প্রতি নাকি চাকচিক্যময় ওই দেশের জন্যে বুঝতে পারেনা নীলিমা।
নীলিমা এক সময় আরমানকে বলে-আমি ওখানে গেলে অড জব করতে পারবো না।আরমান হেসে উত্তর দেয়, -না,এখানে তোমাকে অড জব করতে হবে না।অনেক কাজ আছে।
-কিন্তু ট্যুরিস্ট ভিসায় গেলে কি কাজের পার্মিশন দেবে?
-না,তা দেবেনা।তবে তোমাকে এখানে আসার পর পি আর এর জন্যে এপ্লাই করতে হবে।আর আমার জানা শোনা অনেক লোক আছে।আগে তুমি আসোতো তাহলেই না দেখা যাবে।
শরতের স্নিগ্ধতা ছাপিয়ে হেমন্তের আভাস ভেসে আসছে বাতাসে।নীলিমা কল্পনার যাদুর স্পর্শে ঘুরে বেড়াচ্ছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে।সারাক্ষন আচ্ছন্ন করে রাখে কোন এক ভালো লাগার ছোঁয়া।প্রতিদিন ঠিক রাত দশটা বাজলেই জমে ওঠে দুজনের ফোনালাপ,সে কথা গড়ায় মধ্যরাত অব্দি।
আরমান অনুনয় করে –তুমি লাল শাড়ী পড়ে আসো,আমি তোমাকে দেখবো।
-দেখে কি হবে?
-কিছু হবেনা ,কেবল দেখতে চাই।শাড়ীটা তুমি আমার সামনেই পড়বে।
মনে হচ্ছে আরমান চোখের সামনেই বসে আছে।নীলিমা বুকের ওপর থেকে একটা একটা করে কাপড় খুলে নিচ্ছে।হঠাত কি মনে হতেই নীলিমা প্রশ্ন করলো-এই,তুমি আবার ভিডিও কোরছো নাতো?
-ওহ,জান।তুমি আমাকে বিশ্বাস করোনা?
-করি করি,অনেক করি।
শুন্যে ধোঁয়া ওঠা ঘুর্নির মতো ঘুরতে থাকে নীলিমা আর আরমানের মধ্যরাতের প্রেম।
সময় যেতে থাকে কথায় কথায়,খুঁনসুটিতে ।হেমন্ত কাটিয়ে পৌষের ছায়া নামে শহরের প্রান্ত ঘেঁষে।ঘর অন্ধকার করে নীলিমা শুয়ে আছে ।আরমান ফোন দেবে-জানতে চাইবে ভিসা হয়েছে কিনা।কিন্তু কিছুতেই এই দুঃসংবাদটা ওকে দিতে ইচ্ছে করছেনা,চিতকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে,নীলিমা তাও পারছেনা।কেবল শুয়ে শুয়ে ভাবছে -সে একা একজন ডিভোর্স মহিলা,যদি আর দেশে ফেরে ,সেই আশংকাতেই ছিলো অফিসার।তাইতো হোল না ভিসা।যাওয়া হোল না আরমানের কাছে।ভেঙ্গে গেলো স্বপ্নের পৃথিবী।
স্কাইপে অন করে কল করে নীলিমা, ওপ্রান্তের উতসুক চাহনী-কি খবর বলো?
-না,তোমাদের সাদা চামড়া আমাকে পছন্দ করেনি।
-হা ,হা হা...
-হেসো না,সত্যি ভিসা হয়নি।
-সত্যি বলছো?কিন্তু কেন?সব কাগজ নিয়েছিলেতো?ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স,স্যালারী স্টেইটমেন্ট?
-সব নিয়েছি,কিন্তু ব্যাটা বলেছে-no need to show.
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে আরমান বললো-বাদ দাও,আমি অন্যভাবে চেষ্টা করবো।
-অন্যভাবে বলতে তো ওয়ার্ক পার্মিশন।ওটা কি আমাকে দিবে?
-দেখি,কি করা যায়।
-এতো দেখা লাগবেনা।আমি যেতে পারবো না,তুমি দেশে আসো।
আরমান চুপ করে থেকে বললো-দেখি।
দেশে আসার মতো তার আদৌ কোন মানসিকতা আছে কিনা তা নীলিমা বুঝতে পারেনা।যখনি দেশের কথা বলে আরমান বলে ,এখানে ওদের কেউ নেই।ভাই-বোন সবাই কানাডায়,বাবা-মাতো কবেই গত হয়েছেন।তারপরো নীলিমা নিজেকে সামাল দেয়-একদিন হয়তো আরমান দেশে ফিরবে ।
মাঘের শীত আচমকা জাকিয়ে বসেছে সমগ্র ঢাকা শহরকে,সেই সাথে বাড়ছে রাজনৈতিক অসহীংসতা।আরমান এখন আর আগের মতো ফোন দেয় না,কেমন যেন নিস্তেজ হয়ে গেছে আগের সম্পর্ক।কিন্তু ভেতরের এক অমি্মাংশিত হাহাকার প্রতিমুহূর্তে টের পায় নীলিমা।বাইরে যাবার চিন্তাটা মাথা থেকে একেবারেই বাদ,এ দেশেই কিছু করতে হবে।এমন ভাবনা থেকে সে একটি এন জি ওর পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে দুঃস্থ শিশুদের সাথে কাজ আরম্ভ করে।প্রায় প্রতিদিনি যেতে হয় শহর থেকে দূরে,অনেক সময় নেটোয়ার্কের বাইরে।তখন হঠাত মনে হয়-ইশ,যদি আরমান ফোন দিয়ে না পায়।তারপর এক অজানা অভিমান তাকে গ্রাশ করে-করলে করুক,যে নিজের দেশ ছেড়ে বাইরে বিলাসী জীবনে ব্যস্ত , তার জন্যে এতো কিসের মায়া।
হাজার হাজার সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ডাটা তৈরী করতে হয় প্রতিদিন,তা পাঠিয়ে দিতে হয় হেড অফিসে।তাই নীলিমা অনলাইনেই থাকে।এমনি এক দুপুরে কাজ করতে গিয়ে একটি ই-মেইলের দিকে নজর পড়লো নীলিমার,সেখানে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা-আই এম ইন ঢাকা।নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছে না,আরমান কি ফান করছে।স্কাইপেতে প্রশ্ন করে, -তুমি এখন কোথায়?
স্ক্রীনের মধ্য দিয়ে ভেসে আসছে আরমানের ক্লান্ত মুখ।একটু হেসে বললো-আমি তোমার খুব কাছেই আছি।
-কোথায় , প্লীজ বলো।
-বলছি,তার আগে তুমি বলো-আমাকে তুমি বিশ্বাস করোনি ,তাই না।
নীলিমার চোখ বেয়ে তখন টপটপ করে জল ঝড়ছে।
-তুমি আমার কাছে এসো প্লীজ।
-আসছি,কিন্তু জিঞ্জেস করলে না ,কেন এসেছি।
-কেন?
-তোমার জন্যে এসেছি এটা সত্যি,আবার শেষ সময়ে দেশকে কিছু দিতে চাই এটাও সত্যি।
-শেষ সময়ে মানে কি?
-তোমাকে কখোন বলা হয়নি,আমার একটা সমস্যা আছে।খুব বেশি দিন সার্ভাইভ করতে পারবোনা । হাতে সময় অল্প।তাই গুছিয়ে আসতে কিছুটা সময় লাগলো।আমার হাতে যা আছে তা দিয়ে তুমি গরীব বাচ্চাদের ঠিকি ভালো কিছু করে দিতে পারবে।
এই সব শোনার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলো না নীলিমা।ওর স্তব্ধ হয়ে যাওয়া মুখের দিকে চেয়ে আরমান বললো-নীলা,আমি তোমার সাথে দেখা করতে আসবো কেবল একবারের জন্যে।আমার কাছে খুব বড় অঙ্কের একটা চেক আছে ,সেটা তোমাকে বুঝিয়ে দেবো।আর শেষ বারের মতো তোমাকে লাল শাড়ীতে দেখবো।কোথায় আসবো আমাকে বলে দাও।দীর্ঘ ২৫ বছরে আমি ঢাকার রাস্তা ভুলে গেছি।
আরমান–নীলিমা দু’জন দু’জনকে ভালোবেসেছিলো।তারা দেশকে ভালোবেসেছিলো,মানুষকে ভালোবেসেছিলো।তাদের এই যৌথ ভালোবাসায় প্রতিষ্ঠা হলো –দি আরমান ট্রাস্ট।নীলিমা নিজেই বেশ কিছু বেকার ছেলে মেয়েদের কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।আর আরমান চলে গেছে সীমান্তের ওইপাড়ে।যে সীমান্ত ইচ্ছে করলেই কেও পেরিয়ে আসতে পারে না কোন দিন।
(এই লেখাটা একটা কম্পিটিশনে দেওয়া হয়েছে।অতএব কোন অবস্থাতেই এটা কপি করা যাবে না।তবে শেয়ার করা যাবে।)
আলকচিত্র ঃ লয়েড তুহিন হালদার।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮
রোদেলা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯
নিলু বলেছেন: লিখতে থাকুন
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮
রোদেলা বলেছেন: শুভেচ্ছা জানবেন।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: সুন্দর আপু। মনখারাপ করা সুন্দর।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯
রোদেলা বলেছেন: হুম,তেমনটাই হয়ে যায়।সুন্দর করে কিছু শেষ করতে পারিনা।
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮
নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: লিখতে থাকুন ।
শুভেচ্ছা
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১০
রোদেলা বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা রইলো।
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০০
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: গল্পে ভালো লাগা কিন্তু কেন জানি না হৃদয় ছুঁয়ে গেল না।
বুঝলাম না।
খুব তাড়াতাড়ি পরিণতি পেয়ে গেল কি?
নাকি দ্রুত বেড়ে ওঠা প্রেমে আবেগের অভাব।
আমি সমালোচনা করছি না কারন আমি সমালোচনা করি না।
একজন পাঠক হিসেবে পাঠপূর্বক মনের চিন্তাদের কথা বল্লাম।
ভালো থাকবেন।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭
রোদেলা বলেছেন: শব্দের ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা ছিলো।
৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯
উধাও ভাবুক বলেছেন: শুভকামনা রইল।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৮
রোদেলা বলেছেন: শুভেচ্ছা জানবেন।
৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১১
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: এমনটাই আসলে বেশি সুন্দর।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭
রোদেলা বলেছেন: হুম,ভাবনার আকাশে কতো কিছুই সম্ভব।ধন্যবাদ।
৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬
তুষার কাব্য বলেছেন: মন খারাপ করা গল্পে ভালো লাগা...
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২২
রোদেলা বলেছেন: ধন্যবাদ তুষার ।
৯| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪১
দীপংকর চন্দ বলেছেন: কামনা করি প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করুক লেখাটি।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩
রোদেলা বলেছেন: সাফল্য অর্জন করে নাই ভাই,ওরা ফ্রী ফ্রী অনেক লেখা পেয়ে গেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩২
বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: দারুন লেখেছেন পড়ে ভালো লাগলো