নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পৃথিবী

এভাবেই ভালোবাসা পুড়ে পুড়ে যায়..

রোদেলা

আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।

রোদেলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কামলাগিরি ...

১১ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০

বৈশাখের শেষ বৃষ্টিতে ঘুমটা ভীষন রকম জেঁকে বসেছিলো।কিছুতেই মন চাইছিল না উঠে গিয়ে খাবার তৈরি করে বক্সে ভোরতে।আজকাল অনেকটা স্কুল গোইং বাচ্চাদের মতোন মনে হয়।ঠিক সকাল সাত’টায় এলার্ম বাজবে ,আধ ঘন্টায় তৈরি হতে হবে।তারপর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আরো মিনিট বিশেক ,কোন রিক্সা ওয়ালার যদি মনে চায় তাহলেই আপনাকে সঙ্গী করবে নয়তো অগত্যা দুই পাই ভরসা। স্কুলের সাথে এইসব অফিসের কেবল একটাই পার্থক্য আর তা হচ্ছে ওখান থেকে বের হবার নির্দিষ্ট একটা টাইম আছে।কিন্তু এই সব অফিসে এ্কবার যদি কেউ ঢুকে পড়েছেন তো পড়েছেন,কখন বের হবেন তা নির্ভর করবে সম্পূর্ন আপনার বসের উপর।আর তা যদি হয় একক মালিকানাধীন তাহলেতো হয়েই গেলো।
তা যা বলছিলাম।নরম কাঁথার আদর সড়িয়ে উঠে পড়লাম ঝটপট।দৈনিক যা যা করতে হয় আর কি –বাচ্চাকে স্কুলের জন্যে তৈরি করে মায়ের কাছে হ্যান্ডওভার।বূয়াকে আধ ঘন্টার মধ্যে ব্রিফিং দেওয়া ।কারন ওদের সময় আমাদের চাইতে অনেক দামী ।তারা এক দিনে সাত সাতটা অফিসে হাজিরা দেয় ।আর আমাদের মতোন মহিলারা একটা অফিস করেই হাঁপাতে থাকি।হোয়াট এ এক্টিভিটিস্ট ; এক বেলা সিঁড়ি ভাংতেই যেখানে হাঁস ফাঁস অবস্থা আর এই মধ্যবয়সী মহিলা দিনে অন্তত চারবার তিন তলা চার তলা করে।তাই হাজার চিৎকার করলেও ঘরের কোনায় ময়লা রয়েই যায়।ওটা সড়ানোর বাড়তি টাইম তাদের নাই।
দশটার মধ্যে অফিস পৌঁছুতে হবে তা ঝড় হোক আর সাইক্লোন।নইলে পুরো অফিস শুদ্ধাই ভূমিকম্প বয়ে যাবে।আর তার ফলস্বরূপ অফিসটাইম হয়ে যাবে নয়টায়।তার চেয়ে হাঁটু জলে বাসের জন্যে অপেক্ষা করা ঢের ভালো।বৃষ্টির ছাট এসে গায়ে লাগলে মন্দ লাগেনা,কিন্তু তার সাথে যে বোনাস হিসেবে ড্রেনের পানিও ছিটকে আসে সেটা পেতে কার ভালো লাগে বলেন। তাও লাগতে হয়।পূর্নিমার চাঁদ আকাশে উঠলো কি উঠলোনা,কার কবে জন্মদিন হয়ে গেল তা নিয়ে প্রশাসন খুব সচেতন হলেও আমাদের মালিকদের কিচ্ছু যায় আসে না।
১ লা মের ঘটনাই বলি ।আমি বেশ কনফিডেন্সী নিয়ে বসকে জিজ্ঞেস করলাম-কাল কি অফিস করতে হবে স্যার?
উনি ভয়ঙ্কর রকম অবাক চোখে প্রশ্ন করলেন -কেন?কাল কি বিজয় দিবস?
আমি ততোক্ষনে আমতা আমতা করছি-না মানে কালতো ১লা মে।
বসের ঠোঁটের কোনে দুষ্টু মার্কা হাসি খেলা করছে-কেন ,আপনি কি শ্রমিক নাকি ?
আসলেইতো আমি আসলে কি ?বাসার যে মহিলা কাজ করে তাকে আমরা বূয়া বলি ।বেতন দিতে একটু দেরী হলেই চিৎকার করে পাশের ফ্ল্যাটের লোক জরো করে দিতে পারে ।তাই নিজে বেতন না পাই,তার বেতন আগে দিয়ে ফেলি।তার উপর তারা দরিদ্র মানুষ।মে মাসের প্রথম দিন তো আছেই ,সে যখন ইচ্ছা বিনা নোটিশে কাজে নাও আসতে পা্রে।এইজন্য কিছু বলতে গেলে সে আর কাজে আসবেনা কোন রকম নোটিশ ছাড়াই।কাজ করার সময় তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম পড়ে ,আমার চোখ এড়ায় না।তাই সে অবশ্যই শ্রমিক।যারা গার্মেন্সে কাজ করে তারাতো লিখিত শ্রমিক ।বাস ,ট্রাক যারা চালায় তারাও শ্রমিক ।কিন্তু আমি এই দিনে তাদেরকে গাড়ি রাস্তায় বের করতে দেখেছি।ড্রাইভারদের শিফটিং ডিউটি হয়,ছুটি ছাটা কিভাবে হয় তা কেবল তারাই বলতে পারে।তবে “ওভারটাইম স্যালারী” বলতে যে একটা কথা আছে তা কতো জায়গায় প্রচলিত তা ঠিক বলতে পারছিনা।শ্রমিক বা কামলা কে তার ভাগীদার তার জন্যে একটা আমলনামা থাকা দরকার।
কিন্তু আমরা যারা স্যুট টাই পড়ে ,ভাঁজ দেওয়া শাড়ী পড়ে অফিস করতে আসি তারা হচ্ছি মধ্যবিত্ত ভদ্র কামলা ।১৮ ডিগ্রী সেন্ট্রিগ্রেডের নীচে আমাদের কপালের ঘাম কারো চোখেই পড়ার কথা না।মাঝে মাঝে আমাদের দিকে তীরের মতোন এমন সব শব্দাবলী ছুটে আসে যে নিজেকে আবিষ্কার করি ৮১ ডিগ্রীতে ঘামছি।কিন্তু প্রতিবাদ করবো?কার ঘাড়ে কয়টা মাথা?খাও গালি,যাও ডেস্কে।চুপ চাপ কাজ করো।তুমি যে ঢাকা শহরে ভদ্র মতোন একটা জব পেয়েছো,এটা টিকিয়ে রাখাই মোদ্দা কথা।কে বাপ তুলে গালি মাড়লো আর কে অপমান করে ফাইল ছুড়ে দিল –এইসব নিয়ে ভাবার টাইম নাই।বেটার জ্বী হুজুর জ্বী হুজুর মুখের বুলি আউড়াও ,দেখবে সব খুন মাফ।
চাকরী থাকলে বৌদ্ধ বাবুর এমন পূর্নিমা বহু আসবে জীবনে,মে মাস ভেসে যাবে লাল কাপড়ে।ঐ গুলো খেটে খাওয়া শ্রমিকদের প্রাপ্য।তোমার জন্যে নির্দিষ্ট বলে কিছু নেই,কর্নধার নির্নয় করবে তুমি কতোক্ষন আছো আর কতোক্ষন নেই।সো , এই সব আলগা ছুটি নিয়ে ভাবার কোনই প্রয়োজন নেই।ছয় ঘন্টা কি দশ ঘন্টা –কাজ করা দরকার কাজ করো। যে কোন দিন ঘুম ভেঙ্গে গেলে শুনতেও পারো তোমার চাকরী চলে গেছে ,তুমি মোটেও অবাক হবে না।সঠিক যোগ্যতা এবং লিঙ্ক থাকলে আবার তুমি নতুন উদ্যোমে কামলা জীবন ফিরে পাবে। প্রাপ্য বেতন তোলার জন্যে যাবে নাকি উকিলের কাছে, তাহলেই সেড়েছে ।কামলাদের জন্যে কোন আইন আছে নাকি ?কই শুনিনি তো কোন দিন।আর যদি থেকেই থাকে যারা এখনো নিয়োগপত্র ছাড়াই বছরের পর বছর কামলা খেটে যাচ্ছে তারা প্রমান দিবে কিসে?জানোতো ,আদালত কাগজ ছাড়া কিছুই বোঝেনা।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:৩৪

জেন রসি বলেছেন: আমরা সবাই কোন না কোন ভাবে কামলা।

১২ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩

রোদেলা বলেছেন: ঠিক তাই জেন রসি।

২| ১১ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:৫২

দীপংকর চন্দ বলেছেন: পরিবর্তনের আশাবাদ রাখছি তবু!

অনিঃশেষ শুভকামনা।

অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।

১২ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৪

রোদেলা বলেছেন: আশা নিয়েইতো মানুষ বাঁচে ,আমরাও বাঁচবো দীপ।

৩| ১২ ই মে, ২০১৫ রাত ১:৩৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: যা লিখেছিলাম সবই নূতন ভার্সনের লগইন/আউটের কল্যানে মুছে গেছে।। তাই আর লেখা হলো না।। লাইক দিয়ে গেলাম।।

১২ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫

রোদেলা বলেছেন: ভার্সন চেঞ্জ হওয়াতে বিরাট প্যাড়া ,আমিতো বুঝতেই পারি নাই আমার লেখা প্রথম পাতায় এসছে।ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী।

৪| ১২ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮

সুমন কর বলেছেন: যে কোন দিন ঘুম ভেঙ্গে গেলে শুনতেও পারো তোমার চাকরী চলে গেছে ,তুমি মোটেও অবাক হবে না। সঠিক যোগ্যতা এবং লিঙ্ক থাকলে আবার তুমি নতুন উদ্যোমে কামলা জীবন ফিরে পাবে।

হুম !!

১২ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬

রোদেলা বলেছেন: চলছে জীবন চলার মতোন,যাচ্ছে চলে যেমন তেমন।

৫| ১২ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:০৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: শ্রমচক্রে বন্দি নাগরিক অনুভূতি।

৬| ১৩ ই মে, ২০১৫ রাত ১:৩২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এরকমই হয়। জীবনের কয়েক ঘণ্টা আর এক খাবলা আত্মসম্মানের বিনিময়ে আমরা মাস শেষে টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি।

১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

রোদেলা বলেছেন: এক খাবলা আত্মসম্মানের বিনিময়ে -এইটা খুব ভালো বলসেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ১৩ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

বিদগ্ধ বলেছেন: ==উনি ভয়ঙ্কর রকম অবাক চোখে প্রশ্ন করলেন -কেন?কাল কি বিজয় দিবস?
আমি ততোক্ষনে আমতা আমতা করছি-না মানে কালতো ১লা মে।
বসের ঠোঁটের কোনে দুষ্টু মার্কা হাসি খেলা করছে-কেন ,আপনি কি শ্রমিক নাকি ?==

B-)

নাইস পিস!
কামলাদের জন্য কোন আইন নেই।

১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৭

রোদেলা বলেছেন: কামলাদের জন্য একটা কামলা দিবস করলে কেমন হয় বিদগ্ধ?

৮| ১৭ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯

বিদগ্ধ বলেছেন: কেন প্রতি বছর ৩০শে ফেব্রুয়ারিতে কামলা দিবস পালিত হয়, আপনি বুঝি জানেন না?
আহারে, খুব মায়া হয় কামলাদের জন্য! নিজেও এদেরই একজন যে!

১৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৬

রোদেলা বলেছেন: তাইতো ,আমারতো মনে আসাল না।ঐ দিন কি আমরা তাইলে এক খান আনন্দ মিসিল বাইর করুম??

৯| ১৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০০

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: যে শ্রম দিয়ে খায় সে ই শ্রমিক, সো আমরাও শ্রমিক।

১৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

রোদেলা বলেছেন: ইহা কইতে যাইয়াইতো বিপত্তি ঘটিয়াছে।

১০| ১৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:২৯

রুমেল আহমেদ বলেছেন: আর যারা চাকরি করে তারা চাকরও বটে।

১৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৮

রোদেলা বলেছেন: চাকরের শুদ্ধ ফর্ম করসি-কামলা।

১১| ৩০ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫২

মারুফজয় বলেছেন: ভাল লাগল, :-) চলতে থাকুক :-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.