নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পৃথিবী

এভাবেই ভালোবাসা পুড়ে পুড়ে যায়..

রোদেলা

আমার আকাশ মেঘে ঢাকা \nজমতে থাকা আগুন ;\nহঠাত আলোর পরশ পেলেই \nঝরবে রোদের ফাগুণ।

রোদেলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্যোৎস্না ধোঁয়া রোদ //

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩১


আনন্দ সিনেমা হলের সামনে মিতা দাঁড়িয়ে আছে, তাও প্রায় দু’ঘন্টা হয়ে গেল।কিন্তু ওপাশ থেকে মোবাইল তোলার কোন শব্দ কানে আসছে না,মাথার ওপর ভোঁ ভোঁ করছে জৈষ্ঠ্যের কাঠ ফাটা রোদ।পুড়ছে শহর,পুড়ছে মানুষ।সেই পোড়া গন্ধ গায়ে নিয়ে হাজার খানেক লোকের মাঝখানে মিতা অপেক্ষা করছে প্রফেসর আরিফের জন্যে।হুম,প্রফেসর সাহেব অবশেষে ফোন তুললেন।ভারী কন্ঠ আরো ভারী শোনালো তার—কে,মিতা ,বলো।কেমন আছো তুমি?
এ এক অদ্ভূত যন্ত্রনা।যে তাকে অপেক্ষা করতে বলেছে বেলা তিনটায়,সে বিকেল পাঁচটায় ফোন ধরে যদি দিনকালের খবর জানতে চায় তাহলে উত্তরে কি বলা উচিৎ ।
তাই তেমন কিছুই না বলে মিতা জিজ্ঞেস করলো-তুমি কি এখনো ক্যাম্পাসে?
-হুম,দুপুরে চোখ লেগে গিয়েছিল।তোমার ফোন পেয়েই উঠলাম।তোমার মিটিং শেষ ?
প্রশ্নটা শুনেতো আরো মনটা খিঁচিয়ে গেলো-স্যার ,আমার মিটিং ছিল বেলা একটায়।তিনটায় আপনার কাওরানবাজার থাকার কথা ছিল।এখন বাজে বিকেল পাঁচটা।
-ওহ,ডিয়ার ।আমি ভুলেই গিয়েছিলাম,মনে ছিল না সত্যি বলছি।
মিতার আর কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না।এমনিতেই ঘামে ভিজে জবু থবু অবস্থা ,তাই কোন কিছু না বলেই ফোন রেখে দিল।হাতে ভারী এক খানা ব্যাগ,ওতে স্যারের জন্যে বিরানী আর গরুর মাংস ভুনা আছে।খুব যত্ন করেই রান্না করেছে মিতা,নিজের হাতে।ছুটির দিন বলতে ওই এক শুক্রবার,মানুষটা একা একা থাকে ;কি খায় না খায়।তাই ঠিক করেছিল দুপুরের খাবারটা এক সাথে বসেই সেড়ে নেবে,কিন্তু অতি ভুলো মনা প্রফেসর তা আর হতে দিল কোথায়।মিতা ভালো করেই জানে-এই প্রফেসরের হাত ধরে কোন দিন সে সমুদ্রে পা ভেজাতে পারবে না।তাকে প্রস্তাব দিলেই উত্তর হবে-না মিতা,আমিতো ছুটি নিতে পারবোনা,সামনে ছেলে মেয়েদের পরীক্ষা ।আর যদি কোন রকম ভার্সিটি বন্ধ থাকে তাহলে উত্তর হবে এমন-ওফ ডিয়ার ,আমারতো অনেক খাতা দেখা বাকী,এগুলো সময় মতো জমা না দিলেতো ওরা পাশ করতে পারবে না।
মাঝে মাঝে মিতা জানতে চেয়েছে-আমি কি আপনার বিশ হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একজন,নাকি তার বাইরে কেউ?
হো হো করে হেসে উত্তর দিয়েছে আরিফ-তুমিযে কি বলো,তুমিতো আমার সব চেয়ে ইস্পেশিয়াল ,দেখোনা তুমি ডাকলেই কেমন দৌড়ে চলে আসি।
আরিফ যে তাকে সময় দেয় এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই,কিন্তু দুই ঘন্টার মধ্যে এক ঘণ্টাই স্যার ব্যস্ত থাকেন তার প্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের ফোনে।কার কবে কি পরীক্ষা ,কার পি এইচ ডি আটকে আছে,কার ভর্তি সমস্যা।মিতা খুব ভালো করেই জানে ,এইযে এতো আগ্রহ নিয়ে সে দাঁড়িয়ে আছে তার কিছুই প্রফেসর মনে রাখবে না।ছাত্রদের পরীক্ষার খাতায় সব কিছু মিলিয়ে যাবে।কিন্তু এই খাবার হাতে নিয়েতো আর ঘরে ফেরা যাবে না,একশটা প্রশ্ন করবে মা।প্রশ্নের উত্তর দিতে এখন মিতার খুব ক্লান্ত লাগে।হাতের ব্যাগটা সে ছুঁড়ে দিল ডাস্টবিনে।
সে রাতে এক ফোটা ঘুম এলোনা,অনবরত ম্যাসেজ আসছে ফোনে।সবি আরিফের পাঠানো,তাতে “সরি” লেখা আছে,”মাফ করো” লেখা আছে।আছে কবিতার অনেক শব্দ মালা।কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারনে কিছুই তেমন স্পর্শ করছেনা মিতার।কারন মিতা জানে,আরিফ এই কাজটির পুনরাবৃত্তি আবার করবে।সঠিক সময়ে ফোন না তোলার অভ্যেস তার অনেক পুরোন।তারপর যাও বা ধরবে সেই চির চেনা কন্ঠে হাসি দিয়েই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেবে-কেমন আছো মিত?গলা শুনে মনে হবে ,অনেক দিন পর দু’জনের কথা হলো।এবার কেবল কুশল বিনিময় শুরু।
রাত যতো গভীর হচ্ছে,চাঁদটা যেন ক্রমশ রূপের ভাঁজ খুলে দিচ্ছে।শফেদ ঝলমলে আলোর বিচ্ছুরণ ছুঁয়ে দিচ্ছে মিতার চোখ –মুখ-ঠোঁট ।না বলতে পারা কান্নারা বাদল হয়ে ঝড়ে পড়ছে ক্রমশ,মিতা সেই নদীতে ডুবে থাকে সমস্ত রাত্রী।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫০

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: ভালো। তবে মিতার নিরুত্তর থাকাটা কেমন লাগল। আসলে প্রফেসর এর সাথে প্রেম করলে এই প্রব্লেমতো হবেই। তাহলে এমন রিঅ্যাক্ট করার কারন?

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৪

রোদেলা বলেছেন: এখানে মিতার চরিত্রের একটা দ্বৈত স্বত্তা কাজ করছে,সে আসলে প্রফেসরকে যে ভাবে চায় সে ভাবে পায় না,আবার বিকল্প ভাবতে গেলে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতে হবে এটা সে চায় না।এই জন্যই সে নিজের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে।এমন অনেক চরিত্র আছে আমাদের আশে পাশে।

২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৫

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৫

রোদেলা বলেছেন: ্বাহ।প্রামানিক দা।বহুদিন পর দেখা পেলাম।শুভেচ্ছা জানবেন।

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০৪

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: হওয়াটাই স্বাভাবিক। মেয়েদের রিড করা অন এন অনলি অনন্ত জলিলের কাজ।

০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১১

রোদেলা বলেছেন: B:-)

৪| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১৯

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: B-))

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর গল্প। অনুভূতিগুলোর দারুণ প্রকাশ। আপনার বাক্যগঠন আমার ভালো লাগে। লঘু কিন্তু অর্থে অনেক ভারী।
কিন্তু, কথা হইল যে, এই মাস্টারপণ্ডিতদের সাথে প্রেমফ্রেম করা ঠিক না, শালারা বজ্জাত খুব

০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৭

রোদেলা বলেছেন: প্রেমফ্রেম আর করতে পারলো কই?ব্যাটাতো ফোনটাও ধরেনা। B-)

৬| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৪৮

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ফোন রিসিভ না করা একটা রোগী আমার বাসায়ও আছে। অনেক যন্ত্রনা, অনেক


গল্পে প্রথম ভাল লাগা।

০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০

রোদেলা বলেছেন: আমার ফোন আমি ধরুম,যখন খুশি তখন ধরুম-এই নীতিতে এরা প্রবলভাবে বিশ্বাসী ,সহ্য করতে থাকেন।কিছু করার নাই।

৭| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: মিতা দেখতে কেমন? বয়স কত? প্রফেসর নিশ্চয়ই এক বুড়া হাবরা। তার সাথে লেগে থাকার কোন কারণ নাই। ওর জন্যে দরকার গভীর অনুভূতিসম্পন্ন এলোমেলো চুল আর খোঁচা খোঁচা দাড়ির এক বেকার কবি যুবক।

০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩

রোদেলা বলেছেন: যুবক গল্পকার হইলেও চলবো,মিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ,বেশী বয়স না।চলবোতো হা মা ভাই?

৮| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:২০

হাসান মাহবুব বলেছেন: যুবক গল্পকার হইলেও চলবো :`> #:-S চুপি চুপি বল কেউ জেনে যাবে :``>> :-*

০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:২৮

রোদেলা বলেছেন: ঈদে ,ঢাকায় থাকলে আইসেন।মিতার দেখা পাবেন ;)

৯| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১৫

প্রামানিক বলেছেন: আমিও পুরানো ব্লগারদের খুঁজি। আগের মত সবাই একত্রিত হতে পারলে আবারো লেখালেখির আড্ডা জমানো যেত। গল্প অনেক ভাল হয়েছে। ধন্যবাদ

১২ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৩

রোদেলা বলেছেন: আমিতো এগেরি মতোন আছি,কেবল মাঝে মধ্যে ব্লগে বস্তে পারি-এই আমার দীনতা।
সময় বড়ই স্বার্থপর প্রামানিকদা।সাথে থাকুন।

১০| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: ভালোলেগেছে আপু

১২ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৪

রোদেলা বলেছেন: শুভেচ্ছা মায়াবী রূপকথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.