নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন খুব ছোট, জীবন খুব সুন্দর এবং ভালোবাসা সুন্দর ।

রুনা ভুনা

রুনা ভুনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রঙ্গিন হরিণ

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

জীবনের প্রথম হরিণ চিনেছিলাম এক টাকার নোট দেখে।

বেগুনী রঙের হরিণ। বেগুনী রঙের বেগুণ থাকে। তাই বলে হরিণের রঙ বেগুনী হতে পারবেনা তা নয়। অবশ্যই হতে পারে। লাল কালো গোলাপী সব রঙেরই হরিণ থাকতে পারে। হতে পারে কমলা কালারেরও। শুধু রক্ত মাংসের হরিণ থাকবে বিষয়টা এমনও নয়। হরিণ হতে পারে রঙিন কাগজের, হতে পারে মেলামাইনের, হতে পারে গোবরের তৈরী। এতে মাথা ব্যাথার কিছু নেই।

কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি কোনটা চান?

অবশ্যই সোনার হরিণ চাই। তা যে সোনাই হোক।

ভাবিয়ে তোলার মত বিষয় হল আমরা সোনাই চিনি না, সোনার হরিণ কি করে চিনব?

বছর কয়েক আগে গ্রামে মাটির সড়কের ধারে জলপাই বাগানে ঝড়াপাতায় বসে ধানক্ষেত দেখছিলাম। বিস্তৃত সীমানা জুড়ে সবুজ ধানক্ষেত। আমার চেয়েও বড় আকারের এক একটা ক্ষেত। গ্রামে মাঝে মাঝে ঘুড়তে যেতে ভাল লাগে। প্রকৃতিকে ধরতে মন চায়।
গ্রামে মাইকিং করছে আসিতেছে সিনেমা এক টাকা বউ

ব্যানার দেখে সেদিন হেসেছি আর চিন্তা করেছিলাম । কার আমলে এক টাকায় আট মণ চাউল পাওয়া যেত সে হিসেব মিলেছি । আর আমার এই জেনারেশন এ এক টাকায় বউ ও পাওয়া যায়। আবার এক টাকার নোট পাওয়া যায়।


কেও খবর রাখুক না রাখুক সোনার হরিণের পিছে ছুটতে ছুটতে আজ দুই হাজার বাইশে। এক মুহুর্ত সময় এর ভেতরে মেলেনি একটুখানি ভেবে দেখার আসলেই সোনার হরিণ কি জিনিস। নিজেকে সেই আগের জায়গায় খুজে পেয়েছি,যেমন ছিলাম, আছি, থাকব মনে হয়, বিন্দুমাত্র মনের পরিবতন হয়নাই আমার। মন সেই আগের মতো আছে।

ব্যাঙের লাল, আর পিলার খুঁজতে খুঁজতে জীবন কাটিয়ে ফেললাম অথচ জীবন যে লাল গুড়া রং দিয়েও রঙিন করা যায় তা ভাবারই অবকাশ পেলাম না।

স্বপ্ন যদি এমন হয় যে টাকার বালিশে ঘুমাবে, লিখে রাখো, বলে দিলাম, "টাকার বালিশে ঘুম আসে না।"

স্বপ্ন যদি এমন হয় যে কোন এক রাজকুমার যুদ্ধ করে মেয়ের মন জয় করে বিয়ে করে একটু সুখে শান্তিতে থাকবে ২ জন । ভুলে যাও সে স্বপ্ন।তোমার জীবন এভাবেই চলবে, কেউ নাই, একা একা জীবন কাটাতে হবে তোমায়, একাই নিজেকে পথ চলতে হবে।সবার জীবন এক না, সবার সেই তুমিটা থাকেনা হয়ত তাই একলা চল রে।

আবার তুমি যদি ঘুমের জন্য সবকিছু বাদ দিয়ে দাও তবে শুধু স্বপ্নই দেখে যেতে পারবে।

জীবন একটা হিসাব নিকাশের খাতা। সমীকরণ আর সমীকরণ। একটা সমীকরণ আরেকটার সাথে এক আশ্চর্য রকমের মিল রেখে সৃষ্টি হয়। জীবনের কিছু ভাঁজ থাকে। এই ভাঁজগুলো জীবনকে কখনও উপরের দিকে ঠেলে দেয়, কখনও নিচে টেনে নামায়। সত্যের পথে অবিচল থাক। যে ভাঁজটার সূচনা তুমাকে নিচে ঠেলে দিয়েছিল উপসংহারে হয়ত গিয়ে দেখবে এই ভাঁজটাই তোমার সফলতার সবচেয়ে মজবুত খুঁটি।

I Quit বলে অধ্যায় অসমাপ্ত রেখে ঘুমাতে যাওয়ার জন্য তোমার জন্ম হয়নি। মনে রেখো, খাঁটি সোনা বের করা হয় লাল আগুনে গলিয়ে। জেনে শুনে আগুনে ঝাঁপ দাও। আই রিপিট-জেনে শুনে। জীবনের সবচেয়ে বড় খাঁদ অলসতা। পরিশ্রমের আগুণে অলসতা পুড়িয়ে ফেল। এতে শরীর কয়লা হয়ে যদি যায় তবে যাক।

ভুলে যেও না হীরা কিন্তু নি:শেষ হয়ে যাওয়া কয়লা থেকেই সৃষ্টি হয়। মাটির নিচে হাজার হাজার বছর ধরে চাপা পড়ে থাকা কয়লা একদিন হীরায় পরিণত হয়। আমাদের জীবনটাও অনুরূপ। কয়লা হওয়ার আগে সে হীরা হয়ে নিজেকে প্রকাশ করেনা। হাজার চাপ ঘনীভূত হয়ে নিষ্পেষিত যন্ত্রণা একসময় সাফল্যের দুয়ারে পৌঁছে দেয়। একটা হীরক খন্ড কতটা আলোকিত হবে তা নির্ভর করে কত নিখুঁতভাবে তার ভুজগুলা কাটা হয় তার উপর। তেমনিভাবে কতটুক জ্যোতি তুমি বিলাতে পার তা নির্ভর করে কত সূক্ষ্মভাবে তুমি জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করেছ তার উপর।

নিষিদ্ধ গ্লাসটাতে দু টুকরো বরফ ফেলে বাঁ হাতে তিন আংগুলে চুমু খেয়ে গগণে ধোঁয়া ছাড়ার মধ্যে যদি ট্যালেন্ট খুঁজো, যদি ভেবে থাক বহু লেখক, বিজ্ঞানী, গায়ক বড় বড় ব্যাক্তিত্ত্ব এভাবেই গাঁজা টেনে পিনিক খুঁজে উপরে উঠেছে, যদি অতি উচ্চশিক্ষার আগ্নিমন্দে বারবিকিউ হয়ে যাওয়া বিজ্ঞান মনস্ক স্বল্প বিস্তৃত চিন্তা ভাবনার বহুত বড় ফ্যান হয়ে ইশ্বরকে গালি ছুঁড়তে পারাটাকে ক্রেডিট মনে কর, তবে আরেকবার ভাব। ভালমত ভাব। তাদের চেয়েও অনেক বিখ্যাত তারকারা কিন্তু উপরে উঠার জন্যে নিজের সর্বাধিক মূল্যবান সম্পদ সতিত্ব পর্যন্ত বিসর্জন দিয়ে দিয়েছে। উপরে উঠার জন্য নিজেকে বিক্রি করে দিও না। তুমি তুমিই। তুমি কারো মত নও। এই পৃথিবীর পাঁচশ কোটি বছর বয়সের মধ্যে তুমার মত আর দ্বিতীয় কেও জন্মায়নি। সমগ্র পৃথিবীর অতীত বর্তমান ভবিষ্যতে তুমি এক পিছই। তুমি একাই পারো সংবিধান বদলে দিতে অথবা তুমি একাই পার হাসপাতালে রক্ত দিতে। তুমি একাই হতে পারো আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট আবার তুমি একাই হতে পার মুহাম্মদ বিন কাসিম। বিলিভ মি- প্রত্যেকটা তুমি এক একটা ত্যাজদীপ্ত বারুদ। একবার শুধু জ্বালিয়ে দেখ।

বড় হওয়া মানেই বড়লোক হওয়া। বড়লোক হওয়া মানেই ধনী হওয়া নয়। হতে পারে কেও জ্ঞানে বড়লোক, তুমি মনুষত্ত্বে বড়লোক হও। হতে পারে কেও দানে বড়লোক, তুমি কৃতজ্ঞতায় বড়লোক হও। মহানরা হরিণের পিছনে ছুটেনা। তারা ছুটে সুন্দরবন বাঁচানোর পিছনে। উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ কর। বন বাঁচলে হরিণ বাঁচবে। যে ডাকাত জানেই না ব্যাংক লুট করে কি করবে সে ধরা খাবে সেটাই সমাধান। বুদ্ধিমানরা হীরার খণির সন্ধানে সময় নষ্ট করে না। তাদের প্রচেষ্টা কীভাবে কয়লা বিক্রি করে হীরা কেনা যায়। এবং দেরিতে হলেও তারাই সফলকাম।

যদি সততা আর সত্যবাদীতার ফলে দিনশেষে তোমার তুলার বালিশে তুলাই থেকে যায়, তবে দু:খ করো না। তুমি না হয় তুচ্ছ সেই এক টাকা হয়েই রয়ে গেলা। হয়ত কারো হৃদয়রূপী যাদুঘরে তোমাকে বিলুপ্ত সেই এক টাকার নোটের মতই ভাস্কর্য করে রেখে দিবে। হয়ত সেখানে বেগুনী হরিণগুলা প্রতিস্থাপিত হবে জ্বলজ্বলে স্বর্ণালি বর্ণে। হয়ত লোকেরা তোমাকে কবরে নামিয়ে রেখে ফিরতি পথে বলাবলি করবে- মানুষ টা আর যাইহোক ভালোই ছিল। এত টুকু ত আশা রাখা যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.