![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অজানা অদেখাকে জানতে জানাতে
পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে হরমুজ প্রণালী। এই প্রণালী কে বিশ্ব বানিজ্যের গলা হিসেবে তুলনা করা হয়। কারণ সমগ্র বিশ্বের ৩ ভাগের ১ ভাগ খনিজ তেল পরিবহণ করা হয় শুধুমাত্র হরমুজ প্রণালী দিয়ে।
দুটি সাগর বা বিশাল জলরাশির মধ্যে সংযোগকারী সরু জলপথকে প্রণালী বলা হয়। মধ্য প্রাচ্যে অবস্থিত হরমুজ প্রণালী তার পশ্চিমে থাকা পারস্য উপসাগরকে পূর্বের ওমান উপসাগর ও আরব সাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে। এই প্রণালীর দ্বারাই ইরান আরব উপদ্বীপ থেকে পৃথক হয়েছে। ভৌগোলিক দিক থেকে প্রণালীটি ইরান ও ওমানের অন্তর্ভুক্ত। হরমুজ প্রণালীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬৭ কিলোমিটার এবং এর সবচেয়ে সরু অংশের প্রস্থ মাত্র ৩৪ কিলোমিটার। প্রণালিটির মাঝ বরাবর রয়েছে দুইটি জাহাজ চলাচলের রাস্তা যার প্রস্থ মাত্র ৩ কিলোমিটার। বিশ্ব অর্থনীতির গলা হিসেবে খ্যাত এই অংশটি কোনো কারণে বন্ধ হলেই বিশ্ব বাণিজ্যের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। কারণ এটি বিশ্বের খনিজ তেল শিল্পের সবচেয়ে ব্যস্ত সমুদ্র পথ।
হরমুজ প্রণালীর সমুদ্র পথটি আন্তর্জাতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মধ্য প্রাচ্যের তেলবাহী জাহাজ যাতায়াতের জন্য এটি একমাত্র পথ। বিশ্বব্যাপী পেট্রোলিয়াম পরিবহনে প্রণালিটির কৌশলগত গুরুত্ব অনেক। মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের মতে হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২কোটি ১০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত খনিজ তেল পরিবহন হয়। যা বিশ্ব খনিজ তেল বাণিজ্যের ৩ ভাগের ১ ভাগ। শুধু তাই নয় বিশ্বে উৎপাদিত সকল তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪ ভাগের ১ ভাগ এই হরমুজ প্রণালী দিয়েই সারা বিশ্বে ছড়ায়। পারস্য উপসাগর অঞ্চলে থাকা শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর অবস্থানের কারণে হরমুজ প্রণালী দিয়ে এত বিপুল পরিমান তেলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হয়। এই অঞ্চলের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো হলো কাতার, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং সৌদি আরব। হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করে সব চেয়ে বেশি তেল আমদানিকারক দেশগুলো হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও চীন। এছাড়া এশিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় সকল প্রান্তেই এই খনিজ তেল হরমুজ প্রণালী দিয়েই প্রবাহিত হয়।
হরমুজকে তেলের প্রণালী বললেও ভুল হবে না, কারণ এই হরমুজ প্রণালীর স্থবিরতা ও উত্তেজনার উপরই বিশ্ব বাজারে তেলের দাম উঠা নামা করে। মাত্র এই ৩৪ কিলোমিটার এলাকার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করাটাও বর্তমান বিশ্ব বাণিজ্যে ও বিশ্ব রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতে হরমুজ প্রণালীতে চলা সব চেয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ট্যাঙ্কার যুদ্ধ নামে পরিচিত। ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই অঞ্চলে যাতায়াতকারী ইরানি তেলবাহী জাহাজগুলোতে আক্রমণ চালায় ইরাক ও তার তৎকালীন মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তখন ইরানও এর প্রতিশোধ স্বরূপ সামুদ্রিক মাইন পেতে রাখে , তখন থেকেই মূলত ইরান হরমুজ প্রণালীকে একটি অস্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। এরপর আমেরিকাও এই অঞ্চলে তাদের সামরিক সক্ষমতা বহু গুন বৃদ্ধি করে। সাম্প্রতিক সময়ে একটি ব্রিটিশ তেলবাহী জাহাজ ইরান কতৃক আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরমুজ প্রণালী আবারো বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসে। এই অঞ্চল দিয়ে তেলপরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে বিগত শতকের আশির দশক থেকে এখনো পর্যন্ত হরমুজ প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ নিয়মিত পাহারা দিচ্ছে। ১৯৫৩ সালে আমেরিকার কূট চক্রান্তের ফলে ইরানের প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ মোসাদ্দেককে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্য দিয়ে ইরান ও আমেরিকার এই বৈরী সম্পর্কের সূচনা হয়।
০৫ ই মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯
রুজেল বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৫৮
শের শায়রী বলেছেন: হরমুজ প্রনালীর বর্ননা ভালো লেগেছে।
০৫ ই মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯
রুজেল বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১২
রাজীব নুর বলেছেন: হরমুজ প্রনালী সম্পর্কে জানলাম।
০৫ ই মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯
রুজেল বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৭
রায়হান চৌঃ বলেছেন: "বিশ্ব খনিজ তেল বাণিজ্যের ৩ ভাগের ১ ভাগ পরিবহন হয় এই রুটে", আমার মনে হয় আপনি ভুল করছেন। আবার ডকুমেন্ট টা দেখে নিবে। আমার জানা মতে সর্বচ্ছ ১০% ক্রুড ওয়েল (অপরিশোধিত) এই রুটে আনা নেয়া করা হয়।
৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৬
সালমান খান সিই বলেছেন: "ইরানের প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ মোসাদ্দেককে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্য দিয়ে ইরান ও আমেরিকার এই বৈরী সম্পর্কের সূচনা হয়"
এই তথ্যটা একটু যাচাই করার অনুরোধ করছি।
মোসাদ্দেকের সাথে ব্রিটিশ ও মার্কিনিদের সম্পর্ক ভালো ছিল না; কারণ মোসাদ্দেক ছিলেন উগ্র জাতীয়তাবাদী। মোসাদ্দেককে ক্ষমতাচ্যুত করে রেজা শাহ পাহলভীকে ক্ষমতায় বসানো হয় আমেরিকা ও ব্রিটেনের চক্রান্তের মাধ্যমে। শাহ পাহলভীর সাথে আমেরিকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে রুহুলুল্লাহ খোমেনীর হাত ধরে ইসলামিক রিভোল্যুশন হওয়ার পর ইরান-মার্কিন সম্পর্ক বৈরী হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৬
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: হরমুজ প্রণালীর বর্ননা ভালো হয়েছে