নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সাংবাদিক, লেখক, স্থির চিত্রগ্রাহক। কবি, গবেষক, গ্রন্থকার, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলন কর্মী। সাধারণ সম্পাদক, ভারতীয় বঙ্গসমাজ। ধর্মহীন সাম্যের সমাজের স্বপ্ন দেখি ও দেখাই।

শমীন্দ্র ঘোষ

সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী

শমীন্দ্র ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উর্দুভাষার উত্‍স

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৩

পশ্চিমবঙ্গে একজন সর্বোচ্চ মেধাবী ব্যক্তিনী আছে। হাঁস থেকে ইতিহাস, গান থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, খেলা থেকে লেখা, ছবি আঁকা থেকে ফাঁকা হাঁকায় এক্কেবারে মঁ মঁ! রাষ্ট্রতত্ত্ব থেকে গ্যাস্ট্রোতত্ত্ব, ভাষণে শাসনে অশনে বসনে তর্জনে গর্জনে প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য তাঁর ঝ'রে ঝ'রে পড়ে! নাম, তিনুদেবী বঙ্গেশ্বরী মমতাময়ী বন্দ্যোঘটী, হাওয়াই চপ্পলমার্কা। রবিঠাকুর-আইনস্টাইনরাও তেনার লাগুড় পান না। একবার তিনি সিধহ কানহদের স্মরণসভায় "ডহরবাবু"র খোঁজ করেছিলেন সম্মান জানাতে। ভাগ্গিস "ডহরবাবু"...! শেক্সপীয়রের সঙ্গে রবিঠাকুরের আলাপ বোধহয় তিনিই রেকর্ডিং করেছিলেন। আরও কত কী বিষয়ে যে তার পাণ্ডিত্যকর্ম তা জনগণই জানে!
তো এই তিনিই বছর কয়েক আগে উর্দুভাষাকে দিয়েছিলেন এ'বঙ্গের সরকার স্বীকৃত দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা। মঞ্চে চলমান বক্তিমায় কৃপা-গর্জন, "...মুসলিম ভাই-বোন...উর্দুকে..." অর্থাত্‍ ধর্মের তাস খেলে মুসলিম ভোট কেনার বঙ্গীয় সংস্করণের তৃণরূপ। সংবিধান ধর্ষণে তিনিও পিছপা নন, দেখালেন। স্বেচ্ছাচারে কমতি নন, বোঝালেন। যেন, উর্দু মানেই ইসলামী! অথচ, উর্দুভাষী দুরবীণ দিয়ে খুঁজতে হয় এ'বঙ্গে।
উর্দুকে খাটো করছি না। তবু, উর্দু মানেই ইসলাম নয়। ইসলামের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আরবী। আরব্যদের উচ্চারণ বিপর্যয়ে পার্শী হয়েছে ফার্সি। যখন পশ্চিম ইরাণ (পারস্য-মদ্র) আক্রান্ত হয় ইসলামীদের দ্বারা, তখন থেকে। ভারতে ইসলাম আসার পূর্বেও ফার্সি শব্দ কিছু ছিল বলে অনুমিত হয়।

উর্দু শব্দটি ফার্সি উদ্ভূত। মাত্র ৫০০ বছর পূর্বে গঠিত ভাষা। উর্দু শব্দের বাংলা অর্থ "তাঁবু"। খুব মিষ্টি ভাষা। কথ্যে বিশেষ সুর আছে। কম শব্দে ভাব ব্যক্ত করা যায়; যা আরবীরও বৈশিষ্ট্য।

আকবরের সময়ে যুদ্ধ ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। তাই, সেনাবাহিনীও বিশাল সংখ্যক। তাঁবু ছিল তাদের আশ্রয়স্থল। সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। কথ্যভাষাও পাঁচমেশালী। দরবারী ভাষা সেখানে অচল। 'আধা বোঝার প্রাণ যায়' অবস্থা। রাজ-কর্মচারীদের অশেষ ভোগান্তি। যোগাযোগ রক্ষার্থে দরকার হলো একটি সাধারণ কথ্যভাষার। সমাধানে গঠিত হলো কথ্যভাষাটি। হিন্দি-আরবী-ফার্সি ইত্যাদি মিশানো হলো। যেমনটা তাঁবুতে বলা হতো, সেসবের থেকে ছেঁকে নিয়ে। ব্যকরণ এল হিন্দি থেকে। নাম, উর্দু; তাঁবুবাসীদের কথ্যভাষা অর্থে। সম্রাটের ঘোষণা, এ'ভাষা তাঁবুর সেনাদের ভাষা। এ'ভাষা একমাত্র তাঁবুর সেনারাই বলত। সেনাবাহিনীতে ছিল সব ধর্মেরই মানুষ। অন্য কোত্থাও ব্যবহৃত হতো না এ'ভাষা।

উর্দু ভারত উপমহাদেশে, মূলত উত্তরভারতে সৃষ্ট। উর্দুর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক নাই। সেই উর্দু বিবর্তিত হয়েছে অনেক। কালেরযাত্রায় ধান্দাবাজদের নখড়ে লুটেরাদের কবলে ধর্মব্যবসায়ীদের থাবায় উর্দু চড়েছে ইসলামের রথে। তাঁবু হয়েছে বেহেস্তীয় মহাপ্রাসাদ।
#শমীন্দ্রঘোষ
০৪/০৩/১৬

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫১

রাজীব বলেছেন: দাদা, কার কথা বলেছেন বুঝে ফেলেছি কিন্তূ ;)
তিনি বুঝলে কিন্তু খবর আছে। X((

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.