নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সাংবাদিক, লেখক, স্থির চিত্রগ্রাহক। কবি, গবেষক, গ্রন্থকার, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলন কর্মী। সাধারণ সম্পাদক, ভারতীয় বঙ্গসমাজ। ধর্মহীন সাম্যের সমাজের স্বপ্ন দেখি ও দেখাই।

শমীন্দ্র ঘোষ

সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী

শমীন্দ্র ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অশিক্ষিতের_কথা

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫২

অশিক্ষিতের কথা
জীবনযুদ্ধ


শমীন্দ্রঘোষ

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেলেই সে শিক্ষিত, এমনটা নয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা রোজগেরে করতে পারে; শিক্ষিত করতে পারে না; মানুষ করতে পারে না। যে শিক্ষায় ব্যক্তিস্বার্থ, রাষ্ট্রভক্তি, ধর্মভক্তি মানবতার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে, সেটা শিক্ষা নয়, কুশিক্ষা। শিক্ষার সুযোগ পাওয়া মানুষের চেয়ে তথাকথিত অশিক্ষিত, হাড়হাভাতেরা বেশি জ্ঞানী। তারা শুনতে বুঝতে শিখতে চায়। তারা জ্ঞানবিদ্যা জাহির করে না। প্রান্তিক গ্রামের একটি মানুষ অনেক বেশি মানবত্ব পোষণ করে। অনেক বেশি দেশপ্রেমী। তারা দেশ মানে বোঝে মানুষ ও তার সম্মিলন। কিন্তু, শহুরে মানসিকতা, মধ্যবিত্ত মানসিকতা তা বুঝতে চায় না শিক্ষার মোহে, চাকচিক্যের গর্বে, ঠাঁটবাটের অন্ধত্বে। এসবই শোষকদের দ্বারা নানান মাধ্যমে প্রচারিত। এসবই শিক্ষিতগণ মাথায় গেঁথে নিচ্ছে। জ্ঞাতসারে বা অজান্তে নিজের বলে চালিয়ে গর্ব করছে। এটাই আবার বর্তমানে গ্রামকে আচ্ছন্ন করছে। এভাবে যেটা আসলে হচ্ছে তাকে অর্ধশিক্ষিত, মধ্যমেধার উল্লম্ফন বলা যেতে পারে।
এটা মনে রাখা দরকার যে, খাদ্য জোগায় ওই হেঁটো ধুতি কাঁধে গামছার ছোটলোক চাষিটি। যার ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, সে-ই দেশের প্রকৃত সৈনিক। খাদ্য জুগিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে বাকিদের। তাদের বৈভব নেই। তবু, জীবন চলে। এখানেও চলে যুদ্ধ; বাঁচার যুদ্ধ। জীবনযুদ্ধ। এজন্য শহরের ওপর নির্ভরশীল না হলেও কিচ্ছু যায় আসে না এদের। এরাই প্রকৃত শিক্ষিত। জীবন থেকে শেখে। প্রকৃতি থেকে আহরণ করে জ্ঞান। এই প্রকৃতি, এই সমাজ এদের শিক্ষক। এই খাদ্য প্রাপ্তি ভোগ নিয়েই এত আয়োজন। এত যুদ্ধ। এটাকেই কে কার স্বার্থে কিভাবে দখল করবে, সেটা নিয়েই গোলমাল। মাত্র কয়েক হাজার বছর ধরে গোলমাল চলছে। পরিবর্তিত বিবর্তিত হচ্ছে এর ধরন রূপ রস আঙ্গিক। এই গোলমাল বাধাতে নতুন যন্ত্র হয়েছে রাষ্ট্র। এটাই সর্বশেষ রূপ। এই ব্যবস্থাই গরিবকে রেখেছে গরিব করে; ধনীকে করছে ধনী। ব্যক্তিস্বার্থে অন্ধ করে রেখেছে মানুষকে। রাষ্ট্রের রথের চাকায় সমাজ মানুষ পিষ্ট হচ্ছে।
যেদিন ওইই নিম্নস্তরে, কৃষক, জেলে, তাঁতি, কুমোর কামার ঘরামী স্তরে ব্যক্তিস্বার্থ বিলুপ্ত হয়ে সমাজস্বার্থ ব্যাপ্ত হবে; সেই পুরোনো কালের মতো, যখন গ্রাম ১৬ আনায় চলত গ্রাম, ঠিক তেমনি সামাজিক সম্মেলনে উত্‍পাদন বন্টন প্রাপ্তিভোগ হবে; গড়ে উঠবে যৌথখামার; সেই দিনই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রাপ্ত তথা অর্ধশিক্ষিত মধ্যমেধা, মধ্যবিত্তের উল্লম্ফন বন্ধ হবে। আর, এটাকে যারা বোঝে, যারা এই পথটিকে তাদের মেধা মনন দিয়ে তরান্বিত করে চলেছে তারাই শিক্ষিত, জ্ঞানী। এদের সংখ্যাটা বাড়লেই সমাজ হয়ে উঠতে থাকবে প্রকৃত শিক্ষিত, জ্ঞানী। আদপে এ'দুটি যুগপত্‍ চলবে, চলছেও। বর্তমান ভারত-বাংলাদেশ সেপথেই এগোচ্ছে ধীরে ধীরে। কোনো এক ভোরে সেই দেশটি আত্মপ্রকাশ করবে শোষকের টুঁটি চেপে ধরে, সমূলে উচ্ছেদ করবে বর্বরতা। মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াবে মানবতা। একে সাম্য বলুন বা যাই বলুন। তবু, এটাই জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষিতদের। এটা করাই জীবনযুদ্ধ। এটাই সত্য। এটাই মানবসভ্যতার চূড়ান্ত লক্ষ্য।
:-)
#রবীন্দ্রভাষ্য
:-)
#শমীন্দ্রঘোষ
০৪/১২/১৬

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৭

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করলেই যে একজন মানুষ শিক্ষিত হবে সেটা ঠিক নয়।
দাদা আপনি পরপর দুটি পোষ্ট দিয়েছেন এটা ব্লগে খারাপ দেখায়। পরপর দুটি পোষ্ট না দিয়ে একটু সময় নিয়ে আরেকটি পোষ্ট দিলে ভাল হত। ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২২

সজল৯৫ বলেছেন: # প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা রোজগেরে করতে পারে; শিক্ষিত করতে পারে না; মানুষ করতে পারে না। চমৎকার লিখেছেন।+++

৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৫২

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মানে এখন ক্লাসে বোরিং লেকচার শুনতে শুনতে ঝিমানো আর কোন একটা কোম্পানির কামলাগিরি করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা।

৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

কানিজ রিনা বলেছেন: সত্যটাই তুল েধর েছন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.