নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী
স্পষ্ট অবস্থান:
নতুন বাংলার জন্য বাঙালির স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি:
শমীন্দ্রঘোষ
"বাধা দিলে বাধবে লড়াই, মরতে হবে।"
আর কতকাল এই ধর্মবিভেদ বিদ্বেষ বিসংবাদ চলবে? ২/৩শো বছর ধরে একই ধর্মের গান গেয়ে কী লাভ হয়েছে বাঙালির? একই রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এ'দল ও'দল, দল বদলের কোন্দল চলবে আর কতদিন? 'থোর বড়ি খাঁড়া খাঁড়া বড়ি থোর' অবস্থা ব্যবস্থাটা একঘেয়ে নয় কি? আমবাঙালির ব্যাপক উত্কর্ষ, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিত্সার সুলভ প্রাপ্তি কেন করা হবে না? আধুনিক একটাও ভোগ্যদ্রব্য দেখা গেছে কি, যা বাংলায় বাঙালি-আবিষ্কৃত? কেন করা যায়নি? গত প্রায় ৮০০ বছরে ধরে এই একই ধারা চলছে। বাঙালি কেন এমন মেরুদণ্ডহীন আত্মঘাতী হবে? ইতিহাস থেকেই জানা যায় যে, বিগত প্রায় দুই-আড়াই হাজার বখর ধরে বাঙালির অবনমন চলছে। এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। অথচ, প্রাচীন বাঙালি ছিল ধনে মানে প্রাণে সৃজনে সম্বৃদ্ধ বীর জাতি। আবার কেন তেমনটা হবে না? কেনই বা ঐক্যবদ্ধ হবে না? ঐক্যবদ্ধ না হলে সার্বিক উত্কর্ষ কিভাবে হবে, যখন একই ভাষা ও সংস্কৃতি? বরং ইতিবাচক গঠনমূলক চিন্তা ও কাজ করাই শ্রেয় নয় কি?
"পথ জুড়ে কি বড়াই, সরতে হবে।"
বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হলে, তার নীতিগত স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি। তাই, পরস্পর বিরোধী অবস্থান ছাড়তে হবে। ভক্তি আবেগ হুজুক অনাবশ্যক তর্ক বিরোধিতা, বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা ছাড়তে হবে। বিপ্লবী চেতনায় গড়ে উঠতে হবে। বিপ্লবী চেতনা মানেই সভাসমিতি, মিছিল, অস্ত্র ধরা নয়। বরং চেতনাকে আবেগহীন করা, দৃঢ় করা, সংঘবদ্ধ হওয়া। এসব করতে পূর্বজদের জীবন-কর্ম অনুসরণীয়। কিন্তু এক্ষেত্রে যে যে উল্লেখযোগ্য পূর্বজ বর্জনীয় তাঁরা হলেন--- #বিবেকানন্দ #রামকৃষ্ণ #শ্রী_অরবিন্দ #চৈতন্যদেব*** #শেখ_মুজিব #হুমায়ুন_আযাদ প্রমুখ; এবং বর্তমান প্রজন্মের #তসলিমা #অভিজিত্। এদের মিথ বানানো হয়েছে। অথচ, উক্তদের জীবন-কর্ম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা, বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেখানে প্রমানিত যে, এঁরা #দ্বিচারী #স্ববিরোধী #ভণ্ড #ভোগবাদী #ভাববাদী #ভক্তিবাদী #মিথ্যাবাদী #ধান্দাবাজ #হুজুকে #বিজ্ঞানবিরোধী এবং এসবের লেজুড়; কেউ বা উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল দর্শনহীন বিক্ষিপ্ত নেতিবাচক ও সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক চিন্তা দ্বারা চালিত; গঠনমূলক সংঘবদ্ধ হওয়ার নন। অতএব এঁরা সবদিকেই বর্জনীয়।
তবে, একথা বুঝি এবং অনুমান করছি যে, এঁদের কিছু ভক্ত আছেন; যাঁরা উক্ত কথাগুলো মানবেন না। ভক্তদের তা মানতেও নেই; এটাই ভক্তির গুণ। তাই, তর্ক বা কুত্সাও করতে চাইবেন। আমরা তর্কে, কুত্সাতে নেই; কেননা তর্ক করে কিছুই জানা যায় না। কুত্সা করে সমাজ গড়া যায় না। "জানার একমাত্র ও অবিকল্প পথ জিজ্ঞাসা", এবং "তর্ক প্রিয়দের ধ্বংস করার একমাত্র ও অবিকল্প পথ চ্যালেঞ্জ করা।"
ভক্তগণের কথায় অবশ্য আমাদের কিছু যায় আসে না। কারণ, মধ্যবিত্ত চিন্তা মধ্যমেধা সমাজবদলে কোনো কাজে লাগে না। এরা ভীরু মেরুদণ্ডহীন ব্যক্তিবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে থাকে। ফলে, আপনারা হয় আমাদের সিদ্ধান্তে ও চলার পথে গোপনে যুক্ত হয়ে পড়বেন এবং সাফল্যের পরে আমাদের বক্তব্যই প্রচার করে ফেলবেন; নচেত্ চিরবিলুপ্ত হবেন। মধ্যপন্থা কিছু নাই। তাই আপনারা বাদ। আপনাদের সংখ্যাটা আনুমানিক সর্বোচ্চ কোটি পাঁচেক হবে; যা বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন, অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ণ অসংখ্য ভাগ। এতে অবশ্য শিক্ষার সুযোগ পাওয়া অর্ধশিক্ষিতের সংখ্যা বেশি। তবে, আপনাদের অজান্তেই আমরা আপনাদের কাজে লাগিয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় কার্য সিদ্ধ করব সময়ে সময়ে; এটা আপনারা বুঝতেও পারবেন না। এই শিক্ষাটা পৃথিবীর বিপ্লবের ইতিহাস আমাদের দিয়েছে।
.
এবার আসি যে যে পূর্বজগণ বরণীয় গ্রহণীয়--- #রামমোহন #বিদ্যাসাগর #রবীন্দ্রনাথ #রামতনু #অক্ষয়কুমার_দত্ত #শিবনাথ_শাস্ত্রী #রামেন্দ্রসুন্দর #মহেন্দ্রলাল_সরকার #আচার্য_জগদীশচন্দ্র #আচার্য_প্রফুল্লচন্দ্র #আচার্য_সত্যেন্দ্রনাথ #মেঘনাদ #বেগম_রোকেয়া #আরজ_আলি_মাতুব্বর #আহমেদ_শরীফ সহ বহু ব্যক্তি (নারী-পুরুষ) ছিলেন যাঁরা বাংলার বিভিন্ন ক্ষেত্রকে সম্বৃদ্ধ করেছেন; বাংলার উত্কর্ষসাধনে ব্রতী ছিলেন। তাঁদের নাম-তালিকা বৃহত্; অথচ প্রচার নেই। তাঁদের মেধা-মনন-জীবন-কর্ম বঙ্গসমাজকে নতুন করে গড়েছিল বিভিন্ন সময়ে এবং সেই ধারা বিবর্তিত পথে এগিয়েছে; তারই উত্তরাধিকার বর্তমানের #বঙ্গসমাজ।
বঙ্গসমাজকে এঁদের প্রচার করতে হবে। বঙ্গসমাজ ঐক্যবদ্ধ হবে বৈপ্লবিক জাতীয়তাবাদী পথে। যেখানে ধর্ম গৌন। ধর্ম ছাড়তে না পারলে, পালন করুক ঘরে। বাঙালিত্বটাই প্রধান।
এভাবেই বাঙালি গড়বে সেই হারিয়ে যাওয়া #স্বপ্নের_দেশ; মেধা সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদের যুগলবন্দিতে সৃজনশীল ব্যবহার, সার্বিক সুলভ প্রাপ্তির দেশ, বাংলা। সমকালীনভাবে ভাঙতে ভাঙতে গড়ে উঠবে দৃঢ় মেরুদণ্ডের উন্নতশির #বঙ্গসভ্যতার যোগ্য উত্তরাধিকার।
এই বঙ্গসমাজের জাতীয়তার ভিত্তি হলো #বাঙালিত্ব। কেননা, ইতিহাস থেকে জানা গেছে যে, যে-জাতির জাতিসত্ত্বাগত পরিচয় নাই, ইতিহাসচেতনা নাই, সেই জাতির আত্মমর্যাদাবোধ নাই। ফলে সেই জাতি দীর্ণ শীর্ণ জীর্ণ শতধায় বিভক্ত আত্মকোন্দলরত হয়ে আত্মঘাতী হবেই। বাঙালির বর্তমান অবস্থা তেমনটাই। পরিত্রাণে জাতিসত্ত্বাগত পরিচয় অনিবার্য। বাঙালি জাতির প্রাচীন পূর্বজ হলো #অসুরজাতি। এই জাতি ছয়টি নৃতাত্ত্বিক পর্যায়ের--- #আদিঅস্ত্রাল #আলপীয় #দ্রাবিড় #মোঙ্গলীয় #দিনারিক #আর্মেনীয়। এই ছয় জাতিকে একত্রে #অসুরজাতি বলা হতো। এই ছয়জাতির সংকর হলো বর্তমানের #বাঙালিজাতি। প্রতিটি বাঙালি পরস্পরের রক্ত সম্পর্কে আত্মীয়। এই জাতিসত্ত্বাগত পরিচয় #বৈজ্ঞানিক এবং #অপরিবর্তনীয়। এর ভিত্তিতেই বাংলার সংস্কৃতি ও ভাষা গড়ে উঠেছে প্রাচীনকাল থেকে এবং স্বাতন্ত্র্য স্বকীয়তা স্বাধীনতা রক্ষা করে প্রাচীনকাল থেকেই বিবর্তিত হয়ে আজকের রূপ পেয়েছে।
বাঙালির আত্মপরিচয়: যে জাতির জাতিসত্ত্বাগত আত্মপরিচয় বোধ নেই, সেই জাতির আত্মমর্যাদাবোধ থাকে না। যার আত্মমর্যাদাবোধ থাকে না, সেই জাতি আত্মকোন্দলে মাতবে এবং আত্মঘাতী হবেই। বাঙালির অবস্থা গত দুই-আড়াই হাজার বছর যাবত্ এমনটাই হয়ে চলেছে।
অথচ, বাঙালি একটি জাতিসত্ত্বা, একটি ভাষাগোষ্ঠী, একটি সংস্কৃতি। বাঙালি একটি সভ্যতার নাম--- #বঙ্গসভ্যতা। বাঙালির একটা মাত্রই পরিচয়--- সেটা হলো, সে বাঙালি। এই পরিচয়টি কোনভাবেই পরিবর্তন করা যায় না এবং মোছা যায় না। আগামী ৮-১০হাজার বছরেও এই পরিচয় সম্পূর্ণ মোছা যাবে না, এটাই বৈজ্ঞানিক সত্য। #আলপিয় (অসুর) #আদিঅস্ত্রাল (দস্যু) #মোঙ্গলীয় (কিরাত) #দ্রাবিড় (রাক্ষস) #আর্মেনিয় (অসুর) #দিনারিক (অসুর) ---এই ছয়টি নৃতাত্ত্বিক জাতির সংকরই #বাঙালি_জাতি। বিশুদ্ধ নাই। এদের সাংস্কৃতিক ভূমিক্ষেত্র--- বুড়িগণ্ডক-রায়গণ্ডক নদী-দারভাঙা থেকে পূর্ব বিহার, শোননদীর পূর্বের দক্ষিণ বিহার, সমগ্র ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, বাংলাদেশ। প্রায় ৬,৩০,০০০ বর্গ কিমি (এখন পর্যন্ত হিসেব) অঞ্চল আদি বাসভূমি। এখানেই গড়ে উঠেছিল #বঙ্গসভ্যতা; যা বৈদিক-কথিত #অসুর_জাতির_দেশ তথা পূর্বদেশ। সামগ্রিক প্রায় ১২ হাজার বছর ধরে সংস্কৃতিটি ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়েছে। মিলেছে বাকি পাঁচটি নৃতাত্ত্বিক জাতির সঙ্গে। জন্ম হয়েছে #বঙ্গসভ্যতার। এই মহাসম্মেলনের উত্তরপুরুষ আজকের বাঙালি। এই জাতিসত্ত্বাই বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতিকে স্বতন্ত্র ভিতের ওপর গড়ে তুলেছে বিগত ৬-৭ হাজার বছর ধরে। এই জাতিসত্ত্বাই সব ক্ষেত্রেই স্বাতন্ত্র্যের জন্ম দিয়েছে। একমাত্র এই জাতিসত্ত্বাগত পরিচয়ই বাঙালিকে একজোট করবে, জাগাবে এবং সর্বক্ষেত্রে সার্বিক উত্কর্ষ সাধনে ব্রতী করবে।
অতএব, নতুন বাংলা গড়তে বাঙালির এটাই বিজ্ঞানভিত্তিক পথ। দ্বিতীয় পথ নাই।
"লুঠ করা ধন করে জড়ো
কে হতে চাস সবার বড়
এক নিমেষে পথের ধূলায় পড়তে হবে"
[সর্বজ্ঞ বিতর্ককারীগণ বিদায় নিন]
#শমীন্দ্রঘোষ
১৩/০১/১৭
.
***চৈতন্যদেব বাংলার নবজাগরণের পুরোধা। জাতপাতহীন সমাজ গড়ে তুলছিলেন। কৃষ্ণনামে ভক্তিরস ছিল। প্লাবনে ভেসেছিল বাংলা। এই বিচ্যুতি দেখে গুরু অদ্বৈতাচার্যের পত্রাঘাত। ফলে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন চৈতন্যদেব। বাকিটা নির্ভরযোগ্য তথ্যাভাবে এখনও অজানা।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৪
শমীন্দ্র ঘোষ বলেছেন: বাঙালির আত্মপরিচয়: যে জাতির জাতিসত্ত্বাগত আত্মপরিচয় বোধ নেই, সেই জাতির আত্মমর্যাদাবোধ থাকে না। যার আত্মমর্যাদাবোধ থাকে না, সেই জাতি আত্মকোন্দলে মাতবে এবং আত্মঘাতী হবেই। বাঙালির অবস্থা গত দুই-আড়াই হাজার বছর যাবত্ এমনটাই হয়ে চলেছে।
অথচ, বাঙালি একটি জাতিসত্ত্বা, একটি ভাষাগোষ্ঠী, একটি সংস্কৃতি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩
সুদিন বলেছেন: দাদা অাপনিই নিজে আগে স্পষ্ট করুন কোন ভিত্তিতে আপনি নতুন বাংলা চান
১. ভাষার ভিত্তিতে
আসাম ও আরাকানের বাংলাভাষীদের কি হবে...............?
২. ভৌগলিক ভিত্তিতে
পশ্চিমবঙ্গ কি বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হবে না কি বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গের সাথে যুক্ত হবে
না পশ্চিমবঙ্গ + বাংলাদেশ যৌথভাবে রাষ্ট্রগঠন করবে।
৩. জনসংখ্যার ভিত্তিতে ধর্মের একটা অনুপাত চলে আসবে, সেটা কিভাবে দেখবে নীতিনির্ধারকরা
এইসমস্ত জটিল প্রশ্নের আছে কি কোন সহজ উত্তর ?