নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সাংবাদিক, লেখক, স্থির চিত্রগ্রাহক। কবি, গবেষক, গ্রন্থকার, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলন কর্মী। সাধারণ সম্পাদক, ভারতীয় বঙ্গসমাজ। ধর্মহীন সাম্যের সমাজের স্বপ্ন দেখি ও দেখাই।

শমীন্দ্র ঘোষ

সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, গ্রন্থকার, ফোটোগ্রাফার, কবি, আবৃত্তিকার, যুক্তিবাদী মানবতাবাদী আন্দোলনকর্মী

শমীন্দ্র ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙালির প্রতি আহ্বান

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪

বাঙালির প্রতি আহ্বান

শমীন্দ্রঘোষ

বাংলা ও বাঙেলির সার্বিক সাংস্কৃতিক উত্‍কর্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া আবশ্যক। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে এটা স্পষ্ট যে, বঙ্গসমাজ নানান বিভেদে জীর্ণ শীর্ণ দীর্ণ আত্মকোন্দলরত, পরপদলেহী মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়েছে।

বাঙালির বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি : হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টান বৌদ্ধ সরণা ইহুদী বড়দি মেজদি... আশরাফি সুন্নি শেখ শিয়া মিয়া বিয়া... ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শুদ্র ভদ্র অভদ্র... পীর ফকির আউল বাউল দরবেশ গাজী মাঝি কাজী ওঝা সোজা সরল সহজিয়া সত্‍সঙ্ঘ অসত্‍সঙ্ঘ জয়গুরু শ্রীগুরু সত্‍গুরু অসত্‍গুরু চাঁদগুরু সূ্য্যচাঁদ বড়চাঁদ বড়খাঁ ছোটেখাঁ কর্তাভজা জিভেগজা পুরুত সুরুত্‍ ফুরুত্‍... গন্ধবেনে সোনারবেনে শাঁখাবেনে সদগোপ দাড়ি কমা... গায়েন বায়েন পাইক ঢুলি তেলি কাঁসারী মুদি ঘরামী কুমোর কামার ধোপা নাপিত লেট পোদ মেটে বেঁটে লম্বা... ধাঙড় চাড়াল পোড়েল আড়াল কৈবর্ত্য শুঁড়ি হাড়ি মুচি ডোম চণ্ডাল অণ্ডাল মণ্ডাল... বারেন্দ্র রাজবংশী কায়েত কুলীন মলিন... সৌকালীন বিপ্র ভরদ্বাজ কাশ্যপ মাহিষ্য সোরেন মাহত অম্বষ্ঠ আগুরি মাগুরি গাগরী... ঘটি বাঙাল আসামী সাদিয়া ওড়িয়া মোহন্ত পয়মন্ত খুশবন্ত ককবরক ত্রিপুরী শ্রীপুরী বিহারী বঙ্গীয় রাঢ়ী বাগড়ী বরাকী কামতা ঝাড়খণ্ডী কুর্মী বর্মী কোচ বাংলাদেশী রোহিঙ্গা চট্টল পট্টল টলটল... তৃণমূল সিপিএম কংগ্রেস বিজেপি মাপা হাঁপা... সিপিআই জেডি কেএলও পিডিএস এসপি ডিপিআই ডিএসপি বিএসপি জেএসপি বিজেডি কেএলডি জামাতি ইল উল আল... অগপ আ'লিগ বিএনপি জাতীয় বিজাতীয় স্বজাতীয়... পুরুষতন্ত্র নারীতন্ত্র ক্ষমতাতন্ত্র উভলিঙ্গতন্ত্র সমকামতন্ত্র লিঙ্গহীনতন্ত্র মন্ত্র যন্ত্র যন্ত্রণা... আদিবাসী মূলনিবাসী পাতানিবাসী সাঁওতাল ঝাঁপতাল বেতাল বহুতাল বহুজন স্বজন দুর্জন দলিত মথিত কথিত অকথিত....
উফফফ... আরও কত যে ভাগ-বিভেদ... বাঙালির মগজ শতচ্ছিন্ন জীর্ণ দীর্ণ শীর্ণ...
এসবই আরোপিত ও পরিবর্তনশীল। ফলে, আত্মপরিচয়বোধ, আত্মমর্যাদাবোধ নেই। এরসঙ্গে লোভ, মোহ, ভয়, মাত্‍সর্য্য আছেই। বাড়ছে ঈর্ষাও। ফলে, একজন এগোতে গেলে তাকে পেছন থেকে টেনে নীচে নামানো হয়; বন্ধু সেজে বিশ্বাসঘাতকতা করছে; নানান গুজব রটিয়ে ভয় দেখিয়ে ছত্রভঙ্গ করা হচ্ছে। এভাবে বাঙালি ভীরু আবেগী নিরাপত্তাহীন আত্মবিশ্বাসহীনও হয়ে পড়েছে। বাঙালি এখন সবক্ষেত্রেই ভগ্নপ্রায় দিশাহীন। আত্মবিস্মৃতি গ্রাস করেছে। আত্মঘাতী হয়ে পড়েছে।

এর থেকে বাঁচতে গেলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। ইতিহাস চেতনা জরুরি। বাঙালির প্রাচীনকালের সম্বৃদ্ধ ইতিহাসের ধারা, জীবনের স্পন্দন, কর্মকাণ্ড, উত্‍পাদন, বীরত্বের ইতিহাস জানা আবশ্যক; এসব প্রচার করা দরকার। এক্ষেত্রে জাতিসত্ত্বাগত পরিচয়ই বাঙালির আত্মপরিচয়একমাত্র বাঙালিত্ব অপরিবর্তনীয়। এই জাতিসত্ত্বা আবেগজাত নয়; এই জাতিসত্ত্বা ধর্ম-সংস্কারজাত নয়; বরং এই জাতিসত্ত্বাগত পরিচয় বৈজ্ঞানিক; এই জাতিসত্ত্বাগত পরিচয় কখনই মোছা যাবে না; এটা অপরিবর্তনীয়। এই জাতিসত্ত্বাই বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত্তি। কালপ্রবাহে এটাই বয়ে এসেছে। স্বাতন্ত্র্য স্বকীয়তা রক্ষা করেছে সব ক্ষেত্রে। এই জাতির বর্তমান নাম #বাঙালি। পুর্বপুরুষের নাম #অসুর। এই অসুরজাতি আদপে ছয়টি নৃতাত্ত্বিক পর্যায়ের সংকর। #অনু-অস্ত্রাল (দস্যু) #আলপীয় (অসুর) #দ্রাবিড় (রাক্ষস) #মোঙ্গলীয় (কিরাত) #আর্মেনীয় (অসুর) #দিনারিক (অসুর)। বৈদিকরা এদের একজোটে #অসুরজাতি বলতো। এদেরই বিবর্তিত রূপ ২০১৭ সালের বাঙালি। প্রায় ৯৯% বাঙালিই অসুরজাতির সন্তান।
এদের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ভূমিক্ষেত্র বুড়িগণ্ডক-রায়গণ্ডক-বাগমতী নদী থেকে পূর্ব বিহার, শোননদীর পূর্বে সমগ্র দক্ষিণ বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, বাংলাদেশ; এই মূল সপ্তখণ্ড। অথচ, এখানেই গড়ে উঠেছিল সম্বৃদ্ধ সভ্যতা, বঙ্গসভ্যতা

বাঙালি জেগে উঠুক এই জাতিসত্ত্বাগত পরিচয়ে। বাঙালির ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাঙালিত্বের দ্বারাই পরিচালিত; যার উত্‍স প্রাচীন অসুরজাতির সম্বৃদ্ধ সংস্কৃতি। এই ইতিহাসে সচেতন সম্বৃদ্ধ হয়ে উঠুক বাঙালি। এভাবেই ধীরে ধীরে ফিরে পাবে আত্মপরিচয়, আত্মমর্যাদা। আত্মঘাতী হওয়া থেকে বাঁচবে। স্বাতন্ত্র্য স্বকীয়তায় মেরুদণ্ড সোজা করে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক ঐতিহাসিক সম্বৃদ্ধ বীর জাতি বাঙালি।

#শমীন্দ্রঘোষ
০৯/০১/১৭

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৯

একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: চমত্‍কার একটা লেখা ।কিন্তু কথা হচ্ছে বাঙালী কি পূর্ব পরিচয়ে ফিরে যেতে পারবে ?
পারবে বলে মনে হয়না ।
বাঙালীর ৯০% হচ্ছে মুসলমান ।এদের যদি বলা হয় তোমরা অসুরজাতি ।তবে তারা আমাদের নাস্তিক আখ্যা দিবে ।এদের কোন পরিচয় নেই ।এরা হচ্ছে বিজাতীয় ।সংস্কৃতির ধার ধারেনা এই ২০১৭ সালের বাঙালী ।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৭

শমীন্দ্র ঘোষ বলেছেন: বাঙালির আত্মপরিচয়: যে জাতির জাতিসত্ত্বাগত আত্মপরিচয় বোধ নেই, সেই জাতির আত্মমর্যাদাবোধ থাকে না। যার আত্মমর্যাদাবোধ থাকে না, সেই জাতি আত্মকোন্দলে মাতবে এবং আত্মঘাতী হবেই। বাঙালির অবস্থা গত দুই-আড়াই হাজার বছর যাবত্‍ এমনটাই হয়ে চলেছে।
অথচ, বাঙালি একটি জাতিসত্ত্বা, একটি ভাষাগোষ্ঠী, একটি সংস্কৃতি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.