আদিবার প্রেম

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০০

কলেজে নতুন একটা ছেলে এসেছে। গায়ের রং টা খুব সুন্দর। একেবারে কুচকুচে কালো। তেল দিয়ে মনেহয় আরো কুচকুচে করে রাখে।
আহা কতই না সুন্দর ছেলেটা। বান্ধবীরা সবাই ওকে নিয়ে আলাপ করে। যদি কেউ ওই ছেলেটার ভালবাসা পেত, ধন্য হয়ে যেত। ওরকম কুচকুচে গায়ের রং! আহা মন জুড়িয়ে যায়!
ছেলেটাকে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পরে গেছে আদিবা। কিন্তু কী করে বলবে?
বলার সাহস নেই তার, তাছাড়া তার অনেক কালো বান্ধবী তাকে পছন্দ করে আর সে একটা ফর্সা মেয়ে হয়ে কোন সাহসে ভালবাসার কথা বলতে যাবে ভেবে পায় না। কিন্তু মনটাও যে মানে না। সে যদি কলেজের সব চেয়ে ভাল ছাত্রী হত তাহলে একটা কথা ছিল। ছেলেটাকে যদি ভালবাসার কথা বলে তাহলে ছেলেটা কি বলবে? যদি বলে বসে তোমার ভবিষ্যত খারাপ তুমি বিয়ের পর স্বামীকে খাওয়াবে কী? তাছাড়া গায়ের রং ফর্সা হওয়াটাও সমস্যা। যদি ছেলেটি ফর্সা মেয়ে পছন্দ না করে। যদিও মেয়েদের গায়ের রং ফর্সা বা কালো বড় ব্যপার নয় আসল ব্যপার হচ্ছে মেয়েকে অবশ্যই স্বাবলমী হতে হবে। নইলে স্বামীকে খাওয়াবে কি?
আদিবারা দুই বোন। কোন ভাই নেই,,ছেলে সন্তান নেই বলে অনেকটা নিশ্চিত আদিবার মা বাবা। আদিবাকে নিয়েও তাদের চিন্তার শেষ নেই। তাদের বড় মেয়ের গায়ের রং কালো কুচকুচে আর ছাত্রী হিসেবেও ভাল। তার জন্য বর পেতে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু সমস্যা হবে আদিবাকে নিয়ে। তার গায়ের রং এমনিতে ফর্সা তার উপর পরীক্ষায় গোল্লা খাওয়া ছাত্রী। তাইতো মা বাবা এত চিন্তা করে। আদিবার মা অথবা বাবার কেউ ফর্সা নন অথচ তাদের সন্তান আদিবার গায়ের রং টা সমস্যা। গায়ের রং ফর্সা হওয়ার কারণে আদিবা অনেক কষ্ট পায় মনে মনে।
সে ভাবে, যদি তার গায়ের রং কুচকুচে কালো হত তাহলে অন্তত সাহস করে ছেলেটিকে ভালবাসার কথা বলতে যেতে পারতো। অথবা, যদি ছাত্রী হিসেবে ভাল হত তাহলেও সাহস করত। কিন্তু, না গায়ের রং কাল না লেখাপড়ায় ভাল। তাই আদিবা চিন্তা করল সে ছেলেটিকে ভুলে যাবে। ওসব কালো ছেলেরা কালো এবং টাকা ওয়ালা মেয়েদের জন্য, আদিবার মত ফর্সা আর গোল্লা খাওয়া মেয়েদের জন্য না। তাই আদিবা ছেলেটির চিন্তা ছাড়লো।

১ টি +১/-০