![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলি
অষ্টাদশীর কাব্য
..............শাহজাহান পারভেজ রনি
ডাক নাম মঙ্গলা।গা গতরে ছুড়িটা বেশ লায়েক হয়ে উঠেছিল
শুনেছিলুম দায়গ্রস্ত মামার এদানি এনে দেয়া গন্ধ সাবান,
কলম্বো নারকোল তেল, মালতী স্নো, ছুড়িটা বেশ নিয়ম করে মাখতো
ইশকুলের পথে সাপ-খোঁকের ভীষন আনাগোনায়
ছুড়িটা ও পথ কখনো মাড়ায়নি আর
তবু শেষ রক্ষা হলোনে, বনবেড়ালেই গেল শেষ অব্দি।
ওর যখন জন্ম হলো, তখন ভাদর মাস, কাল সন্ধ্যেবেলা
দাই বলেছিল,শনিবারের আঁতুড়গুলোর কপাল মন্দ হয়
ওর নাম মঙ্গলা রেখে দিও, ছুঁত ছ্যামা ছুঁতে পারবেনা
ওকে দেখে রেখো, জল থেকে, আগুন থেকে দুরে রেখো;
সেই থেকে ছুড়িটাকে এক গেলাস জল কোনদিন ঢেলে খেতে হয়নি
বাপের কাঁধে চেপে সংক্রান্তির পূজোয় গিয়ে কোছ ভরে
খাগড়াই বাতাসা, কদমা কিনেছে; পেয়েছে বাহারী কাঁচের চুড়ি
তারিনী বলতো ,ও আমার সাত রাজার ধন, ও যে আমার সন্ধ্যা তারা গো!
নিমাই কোবরেজ একবার কষ্টি মেপে তারিনীকে বলেছিল...
দ্যাখো মা, সাবধানে থেকো্ আর বাড়ীতে পদ্মপূরানের একটা আয়োজন রেখ;
কোবরেজের কথামতো গাঙ্গের ওপার থেকে চাদু শেখের দল
বছর ঘুরতেই গেয়ে যেত পদ্মপুরান, ভক্তি গীত আর ধুপের গন্ধে,
মৌ মৌ করতো সেন বাড়ীর উঠোন, ঘর গেরস্থালী;
পদ্মপুরানের নির্ভাবনায় সবাই যখন মনসার বীষ ভুলতে বসেছিল
ঠিক তখন নিশ্চিন্তি ঘুমের ভেতর মা মনসা বিষ ঢেলে দিল তারীনির বুকে
দ্বাদশী মঙ্গলার মা বলে ডাকার কেউ রইলো না আর।
শুনেছিলুম বছর ঘুরতে না ঘুরতে তারীনির সাজানো সংসারে
মঙ্গলার কোন জায়গা ছিলনা, বাপের চিরচেনা চোখ বদলে গেলে
অনাথের যেখানে জায়গা হয় অবশেষ, সেখানেই কেটেছিল মঙ্গলার শেষ ক'টা দিন।
বনবেড়ালে বিলীন হবার আগ পর্যন্ত তিনটে বছর
মামা, দিদিমা'র সংসারে মন্দ-ভালো'ই বেঁচে ছিল ছুড়িটা;
নিমাই কোবরেজ ভুল বললেও দাই'য়ের কথা ফলে গিয়েছিল,
ঠিক বলেছিল দাই ,শনিবারের আতুঁড়গুলোর কপাল সত্যিই ভাল হয়না
ওদের জল আগুনে নেয়, নয়তো শেষমেশ বেনবেড়ালে খায়।
©somewhere in net ltd.