![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূমিকা
ইসলামি জ্ঞান চর্চা হ্রাসের পাশাপাশি আমাদের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মুসলিম পরিবার ও সমাজে দিন দিন লক্ষ্যণীয়ভাবে বিভিন্ন প্রকার বেদআত, কুসংস্কার, ইসলামের মৌলিক নীতির সাথে সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে বর্তমানে অত্যন্ত জঘন্য আকার ধারণ করেছে ঝাড়-ফুক ও তাবিজাত। অনেক ক্ষেত্রে তাবিজাতের নামে যাদু চলছে। যারা যাদু শিখে, যারা যাদু করে এবং যারা যাদু করায় ওরা সবাই যে কাফের সে ব্যাপারে কারো দ্বি-মত নেই। কিন্তু তাবিজাত নিয়ে এখনো মুসলিম সমাজে প্রচুর সন্দেহ রয়েছে। এর প্রধান কারণ, এক শ্রেণীর মুসলমান ইসলামি পোশাক গায়ে দিয়ে ইসলামি চিকিৎসা পদ্ধতি বলে তাবিজাত করছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজাতের মহত্ত্ব বর্ণনা করে নকশে সোলেমানি, তাবিজাতে রুহুল্লাহ, মোহাম্মদী খাবনামা ইত্যাদি প্রচুর বই ইতোমধ্যে এক শ্রেণীর তাবিজ ব্যবসায়ীরা লিখে বাজারে বিক্রি করছেন। এই সমস্ত বই-এ তাবিজের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে এমনভাবে কিছু কেচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে যা পাঠ করলে ইসলাম সম্পর্কে স্বল্পজ্ঞানী মুসলিম সমাজ বিশেষ করে মহিলা শ্রেণী বিভ্রান্ত হওয়ারই কথা-আর তা হচ্ছেনও। তাবিজ সম্পর্কে ইসলামের রায় কী? তা আমরা অনেকেই জানি না। বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় এ সম্পর্কে বিভিন্ন বই প্রকাশিত হলেও আমাদের বাংলাদেশী আলেম সমাজ রহস্যজনকভাবে নিরবতা প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার এ সবের সাথে জড়িতও আছেন। অনেকে আবার এটাকে ব্যবসা হিসেবেও গ্রহণ করে নিয়েছেন। তবে হক্বানী আলেম সমাজ নিরবতা প্রদর্শন করলেও এসব থেকে পরহেজ করছেন বলে আমাদের ধারণা। পারিবারিকভাবে আমরা এ সবের প্রতি কোনদিনই আকৃষ্ট নই। মা-বাবা, ভাই-বোন নিয়ে আমাদের যে পরিবার তাতে আমরা সবাই ধর্মের ব্যাপারে আপোষহীন, গোটা সমাজের অধিকাংশ মুসলমান যেখানে তাবিজাতকে ধর্মের অংশ মনে করছে সেখানে আমরা কেন আকৃষ্ট হতে পারছি না? এই প্রশ্ন এক সময় জাগ্রত হলো বিবেকে। তাই কুরআন-হাদিসে খুঁজতে লাগলাম তাবিজাতের ভিত্তি। খুঁজতে গিয়ে যা পেয়েছি তা বাঙালি পাঠকদের সামনে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে এই লেখা।
সম্মানিত পাঠক, এটা কোন ফতোয়া নয় তবে চিন্তার খোরাক। আপনি পড়ুন, পর্যালোচনা করুন, খুঁজে দেখুন সত্য-মিথ্যার অধ্যায়গুলো। এরপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
তাবিজাত কী?
আরবি ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে, ‘তামীমা’....শব্দ থেকে এসেছে তাবিজ। আবার অনেকে বলেছেন ‘তামীম ’...শব্দ থেকে। বাস্তবে এই দু’শব্দের অর্থ এক। আভিধানিক অর্থ হচ্ছে-হেফাজত, পৃষ্ঠপোষক, রক্ষণ করা বা Protection. (তথ্য: ‘লেসান’ নামী অভিধানও ফিরুজুল লোগাত)।
বিশিষ্ট ইসলামি দার্শনিক হযরত ইবনে জোনাই (রা.) বলেছেন, ‘তামীমা’ (তাবিজ) হচ্ছে ঐ জিনিস যা তাগায় বেঁধে লটকানো হয়। বিশিষ্ট মুফাসসির আল্লামা ইবনে হাজর (রা.) বলেছেন, ‘তামীমা হচ্ছে তাবিজ বা হাড় যা মাথায় লটকানো হয়। ইসলামপূর্ব জাহেল যুগের মানুষের বিশ্বাস ছিলো যে, তাবিজ দ্বারা মানুষের বিপদ-আপদ দূর হয়ে যায়। আল্লামা ইমাম ইবনুল আসীর (রা.) বলেছেন, ‘জাহেল যুগের আরবগণ শিশুদের গলায় তামীমা অর্থাৎ তাবিজ লটকাতো যাতে বদনজর না লাগে। এটা তাদের বিশ্বাস ছিলো, অতঃপর ইসলাম তাদের এই বিশ্বাসকে ভ্রান্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে।
(তথ্য: আকিদার মানদণ্ডে তাবিজাত, আল্লামা আলী বিন নাফায়ী আল্ উলাইয়ানী)
মানুষ তাবিজ কেন ব্যবহার করে?
তাবিজ ব্যবহারের অতীত ও বর্তমান ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মানুষ সাধারণত তিনটি উদ্দেশ্যে তাবিজ ব্যবহার করে থাকে।
এক. ঐ সমস্ত রোগ, বদনজর ও বিপদাপদ থেকে রা পাওয়ার আশায় যা এখনো সংগঠিত হয়নি।
দুই. বিপদ এসে গেলে তা থেকে মুক্তি লাভের আশায়।
তিন. কোন অসৎ কিংবা সৎ উদ্দেশ্যে হাসিলের আশায়।
অতীত ও বর্তমানে ব্যবহৃত তাবিজাত
অতীত ও বর্তমানে ব্যবহৃত তাবিজগুলো বেশ কয়েক প্রকার রয়েছে। যেমন:
১.........আননাফরা, এটা এই প্রকারের তাবিজ যা জ্বীন ও মানুষের বদনজর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শিশুদের হাত, পা, কিংবা গলায় বেঁধে দেয়া হয়। আবার কখনো অপবিত্র জিনিস দিয়ে এই তাবিজ অতীতেও লেখা হতো এবং বর্তমানেও হয়ে থাকে। যেমন-ঋতুস্রাবের নেকড়া, হাড় এবং কালো মুরগীর রক্ত ইত্যাদি। অথচ অপবিত্র জিনিস দিয়ে কুরআন স্পর্শ করা সম্পূর্ণ হারাম।
২. ........আকরা, যা মহিলাদের বাচ্চা না হলে কোমরে বাঁধার জন্য দেয়া হয়।
৩...........ইয়ান জালিব, যা দেয়া হয় স্বামী রাগ করলে কিংবা কোথাও রাগ করে চলে গেলে তাকে স্ত্রীর প্রতি আকৃষ্ট করতে এবং ফিরিয়ে আনতে।
৪.............তিওয়ালা;
৫.............কারজাহলা;
৬..............দারদাবীস;
৭.............কাহলা;
৮.............কারার;
৯. ..........হামরা
চার নম্বার থেকে নয় নম্বার পর্যন্ত যে তাবিজাতের নাম বলা হলো এগুলো হচ্ছে-ফুর্তিজাতীয় তাবিজ। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহৃত হয়। ‘কারার’ এবং ‘হামরা’ তাবিজে নির্দিষ্ট একটি মন্ত্র লেখা হয়, যা শিরক পর্যায়ের। যেমন বলা হয় : ‘ইয়া কারারু কারিহি, ইয়া হুমারাতি ইহমারিহি, উন উকবালা ফাসারিয়াতি ওয়া উন আদবাবা ফাদাবিহি মিন ফারজিহি ইলা ফি-হী।’ এ মন্ত্রে আল্লাহর ‘রাবুবিয়্যাত’ ও ‘ইলাহিয়াতের’ সাথে শিরক করা হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে শিরক থেকে রা করুন।
১০..............খাছম্, যা রাজা-বাদশা বা বিচারকের সামনে যাওয়ার সময় মামলায় জিতার জন্য আংটির নিচে, জামার বোতামে অথবা অস্ত্রের কভারে লটকানো হয়।
১১..............আত্ফ, মানুষের দয়া-মায়া পাওয়ার আশায় ব্যবহার করা হয়।
১২..............সালওয়ানা। সাদা ফুর্তিজাতীয় বস্তু দ্বারা তৈরি তাবিজ। বালুতে পুঁতে রাখলে কাল হয়ে যায়। অতঃপর সেখান থেকে উঠিয়ে ধৌত করে অস্থির মানুষকে পানি পান করানো হয় শান্তি ফিরে পাওয়ার আশায়।
১৩. ...........কাবলা, বদনজর থেকে বাঁচার জন্য সাদা পুঁতি দিয়ে তৈরি এ তাবিজ ঘোড়ার গলায় বেঁধে দেয়া হয়।
১৪.............অদাআ, এটা পাথরের তাবিজ, বদনজর থেকে হেফাজতের উদ্দেশ্যে তা সমুদ্রে নিপে করা হয়।
১৫............তাহবীতা, যা লাল ও সাদা রংয়ের তাগার ছিগা তুলে মহিলাদের কোমরে বাঁধা হয় যাতে বদনজর না লাগে।
১৬. এক প্রকারের তাবিজ আছে যা যাদু ও বদনজর থেকে বাঁচার জন্য খরগোশের হাঁড় ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও আরো বহু প্রকারের তাবিজ আছে, ইসলাম পূর্বযুগে এ সব তাবিজ জাহিলেরা যেভাবে ব্যবহার করতো আজ তের-চৌদ্দশত বছর পরও মুসলিম সমাজে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে লণীয়ভাবে। ইতিমধ্যে অনেকে এই তাবিজাতকে পেশা হিসেবেও গ্রহণ করে নিয়েছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এই সমস্ত তাবিজ ব্যবসায়ীদের বিরাট-বিরাট বিজ্ঞাপনও দেখা যায়। অনেকে আবার বিশেষ দ্রষ্টব্য হিসেবে জ্বীন সাধনার কথা উল্লেখ করেন। কেউ কেউ আবার স্বপ্নে পাওয়া হাবি-জাবির কথা বলে মানুষকে আকৃষ্ট করতে চান। হুজুর সায়দাবাদী, দেওয়ানবাগী, দায়রা শরিফ ইত্যাদি তাবিজ ব্যবসায়ীদের বিজ্ঞাপন পড়লে কে-না আকৃষ্ট হয়।
তাবিজাত এক প্রকারের শিরক নয় কি?
আমরা যারা রোগমুক্তি, বদনজর ও বিপদ-আপদ থেকে রা পাওয়ার জন্য কিংবা কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাবিজ ব্যবহার করে থাকি তাদের স্মরণ রাখা উচিৎ যে সকল কারণে তাবিজ ব্যবহার করা হয় এর একটিও পূর্ণ করার শক্তি না আছে তাবিজের, না তাবিজ লেখেকের। যদি কেউ তাবিজ কিংবা তাবিজ লেখকের শক্তি আছে বলে বিশ্বাস করেন তাহলে তার ঈমান ধ্বংস হয়ে যাবে। পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে-
‘তোমরা আল্লাহর উপর ভরসা কর, যদি মুমিন হয়ে থাক।’ (সুরা: মায়েদা-২৩)
এই আয়াত দ্বারা স্পষ্ট যে, আল্লাহ ছাড়া কোন কিছুর উপর ভরসা করলে ঈমানদার হওয়া যায় না।
‘আল্লাহ তোমাদেরকে কেশ দান করলে তিনি ছাড়া মোচনকারী কেউ নেই।] (সুরা: আন্-আম-১৭)
‘তাদের অধিকাংশ আল্লাহে বিশ্বাস করে কিন্তু আবার তার সাথে শরীক করে।’ (সুরা: ইউসুফ-১০৬)
এ রকম আরো অসংখ্য আয়াত রয়েছে, যা পড়লে স্পষ্ট বুঝা যায় তাবিজের উপর বিশ্বাস বা ভরসা করা শিরক। অনেকে বলেন-বিশ্বাস তো আল্লাহর উপর আছে কিন্তু তাবিজ হচ্ছে একটা উসিলা বা মাধ্যম। মুসলমানদের বুঝা উচিৎ আমরা এমন শক্তিধর আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি, যিনি মাধ্যম ছাড়া সকল সৃষ্টির মঙ্গল-অমঙ্গল করতে পারেন।
তাবিজাত যে র্শিক সে সম্পর্কে হাফেজ ইমাদুদ্দিন ইবনে কাসীর (রা.) তাঁর বিশ্ববিখ্যাত এবং সর্বজন স্বীকৃত ‘তাফসীর-এ-ইবনে কাসীর’-এ সুরা ইউসুফের ১০৬ নম্বার আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, ‘এ কথা স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, কতকগুলি শির খুবই হালকা এবং গোপনীয় হয়। স্বয়ং শিরককরীও তা বুঝতে পারে না। বিশিষ্ট সাহাবি হযরত হুযাইফা (রা.) একজন রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে যান। সেই ব্যক্তির হাতে একটি সুতা (যাকে তাগা বলা হয়) বাঁধা ছিলো। তিনি ওটা ছিড়ে ফেলে বললেন, ‘মুমিন হয়েও শিরক করছো?’ (তাফসিরে ইবনে কাসীর)।
আল্লামা ইবনে কাসীর (রা.), হযরত হুযাইফা (রা.) থেকে যে কথা বর্ণনা করেছেন তা অবশ্যই হুযাইফা (রা.)-এর মনগড়া ছিলো না। রাসুল (সা.)-এর সাহাবিগণ (রা.) ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে মনগড়া কথা বলতেন না, বরং রাসুল (সা.) যা বলতেন তা তারা প্রচার করে গেছেন।
তাবিজাত সম্পর্কে হাদিসে রাসুল (সা.)-এর ভাষ্য
ইসলামের ভিত্তি কোন ব্যক্তি কিংবা জাতি নয়। ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে কুরআন ও হাদিস। আজকে মুসলিম সমাজে যারা ইসলামি পোশাক গায়ে দিয়ে তাবিজ ব্যবসা করছেন এবং তাবিজাতকে বৈধ করতে বিভিন্ন প্রকার যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন তাদের বক্তব্যকে আমাদের বুঝতে হবে, ইসলামি বিধান অনুসারে পর্যবেণ করতে হবে। কোন জিনিস বা কর্ম ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ কিনা, তা পর্যবেণ করতে হলে প্রথমে তা সরাসরি কুরআনে খুঁজতে হবে। যদি কুরআনে না পাওয়া যায় তাহলে হাদিসে। যদি হাদিসেও স্পষ্ট পাওয়া না যায় তাহলে সাহাবায়ে কেরামদের জীবনীতে। যদি এখানেও স্পষ্ট না পাওয়া যায় তাহলে কিয়াসের যোগ্যতাসম্পন্ন উলামায়ে কেরাম কুরআন, হাদিস এবং সাহাবাদের জীবনকে সামনে রেখে মতামত দিবেন। তাবিজাত সম্পর্কে জানতে আমাদের এতটুকু যেতে হচ্ছে না। কুরআনে এ সম্পর্কে ইশারা এবং হাদিসে স্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে, শুধু অভাব আমাদের জানার। আমরা এ সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিসের দিকে দৃষ্টিপাত করলে বুঝতে পারবো তাবিজাত কতটুকু ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। পাঠকের সুবিধার্থে নিম্নে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো-
১. বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর স্ত্রী হযরত যয়নাব (রা.) বলেন, ‘আমার স্বামী হযরত আব্দুল্লাহ বাহির থেকে বাড়িতে প্রবেশ করতে গলা খাঁকড়াতেন এবং থু থু ফেলতেন। কারণ যাতে বাড়ির লোকেরা তাঁর আগমনের সংবাদ পায় এবং তাদেরকে তিনি এমন অবস্থায় না দেখেন যা তাঁর অপছন্দনীয়।’ এটা তাঁর প্রতিদিনের অভ্যাস ছিলো। অভ্যাস অনুযায়ী একদিন তিনি এমনভাবে বাড়িতে প্রবেশ করলেন। এই সময় আমার কাছে এক বুড়ি ছিলো, সে আমার রোগের জন্য ঝাড়-ফুঁক দদিতেএসেছিলো। আব্দুল্লাহ্ (রা.)-এর গলার আওয়াজ শোনে আমি বুড়িকে চৌকির নিচে লুকিয়ে দেই। তিনি ঘরে এসে আমার পাশে চৌকির উপর বসেন এবং আমার গলায় তাগা দেখে জিজ্ঞেস করেন এটা কী? উত্তরে বললাম এটা আমি ঝাড়-ফুঁক করিয়ে গলায় বেঁধেছি। সাথে সাথে তিনি তা ছিড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন-‘আব্দুল্লাহ্ ঘর শিরকের অমুখাপেক্ষি স্বয়ং আমি রাসুল (সা.)কে বলতে শোনেছি যে-
` ঝাড়-ফুঁক, তাবিজাবলী এবং ডোরা-সুতা বাঁধা শিরক।
(মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, হাকেম, ইবনে মাজা)
২. হযরত ইমরান বিন হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস-
অর্থ: একদিন রাসুল (সা.) এক ব্যক্তির হাতে তামার চুড়ি দেখতে পেয়ে বললেন, এটা কী? সে বললো-এটা ওয়াহেনার অংশ (ওয়াহেনা হচ্ছে এক প্রকারের হাড় যা কেটে ছোট ছোট করে তাবিজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়)। তিনি বললেন, এটা খুলে ফেল। কারণ, এটা তোমার দুর্বলতাকে বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছুই করতে পারবে না। যদি এই তাবিজ বাঁধা অবস্থায় তোমার মৃত্যু হয় তাহলে কখনো সফলকাম হবে না। (সহীহ মুসনাদে আহমদ, হাকেম ইবনে মাজা)
৩. হযরত উকবা বনি আমের (রা.) বলেন, আমি স্বয়ং রাসুল (সা.)কে বলতে শোনেছি-
অর্থ: যে ব্যক্তি তাবিজ ব্যবহার করবে আল্লাহ তাকে পূর্ণতা দিবেন না, আর যে কড়ি ব্যবহার করবে আল্লাহ তাকে মঙ্গল দিবেন না। (মাসনাদে আহমদ, হাকেম)
৪. হযরত উক্বা বিন আমের আল-জোহানী (রা.) থেকে বর্ণিত-: একদিন রাসুল (সা.)-এর খেদমতে একদল লোক উপস্থিত হলো। অতঃপর হুজুর দলের নয়জনকে বয়াত করলেন, কিন্তু একজনকে করলেন না। তারা বললেন, হে রাসুল (সা.) নয়জনকে বয়াত করালেন আর একজনকে বাদ রাখলেন? রাসুল (সা.) বললেন, তার সাথে একটি তাবিজ রয়েছে। তখন তাঁর হাত ভেতরে ঢুকালেন এবং তাবিজ ছিড়ে ফেললেন। অতঃপর তাকেও বয়াত করলেন এবং বললেন, যে ব্যক্তি তাবিজ ব্যবহার করলো সে শিরক করলো। (মাসনাদে আহমদ, হাকেম)
৫. হযরত ঈসা বিন আব্দুর রহমান বর্ণনা করেন যে-হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওকাইম (রা.) অসুস্থ ছিলেন। আমরা তাকে দেখতে গেলাম। তাঁকে বলা হলো আপনি কোনো তাবিজ-কবজ নিলেই তো সুস্থ হয়ে যেতেন।
তিনি বললেন : আমি তাবিজ ব্যবহার করবো! অথচ এ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন-`যে ব্যক্তি কোনো কিছু রাকবচ ধারণ করবে, তাকে ঐ জিনিসের কাছে সোপর্দ করা হবে। (মুসনাদে আহমদ, হাকেম, তিরমিজী)
এভাবে তাবিজাতের বিরুদ্ধে মহানবি (সা.)-এর প্রচুর হাদিস বা উক্তি রয়েছে। হাদিসে রাসুল (সা.) যেখানে স্পষ্ট তাবিজ-কবচের বিরুদ্ধে বক্তব্য সেখানে এক শ্রেণীর মানুষ কোন সাহসে ইসলামের দোহাই দিয়ে তাবিজ-কবচ ব্যবহার করেছেন এবং যারা বড় বড় সাইনবোর্ড, বিজ্ঞাপন, পোস্টার এবং মাইক দিয়ে প্রচার করে তাবিজ-কবচের ব্যবসা করছে ওদের বিরুদ্ধে উলামায়ে ইসলাম কেন জনসাধারণকে সচেতন করতে এগিয়ে আসছেন না। মাজারে গিয়ে কোন কিছু প্রার্থনা করা যেমন পাপ তেমনি তাবিজের মাধ্যমে কিছু প্রাপ্তির আশাও পাপ।
তাবিজের পক্ষে একটি দলিল এবং এর উত্তর
তাবিজের বিরুদ্ধে অসংখ্য হাদিস এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর উক্তি থাকার পরও হক্বপন্থী অনেক আলেমকে-এর সাথে জড়িত থাকতে দেখা যায়। ফলে মানুষ বেশি বিভ্রান্ত হচ্ছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে উম্মুল মু’মিনিন হযরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, বিপদ আসার পূর্বে যা লটকানো হয় তা তাবিজ আর বিপদ আসার পর যা লটকানো হয় তা তাবিজ নয়। উলামায়ে ইসলাম এই উক্তির ব্যাখ্যা এ রকম দিয়েছেন যে, হযরত আয়েশা (রা.) মুছিবত আসার পর কুরআনের আয়াতের তাবিজ ব্যবহার জায়েজ বলেছেন কিন্তু মুছিবতের পূর্বে ইহা নাজায়েজ। হযরত আয়েশা (রা.) (আত-তামাইমু) শব্দ দ্বারা ব্যাপকভাবে সকল তাবিজ বুঝাননি। বরং শুধু কুরআনের আয়াতের তাবিজ বুঝানোই তার উদ্দেশ্য। কারণ, অন্যান্য তাবিজাবলী যে রোগাক্রান্ত হওয়ার পূর্বে এবং পরে সর্বাবস্থায় শিরকের অন্তর্ভুক্ত তা হযরত আয়েশা (রা.) কাছে অজানা ছিলো না। (ফাতহুল বারী)। যারা হযরত আশেয়া (রা.)-এর উক্তিকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই যে, হযরত আয়েশা (রা.) যে কথা বলেছেন তা তাবিজ ব্যবহরের পে কোন দলিল নয়, বরং তা হচ্ছে তাবিজ কি?-এর ব্যাখ্যা। তা ছাড়া যেহেতু ইসলামপূর্ব জাহেল যুগ থেকেই তাবিজাতের প্রথা ছিলো, যদি তা বৈধ হতো তবে কুরআন কিংবা হাদিসে স্পষ্ট কিংবা ইঙ্গিতে অনুমতি দেয়া হতো। দেওয়া তো হয়নি বরং বিরোধীতা স্পষ্টভাবে করা হয়েছে। হাদিসে রাসুল (সা.) যে জিনিসের বিরোধীতা করেছেন আমরা কিভাবে মনে করবো হযরত আয়েশা (রা.) সেই জিনিসের পে উক্তি দিয়েছেন। ঝাড়-ফুঁক সম্পর্কে মহানবি (সা.)-এর স্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে-
: তোমাদের ঝাড়-ফুঁক আমার কাছে পেশ কর, ওটা র্শিকের আওতাধীন না হলে কোন প্রকার বাঁধা নেই। (মুসলিম শহরে নববী)।
অথচ তাবিজের পক্ষে রকম কোন উক্তি নবি করিম (সা.) কিংবা সাহাবায়ে কেরামদের নেই বরং নিষেধাজ্ঞার উপর যথেষ্ট বক্তব্য রয়েছে।
চলবে
১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩৫
সৈয়দ মবনু বলেছেন: না, হাদিসে ঔষধ ব্যবহারের কথা আছে। ধারাবাহিক আলোচনায় বিষয়গুলো আসবে।
২| ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:২৭
আহমদ ময়েজ বলেছেন:
এইবার তোমার উপর খর্গ নেমে আসবে।
শুভার্থী
১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩৬
সৈয়দ মবনু বলেছেন: সত্য বলে হেমলক খেলেও কোনো আপত্তি নেই।
দোয়া করবেন।
৩| ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩০
বিডিআর বলেছেন: যাদু আর তাবিজের সম্পর্ক কেমন?
১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩৭
সৈয়দ মবনু বলেছেন: আগামী লেখাগুলোতে আলোচনা আসছে।
৪| ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩৫
মেঘবতী বলেছেন: বেশ হইছে। এইবার উপর থেকে ফতোয়া উঠে এসে আপনাকে ধুলাই লাগাইবো।
সাবধান!!!
১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩৮
সৈয়দ মবনু বলেছেন: আপনারা আছেন না আমার সাথে?
৫| ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৩৯
ইব্রাহিম মন্ডল বলেছেন: খুবই কঠিন বাহাস। তবে তাবিজ আমাদের কুসংস্কার বাড়িয়ে আত্মবিশ্বাস দূর্বল করেছে।
১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৪০
সৈয়দ মবনু বলেছেন: সহমত। ধন্যবাদ পাঠের জন্য
৬| ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৫৩
বাংলাকে ভালবাসি বলেছেন:
মিয়া আফনে একটা রামছাগা।
তাবিজ লাগাইয়া আমি পরীক্ষা পাশ করলাম, ভালা চাকরী ফাইলাম, বড়লোকের মাইয়ারে বিয়া করলাম আর আফনে আইচেন কিনা আমার লগে তামশা করবার।
কান ধইরা ১০ বার উঠ বসা করেন নাইলে আমার পীরে আফনেরে ছাগু বানাইয়া ফালাইবো দেখলে।
৭| ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:৫৩
দুর্ধর্ষ বেদুইন বলেছেন: যে সব তাবিজ-কবচে কুরআন হাদিস ব্যবহার করা হয় সে ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। এক শ্রেণীর আলেম কুরআন-হাদিসে বর্ণিত দুআ সমূহের তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ মনে করেন। যেমন, সাঈদ বিন মুসাইয়িব, আতা আবু জাফর আল-বাকের, ইমাম মালেক। এক বর্ণনা মতে ইমাম আহমদ, ইবনে আব্দুল বার, বাইহাকি, কুরতুবি, ইবনে তাইমিয়া, ইবনে কাইয়িম এবং ইবনে হাজারও রয়েছেন। তাদের দলিল, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآَنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ وَلَا يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إِلَّا خَسَارًا ﴿82﴾ الإسراء: ٨٢
আর আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করেছি যা রোগের সু-চিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত।’ {ইসরা:৮২}
كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ (ص 29)
এক কল্যাণময় কিতাব, ইহা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। {সাদ:২৯}
সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন আমরের ব্যক্তিগত আমল সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি নিজ ছোট বাচ্চা, যারা দোয়া মুখস্থ করতে অক্ষম, তাদেরকে অনিষ্ট থেকে রক্ষার জন্য গায়ে দোয়ার তাবিজ ঝুলিয়ে দিতেন। দোয়াটি এই:
بسم الله أعوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده ومن همزات الشياطين وأن يحضرون (أحمد والترمذي وأبوداود)
‘আল্লাহর নামে তাঁর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তাঁর গজব ও শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্টতা থেকে এবং শয়তানদের কুমন্ত্রণা ও তাদের উপস্থিতি থেকে।’ (আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ) হাদিসটি হাসান।যে সব তাবিজ-কবচে কুরআন হাদিস ব্যবহার করা হয় সে ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। এক শ্রেণীর আলেম কুরআন-হাদিসে বর্ণিত দুআ সমূহের তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ মনে করেন। যেমন, সাঈদ বিন মুসাইয়িব, আতা আবু জাফর আল-বাকের, ইমাম মালেক। এক বর্ণনা মতে ইমাম আহমদ, ইবনে আব্দুল বার, বাইহাকি, কুরতুবি, ইবনে তাইমিয়া, ইবনে কাইয়িম এবং ইবনে হাজারও রয়েছেন। তাদের দলিল, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآَنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ وَلَا يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إِلَّا خَسَارًا ﴿82﴾ الإسراء: ٨٢
আর আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করেছি যা রোগের সু-চিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত।’ {ইসরা:৮২}
كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ (ص 29)
এক কল্যাণময় কিতাব, ইহা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। {সাদ:২৯}
সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন আমরের ব্যক্তিগত আমল সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি নিজ ছোট বাচ্চা, যারা দোয়া মুখস্থ করতে অক্ষম, তাদেরকে অনিষ্ট থেকে রক্ষার জন্য গায়ে দোয়ার তাবিজ ঝুলিয়ে দিতেন। দোয়াটি এই:
بسم الله أعوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده ومن همزات الشياطين وأن يحضرون (أحمد والترمذي وأبوداود)
‘আল্লাহর নামে তাঁর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তাঁর গজব ও শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্টতা থেকে এবং শয়তানদের কুমন্ত্রণা ও তাদের উপস্থিতি থেকে।’ (আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ) হাদিসটি হাসান।
৮| ১৯ শে জুন, ২০১০ ভোর ৪:০১
মেঘবতী বলেছেন: হ্যা, যুক্তির পক্ষে আছি, থাকবো। তবে অনেক সময় তর্ক জটিল আকার ধারণ করে। তখন কিছুই বুঝতে পারি না। এর মধ্যে হাদিস-কোরান বলে কথা। সবাই হাদিস কোরান নিয়ে যুক্তি দিলে কোনটা সঠিক আর কোনটা নয়, তাও এক ঝামেলা। ভীতি তো কিছু আছে, যদি গুনাহর মধ্যে পড়ি তখন?
৯| ১৯ শে জুন, ২০১০ ভোর ৪:১৫
নষ্ট ছেলে বলেছেন: তাবিজ-কবজে আবার বিশ্বাস নাই।
১০| ১৯ শে জুন, ২০১০ ভোর ৪:১৬
দুর্ধর্ষ বেদুইন বলেছেন: রাসুল স. শিরক মুক্ত ঝাড়-ফুকের ব্যাপারটি অনুমতি দিয়েছেন। মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
قال اعرضوا علي رقاكم لا بأس بالرقى مالم يكن فيها شرك (رواه مسلم)
‘তোমাদের ঝাড়-ফুঁক আমার কাছে পেশ কর, ওটা শিরকের আওতাধীন না হলে তাতে কোন বাধা নেই।’ মুসলিম।
১১| ১৯ শে জুন, ২০১০ ভোর ৪:২০
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: এইসব ঝাড়ফুক , তাবিজ কবজ যে আমাগো কোমড় ভাইঙ্গা দিছে, উপ হার দিছে বিশাল জনসংখ্যা আর অশিক্ষা, এইটা বুঝতে আমাগো মোল্লাগো যে সময় লাগলো সেই সময়ে মানুষ চান থুইয়া মঙ্গলে যন্তর পাঠায়। অখন এর বিচার করব কে?
১২| ১৯ শে জুন, ২০১০ ভোর ৪:২৫
দুর্ধর্ষ বেদুইন বলেছেন: তাবিজাতের ব্যাপারে বিশ্বাসটা এমন হতে হবে,
১.এতে যে আল্লাহর কালাম আছে সেটার বরকতে উপকার পেলেও পাওয়া যেতে পারে।
২.এর দ্বারা অবশ্যই উপকার পাওয়া যাবে বা তাবিজের বিশেষ ক্ষমতা আছে- এধরণের বিশ্বাস রাখা যাবে না।
১৩| ১৯ শে জুন, ২০১০ সকাল ৭:১৭
রোদেলা খাতুন বলেছেন: আপনি দেখছি সব দায়িত্ব নিয়ে নিছেন? খুবই ভয়ঙ্করসব কথা, তাবিজকে শিরক করে তুলছেন। এসব না বলে কেবল তাবিজ বিষয়টি কুসংস্কার বললেই হয়তো সহজ হতো বিষয়টি। অন্তত চোখে এতো কঠিন লাগতো না। অন্যদিকে, অন্যকেও কঠোরভাবে বলা হতো না─অন্তত যারা তাবিজ লেখেন না অন্যকে প্রদান করেন তারা আস্তেধীরে বিষয়টি বুঝতে পারতেন। এখন ফতোয়ার জায়গা থেকে দেখলে প্রতিপক্ষ রিয়েক্ট করতে পারে, তাতে কিন্তু আপনার মূল উদ্দেশ্যই বেহাত হতে পারে।
সময় সহায় হোক।।
২০ শে জুন, ২০১০ রাত ১:১২
সৈয়দ মবনু বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। আমি সব দায়িত্ব নিচ্ছি না। তবে যখন যা ভালো লাগে তা করি। সবাই যে আমার কথা মানবে সেই বিশ্বাস আমার নেই। তবে আমাকে বলতে হবে আমার মতো করে কথাগুলো। বলে গেলাম। কেউ হয়তো মানবে, কেউ হয়তো মানবে না, কেউ হয়তো গালি দেবে কিন্তু তার ছেলে কিংবা নাতি এসে মেনে নিবে। আমি স্বপ্ন দেখি সংস্কারের আজ, কাল, পরশু কিংবা তারও পর।
মঙ্গল হোক আপনার এবং সকল মানুষের।
১৪| ২৯ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:৫৬
ভিন্ন চিন্তা বলেছেন: আপনার লেখার বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে আমার কিছু বলবার নেই।কেননা চিন্তা জগৎ আমি আপনার বিপরীত মেরুর বাসিন্দা। তবে আপনার লেখা টি আমি মন দিয়ে পরেছি।( অনেকটা পিছন থেকে দেরিতে) ।
আপনি যে অবস্থান থেকে সমাজের যে অসঙ্গতি কে আঘাত করেছেন ... তা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাবার যোগ্য।
তবে ১ ম লেখায় ভুমিকার ২ টি বক্তব্যে আমার আপত্তিকর মনে হয়েছে।
১। ইসলামি জ্ঞান চর্চা হ্রাসের পাশাপাশি আমাদের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মুসলিম পরিবার ও সমাজে দিন দিন লক্ষ্যণীয়ভাবে বিভিন্ন প্রকার বেদআত, কুসংস্কার, ইসলামের মৌলিক নীতির সাথে সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইষলাম কেন্দ্র করে যে কুসংস্কার আচ্ছন্নতার কথা বলেছেন.. তার অভিয়োগ আরো অনেকের মতই আপনি শুধু দক্ষিণ এশিয়ানদের কাঁধে চাপালেন। Spiritual Healling নিয়ে আরব দুনিয়া তেকে শুরু কে সারা মুসলিম বিশ্বে নানা প্রথা ব্যাপক মাত্রায় বদ্ধ মূল আছে।
২।এই সমস্ত বই-এ তাবিজের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে এমনভাবে কিছু কেচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে যা পাঠ করলে ইসলাম সম্পর্কে স্বল্পজ্ঞানী মুসলিম সমাজ বিশেষ করে মহিলা শ্রেণী বিভ্রান্ত হওয়ারই কথা-আর তা হচ্ছেনও।
আপনার নারীদের প্রতি বিশেষ ভাবে আঙ্গুল আপত্তিকর।আমাদের সমাজের নারীরা বেশি সংস্কার আচ্ছন্ন করাণ তাদের জ্ঞানের জগৎ হতে দূরে রাখা হয়েছে। কুসংস্কার াচ্ছন্নতা নারী স্বভাব জাত গুন নয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ৩:২৬
দুর্ধর্ষ বেদুইন বলেছেন: ভাই, ঔষধ খাওয়া বা অন্য কোন উপায়ে ব্যবহার করা কি শিরক হবে?