নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Oh Allah Plz Save Bangladesh

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু

সৈয়দ মবনু, থাকি ছিলট

সৈয়দ মবনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গান-বাজনা প্রসঙ্গে আল্লামা শায়েখ ইউসুফ কারাযাভীর ইসলামী ফতোয়া

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:১৬



সমকালীন বিশ্বের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক, লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. শায়খ ইউসুফ আবদুল্লাহ আল কারাযাভীর একটি ফতোয়ার উল্লেখ করে একজন প্রশ্নকারী বলেছেন, ইসলাম কি শব্দ করে হাসার বিরোধিতা করে? এর জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, একদিন হযরত আবু বাকার সিদ্দীক রা. রাসূলের সা. বাড়িতে দুটি অল্পবয়স্ক বালিকাকে গান গাওয়া থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করেছিলেন। তখন মহানবী সা. বললেন, তাদের তা করে যেতে দাও। কারণ, আমাদের এখন উৎসব চলছে।

আলোচ্য প্রশ্নে অভিযোগ করা হয়, আল্ল¬ামা কারাযাভী এই হাদীসটি উল্লে¬খ করেন নি, (যাতে বলা হয়েছে) ইবনে মাসউদ রা. আল্লাহর নামে শপথ করে বলতেন, মানুষের মাঝে সে ব্যক্তিও আছে যে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিচ্যুত করার জন্য অপ্রয়োজনীয় কথা ক্রয় করে (সূরায়ে লুকমান, আয়াত নং-৬)। এই আয়াতটিতে সঙ্গীতের কথা বোঝানো হয়েছে। আবু আমীর ও আবু মালিক আল আশ্আরী রা. বর্ণনা করেছেন, রাসূল সা. বলেন, আমার উম্মাহর মধ্যে এমন লোক থাকবে যারা ব্যভিচার, রেশম, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে বৈধ বানিয়ে ফেলবে... (আল বুখারী বর্ণিত, দেখুন আল ফাতহ, ১০/৫১)। আনাস রা. উল্লেখ করেছেন, রাসূল সা. বলেছেন উম্মাহকে শাস্তি দেয়া হবে ভূমিকম্প, প্রস্তরবৃষ্টি এবং পশুতে রূপান্তরিত হওয়ার মতো বিকৃতির মাধ্যমে। আর এসব ঘটবে যখন লোকজন মদ পান করবে, নারী শিল্পীদের গান শুনবে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজাবে (আল সিলসিলাহ আস-সহীহাহ, ২২০৩, সূত্র ইবনে আবিদ দুন্ইয়া, দাম আল মালাহী; আততিরমিযি বর্ণিত হাদীস নং-২২১২)।

তাছাড়া, শায়খ কারাযাভী এসব বিষয়ও উল্লেখ করেন নি : একটি সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে রাসূলের সা. হাসি কখনো মৃদুহাস্যের বেশি হতো না (আহমদ কর্তৃক বর্ণিত)। আরেক হাদীসে আছে, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে নিশ্চুপ থাকতেন এবং হাসতেন সামান্য (আহমদ কর্তৃক বর্ণিত)। আয়েশা রা. বলেছেন, আমি কখনো আল্লাহর রাসূল সা. কে এত বেশি হাসতে দেখি নি যে, তাঁর পেছনের দাঁতগুলো দেখা যেত; তিনি শুধু মৃদু হাসতেন (আবু দাউদ বর্ণিত)। পাঠকদের কি মুদ্রার অপর পিঠ সম্পর্কেও জানার অধিকার নেই? অবশ্য, এ বিষয়ে আমার ধারণা ভুলও হতে পারে।

এই প্রশ্নের উত্তরে ইসলামী গবেষকদের একটি গ্রুপ বক্তব্য দিয়েছেন। এ বক্তব্য তাঁদের নিজস্ব নয়। এটা দেয়া হয়েছে প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ইউসুফ আল কারাযাভীর ফতোয়ার আলোকে।

উপরোক্ত গবেষকরা যে জবাব দিয়েছেন ২০০৪ সালের ১৩ জানুয়ারি, তা এখানে তুলে ধরা হলো।

আপনার আপত্তি মূলত সঙ্গীত এবং এর অনুমোদনকে কেন্দ্র করে। তাই এ বিষয়ে শায়খ ইউসুফ আল কারাযাভীর ফতোয়ার ভিত্তিতে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে।

সঙ্গীতের পুরো বিষয়টি বিতর্কিত বাদ্যযন্ত্র সহকারে কিংবা তা ব্যতিরেকে, যেভাবেই পরিবেশন করা হোক না কেন। কোনো কোনো বিষয়ে মুসলিম পণ্ডিত ব্যক্তিরা একমত। আবার অন্যান্য ক্ষেত্রে তা হয় নি। তাদের সব বিজ্ঞজনই একমত যে, লাম্পট্য, অশ্লীলতা ও পাপ কাজে উস্কিয়ে দেয় এমন সব ধরনের গান বা সঙ্গীতই নিষিদ্ধ। বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গে বলা যায়, এটা নিষিদ্ধ হওয়ার সপক্ষে যে প্রমাণ দেয়া হয়, তা দুর্বল। তাই এ ব্যাপারে যে নীতি প্রযোজ্য, তা হলো সব কিছুই অনুমোদিত বলে ধারণা করা হয়, যে পর্যন্ত না শরিয়াহতে নিষেধাজ্ঞামূলক কোনো কিছু পাওয়া যায়।

আলেমরা একমত, বাজনা ছাড়া গাওয়া এবং সে গানের কথা নিষিদ্ধ না হলে, তা বৈধ বা জায়িয। এ রকম গান কেবল বিশেষ উপলক্ষে গাওয়ার অনুমতি মেলে; যেমন বিয়ে, ভোজ অনুষ্ঠান, কোনো পর্যটক বা তেমন কারো সংবর্ধনা ইত্যাদি। এটা রাসূলের সা. হাদীসের ভিত্তিতে; যাতে বলা হয়েছে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি মেয়েটিকে (বিয়ের কনে) উপহার হিসেবে কোনো জিনিস দিয়েছ? উপস্থিত লোকজন বলল, হ্যাঁ। তিনি প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি একজন গায়িকাকে তার সাথে পাঠিয়েছ? জবাবে আয়েশা রা. বললেন, না। তখন রাসূল সা. বললেন, আনসাররা এমন জনগোষ্ঠী যারা কবিতা ভালোবাসে। তোমার এমন কাউকে পাঠানো উচিত ছিল, যে গান গাইবে : আমরা এসেছি এখানে, তোমাদের কাছে এসেছি, আমাদের স্বাগত জানাও যেভাবে জানাই তোমাদের। এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি একজন (মহিলা) শুধু অন্য মহিলাদের এবং এমন পুরুষ আত্মীয়দের সামনে গাইতে পারে, যাদের সাথে তার বিবাহ নিষিদ্ধ।

বাদ্যযন্ত্রের প্রসঙ্গে বলতে হয়, আলেমরা এ ব্যাপারে একমত নন। কিছু আলেম সব ধরনের সঙ্গীতের অনুমোদন দিয়েছেন, এতে বাজনা থাকুক বা না থাকুক। এমনকি, তারা বাদ্যকে ইসলামে অনুমোদিত বলেও মনে করেন। আলেমদের দ্বিতীয় গ্রুপটি সঙ্গীতের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন কেবল তখনই, বাদ্যযন্ত্র যখন ব্যবহৃত হবে না। আলেমদের তৃতীয় একটি গ্রুপ ঘোষণা দিয়েছেন, বাজনা সাথে থাকুক বা না থাকুক, সব ধরনের সঙ্গীতই নিষিদ্ধ। এমনকি, তারা সঙ্গীতকে হারাম বা মারাত্মক পাপকর্ম বলেও গণ্য করে থাকেন। এ মতের সপক্ষে তারা ইমাম বুখারী বর্ণিত হাদীসের রেফারেন্স দিয়েছেন। আবু মালিক বা আবু আমীর আল আশ্আরীর (সহ-বর্ণনাকারী সন্দেহ প্রকাশ করেছেন) সূত্রে উল্লি¬খিত এই হাদীসে বলা হয়েছে, আমার উম্মাহর মধ্যে এমন কিছু লোক থাকবে যারা অবৈধ যৌন সম্পর্ক, রেশমি পোশাক পরিধান, মদ্যপান এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারকে মনে করবে বৈধ। যদিও হাদীসটি সহীহ আল বুখারীতে অন্তর্ভুক্ত, এর সূত্র পরম্পরাকে রাসূলুল্ল¬াহ সা.-র সাথে সংযুক্ত করা হয় নি। আর এ কারণে হাদীসটির যথার্থতা বা সত্যতা নাকচ হয়ে যায়। ঠিক এ জন্যই ইবনে হায্ম্ এটাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তদুপরি, হাদীসশাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ এমন অনেক আলেম আলোচ্য হাদীসটির সহ-বর্ণনাকারী হিশাম ইবনে আম্মারকে দুর্বল বা যয়ীফ বলে ঘোষণা করেছেন।

তাছাড়া, এই হাদীসে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারকে সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয় নি। কারণ, বৈধ বলে মনে করবে কথাটার দু’টি নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে বলে ইবনুল আরাবীর অভিমত। প্রথমত, এ ধরনের মানুষরা এ সবকিছুকেই (যেসব জিনিসের উল্লেখ রয়েছে) বৈধ মনে করবে। দ্বিতীয়ত, বাদ্যযন্ত্রগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে তারা সীমা লঙ্ঘন করে যাবে। যদি প্রথম অর্থটি বুঝিয়ে থাকে, এমন লোকরা সে কারণে ইসলামের দৃষ্টিতে অবিশ্বাসী বলে পরিগণিত হবে।

বাস্তবে, একশ্রেণীর লোক যারা বিলাসিতা, মদ্যপান ও সঙ্গীতে গা ভাসিয়ে দেয়, তাদের নিন্দা করা হয়েছে এই হাদীসে। তাই ইবনে মাজাহ এটি নিজের ভাষ্যে বর্ণনা করেছেন আবু মালিক আল আশ্আরী থেকে: আমার অনুসারীদের মধ্য থেকে এমন কিছু লোক হবে, যারা মদ পান করবে এটাকে অন্যান্য নাম দিয়ে; আর তা করবে বাজনা ও নারী শিল্পীদের গান উপভোগের সময়ে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাদেরকে ভূমির উদরস্থ করবেন এবং তাদের পরিণত করবেন বানর ও শূকরে (ইবনে হিব্বান তার ূসহীহ-তে এর উল্লেখ করেছেন)।

বাদ্যযন্ত্রের অনুমোদনের বিষয়ে উপসংহার

ওপরের আলোচনার আলোকে এটা স্পষ্ট, যাঁরা বলে থাকেন গান গাওয়া হারাম, তাঁদের এমন ধারণার ভিত্তি যেসব ধর্মীয় ভাষ্য, সেগুলো হয় দ্ব্যর্থবোধক কিংবা নির্ভরযোগ্য নয়। যেসব হাদীস হযরত মুহাম্মদ সা.-এর মুখ নিঃসৃত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোর কোনোটাই সঙ্গীত নিষিদ্ধ হওয়ার প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। অধিকন্তু এমন সব হাদীসকেই ইবন হাযম, মালিক, ইবনে হাম্বল ও আশ্শাফিয়ীর অনুসারীরা দুর্বল বলে ঘোষণা করেছেন।

কাযী আবু বাকার ইবনুল আরাবী তার কিতাব আল আহকাম-এ বলেছেন, সঙ্গীত নিষিদ্ধ বলে যেসব হাদীসে দেখা যায়, সেগুলোর একটিও নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত নয় (হাদীসশাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ আলেমদের দ্বারা)। ইমাম গাযালী রাহ. ও ইবনে আন্নাহ্ভী আল উমদাহ-তে একই অভিমত পোষণ করেছেন। ইবনে তাহিরের বক্তব্য, এসব হাদীসের কোনোটার এমনকি একটি মাত্র বর্ণও সত্য ও নির্ভরযোগ্য বলে প্রমাণিত হয় নি।

আর ইবনে হাযম তো সরাসরি একথা বলতেও দ্বিধা করেন নি যে, এ প্রসঙ্গে বর্ণিত সবক’টি হাদীসই ভুয়া ও বানোয়াট।

সঙ্গীতের বৈধতার পক্ষে যেসব প্রমাণ

প্রথমত, লিখিত প্রমাণগুলো :

তাঁরা তাঁদের যুক্তি তুলে ধরেন মহানবী সা.-এর কয়েকটি নির্ভরযোগ্য হাদীসের ভিত্তিতে। এমন একটি হাদীস হলো, আয়েশা রা. বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর নবী (তাঁর ওপর শান্তি ও আশীর্বাদ বর্ষিত হোক) আমার ঘরে এলেন। তখন দুটি বালিকা আমার পাশে বুয়াছ-এর গান গাইছিল [বুয়াছ হলো ইসলাম-পূর্ব যুগে আনসারদের দুটি গোত্র খাযরাজ ও আউসের মধ্যকার যুদ্ধের গল্প]। রাসূল সা. বসে পড়লেন এবং তাঁর মুখমণ্ডল অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলেন। তখন আবু বাকার রা. এলেন এবং রাগান্বিত কণ্ঠে আমাকে বললেন, নবীজীর সা. কাছে শয়তানের বাদ্যযন্ত্র?ূ এবার আল্লাহর নবী সা. তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তাদের গাইতে দাও। যখন আবু বাকার রা. অমনোযোগী হলেন, আমি মেয়েগুলোকে সঙ্কেত দিলাম বেরিয়ে যেতে এবং তারা চলে গেল। (আল বুখারী)।

এর থেকে এই ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, মেয়ে দুটি অত কম বয়সী ছিল না যেমনটি দাবি করেছেন কোনো কোনো আলেম। যদি তা হতো, তাহলে আবু বাকার রা. তাদের সাথে এভাবে রাগান্বিত হতেন না। তাছাড়া, এ হাদীসে রাসূল সা. ইহুদিদের এটাই শেখাতে চেয়েছেন যে, ইসলামেও আনন্দের অবকাশ আছে এবং তিনি নিজে প্রেরিত হয়েছেন উদার ও নমনীয় বিধিবিধানসমেত। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে শেখার মতো। আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করা হচ্ছে এই বাস্তবতার প্রতি যে ইসলামকে অন্যদের কাছে তুলে ধরতে হবে এর উদারতা ও মহত্ত্ব উপস্থাপন করে।

অধিকন্তু, আমরা বিষয়টিকে আরো নিশ্চিত করতে আল্লাহর এই কথাগুলোর উদ্ধৃতি দিতে পারি, ‘কিন্তু যখন তারা কোনো ব্যবসাপণ্য কিংবা খেলাধুলা ও আমোদ প্রমোদ দেখে, তারা এগুলোতে মত্ত হয়ে যায় এবং আপনাকে রেখে যায় দাঁড়ানো অবস্থায়। বলুন : আল্লাহর কাছে যা আছে, তা আমোদ ও পণ্যের চেয়ে উত্তম। আর আল্লাহ সর্বোত্তম রিজিকদাতা’। আল-জুমুআহ : ১১)।

এ আয়াতে সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমোদ-প্রমোদ ও খেলাধুলাকে ব্যবসায়িক পণ্যের সাথে এক করে দেখেছেন। তিনি এ দুটোর কোনোটার নিন্দা করেন নি। তিনি কেবল ভর্ৎসনা করলেন ওই সাহাবীদের যাঁরা রাসূল সা.কে জুমুআর নামাযের খুতবারত অবস্থায় একা ফেলে চলে গেলেন। তারা ছুটে গিয়েছিলেন ব্যবসার কাফেলার দিকে মনোযোগ দিতে এবং তাঁরা কারওয়া বা এই কাফেলাকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন ঢাকঢোল পিটিয়ে।

দ্বিতীয়ত, ইসলামের চেতনা ও মৌলবস্তুর প্রেক্ষাপটে : এটা তো সত্য যে, আল্লাহতায়ালা এই পার্থিব জীবনের কিছু ভালো জিনিস বনি ইসরাইলের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন তাদের অপকর্মের শাস্তিস্বরূপ।

তিনি বলেন, ইহুদিদের ভুলের দরুন আমরা ওসব ভালো জিনিস তাদের জন্য নিষিদ্ধ করে দিলাম, যেগুলো (এর আগে) তাদের জন্য বৈধ ছিল। আল্লাহর পথে চলতে অনেক বাধা দেয়ার দরুন, তারা তাদের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সুদ নেয়ায় এবং মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করায় এটা করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী, তাদের জন্য আমরা প্রস্তুত করেছি বেদনাদায়ক ধ্বংস (আন্ নিসা : ১৬০-১৬১)।

মহানবী সা.কে পৃথিবীতে প্রেরণের আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবগুলোয় তাঁর উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘যারা রাসূলকে অনুসরণ করে, যে নবী পড়তে বা লিখতে পারেন না, যাঁর কথা তৌরাত ও ইনজিলে বর্ণিত আছে বলে দেখতে পাবে, (যেসব কিতাব) তাদের কাছে আছে, তিনি তাদের সৎ কাজের আদেশ দেবেন এবং মন্দ কাজ করতে নিষেধ করবেন। সব ভালো জিনিস তিনি তাদের জন্য বৈধ করবেন এবং নিষিদ্ধ করবেন কেবল মন্দকে (আল-আরাফ : ১৫৭)।

এভাবে, ইসলাম ভালো বা যুক্তিযুক্ত কোনো কিছুকে হালাল বা বৈধ করা থেকে বাদ দেয় নি। এটা হলো, উম্মাহর সামগ্রিক ও চিরন্তন আদর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে করুণা প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত। মহান আল্লাহ বলছেন, তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করে, (ও মুহাম্মদ), ওদের জন্য কী কী বৈধ করা হয়েছে?ূ বল, (সব) ভালো জিনিসই তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে। (আল মায়িদাহ : ৪)

যদি গান গাওয়া মানুষের সহজাত প্রবণতা হয়, ইসলাম তাকে অস্বীকার করার কথা নয়। ইসলাম এসেছে মানুষের প্রবণতাকে পরিশুদ্ধ ও উন্নত করতে। ইবনে তাইমিয়াহ রাহ. বলেছেন, ‘নবী-রাসূলদের পাঠানো হয়েছে মানুষের প্রবণতাকে পরিশ্রুত ও সুশৃঙ্খল করার জন্য। এটাকে বদলে ফেলতে নয়। এটা ওই হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যাতে বলা হয়েছে, যখন আল্লাহর নবী সা. মদিনায় এলেন, তিনি তাদের (মদিনাবাসী) দুদিন ধরে আনন্দ-উৎসব করতে দেখলেন। তিনি বললেন, এসব দিন কিসের? তারা জবাব দিল, আমরা ইসলাম-পূর্ব যুগেও এই দিনগুলোতে আনন্দ করতাম। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তোমাদের দুটি বিকল্প দিন দিয়েছেন, যেগুলো অনেক উত্তম : এগুলো হচ্ছে, আল আযহা ও আল ফিতরের দিবস (দু ঈদ); এটা আহমদ, আবু দাউদ ও আন্ নাসাই বর্ণিত।

অধিকন্তু, গানকে যদি আনন্দ-বিনোদন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এসব হারাম নয়। এটা ওই সুপ্রচলিত ধারণার অনুসরণে বলা হয়ে থাকে যার বক্তব্য হলো, ক্লান্তি-অবসাদ দূর করা আর আনন্দের জন্য মানুষের কিছু সময় প্রয়োজন। রাসূল সা. হানযালাহকে বলেছিলেন, ও হানযালাহ, তোমার সময়ের একাংশ নিয়োগ কর (পার্থিব বিষয়ে) এবং আরেক অংশ (ইবাদত ও ধ্যানের জন্য)। মুসলিম এ হাদীস উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, হানযালাহ মনে করতেন, নিজ স্ত্রী-সন্তানদের দিকে মনোযোগ দিলে এবং আল্লাহর নবী সা. থেকে দূরে থাকলে তিনি যে পরিবর্তন বোধ করেন, তার কারণে তিনি মুনাফিক হয়ে গেছেন।

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রা. বলেছেন, কিছু সময় তোমরা নিজেরা আমোদ-প্রমোদ কর। কারণ, মন যদি খুব বেশি চাপের মাঝে থাকে, তা অন্ধ হয়ে যায়।

আবু আদ্-দারদা বলেছেন, আমি কিছু আনন্দ-বিনোদনের মাধ্যমে নিজেকে আবার সতেজ করে তুলি। এটা করি সত্যের পথে নিজেকে আরো শক্তিশালী করার জন্য।

এক ব্যক্তি ইমাম গাযালীকে প্রশ্ন করেছিলেন, গান গাওয়া কি এক ধরনের আমোদ-প্রমোদ নয়? তিনি জবাবে বললেন, হ্যাঁ, তবে বর্তমান জীবনে যা কিছু আছে, সবই নিছক খেলা ও আমোদ। স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে যা কিছু হয়, তার সবই খেলা। তবে যৌনমিলন নিছক খেলা নয়। তা সন্তান উৎপাদনের প্রত্যক্ষ কারণ। আল্লাহর রাসূল (সা.) এবং তাঁর সাহাবায়ে কেরাম থেকে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সঙ্গীতের অনুমতি থাকার সপক্ষে এই যে প্রমাণগুলো তুলে ধরা হচ্ছে, এগুলো ইসলামের দলিলপত্রের ভিত্তিতেই। আর বিষয়টি এতে স্পষ্ট হয়েছে বলে আশা করা যায়।

এ ছাড়াও মদিনার অধিবাসীরা ছিলেন খুব ধার্মিক ও আল্লাহভীরু। কুরআন-হাদীসের ভাষ্যের শাব্দিক অর্থের অনুসারী যাহিরিয়্যারা এবং দীনের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর যারা, সে সুফীরাও সঙ্গীতের অনুমোদন দিয়েছেন।

ইমাম আশ্-শওকানী তাঁর কিতাব নায়ল-আল আওতার-এ বলেছেন, মদিনার বাসিন্দারা এবং যাহিরিয়্যাহ ও সুফীদের মধ্যে যারা তাদের সাথে একমত, তাদের অভিমত হলো গান গাওয়ার অনুমতি রয়েছে; এমনকি বাঁশি বা তারের কোনো বাদ্যযন্ত্রসহকারে হলেও। আবু মনসুর আল বুগদাদী আশ্-শাফিয়ী বর্ণনা করেছেন, আবদুল্লাহ ইবনে জাফর গান গাওয়ার মধ্যে মন্দ কিছু দেখেন নি। তিনি নিজে তার দাসদের জন্য গান তৈরি করতেন, আর তারা তাকে সুর করে এগুলো শোনাতো। এটা করা হতো আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী রা.-এর সময়ে। কাযী শুরাইহ্, সাঈদ ইবনে আল মুসাঈব, আতা ইবনে আবু রাবাহ, আয্ যুহরী ও আশ্-শিবীর মতো আবু জাফর আল বুগদাদীও একই ঘটনার উল্লেখ করেছেন।

আর রুওয়াইয়ানি বর্ণনা করেছেন আল কাফ্ফালের সূত্রে মালিক ইবনে আনাস উল্লেখ করেছেন, বাদ্যযন্ত্রসমেত সঙ্গীত পরিবেশন জায়িয। মালিকের উদ্ধৃতি দিয়ে আবু মনসুর আল ফুরানী বলেছেন, বাঁশি বাজানো জায়িয।

আবুল ফযল ইবনে তাহির বর্ণনা করেছেন, তারের বাদ্যযন্ত্র বাজানো যে জায়িয, তা নিয়ে মদিনার মানুষ কখনো বিতর্কে নামেন নি। আল উমদাহ্ কিতাবে ইবনে আন নাহভী বলছেন, এ বিষয়ে মদিনার জনগণ মতৈক্য দেখিয়েছেন। তদুপরি, যাহিরিয়্যাদের সবাইও এ বিষয়ে একমত।

আল মাওয়ার্দী তারসংবলিত বাজনার বৈধতা উল্লেখ করেছেন ইমাম শাফিয়ীর রা. অনুসারী ও ছাত্রদের কয়েকজনের সূত্রে। আবু ইসহাক আশ্-শিরাযীর সূত্রে একই তথ্য দিয়েছেন আবুল ফযল ইবনে তাহির। এ ছাড়া, আর রুওয়াইয়ানী ও আল মাওয়ার্দীর সূত্রে আল ইসনাভীও তার উল্লেখ করেছেন। আবু বাকার ইবনুল আরাবীর সূত্রেও এটা বলা হয়েছে।

এই আলেমদের সবাই মনে করেন, বাদ্যযন্ত্রসহকারে পরিবেশিত সঙ্গীত জায়িয। আর বাদ্যযন্ত্রবিহীন সঙ্গীতের ব্যাপারে আল আদফুভী বলেছেন, আল গাযালী তার ফিকহ সংক্রান্ত কয়েকটি বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ওই ধরনের গানের বিষয়ে আলেমদের মতৈক্য রয়েছে। একই বিষয়ে সাহাবাদের এবং তাবেয়ীনের একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ইবনে তাহির। আল উম্দাহ কিতাবে আন্-নাহভী বলেছেন, সাহাবারা ও তাবেয়ীনের একাংশ গান গাওয়া ও শোনাকে জায়িয মনে করতেন।

শর্তাবলী: গান শোনার বেলায় মেনে চলা উচিত, এমন কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

১) সব ধরনের গান শোনার অনুমতি ইসলামে নেই। বরং, ওই গানই জায়িয যা ইসলামের শিক্ষা ও নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিবাজ শাসকদের প্রশংসা আছে যে গানে, তা ইসলামি আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইসলাম সীমালঙ্ঘনকারী ও তাদের দোসর এবং যারা সীমা লঙ্ঘনের প্রতি উদাসীন এ ধরনের সবার বিরুদ্ধে।

২) সঙ্গীত পরিবেশনের ভঙ্গিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনো একটা গানের বক্তব্য ভালো হতে পারে; কিন্তু শিল্পীর পরিবেশন গানটিকে হারাম, সন্দেহযুক্ত কিংবা ঘৃণার বিষয় করে দিতে পারে। যেমন গান গাওয়ার সময়ে অবাঞ্ছিত উত্তেজনা এবং শ্রোতার মধ্যে লালসা ও কামপ্রবৃত্তি সৃষ্টি কিংবা কুকর্মে প্ররোচনা প্রদান করা।

মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে নবী করীমের সা.-র স্ত্রীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, হে নবীর স্ত্রীরা! তোমরা অন্য কোনো নারীর মতো নও। যদি তোমরা দায়িত্ব পালন কর (আল্লাহর প্রতি), তাহলে কণ্ঠস্বরকে স্নিগ্ধ করো না, পাছে যাদের হৃদয়ে রোগ আছে, তাদের আকাক্সক্ষা জাগে (তোমাদের প্রতি)। তোমরা নিয়মমাফিক স্বাভাবিকভাবে কথা বলবে (আল আহযাব : ৩২)। সুতরাং, স্নিগ্ধ কণ্ঠে এবং সুর সহযোগে ও বিশেষ ভঙ্গিতে পরিবেশিত হয় বলে সঙ্গীতের ব্যাপারে সতর্কতা বাঞ্ছনীয়।

৩) হারাম কোনো কিছু যোগ করে যেন সঙ্গীত পরিবেশিত না হয়। যেমন পানশালা ও নাইট ক্লাবে প্রায়ই দেখা যায় মদ্য পান, নগ্নতা ও নারী-পুরুষে অবাধ মেলামেশা।

৪) ইসলাম ঘোষণা করেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই সীমালঙ্ঘন নিষিদ্ধ। অবসর বিনোদনের বেলায়ও একথা প্রযোজ্য। মানুষের স্বল্পস্থায়ী জীবনে মন ও হৃদয়ের শূন্যতার দিকে নজর দিতে হয়; আর তা পূরণও করতে হয়। যে কারো জানা থাকা উচিত, সর্বশক্তিমান আল্লাহ প্রত্যেককে তার জীবন, বিশেষ করে যৌবন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন।

কিছু ব্যাপারে নিজেকেই নিজের বিচারক ও মুফতি হতে হয়। যদি কোনো গান কারো যৌন লালসা বা কামনার উদ্রেক করে এবং তাকে বাস্তবজীবন থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়, তার সে গান পরিহার করা উচিত। অসৎ কর্মে প্রলুব্ধ করে ধর্ম, মূল্যবোধ ও হৃদয়ের মারাত্মক ক্ষতি করার দরজা বন্ধ করে দেয়াই সমীচীন। এটা করা গেলে প্রকৃত শান্তি ও স্নিগ্ধতা অনুভব করা সম্ভব হবে।

হারাম শব্দটি নিয়ে খেলার ব্যাপারে সাবধান!

উপসংহারে আমরা বলছি ওই সব সম্মানিত আলেমের উদ্দেশে, যাঁরা হারাম কথাটাকে সহজভাবে নিয়ে তাঁদের লেখা ও ফতোয়ায় অহরহ এটি ব্যবহার করছেন। তাঁদের সজাগ থাকতে হবে যে, তাঁরা যা কিছু বলেন বা করেন, এর সবই আল্লাহতায়ালা লক্ষ করছেন। তাঁদের আরো জানা উচিত, হারাম শব্দটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এর অর্থ, বিশেষ কোনো কাজ বা কথার দরুন আল্লাহর শাস্তি প্রাপ্য। তাই নিছক আন্দাজ অনুমান, খেয়ালিপনা, দুর্বল হাদীস, এমনকি পুরনো কোনো গ্রন্থের ভিত্তিতেও হারাম বলা ঠিক নয়। কোনো কিছুকে হারাম বললে এর সমর্থনে কুরআন-হাদীসের সুস্পষ্ট ও সুপ্রতিষ্ঠিত প্রমাণ কিংবা কার্যকর মতৈক্য বা ইজমা থাকতে হবে।

যদি এ দুটো পাওয়া না যায়, তাহলে ওই কথা বা কাজের ক্ষেত্রে সে মৌলিক নীতি প্রয়োগ করা হবে, অনুমতিই বিভিন্ন বিষয়ে প্রাধান্য পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক যুগের একজন প্রখ্যাত আলেম থেকে আমরা একটা ভালো দৃষ্টান্ত পাই অনুসরণের জন্য। তিনি হলেন ইমাম মালিক রা.। তিনি বলেছেন, যাঁরা আমাদের পূর্ববর্তী আগের যুগের দীনদার মুসলমান, যারা পরবর্তী প্রজন্মগুলোর জন্য উত্তম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তাদের এটা হালাল, আর ওটা হারাম বলার অভ্যাস ছিল না। তারা বলতেন, আমি এমন এমন কাজকে ঘৃণা করি এবং এমন এমন কাজ করে থাকি। আর হারাম-হালাল বলার অভ্যাসের অর্থ, আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলা। তোমরা কি আল্লাহর সে কথা শোন নি যাতে তিনি বলছেন, ‘বলুন, আল্লাহ তোমাদের জন্য যেসব খাদ্যবস্তু প্রেরণ করেছিলেন, তোমরা সেগুলোর মধ্য থেকে কীভাবে হালাল ও হারাম বানিয়ে নিয়েছিলে? বলুন, আল্লাহ কি তোমাদের এর অনুমতি দিয়েছেন, নাকি তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা উদ্ভাবন করছ?’ (সূরা ইউনুস; আয়াত-৫৯)। হালাল হলো যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা. বৈধ এবং হারাম হচ্ছে যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা. অবৈধ করেছেন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:২৫

নরাধম বলেছেন:
দারুন লেখা। প্রিয়তে নিলাম।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:০১

সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৭:১৯

আশাহত বলেছেন: গান নিষেধ করার ফতোয়াটা প্রথম শুনসিলাম জুমার খুতবায়। খুবই বিরক্ত লাগসিল, ইচ্ছা করসিল উঠে চলে আসি। গান শুনলে নাকি ঈমান যায়, বাদ্যযন্ত্র শুনলে পাপ হয়।আজব!
যৌক্তিক আলোচনাটা ভালো লাগলো। সুন্দর কোন কিছুকে নিষিদ্ধ করার পেছনে কুযুক্তি ছাড়া আর কোন যুক্তি নাই আসলে।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৭:১৩

সৈয়দ মবনু বলেছেন: ইসলামী জ্ঞান অর্জন করলে আমরা দেখবো আমাদের মুসলিম সমাজে অনেক বিষয় ইসলামিক বলে প্রচারিত হলেও তা মূলত ইসলামিক নয়। যেমন আমাদের অনেকের ধারণা তাবিজ হলো ইসলামী চিকিৎসা, কিন্তু ইসলামে তাবিজ হারাম। আমরা জানি মহিলারা মসজিদে যাওয়া যাবে না। অথচ হযরত রাসুল (স.) বলছেন-তোমরা নারীদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করো না। তেমনি গানও একটি বিষয়। তবে এখানে কিছু কথা আছে প্রত্যেক বিষয়ে। এই বিষয়গুলো সামনে রেখেই মূলত কেউ কেউ বিষয়ে কড়াকড়ি করে ফেলেন। অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়। আর ইসলাম তা পছন্দও করে না।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৭:৩১

আশার রাজ্যে নিরাশার মেঘ বলেছেন: ভাল লাগল।

কিন্তু ফতোয়ার রেফেরেন্স এবং আল্লামা শায়েখ ইউসুফ কারাযাভীর জীবন বৃত্তান্ত সহ দিলে অনেক উপকার হত। তাহলে কিছুটা বেশি নিশ্চিত হওয়া যেত।

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:০৩

অলস ছেলে বলেছেন: ধন্যবাদ। খুব দরকারী লেখা।

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:০৭

ওঙ্কার বলেছেন: আজব এক জীবন ব্যবস্থা!

শব্দ করে হাসা যাবে কি যাবে না, এইটা নিয়াও তারে নাক গলাইতে হবে।

এইরকম 'অতি-আগ্রহী' জীবনব্যবস্থা দুইটা দেখি নাই।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৪

মদন বলেছেন: ++

৭| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৩৯

কাঠফুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। খুব দরকারী একটি লেখা। প্রিয়তে রাখলাম। অধিক মনযোগ সহকারে পড়তে হবে ...

৮| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৩৪

মোরশেদুল আজাদ পলাশ বলেছেন: অনেক তথ্যভুল পোষ্ট।
++সহ প্রিয়তে।

৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১২ ভোর ৫:৪১

ত্বাহির বলেছেন: তথাকথিত মুসলমানরা একটি বিষয়ে অর্থহীন গর্ব করে। এই অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে গর্ব করতে গিয়ে তাদের নিজেদের অজান্তেই কুফরী করে থাকে। কোনো হারাম কাজ করে গর্ব প্রকাশ করার অর্থ হচ্ছে নিজেকে লা’নত পাওয়ার উপযুক্ত করা। বিষয়টি হচ্ছে- “সঙ্গীতে এবং কুস্তিতে মুসলমানগণ শ্রেষ্ঠ।” নাঊযুবিল্লাহ!
বাস্তব সত্য হচ্ছে- হারাম বিষয় বাদ দিয়ে সমস্ত প্রয়োজনীয় বিষয় যেমন বিজ্ঞানে, সমরবিদ্যায়, আদর্শে, বুদ্ধিতে, প্রজ্ঞায়, বিচক্ষণতায়, সম্পদে মুসলমানগণ শ্রেষ্ঠ। কিন্তু কাফির-মুশরিকরা অপ্রয়োজনীয় একটি বিষয়ের ফিকির মুসলমানদের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। এর নেপথ্য কারণ অনেক দীর্ঘ।
মূর্তি আর বাদ্যযন্ত্রসহ সঙ্গীত ধর্মীয় অনুষঙ্গ হিসেবে হিন্দু ধর্মে মিশে আছে। আর ইসলাম এসেছে মূর্তি এবং বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করতে। বাদ্যযন্ত্রসহ হোক বা বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই হোক- পবিত্র দ্বীন ইসলামে হারাম সঙ্গীতের কোনো স্থান নেই। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম, হযরত ইমাম মুজতাহিদ, ছূফী, দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা কখনো সঙ্গীত চর্চা তো দূরে থাক, সঙ্গীতের পাশ দিয়েও হাঁটেননি। অথচ আজকে বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশে মুসলমানগণের মধ্যে সঙ্গীত চর্চা শুরু হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!
আমাদের ভারত উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে হযরত ছাহাবায়ে আজমাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং বিশিষ্ট মুজাদ্দিদ, ছূফী-দরবেশ এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাধ্যমে।
এদেশের মুসলমানগণের মাঝে সঙ্গীত চর্চা প্রবেশের নেপথ্যে রয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক গোষ্ঠী, হিন্দু সম্প্রদায় এবং বিভ্রান্ত শাসকশ্রেণী। এ নিয়ে পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.