নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় মুক্তিযোদ্ধা

সায়েমুজজ্জামান

কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টরের একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। সর্বশেষ শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

সায়েমুজজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুরগি বিষয়ক রম্য রচনা (১৮+)

০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৪৬

অফিসের গাড়িতে মাঝে মাঝেই গ্রামে যাই। রাস্তায় হেন কোন জিনিস নেই যার মোকাবেলা করতে হয়না। মানুষতো আছেই। সঙ্গে আছে গরু, ছাগল, হাস, মোরগ, মুরগি। কি নেই। তবে বেশি ভয় পাই মুরগিকে। কখন আবার গাড়ির নিচে এসে পড়ে। ভয়ের কারণটা কি- বলছি।
আমার একজন সহকর্মী একবার তার গাড়ির নিচে এ রকম একটি মুরগী চাপা দিয়েছিল। লোকজন এসে তার গাড়ী আটকে দেয়। সহকর্মী মুরগির জরিমানা দিয়ে ঝামেলা মেটাতে চাইলেন। কিন্তু জরিমানা কত হবে? মুরগির মালিক বললেন, তার এই মুরগি মাসে ২০ টা ডিম পাড়ে। এই ডিম থেকে বাচ্চা হয়। বাচ্চার মধ্যে আবার দুই তৃতীয়াংশ মুরগি হতো। তারা আবার ডিম দিত। তাতে আবার বাচ্চা হতো। সব বিবেচনা করে সব মিলিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। স্থানীয় লোকজনও তার পেছনে জুটে যায়। অবশ্য দেশে ক্যাটল ট্রেসপাস অ্যাক্ট আছে। বৃটিশরা আইন করে গেছেন। গরু ছাগল হলে উল্টো মালিককেই জরিমানা করা যেতো। মোরগ হলে তো আরো সোজা। বাজার দামই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু মুরগি ক্যাটল এর সংজ্ঞার মধ্যে পড়েনা। সে যাত্রায় জরিমানার মধ্যে মুরগির ডিম বাচ্চা অর্ন্তভুক্ত করেই আমার সেই সহকর্মী জনরোষ থেকে মুক্তি পেয়েছিল। আমার ভয়টা এখানেই।

উপরের ঘটনায় মনে হচ্ছে মোরগের চেয়ে মুরগিরই দাম বেশি। একারণে মোরগ মুরগির সমাজে মুরগিদের ভাবও একটু বেশি। তবে প্রতিবছর ঈদের আগে মোরগ একবার ভাব নেয়। ভাব নিয়ে মুরগিকে ডাকে। বলে, সারা বছর মালিকের কাছে বেশি দাম পেয়ে এসেছ। আমাকে বাদ দিয়ে গম ধান তোমাকেই খাওয়ানো হয়েছে। তবে এবার ঈদে তোমার চেয়ে দামটা আমারই কিন্তু বেশি।

যাই হোক মোরগ মুরগি নিয়ে কৌতুক পৃথিবীর সব ভাষায়ই আছে। অন্যান্য প্রাণি বড় হলেও কৌতুকে তাদের কোন গুরুত্ব নেই। অন্য প্রাণিদের এজন্য ক্ষোভও আছে। বনের পার্লামেন্টে একবার অন্যান্য পশুপাখি বিল তুলেছিল- প্রাণি জগতে ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদন্ড। শিয়াল ছিল ওই পার্লামেন্টের মাননীয় স্পীকার। আর তার কারণেই বেচেঁ গেছে মোরগ জাত। আর মোরগ না থাকলে মুরগি আসতো কোথা থেকে। কারণ ধর্ষণের অভিযোগে ইতোমধ্যেই সব মোরগের ফাসি হয়ে যেতো। দুর্মুখেরা বলেন- মুরগী সমাজ রক্ষায় শিয়ালের এ অবদানের পেছনে দুরভিসন্ধী আছে। মুরগি থাকুক তা সে নিজের লাভের জন্যই চেয়েছিল। তবে রসাসক্ত ইতিহাসবিদরা বলেছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে ওই সংসদে এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা আর বিতর্ক হয়েছিল। মুরগি সমাজের প্রতিনিধিরা ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ডের তীব্র বিরোধীতা করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, এই বিল পাস হলে মোরগ জাতির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। মুরগিদের যেই প্রতিনিধি ঠোটে সবচেয়ে বেশি লিপিস্টিক দিয়ে সংসদ চলাকালীন ধান খুটে খেয়ে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনিও এই ইস্যুতে কড়া বক্তব্য দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, একটা মোরগ যখন মুরগিকে তাড়া করে তখন মুরগির মনের অবস্থা কি। এটা অন্যদের জানার কথা নয়। মুরগির মন নারীর মন। এটা বুঝা এটা সহজ নয়। ঈশ্বর যখন নারীদের বানিয়েছিলেন, দেখতে তার ভালোই লেগেছিল। কারণ আগে পুরুষ বানিয়ে তার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। প্রথমবার যে ভুল করেছিলেন তিনি দ্বিতীয়বারে তা সংশোধন করেই নারী সৃষ্টি করেছেন। সেই নারী সৃষ্টি করে তিনি মুখে ভাষা দিলেন৷ প্রথম কথা বললো নারী৷ অার ওই দিকে ঈশ্বর সংজ্ঞাহীন৷ কি বানালেন নিজের হাতে৷কি বললো অার তার মনের ভেতর কি কিছুই বুঝলাম না৷ঈশ্বরই নারীকে বুঝতে পারেন নি৷ কিন্তু নারী হওয়ার কারণেই আমি মুরগির মনের ভাষা পড়তে পারি। একটা মোরগ যখন মুরগিকে তাড়া করে- তখন মুরগি দৌড়ায় আর মনে মনে বলে- বেশি জোরে দৌড়াচ্ছিনা তো। কেউ বলে আল্লাহ তারাতারি যেন ধরে ফেলে। তবে মুরগিদের মধ্যে আবার তাগড়া যুবতী মুরগিও আছে। তারা মনে মনে বলে, আয় তুই চিপায় আয়।

নাহ এই আলোচনাটা কেন যেন অন্যদিকে ধাবিত হচ্ছে। ছেলেরা মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে যেদিকে নিয়ে যেতে চায়- সেদিক আর কি। আমি ওই দিকে যেতে চাইনা। আমি একবার আমার একজন নারীবাদি বান্ধবিকে মুরগির বেশ কয়েকটি কৌতুক শুনিয়েছিলাম। শুনে সে আমাকে বলে, মুরগি নিয়ে এত কৌতুক। আর সবগুলোই প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। কেন, জানিস? আমি বললাম, না তো। সে বলে, ‘একটা মোরগ একটা মুরগিকে তাড়া করছে। এটা দেখে পুরুষ জাত খুব মজা পায়। তারা অবচেতন মনে নিজেদেরকে মোরগের স্থলে বসিয়ে নেয়।’ বুদ্ধি থাকলে নারীবাদিদের সঙ্গে তর্ক করতে নেই। আমিও করিনি। তবে তাকে আরও একটি কৌতুক শুনিয়েছিলাম। একটা মোরগ একবার একটা মুরগিকে ধাওয়া করলো। মুরগি দিল দৌড়। সতীত্ব রক্ষা করতে হবে। কিন্তু মোরগ নাছোড় বান্দা। সে তার পেছনে লেগে আছে। পুরো বাড়ি দৌড়িয়েও যখন মুরগি নিস্তার পেলোনা- তখন কক কক চিৎকার দিয়ে পুরো এলাকা সরগরম করে জানান দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে। এ সময়ই একটা গাড়ি যাচ্ছিল। পড়বি তো পড়। ঠিক গাড়ির নিচে। মুরগির রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে গেল। সবাই বলতে লাগলো-কি সতী মুরগি। জান দিয়েছে কিন্তু মান দেয় নাই।

মুরগি আগে না ডিম আগে এ নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ বলেন মুরগি আগে আবার কেউ বলেন ডিম। কয়েকদিন আগে বিজ্ঞানিরা এ বিষয়টি গবেষণা করে সমস্যারও নাকি সমাধান করেছেন। তবে যিনি আবার বায়োলজি ভালো পড়েছেন- তিনি বলবেন, এই দু্টার একটাও না। মোরগ আগে। কারণ একটাই । মোরগ ছাড়া ডিম বা মুরগি জন্ম নেয়ার প্রশ্নই আসেনা। আর হ্যা। পাগল যদি নিজেকে মুরগি মনে করে তাহলে কম্ম সারা। চিকিৎসককেও পাগল হয়ে যেতে হবে। একবার এক পাগলকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় তা স্বজনেরা। চিকিৎসক রোগীর হিস্ট্রি লিখতে শুরু করেন।
চিকিৎসক: কী সমস্যা আপনার, বলুন?
রোগী: স্যার, আমার সব সময় মনে হয়, আমি একটা মুরগি।
চিকিৎসক: বলেন কী। তা কবে থেকে এমনটা মনে হয় আপনার?
রোগী: যখন আমি একটি ডিম ছিলাম, ঠিক তখন থেকেই, স্যার।
আবার ডিম কখন ছিলেন জিজ্ঞাসা করা হলো- তার উত্তর যখন সে মুরগি হয়ে ডিম পেরেছিল। শুনে ডাক্তারই চক্রে ঘুরতে থাকেন। এমনিতে কি আর বলে পাগলের ডাক্তারও আধা পাগল। মাতালরাও আবার কম যায়না। তারা মাতাল হলে মুরগির সঙ্গে কথা বলতে পারে। একবার এক মোটু বাজার থেকে মুরগি নিয়ে ফিরছিল। পথে এক মাতাল বলল, ‘এই খাসিটাকে নিয়ে কোথায় চললে?’ মোটু বলল, ‘সর! মাতাল কোথাকার! এইটা মুরগি, খাসি না।’ মাতাল জবাব দিল, ‘আমি মুরগিটাকেই জিজ্ঞেস করছিলাম!’

মুরগি বিক্রি নিয়ে একটা সিলি কৌতুক আছে। মা তার ছেলেকে ১০০ টাকা দিয়ে বল্লেন, যাও বাবা, বাজার থেকে একটা মুরগি নিয়ে এসো। ছেলে বাজার থেকে মুরগি কিনে আনলে মা মুরগি দেখে বল্লেন, এতো রোগা মুরগি। এই মুরগি ফেরত দিয়ে এসো। ছেলে মুরগি ফেরত দিতে গিয়ে দেখে দোকানে লেখা “বিক্রিত মাল ফেরত নেয়া হয় না”। এখন সে কি করবে। বাসায় গেলেতো মা আচ্ছা মত বকা দেবেন। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার মনে হল, তার এক খালাত বোন আছে। সে তাকে খুব আদর করেন, টাকা পয়সাও দেন। তার কাছে গেলে হয়ত একটা ব্যবস্থা হবে নিশ্চয়ই। বোনের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখে ড্রয়িং রুমে খুব অন্তরঙ্গ অবস্থায় একটি ছেলের সাথে তার খালতো বোন বসে আছে। ছেলে লজ্জা পেয়ে সেখানে না গিয়ে চুপচাপ স্টোর রুমে বসে রইল। কিছুক্ষণ পর গাড়ির হর্ন। অর্থাৎ খালু এসেছেন। ড্রয়িং রুমের সেই ছেলেটিও তারাতারি সেই স্টোর রুমে ঢুকে তার বরাবর বসল। অন্ধকার ঘর, কেউ কারো মুখ দেখছে না। শুধু দুজনই দুজনের উপস্থিতি টের পাচ্ছে। সুযোগ মতো ছেলেটি বলল, ভাই মুরগি নেবেন? মাত্র ১০০ টাকা। ধুর, এমনতেই আছি বিপদে আর ইনি আসছে মুরগি বিক্রি করতে। না না মুরগি কিনব না। ‘ভাই, আপনি যদি মুরগিটা না নেন তবে আমি চিৎকার দেব।’ বাধ্য হয়ে মুরগি কিনতে হল ভদ্র লোকের। তার ঠিক ৫মিনিট পর ছেলেটি বলছে-ভাই মুরগিটা ফেরত দেন, নইলে আমি চিৎকার দেব। কপাল খারাপ হলে যা হয়, কি আর করা। মুরগি ফেরত দিতে হল। কিছুক্ষণ পর ছেলেটি আবার বলছে, ভাই মুরগি নেবেন? মাত্র ১০০ টাকা। এইভাবে সে মুরগিটি ৫ বার বিক্রি করে মুরগি সহ ৫০০ টাকা নিয়ে বেড়িয়ে গেল।
চলে গেল নিজের বাড়িতে। ঘরে গিয়ে দেখল তার বড় ভাই ড্রয়িং রুমে বসে। মুরগি দেখেই রাগে ভাইয়ের চিৎকার। ‘আমারে মুরগি বানিয়ে এই মুরগি ৫ বার বিক্রি করছিস। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।’ এ জন্যইতো বলি-বন্ধুদের মধ্যে কেউ কাউকে মুরগি বানায়নি- তাহলে তারা বন্ধুই না।

এবার একটা ইংলিশ কৌতুক বলি। গির্জায় কনফেশন চলছে। অনেকেই নীরবে ফাদারের কাছে কনফেশন দিচ্ছেন। এ সময় একজন ব্যাগে করে একটি মুরগি নিয়ে ঢুকলো। বললো, ফাদার, আমি এই মুরগিটা চুরি করেছিলাম। সেটা নিয়ে আপনি আমাকে পাপমুক্ত করবেন? ফাদার মুরগি না দেখেই বললেন, না, এভাবে হয়না, তুমি যার মুরগি তাকে ফেরত দিয়ে আসো। লোকটি বললো, ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু যা দেখছি, মুরগির মালিকতো ফেরত নিতে চায় না। ফাদার বললেন, সে ক্ষেত্রে তুমি পাপমুক্ত। কারণ তুমি মুরগির মালিককে ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করেছিলে। শুনে মুরগিচোর খুশিমনে মুরগি নিয়ে বাড়ি চলে গেল। ওদিকে ফাদার বাড়ি ফিরে দেখেন তাঁর মুরগিটি নেই।

ভালো লাগলে আরেকটা বলি। তবে তা ভারতীয়। কৌতুকটা পরীক্ষায় যারা আন্ডা বা ডিম পান তাদের জন্য আদর্শ হতে পারে। নিজের দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়িটার পাশে বসে বিলাপ করে কাঁদছিলেন সর্দারজি, ‘আমার মুরগিটা মারা গেল। আমার কি হবে?’এক পথচারী দেখে থমকে গেলেন। বললেন, ‘সে কী সর্দারজি! আপনার এত দামি গাড়ির এই হাল হলো কী করে?’ ‘আর বলবেন না, গাড়িটা রাস্তার পাশে রেখে আমি গিয়েছিলাম একটু দোকানে। কথা নেই বার্তা নেই, এক ট্রাকড্রাইভার তার বেঢপ ট্রাকটা আমার গাড়ির ওপর উঠিয়ে দিল। আর গাড়ির পেছনে থাকা আমার মুরগিটা গেল মরে।’বলে আবার বিলাপ করে কাঁদতে লাগলেন সর্দারজি। পথচারী ভ্রু কুঁচকে বললেন, ‘এত দামি গাড়িটা একেবারে ভেঙেচুরে গেল, আর আপনি কিনা মুরগির জন্য কাঁদছেন?’ সর্দারজি বললেন, ‘আরে বোকা, গাড়ি দিয়ে কী হবে? গাড়ি তো আর প্রতিদিন দুটা করে ডিম দেয় না!’

আমাদের বাঙ্গালিদের দেশ প্রেম নাকি মুরগি আর তার ডিম পর্যন্তই। সবাই এক্ষেত্রে দেশিটা চান। আবার কে একজন নাকি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকি সেনাদের কাছে মুরগি সরবরাহ করতেন। এ নিয়ে আলোচনাও ব্যপক। তবে মুরগি নিয়ে কর্পোরেট গল্পও আছে। সাইন্টিফিক ম্যানেজমেন্টে প্রডাক্টশন ছাড়া কিছু্ বুঝেননা বস। তো কোন এক কর্পোরেট বসের চাকরি গেলে তিনি মুরগির খামার দেন। কারণ কর্মী হিসেবে মানুষের চেয়ে মুরগির প্রডাক্টশন রেট ভালো। কিন্তু খামারে লস হচ্ছিল। মুরগিগুলো খুব বেশি ডিম পাড়ত না। একদিন সে রেগে খামারে ঢুকে বলল, ‘আগামীকাল কারো সামনে দুইটা ডিম না পেলে তাকে জবাই করা হবে।’ পরদিন। সকালে বস খামারে গিয়ে দেখলেন, সব মুরগির সামনে দুটো ডিম কিন্তু একটার সামনে মাত্র একটা। বস কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে উত্তর দিল, ‘বস, আমি মোরগ।’
সিঙ্গাপুরে একটা কার্টুন দেখেছিলাম। একটি মুরগি তার বাচ্চাদের নিয়ে কেএফসির প্রতিষ্ঠাতা কর্ণেল স্যান্ডার্স এর ছবির সামনে গিয়ে বলছে, এই ব্যক্তিই তোদের বাবার খুনি। যাই হোক-মুরগির করপোরেটাইজেশন হওয়ার পরই মুরগির বাচ্চারা বেশি সংখ্যায় এতিম হতে শুরু করেছে।

কৌতুক বলা হবে আর সেখানে ছাত্র শিক্ষক থাকবেনা-তা হয়না। আমিও ছাত্র শিক্ষকের দুটো কৌতুক দিয়ে মুরগি রচনা শেষ করবো। ইদানিং যেভাবে সৃজনশীল প্রশ্ন করা হয়। আর তাতে শিক্ষার্থীরা যে উত্তর দেন তাতে এই কৌতুক পড়ার পর সবাই গম্ভীর হয়ে যেতে পারেন। তবে এজন্য আমাকে দোষারোপ করা যাবেনা।
একবার সৃজনশীল প্রশ্ন করা হলো-‘আরিফ সাহেব একটি মুরগি পালেন। তিনি একবার চিরিয়াখানা গিয়ে জিরাফ দেখতে পেলেন। জিরাফ অনেক লম্বা। প্রশ্ন হলো-মুরগি কেন জিরাফের মতো লম্বা হয় না?’ ছাত্র উত্তরে লিখলো- তাহলে তো মুরগি ডিম পাড়ার সাথে সাথে ডিমটা মাটিতে পড়ে ফেটে যেত, আমাদের আর ডিম খাওয়া হতো না!’
শেষ কৌতুকটা নিলাম মাসুদ মাহমুদ অনুদিত "সোভিয়েতস্কি কৌতুকভ" বই থেকে। রাশিয়ান কৌতুক। একটু পাল্টিয়ে সৃজনশীল তরিকায় বলছি আর কি। পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্ন এসেছে। আরিফ সাহেব একজন মানুষ। তার দুটি পা আর দুটি হাত আছে। তিনি একটি মোরগ পালেন। মোরগের দুটি পা আছে। আরিফ সাহেবের দুটি হাত থাকলেও মোরগের নেই কেন?
সকল শিক্ষার্থীর একই উত্তর। লিখেছে- মোরগের হাত নেই কারণ মুরগির ব্রেস্ট নেই। আর আরিফ সাহেবের হাত আছে কারণ------।
(লেখাটিতে অন্যের অনেক কৌতুক সমাবেশ করা হয়েছে)

কাজী সায়েমুজ্জামান
সার্কিট হাউজ, ফরিদপুর।
২২ জুলাই, ২০১৬, বিকাল ৪.০০ টা।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪

গেম চেঞ্জার বলেছেন: খুব মজার হয়েছে!!!!!!!!!!!!! (++++++++)

০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:০৫

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: :P :P =p~ =p~

০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৬

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: :)

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:১১

নোমান প্রধান বলেছেন: মুরগীময়!!! ভালো লেগেছে

০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: মুরগী অবশ্য খেতে ভালোই৷ ধন্যবাদ৷ :)

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৯

নতুন বলেছেন: আপনি কি ফরিদপুরী নাকি?

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১২

অশ্রুকারিগর বলেছেন: ভাল্লাগছে ভাই। কয়েকটা জোকস জানা ছিল তারপরেও আপনার সুন্দর লেখায় ভালো লেগেছে।

৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৪:৫৩

Bangladeshi Moinul বলেছেন: অনেক কয়টা কৌতক আগে শুনেছিলাম। আপনার লেখায় নতুন কয়টাসহ আরো বেশি মজা পাইলাম। সব কিছুই মুরগিময়!! হলে থেকে প্রতিদিন মুরগি খেতে খেতে ভাবি শালার, কবে যে নিজেই মুরগি হইয়া যামু!!

৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯

আপনার আপন বলেছেন: really new something

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.