প্রবাসী ক্লান্তময় স্বপ্ন..........

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৩

কাজ শেষে অনেক ক্লান্ত অবস্থায়, রান্না একটু পরে করে খাওয়া দাওয়া করবে। শরীর আর মানছে না সাইফের, তাই একটু হাত মুখ না ধুয়ে একটু রেস্ট নেবার জন্যে বিছানায় শুয়েছে।
.
.
(ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্ন)
একটু পর তার মাকে দেকলো। তার মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। সায়েফের যেন সব ক্লান্তি সাথে সাথে দূর হয়ে গেলো।
.
মা বলচ্ছে- কিরে খোকা না খেয়ে যে শুয়ে পরলি, শরীর কি খারাপ করেছে, ভাত খাবি না।
.
.
সায়েফ - না মা তুমি থাকতে আমার শরীর খারাপ হবার কথাই নয়। তবে মা জানো আমি যে আর পারি না। এই অচেনা দেশে আমার খুব ভয় হয়, নিজেকে খুব একা মনে হয়। তোমাদের জন্যে হয়তো আমার এ পরিশ্রমের কাজ কোন কস্ট হয় না তবে তোমাদের ছাড়া যে আমার এক মূহুর্ত ভাল লাগে না মা।
.
.
মা- আরে বোকা ছেলে। ভয়ের কি আছে আমার দোয়া তর সব সময় পাশে আছে, আর মা'র ভালোবাসা যে সন্তানের সাথে সব সময় থাকে।
.
.
সায়েফ- না মা, আমি তোমার আঁচলের মধ্যে থাকতে চাই, তোমার ওই আচল না হলে এই পৃথিবীটাই আমার কাছে হারিয়ে যায়।
.
.
কিছুক্ষন চুপ থেকে মা বলো। বাবা শুন কোন মা'ই চায় না তার সন্তান দূরে থাকুক, কস্ট করুক। আমারো তো ইচ্ছে হয় অনেক তোকে সব সময় এই বুকে আগলে রাখতে। তোকে ছোট থেকে কখনো সহজে কোন কস্টে কান্না করতে দেইনি। তুই কান্না করলে আমার কলিজা যেন ছিদ্র ছিদ্র হয়ে যায়। আজ সেই তুই অনেক দূরে আমিই মা হয়ে কিভাবে থাকি বল। আজ তোকে একটু দুরে ঠেলে দিয়েছি শুধু কঠিন বাস্তবতার জন্যে, তোর। ভবিষ্যতের জন্যে, তোদের আরো বাকি ভাই বোনদের জন্যে। তুই যদি এভাবে বলিস তাহলে আমি মা হয়ে এতো কস্ট, এতো যন্ত্রনা বুকে ধারন করতে পারি আর তুই পারবি না বাবা।
.
.
সায়েফ কাঁদো কাঁদো মুখে বলছে- হে মা আমি সবই পারবো। তোমাদের সুখের জন্যে আমি সব কিছুই করতে পারবো কিন্তু মা, আমাকে শুধু তুমি প্রতি রাতে এসে আমাকে আমার হাত বুলিয়ে একটু ঘুম পাড়িয়ে দিবে। আমার যে তুমি ঘুম না পাড়িয়ে দিলে ঘুম আসে না।

মা- আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।

সায়েফ ঘুমোচ্ছে।................ ছেলের এতো কস্টের ও যন্ত্রানার কথা শুনে সায়ের মা'র চোখের পানি গড় গড়িয়ে পরচ্ছে সায়েফের কপালে আর তা চোখের মধ্যে যাওয়ায় সায়েফের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
.
.
সায়েফ উঠে বসে দেখে সকাল হয়ে গেছে, তার পাশে কেউ নেই। সকালের ঈদের নামাজের সময় হয়ে গেছে। সায়েফ ঈদের নামাজ আদায় করে ভাবচ্ছে প্রবাসীদের কী স্বপ্ন গুলোও ছেড়ে চলে যায়? অনেক্ষন আনমনা হয়ে দেশে ফোন দেবার সাথে সাথেই মা ফোন রিসিভ করে কান্না শুরু করলো, বলতে লাগলো খোকা তুই কেমন আছিস.......

সাইফের মা তার ফোনের অপেক্ষায় বসে আছে, তার মা'র কান্না শুনে সায়েফে বুকটা যেন ফেটে যাচ্ছে।

প্রবাসী ঈদ গুলো সব আপন হারা হয়ে থাকে, আর এই লিখাটা প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে।

উৎস্বর্গ
সকল আপন হারা প্রবাসীদের

০ টি +০/-০