নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমরা মৃত। যে মানবের মধ্যে বিবেক, বুদ্ধি, মনুষ্যত্ব, মানবতা বলে কিছু থাকে না, আমাদের মধ্যে ভাল মানুটাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখি, প্রকৃত। মানুষের যে গুন গুলো থাকার কথা সেগুলা যদি আমাদের মধ্যে বহমান না থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই জীবত থেকে মৃত। মানুষ হয়ে যেমন জন্ম নিলে

Msd Sagor

Msd Sagor › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকাশের বৃষ্টি......

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৩৯

একটি গাছের নিচে বসে আছে আকাশ। আজ তাকে কিছুটা খুশি আবার কিছু ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে চিন্তা ভাবনায় মগ্ন হয়ে আছে।

এই নাও আকাশ!! এটা কি বৃষ্টি? এটা আমার বিয়ে কার্ড।
আকাশ একটু উজ্জ্বল মুখ একটু হাসি অবস্থায়- তোমার বিয়ের কার্ড এটা??

বৃষ্টি - হে কেনো তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না? সেটা খুলে দেখো।

নাহ, আসলে হঠাৎ করে এসে বললে তো তাই। তা তোর বর হয়তো অনেক ভাগ্যবান যে তোমার মত একটি মেয়ে পেয়েছে। আচ্ছা ঠিক আছে আমি এখন যাই, আমার কাজ আছে।

একটু এগিয়ে যাবার পরই বৃষ্টি নামলো। আকাশের পকেটের থাকা চিঠিটি শক্ত মুঠে ভাজ করে ফেলে দিল। হাতে লুকিয়ে থাকা কাটা গোলাপটা হাতের শক্ত মুঠই গোলাপের কাটা হাতে গেঁথে রক্ত বেয়ে পড়ছিল। যা আকাশের এখনো সেটা অনুভব করতে পারেনি। এই ঝড়ো বৃষ্টিতে ভিজে আকাশ গন্তব্যহীন ভাবে হেটে চলে যাচ্ছে।

সাথে সাথে বৃষ্টি নামার কারনে মেয়েটি গাছের নিচেই রয়ে গেল। আকাশের মাথা নিচু করে এই ঝড়ো বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার কারনটা সে এড়িয়ে গেল। মেয়েটি আবার আকাশের দিকে কিছুটা ফলো করেছিল। সে দেখেছিল আকাশ কি যেন একটা ফেলে দিল ও হাতে অনেকটা রক্ত ঝড়ছিল।
কিছুক্ষন পর বৃষ্টি কমার পর মেয়েটি এগিয়ে গিয়ে কাজটি ঠিক করে চিঠিটি পড়তে লাগলো।
‪#‎চিঠি‬
বৃষ্টি.....
তোমার নামটা আসলে সুন্দর তবে আমার কাছে একটু ভয়ানক টাইপের আর তাই আমি সহজে বৃষ্টিতে ভিজি না আর কেনো জানি ভালও লাগে না। তোমার সাথে আমার অনেক দিনের ভাল একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক। তবে আজ সেই বন্ধু হিসেবে আমাকে ভুল বুঝনা। তোমার সাথে আমার পরিচয় প্রায় সাড়ে ৩বছরের কিন্তু গত এক বছর ধরে তুমি আমার কাছে নতুন করে পরিচিত হয়েছিলে।
সেদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিল তোমার সাথে আমি ক্যাম্পাসের খোলা আকাশে নিচে ছিলা। আমি বৃষ্টি দেখে একটু কোন এক জায়গায় আশ্রয় নেবার চেষ্টা করেছিলাম। তুমি আমার পিছন থেকে আমার হাতটি টেনে ধরেছিলে তোমাকে একা না ফেলে যেতে, যাতে তোমার সাথে আমি বৃষ্টিতে ভিজি। তখন কেন জানি আমি থমকে যাই। মনের ভিতর যেন কিসের একটা ঝড় শুরু হয়। পিছু ফিরে তোমার মুখটা দেখার আমি অপলক ভাবে চেয়েছিলাম তোমার চোখে।
.....তোমার হয়তো সেটা ভুলে যাবার কথা নয় কারন তুমিও একটু সময় আমার চোখের দিকে চেয়ে লজ্জায় মুখটি ঢেকে ছিলে।

আমার মনে হয়েছিল আমার বাগানে ফুল ফুটেছে। আর সেদিন থেকেই আমি বৃষ্টিকে ভালোবাসতে শিখি। তোমাকে সেই ভালোবাসায় মনের অজান্তে জড়িয়ে ফেলি। এতোদিন তোমাকে কিছু বলতে পারিনি কারণ এর মধ্যে ছিল অনেক বাধা যার মধ্যে আমাদের বন্ধুত্ব আর আমার দারিদ্রতা।
আমি অতি সাধারণ একটা পরিবারের। মাঝে মাঝে তুমিও তোমার অজান্তে অনেক অবহেলিত করেছ। হয়তো আমাকে নিয়ে করেছা মাঝে মাঝে অনেক উপহাস। হয়তো তোমার বন্ধু হয়ে তোমাকে কখনো ভাল কোথাও বেড়াতে নিয়ে যেতে পারিনি, পারিনি তোমার জন্য সামান্য কিছু টাকা ব্যায় করতে। তবে তুমি আমার জন্যে অনেকটা করেছিলে। এই জন্য মাঝে মাঝে তোমার কাছ থেকে আড়াল হয়ে যেতাম কিন্তু তুমি নিজেই আমাকে কেনো জানি খুজে বেড় করতে।
আসলে কি জানো? আমাদের মত লোকের অনেক ইচ্ছে থাকে তবে পূরণ করার মত সাধ্য থাকে না। আমি জানি আমি তোমার যোগ্য নয়। তবে মনতো সেই বাধা মানতে নারাজ। আজ আম্মু আমাকে নতুন কলমের জন্য ২০টা টাকা দিয়েছিলেন। আর সেই টাকা তোমার জন্য এই প্রথম ব্যায় করলাম। তোমার জন্য এই গোলাপ ফুলটি কিনে নিয়ে এসেছি। তুমি সেটা যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই গ্রহন করে নিও। আমি তোমাকে বলবো না ভালোবাসি আর সেটা তোমার কাছে চাইবোও না।


তুমি যখন আমার এই চিঠিটি পড়বে তখন ক্ষমতার দৃৃষ্টিতে অবশ্যই দেকবে। আর ভেবে নিও এটা এক ভিখিরি মনের আর্তনাদের কিছু কথা। আর কিছু না পেলেও আমার অনেক ইচ্ছে তোমাকে আরও একবার বৃষ্টিতে ভিজবো, জানি আর সেই ইচ্ছে কখনো পূরণ হবার কিনা।
সব সময় যাতে ভাল থাকো সেই কামনাই রইল#
বৃষ্টি লিখাটা পড়ার পর কিভাবে যেন চিঠিটি হাত থেকে পরে গেল। চিঠিটি আবার তুলতে গিয়ে চোখে পড়লো সেই রক্ত মাখা গোলাপটি তার পায়ের নিচে চাপা পরে আছে। বৃষ্টির চোখ কেন যানি কান্নার জন্য ছল ছল করছিল। সেই গোলাপ আর চিঠিটি কিছুক্ষন বুকে আঁকড়ে ধরে রাখলো।

বৃষ্টির বিয়ের দিন পেরিয়ে গেল আকাশকে খুঁজতে খুঁজতে। রয়ে গেলো বৃষ্টি আকাশে খুজে। বৃষ্টির মনের আকাশে কেনো জানি শুধু মেঘই জমে থাকে কিন্তু বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.