নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আস্লামুয়ালাইকুম,আমি মোঃ সারোয়ার হোসেন।To know me more plz go facebook & search সাদামাটা একটি ছেলে
গরম মাছের ঝোল!
~~~~~~~~~~~~~~
বুঝতেছিনা,
আমার মস্তিষ্কের নিউরোনগুলো কি বিগড়ে গেলো নাকি?
শালার লিখতে চাই এক বিষয়ে মাগার লিখতে লিখতে আলোচনার মোড় ঘুরে যায় আরেক বিষয়ে।
আসলে আমি লিখে প্রশান্তি পাই,তাই সময় পেলেই লিখি,
জানি অনেকেই পড়ে,আবার কেউ না পড়েই সিরিয়ালে Like দেয়।
আজকে লিখবো মোটিভেশনাল কিছু,
দেখি কিভাবে লেখার মোড় ঘুরে অন্যদিকে যায়!
একটু চোঁখ বন্ধ করুন!
আরে দাড়ান!
পুরো লেখাটা তো পড়বেন আগে!
তারপর না হয় ভেবে দেখবেন যে চোঁখ বন্ধ করা যায় কি না।
শুরু করুন!
তবে প্রথমে মোবাইল ফোনটি সাইলেন্ট করুন!
এবার দুচোঁখ বন্ধ করুন!
সাথে কান দুটোতেও তালা মারেন,
মনে করুন পরিবেশ একদম নিরব ও নিস্তব্ধ।
""
শীতের সকাল,খুব কুয়াশা পরেছে আজ,তবুও আপনার গায়ে একটি পাতলা হাফ শার্ট ও পরনে গেরুয়া রঙ্গের হাফ প্যান্ট।
বাড়ির কেউ এখনো বিছানা ছারেনি,গোয়াল ঘরে গরু বাছুর ঠান্ডায় জড়োসড়ো হয়ে হাম্বা হাম্বা ডাকছে,
হাঁস গুলোও প্যাক-প্যাক আর মুরগির ছানাগুলো মৃদুস্বরে কক-কক,চিত-চিত করছে।
আপনার বাড়ি গ্রামের শেষ সীমানায়,আর বাড়ির পাশেই একটি বিল,
যেমন তেমন বিল না,প্রচুর মাছ আছে বিলে।
যেহেতু শীতকাল,তাই বিলে পানি কমে গেছে,
আপনি আস্তে করে দরজা খুলে বাসি মুখেই পাঁ টিপে টিপে বের হলেন বাড়ি থেকে,হাতে একটি ছোট স্টিলের পাতিল,
আঙ্গিনা পার হয়েই জোরসে ছুট দিলেন বিলের দিকে,কুয়াশায় প্রকৃতি ঘোলাটে তাই দৌড়ের গতি কমালেন আপনি,
কিছুদিন আগে ধান কেটে নিয়ে গেছে সবাই তাই ক্ষেতে ধানের নাড়া আর নাড়া,সেই নাড়া(ধান গাছের গোড়া) থেকে নাকে আসছে চিরচেনা ঘ্রাণ।
আপনি একবুক আশা নিয়ে বিলের অভিমুখে যাচ্ছেন ধান ক্ষেতের উপর দিয়ে।
কি হলো চোঁখ খুললেন কেনো?
আর একটু সবুর করুন!
তারপর আপনি চমকে উঠলেন একটা ব্যাঙের লাফে,ব্যাঙটির পিছন দিয়ে ছিটকে একফোঁটা পানি পরলো আপনার পায়ে,
আপনি কিঞ্চিত ভয়ে থমকে দাড়ালেন,
এতোক্ষনে আপনি বিলের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছেন,
হঠাৎ আপনার থমকে দাড়ানোর কারনে বিল থেকে কয়েকটি সাদা বক কৎ শব্দ করে উড়ে চলে গেলো বিলের পাশের ইউক্যালিপটাস গাছটার মগডালে,
আপনি ভয় পেয়ে গেছেন,যে কোন সাঁপের উপর পা ফেলেননি তো আবার,তাই আপনি ব্যাঙ দেখা সত্বেও ভালো করে আশপাশ দেখছেন আর নিজের পায়ের দিকে বারবার দেখছেন।
নিশ্চিত হলেন এটা ব্যাঙই ছিলো,
এতোদুর দৌড়ে আসার কারনে শীতের মধ্যেও আপনার সারা গা গরম হয়ে গেছে,
কিন্তু হঠাৎ ভয় পাওয়ার কারনে আপনার শরীরের লোমগুলো শিউরে উঠেছে,একবার কাঁপুনি ও দিয়েছে বুকটা।
যাই হোক,
এবার আপনি আগপাছ না ভেবেই আস্তে আস্তে একটি অর্ধনিমগ্ন ভেজা বাঁশের কঞ্চির দিকে এগুচ্ছেন,
বিলে এবার বেশ কচুরিপানা হয়েছে,
অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল ফুটেছে,
আপনার পায়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দে পানিতে হালকা ঢেউ উঠেছে।
আপনার পা পানির নিচের কাদায় ঢুবছে আর আপনি সন্তর্পণে এগুচ্ছেন সেই কঞ্চির দিকে,
শীতকালে বদ্ধ জলাশয়ের পানি গরম থাকে,তবে যেখানে বাঁশঝাড় আছে সেখানে কনকনে ঠান্ডা হয়।
পানি কুসুম-কুসুম গরম,আপনার ভালোই লাগছে তাই,
পানি দিয়ে হালকা ভাঁপ উঠছে,
হঠাৎ একটা শোলমাছ আপনার পায়ে হোচট খেয়ে দিগ্বিদিক দৌড় মারলো কাদার নিচ দিয়ে,
আপনি দেখেননি এটা কি মাছ তবে আপনি জানেন মাছ পালিয়ে গেলে টাকি মাছটাও শোল হয়।
অবশেষে আপনি চলে এসেছেন বাঁশের কঞ্চির কাছে,
তবে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটা শোলের সাথে হোচট খেয়েছেন আপনি!
কঞ্চিটির সাথে বাঁধা আপনার ছোট ফান্দি জালটি,
জালে লাগানো আছে শোলা ও জুঁতার কাটা অংশ।
জালের নিচে আছে কুমার মাটির কাঠি,
আরে ভাই লালমাটি আগুনে পুড়িয়ে যে গোল গোল কাঠি বানানো হয় সেটা।
আপনি কঞ্চি থেকে জালের গিটটা ছুটালেন,
কাল সন্ধ্যায় সাবধানে যেই চিহ্ন দিয়ে জাল পেতে বাড়ি গিয়েছেন,সেই চিহ্নটাই আছে,
রাতের কনকনে ঠান্ডার কারনে মাছ চোর আসেনি।
এবার আপনি খুশিতে টানছেন জাল,
মাছের ছুটাছুটিতে আপনার ছোট্ট জালটি পুনঃপুন দুলছে,
আপনি সুন্দরভাবে জাল ভাঁজ করে ডাঙ্গায় আসলেন,
আল্হামদুলিল্লাহ আজ অনেক মাছ উঠেছে!
টুনামাছ,পুটি,বাঁশপাতারি,ট্যাংরা মাছ,কয়েকটা খোলসে মাছ,রুপচান্দার বাচ্চা ও টাকি মাছ।
আরে যাহ্ শোল মাছ তো উঠেনি,
ব্যাপার কি?
পায়ে অনেক শোল বাড়ি খেলো আর জালে একটাও উঠেনি?
আপনি মনকে সান্তনা দিচ্ছেন কাল পালাবি কোথায় শোল মিয়া?
"
এবার আপনি খুশিমনে বাড়ি ফিরতেছেন,
এতোক্ষনে পূর্বদিকে ডিমের কুঁসুমের মতো লাল রবি উঠেছে,কুয়াশাও কমে গেছে অনেকটা,
ধানক্ষেতের দিকে একজন চাষা কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে আসতেছে,হাতের পেন্ঠি(গরু তাড়ানোর লাঠি)দিয়ে ষাঁড় দুটোকে একবার খোঁচা মারলো,
আর শব্দ করে বললো হিস্ হিস,
বাঁ-বাঁ বাঁয়রে!
আপনি ভাবছেন বাড়ি গিয়ে মাকে বলবেন"
মা আমি কিন্তু মাছের গরম ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে আজ স্কুলে যাবো!
কিন্তু হঠাৎ আপনার মোবাইলে রিংটোন বেঁজে উঠলো,
আপনি মোবাইল সাইলেন্ট না করেই চোঁখ বন্ধ করেছেন তাই।
ধ্যাৎ শালার,
আজ আর মাছের গরম ঝোল দিয়ে ভাত খাওয়া হলোনা..........................!
••••••••••••••••••••••••••••••
মোঃরাব্বি সাহিদি সারোয়ার হোসেন।
[email protected]
©somewhere in net ltd.