নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এক খণ্ড সাদা পাতায় পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম ধরেছি। এক খণ্ড কাঁদা মাটিতে পুরো সবুজ ফলাবো বলে হাল বেয়েছি। এক খণ্ড রঙিন কাগজে পুরো বিশ্ব আঁকবো বলে রং তুলি এনেছি। এক খণ্ড হৃদয়ে পুরো দুনিয়া পুষবো বলে দৃঢ়প্রত্যয়ি হয়েছি।

সাইফ নাদির

এক টুকরো কাগজে পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম হাতে বসে আছি

সাইফ নাদির › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই

১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:২১

আর কত কোটার জাঁতাকলে পিষ্ট হওয়া!

আমার বন্ধু সুমন। স্কুল-কলেজে ভালো ফলাফল অর্জনকারীদের মধ্যে অন্যতম। ভার্সিটি এডমিশান এক্সামে ওয়েটিং লিস্টে ছিলো। পরিশেষে কোটা না থাকায় ওয়েটিং লিস্টের শেষ দিক থেকে টানলো, কিন্তু উপরে থাকলেও ভার্সিটি তাকে টানলো না। ‘কোটা’শূন্য ছেলেটির স্বপ্ন অপূর্ণ-ই রয়ে গেল

আমার বড় ভাই তারিফ। অনেক মেধাবী। ‘জাবি’ এর পদার্থ বিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ছিল। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। মেধার জোড়ে ভার্সিটিতে চাঞ্জ পেয়েছিলো। অনেক কষ্ট করে চলতো। বাবার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে পড়াশোনা শেষ করলো। অবশেষে ‘কোটা’ না থাকায় BCS এ গিয়ে স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল।

বন্ধুর বড় আপু। তানিয়া আপু। ডাকতাম ‘তানি’ আপু বলে। ঢাবির পলিটিকাল সাইন্স ডিপার্টমেন্টের ছাত্রী ছিলো। পরিবারের সবাই আপুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো, পড়ালেখা শেষ করে পরিবারকে সাপোর্ট করবে। অন্যরা যখন আড্ডা আর ফুর্তি নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, আপু তখন বাসায় বাসায় গিয়ে টিউশনি করতো, পড়াশোনার খরচ চালাতো। এভাবে খুবই ভালো CGPA নিয়ে অনার্স শেষ করলো। শেষমেশ ‘কোটা’ সন্ধানীরা কোটাওলাকে বেঁচে নিলো। তানিয়া আপুকে ছেড়ে দিল স্বপ্ন অপূর্ণ রেখে ইতিহাস রচনা করার জন্য। রচিত হলো এক কালো ইতিহাস। মেধাবীনি তানিয়া মেধাশূন্যদের কাতারেই পড়ে থাকলো। স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

আমার মামাতো ভাই তুষার। ‘রাবির’ আইন বিভাগের ছাত্র ছিলো। বেশ মেধাবী। শুধু মামা নয়, আমাদের বংশের সবাই স্বপ্ন দেখতো তাকে নিয়ে। অনেক বড় আইনজীবী হবে তুষার। পড়াশোনা শেষ করে যখন স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেয়ার সময় এলো, ঠিক তখনই ‘কোটাযন্ত্র’ এসে স্বপ্নের কলকব্জা ভেঙ্গে চুরমার করে দিলো। ইতিহাস রচিত হলো। মেধাবী তুষার বেকারত্বের পঙ্গুত্ব বরণ করলো। জয় হলো কোটার, পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে পড়ে থাকলো কোটাহীন এক মানবযন্ত্র।

আমার খালোতো ভাই নাঈম। পড়তো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। হাইট আর চেহারা দেখলে যে কেউ আর্মিল কর্ণেল মনে করতো। ভাইয়ার স্বপ্ন এত বেশি বড় ছিলো না। চেয়েছিলো, আর্মির সাধারণ একজন সৈনিক হতে। কিন্তু কে করবে পূরণ তার এই স্বপ্ন, তার যে কোটা নামক মামা নেই। অবশেষে কোটার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে স্বপ্ন ‘বলি’ দিলো নাঈম ভাইয়া। রচিত হলো ঘৃণ্য ইতিহাস। আর্মি হয়ে যেই ‘বাহু’কে দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর স্বপ্ন দেখতো, সেই বাহুকে এখন বিদেশের মাটিতে বিলিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে নাঈম।


এ দেশে হাজারো সুমন, তারিফ, তানিয়া, তুষার ও নাঈমদের স্বপ্নকে অংকুড়েই ভ্যানিশ করে দেয়া হচ্ছে। গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে লাখো বাবা-মায়ের রঙ্গিন স্বপ্নকে। কোটার জাঁতাকলে ক্লিষ্ট-পিষ্ট হয়ে মরে যাচ্ছে মেধাবীদের প্রতিভা। কোটা পদ্ধতির কুপ্রভাবে যোগ্যদেরকে হারাচ্ছে দেশ। ফলে দেশ পিছিয়ে পড়ছে মিলিয়ন-বিলিয়ন মাইল দূরে। অবনতির ময়লাযুক্ত আস্তাকুড়ে।

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি কোন গোষ্ঠী বিশেষের নয়। স্বপ্ন ভেঙ্গে পঙ্গু হওয়া কোন যুবকের দাবি নয়। এ দাবি পুরো বাঙ্গালির ন্যায্য দাবি। বঙ্গবন্ধুর সোনালী বাংলা গড়তে হলে কোটা পদ্ধতির সংস্কার করা অপরিহার্য, এবং সময়ের অন্যতম দাবি।

‘‘কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই’’


‘‘ইবিয়ান ছাত্র সাইফ নাদির’’

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.