নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এক খণ্ড সাদা পাতায় পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম ধরেছি। এক খণ্ড কাঁদা মাটিতে পুরো সবুজ ফলাবো বলে হাল বেয়েছি। এক খণ্ড রঙিন কাগজে পুরো বিশ্ব আঁকবো বলে রং তুলি এনেছি। এক খণ্ড হৃদয়ে পুরো দুনিয়া পুষবো বলে দৃঢ়প্রত্যয়ি হয়েছি।

সাইফ নাদির

এক টুকরো কাগজে পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম হাতে বসে আছি

সাইফ নাদির › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহীয়সী নারী ০৪

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৫০

তখনো বৃষ্টি থামেনি। কফির মগে চুপুক দিয়ে টিভির রিমোট হাতে বসে আছে জায়ান। বর্তমান সময়ের সব থেকে আলোচিত বিষয়; বুয়েট ছাত্র ‘আবরার’ হত্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হচ্ছিলো, জায়ান তা খুব মনোযোগ নিয়ে দেখছে। কী সাংঘাতিক ভাবে ছেলেটাকে মেরেছে! একটুও দয়া করেনি। ফরেনসিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, শক্ত কিছু দিয়ে আবরারের শরীরে একের পর এক আঘাত করা হয়েছে যার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। ভাবা যায়, জীবিত একটা মানুষকে কতটা নিষ্ঠুর ভাবে পেটালে মরে যেতে পারে। এরা কি মানুষ? না, এরা মানুষ না। মানুষরূপী পশু। মানুষ হলে কখনোই এত নিচে নামতে পারতো না। ভাবতেই কেমন যেন গাঁ ছমছম করে উঠে। মানুষ কী করে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, মানুষ কী করে এতটা ভয়ানক হতে পারে! ভাবে জায়ান।

সাংবাদিকতার বয়সে এই ঘটনাটা জায়ানকে খুব কষ্ট দিয়েছে। যদিও সাংবাদিক হিসেবে তেমন কোন কষ্ট পাওয়ার কথা ছিলো না। কারণ এই পেশার লোকদের হরহামেশাই-ই এ ধরনের নিউজ নিয়ে কাজ করতে হয় তাই হত্যা হোক কিংবা বড় কোন ক্রাইম, কোন কিছুতেই তারা অবাক হয় না। কষ্ট পায় না। তবে এই হত্যাটা একটু বেশিই কষ্টদায়ক। একটু বেশিই হৃদয়বিদারক। শুধু জায়ান কেন, আবরার হত্যায় সবাই কেঁদেছে। কেঁদেছে পুরো দেশ।


প্রতিবেদনটা এখনো শেষ হয়নি। খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে। এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো। দরজা খুলেই অবাক হয়ে গেলো জায়ান। দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে জেনি। মুখটা একেবারে মলিন। বৃষ্টির পানিতে হালকা হালকা ভিজে গেছে শরীর। সাত-পাঁচ কিছু না বলে ভেতরে আসতে বলে। তোয়ালে হাতে দিয়ে মাথা মুছতে বলে। কিন্তু জেনি ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে পাশের রুমে ঢুকে পড়ে। খানিকক্ষণ পরে কাপড় পাল্টে বের হয়ে আসে। এরপর খাওয়ার কিছু আছে কি-না জিজ্ঞেস করে। জায়ানও কিছু না বলে তাড়াতাড়ি খাবার এনে সামনে দেয়। সারাদিনের না খাওয়া জেনি চুপচাপ পুরো খাবারটা খেয়ে ফেলে। ঢকঢক করে পানি খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে। জায়ান কিছু একটা বলতে যাবে, ওমনি জেনি বলে উঠলো, খুব ঘুম পেয়েছে। কোথায় ঘুমাবো বলো। জায়ান থতমত হয়ে নিচ তলার ফাকা রুমটার দিকে ইশারা করলো। জেনি গিয়ে দরজা আটকে দিলো। অবাক বিষ্ময়ে দরজার দিয়ে তাকিয়ে রইলো জায়ান। কী এক অবাক কাণ্ড, এত দিন পরে দেখা হলো অথচ কোন কথাই বললো না! মাথা-তাথা গেলো নাকি! মনে মনে ভাবে জায়ান।

সকালে জায়ান ব্রেডে জেলি মাখাচ্ছিলো। এমন সময় দরজা খুলে জেনি বাইরে বেরিয়ে আসলো। খোলা চুলে ওকে বেশ লাগছিলো। যেন রূপনগরের রাজকন্যা কিংবা পরীমহলের পরীরানী জায়ানের কাছে হেঁটে আসছে। জায়ান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। জেনি এসে জায়ানের মাথায় ঠুস করে একটা ঢিস বসিয়ে দিলো। জায়ান উফফ করে উঠলো। এরপর এক সাথে বসে জায়ানের বানানো নাস্তা খেলো। খেতে খেতে অনেক গল্প হলো, অনেক দুষ্টুমি করলো। এরা এমনই; এক সাথে থাকলে একটুও স্থীর থাকে না। দুষ্টুমি আর দুষ্টুমি। ছোট বাচ্চাদেরও হার মানায়। একবার তো সেলিম কাকা এদের কাণ্ড দেখে বেহুঁশ হয়ে গিয়েছিলো। দু’দিন পর ডাক্তার বাবুর ইনজেকশনে জ্ঞান ফিরে পেয়েছিলো। সে গল্প আজ নয়, আরেকদিন বলবো।

পর্ব নং ০৪
মহীয়সী নারী / সাইফ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৯

Tanzim Hasan বলেছেন: গল্পটা বেশ চমৎকার

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৮

সাইফ নাদির বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.