নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পাখির চোখে পৃথিবী দেখতে ভালোবাসি।

সাইফুল আজীম

পেশা ও নেশা ড্রোন, জি.আই.এস এবং রিমোট সেনসিং নিয়ে কাজ করা। সেটাই করে চলছি, সেই সাথে আছি সামুর সাথে।

সাইফুল আজীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশ্ন: দেশ আমাকে কী দিয়ছে?

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৬

প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে প্রশ্নটা হঠাৎ কেন এল তা একটু বলি। মাস্টার্সের থিসিসে প্রথমে খুলনাকে স্টাডি এরিয়া নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম সহজেই একটা রেজাল্ট আসবে। কিন্তু সুপারভাইজার বললেন 'বড় কিছু ভাব। বাংলাদেশকে তোমার স্টাডি এরিয়া করে নাও। পুরো দেশের থার্মাল প্রোফাইল আর ম্যাপ যখন তুমি তৈরি করবে তখন সেটা একটা আইকন হয়ে যাবে। তার সাথে সিটি লেভেলে এনালাইসিসতো আছেই। তবে মনে রেখ তোমার হাতে যে সময় আছে তার মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ করতে হলে দিনরাত কাজ করতে হবে'। যতদূর জানি এমন কাজ খুব একটা হয়নি তাই আমিও রাজি হয়ে গেলাম কষ্টকে মেনে নিয়ে এই আশায় যদি নতুন কিছু করা যায় দেশের জন্য, হোকনা তা ছোট্ট কিছু।



আজকে এটা নিয়েই ল্যাবমেটের সাথে কথা হচ্ছিল। আমাকে অনেক অনেক স্যাটেলাইট ডাটা ডাউনলোড করতে হবে কারন আমি কাজ করছি ৩০ মিটার স্পেটিয়াল রেজুলেশনের থার্মাল ডাটা নিয়ে আর তাতে ১৩টা সিনে পুরো বাংলাদেশ কভার হবে। টাইম পিরিয়ড হিসাব করলে আমাকে প্রায় ১০০ টা সিন নিয়ে কাজ করতে হবে। কাজও অনেক রকমের। তাই সে বলল কেন এত কষ্ট করবে। বললাম দেশের জন্য তো কিছুই করিনাই, দেখি যদি কিছু একটা করা যায়। সে বলল দেশ তোমাকে কি দিয়েছে যে এত কষ্ট করবে? তাকে উত্তরে যা বললাম তাই আমার শিরোনামের জবাব-



১. প্রতি ছয় মাসে মাত্র ১৬৫০ টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)। কিন্তু আমাকে পড়াতে বাকি খরচ আমার দেশ দিয়েছে। নাহলে মধ্যবিত্ত ঘরের এই আমার গ্রাজুয়েট হওয়া হতনা।



২. প্রতি বছর ভালো রেজাল্টের কারনে ৫৪০০ টাকা স্কলারশিপ দিয়েছে আমাকে যা দিয়ে আমি আমার শখ পূরন করেছি, আনন্দ করেছি। হিসাব করে দেখেছি ৪ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দেয়া টাকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে বেশী দিয়েছে। খাওয়া, বই-খাতা কেনা আর পকেট খরচ বাদ দিলে এতো বিনা পয়সায় পড়া। এর চাইতে বড় আর কী দিবে আমার দেশ আমাকে?



আরো বলার আগেই ল্যাবমেট হার মানল। তার হার মানা না মানায় আমার কিছু যায়-আসে না। দেশেকে কিছুনা কিছু আমি দিবই আমার কাজের মাধ্যমে তা সে যতই ছোট হোকনা কেন। আমি জানি আমার দেশ, আমার বাংলা মার উদার, বিশাল হৃদয়ে তা বড় হয়েই ঠাঁই পাবে।



জানি যে চ্যালেন্জটা নিয়েছি তার জন্য আমাকে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হবে, আর হচ্ছেও। তাতে কি? এটা শুধু ডিগ্রী পাওয়ার জন্য নয়, এটা আমার দেশের জন্য। আমি অপেক্ষায় সেই দিনের যেদিন আমার পিসিতে আমি দেখতে পাব বাংলাদেশের থার্মাল প্রোফাইল, ম্যাপ, এনালাইসিস..............কবে আসবে সেই দিন!!!



**(লেখাটা যখন লিখছি তখন জ্বরে প্রায় কাবু আমি। সকালে আচমকা জ্বরের হামলা হয়েছে। সবাই দোয়া করবেন যেন জ্বরটা কমে যায় জলদি)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬

পথহারা সৈকত বলেছেন: বাংলাদেশের থার্মাল প্রোফাইল, ম্যাপ, এনালাইসিস..............কবে আসবে সেই দিন!!!

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১

সাইফুল আজীম বলেছেন: আসবে......আসতেই হবে।

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৩

সালাহউদ্দীন আহমদ বলেছেন:
আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলো ডাক্তার। কোন বিষোদগার না করার অর্থে বলছি, তার কর্মক্ষেত্র ছিলো দিনাজপুর,কিন্তু সপ্তাহের ৪ দিনই তাকে ঢাকায় আজিজ সুপার মার্কেটে ধান্দা করতে দেখতাম। তো একদিন তার এক কর্ণেল আত্মীয় আর আরেক ব্যবসায়ীর কথোপকথন হলো। বাঙ্গালী সৈন্যের বড় বড় ডালাগ্ শুনে এক পর্যায়ে সেই ব্যবসায়ী মন্তব্য করলেন "দেশ আপনার ভাগ্নেকে ডাক্তার বানিয়ে চাকরি দিয়েছে লোকের চিকিৎসার জন্য, আর সে কাজে ফাঁকি মেরে এখানে ব্যবসার ধান্দা করছে"। সেই সৈন্য দাপট দেখিয়ে বলেছিলো- দেশ তাকে কি দিয়েছে?

হায়রে দরিদ্র দেশ। সবাই খালি নিতেই চায়। বিনিময়ে কে যে দেশকে কি দিয়েছে তার কথা কে বলবে।

আব্রাহাম লিংকনকে আমেরিকা কয় ট্রিলিয়ন ডলার দিয়েছিলো, ইন্দিরা গান্ধীকে ভারত কয় ট্রিলিয়ন ডলার দিয়েছিলো কে জানে?

যাক। আপনাকে অভিনন্দন।

আপনার গ্র্যাজুয়েশান কি বিইউআরপিতে?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২

সাইফুল আজীম বলেছেন: ধন্যবাদ।

আমি বিআইপি গ্রাজুয়েট। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে। ব্যাচ ২০০৬।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.