নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পাখির চোখে পৃথিবী দেখতে ভালোবাসি।

সাইফুল আজীম

পেশা ও নেশা ড্রোন, জি.আই.এস এবং রিমোট সেনসিং নিয়ে কাজ করা। সেটাই করে চলছি, সেই সাথে আছি সামুর সাথে।

সাইফুল আজীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুক্রবার: আমার মন খারাপের দিন /:)

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩০

আজ আমার মন খারাপ। আজ নয়, দেশের বাইরে কাটানো প্রতিটা শুক্রবার মন খুব খুব খারাপ থাকে। সবকিছুতেই শূন্যতা ঘিরে ধরে আমায়।



বাসায় দিনাটা ছুটির আমেজে বাসার সবার সাথে কাটতো। সকালটা শুরু হতো নাস্তায় বিশেষ আইটেমের মাধ্যমে। শুক্রবার বলে কথা! তাই নাস্তায় রুটির বদলে পরটা,সাথে বিশেষ কিছু। নাস্তার পর আয়েশী মেজাজে বেলা সাড়ে এগারটা পর্যন্ত টিভি দেখা, পেপার পড়া। তারপর জুম্মার নামাযের প্রস্তুতি। নামায শেষে ঘরে ফেরার সে কি তাড়া! বাসায় রান্না যাই হোক শুক্রবার যেন সবকিছুই বিশেষ রূপ ধারণ করে। পেট পুরে খেয়ে বিছানায় গড়িয়ে আলসে দুপুর কাটানো আর বিকেলে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো.......শুক্রবার যেন পুরো সপ্তাহের ক্লান্তি দূর করে সতেজ করত আমায়।



প্রবাসে শুক্রবারের সকার বাকি দিনের মতই। এক স্লাইস পাউরুটি আর ডিম দিয়ে নিয়ম মানা নাস্তা করে ল্যাবে চলে যাই। বিশেষ কিছুই থাকেনা নাস্তায়। বেলা সাড়ে এগারটা পর্যন্ত টিভিতে প্রোগাম নয়, পিসিতে স্যাটেলাইট ইমেজ দেখি। কিন্তু তারপর কিছু জিনিষ একই থাকে। সাড়ে এগারটায় আমি ল্যাব ছেড়ে চলে আসি, চিরচায়িত সেই প্রস্তুতি চলে জুম্মার। চলে যাই শহরের অন্যতম ব্যাস্ত মুসলিম এলাকায় নামায আদায় করতে। এই সময়টা বেশ ভালোই লাগে। শুক্রবারকে কিছটা চেনা মনে হয় আমার।



নামায শেষে মসজিদের বাইরে পা রাখতেই একটা জলদি চলার তাগাদা অনুভব করে আমার পা, নাক যেন খোজে একটা চেনা সুঘ্রাণ, পেট যেন প্রস্তুত ভূড়িভোজের..........ঠিক তখনি হতচ্ছাড়া মস্তিষ্ক চোখ দিয়ে আমাকে চিনিয়ে দেয় চারপাশ, আমার পা থেমে যায়, নাক হতাশার ঘ্রাণ পায় আর পেট তার ভূড়িভোজের প্রস্তুতিকে বদলে নেয় প্রতিদিনের নিয়মে। আমি হারিয়ে ফেলি চেনা শুক্রবারকে। কিছক্ষন এদিক-ওদিক ঘুরে শুক্রবারকে বিশেষ করে রাখার তাগিদেই ভালো একটা মুসলিম রেস্টুরেন্টে গিয়ে উদর পূর্তি করি এমন কিছু দিয়ে যা বাকি দিন খাইনা। খাওয়া শেষে অবশেষে হোস্টেলে ফিরি। বিছানায় গা এলানো হয়না আর। ল্যাবে চলে যাই। বিকেলটা প্রিয়জনের সাথে নয়, ল্যাবের চার দেয়ালের ভেতর কেটে যায়। শুক্রবারটা আবারো সাধারন একটা দিন হয়ে যায়।



জীবনটা অন্যরকম হতে পারত, শুক্রবার আমার মন খারাপের দিন নাও হতে পারত। তুমিই আমাকে আশা দিয়েছিলে। কিন্তু তা হয়নি। স্বপ্ন বা বেঁচে থাকার যুদ্ধ যেটাই বলিনা কেন সেটাই আমার চিরচেনা শুক্রবারকে বদলে দিয়েছে। হয়ত স্বপ্ন পূরণ হবে, জীবন যুদ্ধের বীর হব হয়ত একদিন কিন্তু জীবনে দাগ রেখে যাওয়া এই শুক্রবারগুলো ভুলতে পারবনা।



হে প্রভু খুব কি মন্দ হত যদি আমার জীবনটা যেমন হবে বলে স্বপ্ন দেখিয়েছিলে তেমন হত? তুমি তোমার সৃষ্টির মুখাপেক্ষী নও তাই উত্তর আশা করছিনা, জানি তুমি যা কর তা ভালোর জন্য তাই জিদ করছিনা কিছু পাবার, শুধু এটুকুই বলছি শুক্রবারে, এই খুশির দিনে তোমার এই খুদ্র, নগণ্য সৃষ্টির অশ্রু কষ্টে স্নাত হয়। প্লিজ এমন শুক্রবারের সংখ্যা আমার বাকি জীবনে তুমি যতটা পার কমিয়ে দাও!!!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৮

আল ইফরান বলেছেন: প্রবাসী জীবনটাই হয়তো এমন ।
কাছের মানুষকে ছেড়ে দূরে থাকা যে কি কস্ট তা কেবল ভুক্তভোগীরাই বুঝে। :(
আপনার সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৫

সাইফুল আজীম বলেছেন: একদম ঠিক ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.