নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"অতিসাধারণ একজন মানুষ। সবাইকে সঠিক পথ প্রদর্শনে এক কলম যোদ্ধা। \"

Sajol Al Sanvi

তোমাদের মাঝে একটা গল্প হয়ে বেঁচে থাকতে চাই

Sajol Al Sanvi › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেঈমানি ( পর্ব------ ০১)

২০ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:০১


,
---- আমাকে তুমি সত্যি বিয়ে করবে না?
---- এক কথা কত বার বলবো, তোমাকে বিয়ে করা পসিবল নয়।
---- তবে আমাকে ইউজ করছিলে কেনো?
---- রুপা তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই।
,
কথা না বাড়িয়ে আলিফ ফোন কেটে দিলো। যেভাবেই হোক রুপার সাথে সম্পর্কটা ভাঙ্গতে হবে। কেউ তো আর জেনে শুনে বিবাহিত মেয়েকে বিয়ে করতে পারে না। এই রুপা দেখতে যেমন রুপোবতি কন্ঠটাও কোকিলের মতো মিষ্টি। সমস্যা একটাই রুপা বিবাহিত মেয়ে।
,
রুপাকে যেদিন আমি প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছিলাম। রুপা সম্পর্কে আমার ভাবি হয় অমিত ভাইয়ার বউ। অমিত আমার বড় চাচার একমাত্র ছেলে। বাবা মায়ের অতি আদরে অমিত ভাইয়া নষ্ট হয়ে গেছে। ভাইয়াকে একটু টাইট দেবার জন্য ঘরে বউ আনা প্রয়োজন তাই বিয়ের কন্যা হিসেবে রুপা ভাবিবে শেষমেশ পছন্দ করা হয়।
,
অমিত ভাইয়া যখন বিয়ে করে তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়তাম। ভাবি ইন্টার পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। বিয়ের পড়ে আমি ভাবির কাছে মাঝে মাঝে অঙ্ক পড়তাম। ছাত্রী হিসেবে রুপা ভাবি অনেক মেধাবী ছিলো। বিয়ের পড়ে অমিত ভাইয়া কিছুটা ভালো হয়। বেশ সব কিছু ভালোই চলছিলো। আমি বিকালে ভাবির সাথে আড্ডা দিতাম, গল্প করতাম, হাসি-তামাসা যেন আমাদের মাঝে লেগেই থাকতো। ভাবি মাঝে মাঝে বলতো, কিগো দেবর নাইনে পড়ো লাইন কয়টা মারো। আমি বলতাম ভাবি লাইন মারার মতো মেয়ে আজো চোখে পড়েনি। পড়লে সর্ব প্রথম তোমাকেই তো জানাবো।
,
এভাবে প্রায় দুইটা বছর কেটে যায়। এর মাঝে রুপা ভাবির কোলে ফুটফুটে এক চাঁদের আলো আসে নাম রাখা হয় আবির। আমার এত দিনে মাধ্যমিক শেষ কলেজে ভর্তি হবো। দিন গুলো যেনো পানির মতো চলে যাচ্ছিলো বিপত্তি বাধবো এক দিন সন্ধ্যায়। আবির তত দিনে হাটতে শিখে গেছে আব্বু, দাদু, চাচ্চু খুব মিষ্টি করে ডাকতে পারে। অমিত ভাইয়া বিয়ের দুই বছর চাচার ব্যবসা বাণিজ্য ভালো মতো দেখাশুনা করলেও গত ছয় মাস যাবত আবার নেশা জুয়া খেলা শুরু করছে। প্রায় রাতেই রুপা ভাবিকে মারধোর করে, শারীরিক ভাবে পশুর মতো অত্যাচার করে। আমি সব দেখেও কিছু বলতে পারি না চাচা চাচি কিছু বললে তাদের চোখ রাঙিয়ে কথা বলে অমিত ভাইয়া। সব কিছু সহ্য করে শুধু আবিরের মুখে দিকে তাকিয়ে রুপা ভাবি সংসারটাকে আকড়ে ধরে রেখে ছিলো।
,
একদিন সন্ধ্যায় আমি পড়তে বসেছি। রুপা ভাবি আমার রুমে আসলো।
একটা কথা বলে রাখা ভালো তত দিনে আমি রুপা ভাবির সাথে অনেক ফ্রি হয়ে গেছি। আমাদের মাঝে প্রায় সব কথাই চলে।
,
---- আলিফ সাহেব কি করা হয়?
---- এই তো পড়তেছি ঘরে আয়।
---- পড়তেছিস নাকি বইয়ের মধ্যে মুখ লুকিয়ে ফেসবুকে চালাচ্ছিস।
---- তোর কি মনে হয় আমি সব সময় ফেসবুক নিয়েই পড়ে থাকি।
---- তা নয় তো কি!
--- ঝরগা করার মুড নাই। কিছু বলবি?
,
কথা না বাড়িয়ে রুপা ভাবি আমার বিছানায় এসে বসলো। আমি পাশেই চেয়ারে বসে পড়ছিলাম। হঠাৎ এনার্জি লাইটের সাদা ধবধবে আলোতে রুপা ভাবির দিকে তাকিয়েই আমার চোখ আটকে গেলো। রুপা ভাবির মুখে থাপ্পড়ের দাগ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিলো। পুরোটা মুখে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। রুপা ভাবি মাথা নিচু করে আছে। কিরে পেত্নী তোকে কি আজো অমিত ভাই মারছে। রুপা ভাবি চুপচাপ কোনো কথা বলে না, আমি টেবিলে থাকা ''প্যালসন' ব্যথার মলম হাতে নিলাম। এক হাত দিয়ে ভাবির মুখটা উচু করে অনেকটা মলম মুখে লাগিয়ে দিলাম। ভাবি অঝরে কাঁদছে কিছু না বলেই তার রুমে চলে গেল। আমি মনে মনে বলছি অমিত ভাই আসলেই অমানুষ। এমন সুন্দর বউকে কেউ এভাবে মারে। ভাবি যদি আজ আমার বউ হতো কতই না ভালোবাসতাম। আসলে বিধাতা সবার সব চাওয়া পুরন করে না।
পরের দিন সন্ধ্যায় ভাবি আবার দরজার সামনে দাড়িয়ে কিরে কিছু বলবি। আয় রুমের ভিতরে আয় বিছানায় বস। আমার কথা মতো চুপচাপ এসে বিছানায় বসলো। মুখের লাল দাগ গুলো আজ অনেক কমে গেছে। কাল ভাইয়া তোকে মারছিলো কেনোরে। ভাবির কোনো কথা বলে না।
--
চেয়ার থেকে উঠে রুপার গালে হাত দিয়ে মুখটা উচু করলাম চোখ দুটো পানিতে টলমল করছে। চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম রুপা আমায় কিছু বলতে চায় কিন্তু মুখে সেটা প্রকাশ করছে না।
সবাই মুখে হাজারটা মিথ্যা কথা বললেও চোখের ভাষা কখনো মিথ্যা বলে না। আমি সেটা খুব ভালো করেই জানি। তাছাড়া রুপাকে আমার বিয়ের দিন থেকেই অনেক ভালো লাগে। তাই আজ সুযোগটা মিস করতে চাই না মনের কথাটা জানিয়েই দেই।
,
--- এই পাগলি এভাবে নীরবে কান্না করছিস কেনো। কাল ভাইয়া কেনো মারছে।
--- চুপচাপ.....!
---- ওই আমার সাথে ঝরগা করবি না।
---- চুপচাপ.....!
---- আমার কিন্তু মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে।
---- চুপচাপ.....!
,
আমি আর কথা না বাড়িয়ে রুপাকে জরিয়ে ধরে ওর গায়ের উপর সুয়ে পড়লাম। এবার রুপা মুখ খুললো, আলিফ ছার কেউ দেখে ফেলবে। কেউ দেখবে না তোকে একটা কথা অনেক দিন হলো বলতে চাই। তোকে আমি অনেক ভালোবাসি রুপা। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিস না।
--- আলিফ এটা কিভাবে সম্ভব। কেউ এ সম্পর্ক মেনে নিবে না।
--- কেউ মানুক না মানুক তুই মানলেই হবে।
--- আলিফ এটা কোনো ভাবেই সম্ভব না।
--- আমি এত কিছু জানি না আমি তোকে চাই ফাইনাল কথা। রুপা একটা চুম্মা দিলেই বুঝবো তুই আমাকে ভালোবাসিস।
--- আমি পারবো না।
--- সত্যি পারবি না তো।
--- আমি জানি না ।
--- আচ্ছা ঠিক আছে, কাল সকালেই আমার মরা মুখ.....!
--- রুপা নিচ থেকে আমার মুখ চেপে ধরলো।
দুই গালে অনেকটা আদর করলো আলিফ এবার ছার কেউ দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে । আজ আসি আবিরের পড়া মন হয় শেষ ওকে খেতে দিতে হবে। আমি বিছানাতেই সুয়ে আছি আর ভাবছি ভালোবাসার পরশ কতই না মধুর।
,
পরের দিন সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছিলাম। সূর্য যেনো আজ আমার সাথে আড়ি শুরু করছে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হতেই চায় না। অবশেষে সন্ধ্যা হলো পড়তে বসেছি মহারাণী হাজির।
,
--- কি করা হয় আলিফ সাহেব।
--- এক ললনার কথা ভাবছি।
--- ললনাকে এত ভাবলে হবে পড়ালেখা নাই।
--- একটু আদর করবো।
--- ওই আমি কি তোমার লাইসেন্স করা বউ যখন খুশি তখন আদর করবা।
--- তাহলে চলনা লাইসেন্স করে নেই।
--- ওই পাগল এই কথা অমিত জানলে তোমাকে জ্যান্ত মাটিতে পুতে রাখবে।
তাহলে কি তোকে কোনো দিন কাছে পাবো না। পাবে তবে বিয়ের বিষয়টা নিয়ে রাতে সিরিয়াসলি কথা বলবো । রাতে কখন কথা বলবি।
অমিত আজ সারা রাত জুয়া খেলবে আমি জানি। পড়ালেখা শেষ করে রাত দশটার দিকে আমার রুমে এসো। একটা ব্যাপার মাথায় ডুকছে না প্রেমে পড়লে কি সবাই তুমি করে বলে। তাই তো মনে হচ্ছে রুপাকে দেখে। খাওয়া শেষ করে রাত দশটা বাজা পর্যন্ত অপেক্ষা করছি কখন রাত দশটা বাজবে অবশেষে রাত দশটা বাজলো। বাড়ির সবাই এত সময়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি আস্তে আস্তে আমার ঘরের দরজা খুলে বের হোলাম পা টিপে টিপে রুপার ঘরের কাছে আসলাম। রুপাদের ঘর আর আমার ঘরের দূরত্ব খুব বেশি ছিলো না। দরজায় হাত দিতেই দরজা খুলে গেলো রুপা দরজার পাশেই দারিয়ে ছিলো আমার অপেক্ষায়। দরজা বন্ধ করে আমাকে বিছানায় বসতে বললো, আমি তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছি আজ কি জানি কি হবে।রুপা কাছে আসো না আমার যে আর দর সইছে না।
,
আলিফ সব কিছুই আজ হবে তবে আমার কিছু শর্ত আছে। যদি মানতে পারো তবে তোমাকে আমি আপন করে কাছে টেনে নিবো। যদি না মানো তবে আজকের পর থেকে তোমার সাথে আমার আর কোনো কথা বা সম্পর্ক থাকবে না। আমি তোমার সব শর্ত মানতে রাজি। না জেনে কোনো কিছুতে হ্যা সূচক সম্মতি আমি রুপা পছন্দ করি না। আগে আমার শর্ত গুলো শুনবা তারপর ভেবে চিন্তে ডিছিসন নিবা। আচ্ছা বাবা আচ্ছা তোমার শর্ত গুলো তো আগে বলো শুনি বলেই রুপার হাত ধরে কাছে টেনে নিলাম... ...... ....... !
,
লিখা:------ Sajol Al Sanvi (নিশ্চুপ কান্না)
,





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.