![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিদেশ যাত্রা আমাদের সাধারন বাংলাদেশীদের জন্য অনেকটা স্বপ্নের মত। সেই প্রায়-মধ্যম আয়ের দেশ থেকে কেন আর একশ্রেণির যুবক-যুবতী অজানার পথে যাত্রা শুরু করবে সত্যিকারের কোনো মধ্যম-আয়ের দেশে পাড়ি জমানোর আশা নিয়ে। বয়স হয়েছে কারও ১৭, কারও ১৯, কারও ২১, কারও বা ২৬। কাজকাম কিছু নেই। বাড়িতে দুবেলা ভাত জোটে না। বাপ-মায়ে রাগারাগি করে, ছোট বোনগুলো ঠিকমতো কথা বলে না। একদিন বাজারে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এক লোক কোত্থেকে এসে কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘কি রে, বিদেশে যাবি ?
তারপর শুরু হলো বিদেশ যাবার নেশা, টাকা কামাবার নেশা। শুরু হলো মৃত্যুর মুখোমুখী হবার প্রক্রিয়া। আজ যার পরিনাম ওরা ভোগ করছে এভাবে.....
একজন বলেন,
তিন দিনেও পেটে দানা পানি পড়েনি। দুমাসেরও বেশি সময় ছিলেন সমুদ্রের বুকে। ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রায় তারা নেমেছিলেন উন্নত জীবনের আশায়। এর পরিবর্তে মিলেছে অবর্ণনীয় দুর্দশা আর নির্যাতন। অনাহারে কাটাতে হয়েছে দিনের পর দিন। অসুস্থ হয়ে যাত্রার মাঝেই প্রাণ গেছে কারও। তখন ছুড়ে ফেলা হয়েছে নৌকা থেকে। মারধর, যৌন নিপীড়ন তো আছেই।
কি ঘটছে সেখানে?
থাইল্যান্ড সরকার মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করার পর থেকে নৌকা আরোহীদের কপালে যোগ হয়েছে নতুন দুর্ভোগ। পাচারকারীরা ধরা পড়ার আশঙ্কায় তাদের মাঝপথে ফেলে রেখে পালিয়ে যাচ্ছে। থাইল্যান্ড না গিয়ে নিকটবর্তী মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে ফেলে দিয়ে আসছে শরণার্থীদের।
সেখানকার একজন পুলিশের কথা, পাচারকারীরা তাদের নির্দেশনা দিয়ে গেছে মালয়েশিয়ার উপকূলে পৌঁছানোর পর তারা কোন দিকে যাবেন। এরপর দুটি নৌকায় তারা পালিয়ে যায়। বাংলাদেশী ওই ব্যক্তি জানিয়েছে, তারা তিনদিন ধরে কিছুই খায়নি। নৌকার আরোহী প্রত্যেকেই প্রচণ্ড দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে আরও নৌকা রয়েছে।
বগুড়া জেলার নিবাসী কাসিম জানিয়েছে, নৌকার যাত্রীদের প্রত্যেকে ৪৪০০ রিঙ্গিত করে দিয়েছে পাচারকারীদের। তারা ভেবেছিলেন তাদের মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের নৌকার তিনজন যাত্রা পথে মারা যায়। তাদেরকে সাগরে ফেলে দেয়া হয়। মালয়েশিয়ায় চাকরি পাওয়ার আশায় এক মাস আগে কাসিম আপনজনদের ফেলে রওনা দেন। তার সঙ্গে নৌকায় আরও ৩০-৪০ জন ছিল। প্রথমে তাদের নৌকা থাইল্যান্ডের একটি সমুদ্রসৈকতে পৌঁছায়। সেখানে তারা ২১ দিন ছিলেন। পরে বড় আরেকটি নৌযানে তাদেরকে ওঠানো হয়। সেখানে ছিল শ’ শ’ যাত্রী। ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে যখন তাদের নামিয়ে দেয়া হয়, তখন আরোহীরা ভেবেছিলেন তারা মালয়েশিয়া পৌঁছেছেন। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে প্রত্যেকে বুঝতে পেরেছেন স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাদের। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৃথাই প্রতারণার শিকার হয়েছেন সবাই।
থাইল্যান্ডের গণকবরে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশির সন্ধানলাভের হৃদয়বিদারক খবর আমাদের প্রচলিত আইনের আওতায় প্রতারণা ও জালজালিয়াতির বিচারের কার্যকারিতাকে জ্বলন্ত প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। কারণ, গণকবর ট্র্যাজেডি ইঙ্গিত করছে যে মানব পাচার চক্র, যাদের সচেতন মহল ‘ফোরটুয়েন্টি’ হিসেবেই জানে, তারা নিরীহ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে নিরাপদ থাকার এক স্বর্গরাজ্য রচনা করেছে।
এ প্রসঙ্গে ২০১৩ সালে দুদক তফসিলে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারাটি অন্তর্ভুক্ত করার ওপর বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এ ধারা এখন মৃতবৎ, থেকেও নেই। আদালতে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন আইনি ব্যাখ্যার সম্মুখীন। ৪২০ ধারায় মামলা কার্যত বন্ধই হয়ে গেছে। সর্বস্তরের প্রতারকেরা তাই উল্লাসে নৃত্য করছে। কারণ, প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির কোনো মামলা নিচ্ছে না থানা ও মহানগর দায়রা আদালত। প্রতারণা, ঘুষ, জমি জাল-জালিয়াতির অভিযোগ আমলে নেওয়ার সব দায় দুদকের, অথচ লোকবিহীন সংস্থাটি বাস্তবে নিধিরাম সর্দার।
তথ্যসূত্র: ১. Prothom Alo
২। Mabob Zamin
৩। গণকবর ট্র্যাজেডি
১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৭
গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: বিষয়টি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে অবহেলিত মনে হচ্ছে! এটা খুবই দু:খজনক।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মে, ২০১৫ রাত ১:২৪
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমিও কিন্তু ভাই এই সোনার হরিনের সন্ধানে ২৩বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলাম।। আল্লাহর পরম করুনায় ভালই আছি,সেই প্রথম দিন থেকেই।।
তবে দেখেছি ব্যাংককে আর কুয়েতে কিছু মানুষের দূর্গতি।। যা মনে করারও নয়।।
ধন্যবাদ এমন একটি গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার লেখার জন্য।।