![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অসুখ হয়েছে আমার!
ভীষন অসুখ!
মনের!
যাদের ছেলে সন্তান নেই,তাদের অনেকের ছেলে সন্তানের জন্য আক্ষেপ থাকে।
আমার আগে কখনো আক্ষেপ হয়নি।
বরং অন্যদের দেখে শান্তি পেয়েছি
স্বস্হির নিঃশ্বাস ফেলে,
আলহামদুলিল্লাহ! পাঠ করেছি;
আমার ছেলে নেই বলে।
তবে ইদানিং একটা ছেলের
খুব প্রয়োজন বোধ করি;
একজন দ্বীনদার মাহরাম পুরুষের।
দেখাশুনার জন্য নয় মাকে।
রিজিক তো আল্লাহ তায়ালায় দেন।
এমন না যে,
"মনে করো বিদেশ ঘুরে
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে
তুমি যাচ্ছো পালকিতে মা চড়ে
দরজা দুটো একটুকু ফাক করে
আমি যাচ্ছি রাঙ্গা ঘোড়ায় প'রে
টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে।"
দুনিয়াবী কোন প্রয়োজন বা খায়েশের জন্যও নয়।
যখন কোন দ্বীন মেনে চলা যুবককে দেখি,
মনে-মনে বলি, এছেলেটি যদি আমার ছেলে হতো।
মেয়েরা তো বিয়ে হয়ে পরের ঘরে চলে যায়।
যার যার আলাদা পরিবার।
ব্যস্ততা সংসার।
নিজ ছেলেকে তো
খানসা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহার মতো
বলাও যায়,
আমি শহীদের মা হতে চাই।
হজ্বের সফরে মদীনা শরীফে নবীজির কবর
জিয়ারতের সময়ে, সেদিন ফজরে প্রচন্ড ছিলো ভিড়।
মসজিদে নববীর দরজা দিয়ে প্রবেশ পথে
পাকিস্তানি এক খালার সাথে
পরিচয় হয়।
তিনি সেই ভিড়ে পারছিলেন না ঢুকতে।
অনেক কষ্টে আমি তাকে সাথে নিয়ে
ভিতরে প্রবেশ করি।
এবং একটি দেশের ব্যানারে বসি নিয়ে উনাকে।
এক এক দল এগুতে থাকে
আমরাও এগোয় তার সাথে
এবং এগুতে থাকি গুটি গুটি পায়ে।
নবীজির জিয়ারতের আগে কিছু আদবের তালিম দেয়া হয়। শেষে সবাই দোয়া করে যার যার মতো।
এসময় পাকিস্হানি খালা আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমার কয়জন ছেলেমেয়ে,কত বড়, কি এসব কথা।
আমি চার মেয়ে,এবং একজন মারা গেছে বলি।
তখন তিনি আমার জন্য উচ্চ স্বরে দোয়া করেন,
আয় আল্লাহ, বেটা দে। আয় আল্লাহ, বেটা দে।
হাজীদের দোয়া তো কবুল হয়। আমি মনে মনে ভাবি আমার তো চারটা বেবিই সিজার করে!
এদোয়া কেমন করে কবুল হবে!
সেই সময় বাংলাদেশে চারটা সিজারের কথা শুনলে সাধারন মানুষ কেন ডাক্তার ও জিজ্ঞেস করতো, চারটা সিজার দেশে না বিদেশে?
নবীজির হাদিস,কল্যানকারী নারীর সেই কথা, অধিক সন্তান প্রসবকারনী। সাধ্যানুযায়ী অধিক সন্তানের জননী হতে চেয়েছিলাম। ছেলে সন্তানের মা নয়।
কখনো ছেলে হয়নি বলে মন খারাপ বা মনে কষ্ট নেয়নি। ছেলের প্রয়োজনও বোধ করিনি।
তবে ইদানিং মনে মনে কল্পনায় ছেলের শুন্যতা অনুভব করি। এমন ছেলে যে ইমাম মাহদীর সৈনিক হবে। যে ছেলে এই ফেতনার জামানায় ঈমানকে মজবুত করে আঁকড়ে ধরে রাখবে। যে ছেলে দুনিয়ার ফিকিরে না পড়ে উম্মতের কল্যানের ফিকির করবে। ইসলামী সমাজ গড়ায় অবদান রাখবে। সেই ছেলে যে নবীজি র প্রকৃত উম্মত হবে।
আমি আসমা রাদিআল্লাহ তা'য়ালা আনহার ছেলে আব্দুল্লাহ বিন জোবায়েরের মতো হাজারো ছেলের মা হতে চাই।
দ্বীনের পথে চলছে যারা
তাদের ভালোবাসি
কোরআনী জিন্দেগী গড়ছে তারা
তাদের মুখের হাসি।
ভালোবাসি মসজিদের ঐ
সুমধুর সে আজান
পাঁচ ওয়াক্ত নামাযেতে যায়
যেসব আমার বাজান।
ভোরবেলাতে ইলম শিখতে
মাদ্রাসাতে যায়
সে কারনে যাদের মাঝে
কোন অলসতা নাই।
ভালোবাসি তাদের যারা
দ্বীনের পথের সৈনিক
দ্বীন ইসলাম কায়েমের লক্ষ্যে
মেহনত করে দৈনিক।
কালেমা নিয়ে ফেরী করেন
কালেমার ফেরিওয়ালা
অন্য কিছু করলে ফেরী
হিসাবে হবে জ্বালা।
ভালোবাসি তাদের যারা
পরের উপকার করে
পরের জন্য যাদেরকে বলে
বেগার খেটে মরে।
তারপর আমরা ভিতরে প্রবেশ করি নবীজির কবর জিয়ারতের জন্য। জিয়ারত শেষেে রিয়াজুল জান্নাহ য় নামাজ পড়ি।
সেটা ছিল ২০০৭ সাল।
আমাদের নামাজ শেষ করে বের হওয়ার আগেই আফ্রিকান মহিলাদের এক গ্রুপ প্রবেশ করে। গাদাগাদি মানুষের ভিড়ে চিড়েচেপ্টা হওয়ার দশা। তিল ধারণের জায়গা ছিলনা, কোন ভাবে যে বের হবো তারও উপায় নাই। এখন তো অনলাইনে আবেদন করতে হয়। নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ।
তারপর অনেক কষ্টে ইশারায় বুঝাই খালার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, এবং সেই ভিড় ঠেলে খালাকে বের করে আনি।
আমরা যখন মসজিদের মধ্যে জিয়ারতের অপেক্ষা করছিলাম তখন তিনি তার হজ্বে আসার গল্প শোনান। বলেন তার হজ্বে আসার মত সামর্থ্য ছিলোনা, তিনি পাকিস্তানে বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। কোন ভাবে সহযোগিতায় কাফেলার গ্রুপের সাথে এসেছেন।
২০০৭ সালে হজ্বে খরচ বাংলাদেশ থেকে ১লাখ সত্তুর হাজার ছিল। সেসময় একজন বলেছিলেন যেভাবে হজ্বের টাকা দিন দিন বাড়ানো হচ্ছে তাতে একসময় দশলাখ হয়ে যাবে। তখন কথাটা অতিরঞ্জিত মনে হয়েছিল কিন্তু এখন তাই হতে যাচ্ছে।
আমি বলি হজ্ব করতে টাকা লাগেনা। শুধু চাই আল্লাহর কাছে দেখানো তোমার মধ্যে কতটা পিপাসা রয়েছে। মানুষ হিম্মত করে চাই-ই না। আমরা কেবল দুনিয়ার ব্যপারে আকাশ কুসম কল্পনা করি। রসিকতা করে বলি,সিনেমার ডায়লগ দেই অসম্ভব কে সম্ভব করা অনন্ত জলিলের কাজ।
কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যে দেনে ওয়ালা। তার কাছে কোন কিছু অসম্ভব না সেকথাটা আমরা ভুলে যায়।
হেদায়েত ও নেককাজের দোয়া তিনি অবশ্য ই কবুল করেন।
আর দোয়ার ব্যপারে তো এইকথা আছেই যদি কাঙ্ক্ষিত বস্তু না পায় এর চাইতেও উত্তম কিছু যা দুনিয়াতে বা আখেরাতে দান করবেন।
হজ্ব শুধু ইসলামে একটি আহকাম না। এটা গোলাম ও মনিবের ভালোবাসার প্রকাশ।
আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নিবিড় সম্পর্কের নিদর্শন।
বাড়ি বা গাড়ি আমার মনের তুষ্টি। এর জন্য আমাদের প্রত্যেকের অন্তরে কি পরিমান চাহার। ভিক্ষুক,দীনমজুর থেকে শুরু করে সবার।
আর অনেক সামর্থ্যবান মানুষ আছে যারা মুসলিম হওয়ার পরও অন্তরে তেমন কোন প্রেষনা বোধ করে না হজ্বের জন্য।
তার রবের ঘরে যাওয়ার জন্য। নবীজীর জিয়ারতের জন্য।
দ্বীনের ব্যপারে তারা প্রতিবন্ধীর মতো আচরন করে। যেন কিছুই বুঝেনা।
কিন্তু তারাই আবার দুনিয়ার ক্ষেত্রে চতুর, বিচক্ষন।
আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করা চাই হজ্বের জন্য। সামর্থ্য থাকুক বা না থাকুক। এই দুনিয়ায় একবারই একটাই জীবন পাবে।
কোন ব্যাংকে কিছু পয়সা জমানো। আল্লাহকে দেখানো আমার কতটুকু ইচ্ছা ও ভালেবাসা।
আবারো বলি হজ্ব করতে টাকা লাগে না, লাগে আল্লাহর কবুলিয়াত।
সেই গল্প অন্য একদিন বলবো।
হজ্বের সেই খালার দোয়ার কথা যখন মনে পড়ে অসুখ টা তখন প্রবল হয়ে ওঠে একটা "ছেলের" অসুখ।
এই জীবনে এই অসুখ টা আর ভালো হবার নয়।
তবে সেই দোয়ার কবুলের বদলি প্রতিদানের আশা করি মনে মনে।
যেদিন আল্লাহ তায়ালা বলবেন----
يٰۤاَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَٮِٕنَّةُ ۖ
হে প্রশান্তচিত্ত !
সূরা নম্বর: ৮৯ আয়াত নম্বর: ২৭
ارْجِعِىْۤ اِلٰى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً
তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট
ফিরিয়া আস সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হইয়া,
সূরা নম্বর: ৮৯ আয়াত নম্বর: ২৮
فَادْخُلِىْ فِىْ عِبٰدِىۙ
আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও,
সূরা নম্বর: ৮৯ আয়াত নম্বর: ২৯
وَادْخُلِىْ جَنَّتِى
আর আমার জান্নাতে প্রবেশ কর
সূরা নম্বর: ৮৯ আয়াত নম্বর: ৩০
------RabAh ✍️
---২৭--৫--২০২৪ ইং
©somewhere in net ltd.