নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগের স্বত্বাধিকারী সামিয়া

সামিয়া

Every breath is a blessing of Allah.

সামিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার একটু সমুদ্র দেখতে যাওয়া দরকার

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ছবিঃনেট

মাঝে মাঝে মনে হয়—একদিন আমার নিজের একটা জায়গা হবে যেখানে আমি একলা থাকব। ইচ্ছে হলে খুব কাছের মানুষজনকে অল্প কয়েকদিনের জন্য এক্সেস দিব আমার পাথরের দেয়াল ঘেরা ছোট্ট বাড়িটায় থাকার,ইচ্ছে না হলে চুলোয় যাক সব।

সেই বাড়ির সামনেই থাকবে সমুদ্র নয়তো কাজ চালানোর মতো নদী‌ থাকলেও ওকে।
সেই সমুদ্র অথবা নদীর ওপর থাকবে গাঢ় নীল আকাশ; জীবনানন্দ দাশের কবিতার সোনালী ডানার গাঙচিল উড়বে এদিক সেদিক, আমার এত সব চিন্তা তাদের ডানায় ভর করে মুক্তি পাবে, মাথার উপর দাঁড়িয়ে থাকবে বিশাল বটগাছ; তার ঘন পত্র-পল্লব আমার পাশে থেকে আমাকে সান্ত্বনা দেবে জীবনের আগে পরের এবং ভবিষ্যতের কষ্টগুলোর জন্য।

বটগাছের ছায়ায় রাখা একটা রোলিং চেয়ারে বসে আমি চেয়ে থাকবো ঢেউয়ের দিকে, দেখবো আকাশের নীলিমা, গাঙচিলের মুক্তি। প্রকৃতির সংস্পর্শে আমার হৃদয়ে হবে প্রশান্ত ঘুম।

বাড়ির ভিতরে থাকবে একটা শীতল সাদা ধবধবে উঠোনের মতো খোলা বারান্দা। টবে লাগানো সবুজ গাছ, পড়ার জন্য একটা টেবিল, চা-কফির ছোট্ট কিচেন, দিনের মৃদু আলো থাকবে গাছের পাতার ফাঁক ফোঁকড়ে।

সেই শান্ত বারান্দায় বসে আমি প্রিয় বইয়ের পাতা উল্টাবো ঘন্টার পর ঘন্টা যতক্ষণ পর্যন্ত না কিছু পড়তে ইচ্ছে করবে, অথবা কলম হাতে নির্জনে আমার মনের অনুভূতিগুলো সাজিয়ে তুলবো শব্দে। ক্লান্তি এলে সোফায় চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেবো, সেখানে কোনো ব্যস্ততা থাকবে না, কোনো নিয়মের চাপও থাকবে না।

মাঝে মাঝে মনে হয়—একদিন আমার খুব নিজের একটা আশ্রয় হবে যেখানে প্রতিটি দিন শুরু হবে পায়ের তলায় শিশির ভেজা ঘাসে হেঁটে, আর সাজানো চৌবাচ্চায় ঝুপ করে উঠবে ছোট ছোট রং বেরঙের একুরিয়ামের মাছেরা—জীবনের ছোট্ট ছোট্ট আনন্দ হবে প্রতিদিনের সঙ্গী।

একটা টাওয়ার থাকবে খুব উপড়ে যেখানে সন্ধ্যায় বসে দেখবো সূর্যাস্ত;গোধূলির লালচে আলোর রঙিন রঙ, চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দূরে তাকিয়ে থাকবো, পুরো পৃথিবীটা আমার ভেবে ভেবে।

কোনো শাসন নেই, কোনো ব্যস্ততার তাড়া নেই, শুধু প্রকৃতি ও নিরবতা।

প্রতিটি ঋতুর সাথে বদলে যাবে পরিবেশ, বর্ষাকালে পানির শব্দ হবে আরও বেশি গভীর, তার ঢেউ এসে গুনগুনিয়ে গান গাইবে। বৃষ্টির দিনে এক কাপ কফি খেতে খেতে বৃষ্টি দেখবো—বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা পাথরের দেয়ালে আছড়ে পড়বে, আর বাতাসে ভাসবে মাটির গন্ধ। এই পরিবেশে নিজেকে আড়াল করতে গিয়ে কখন যে একটা কবিতা কিংবা গল্পের জন্ম নেবে, তা টেরও পাবো না।

শীতকালে ছড়িয়ে থাকবে সাদা কুয়াশার আস্তরণ, ঘুমন্ত শহরের মতো নিস্তব্ধ। সেই হিমেল সকালে আমি বসবো একটা উষ্ণ কম্বল জড়িয়ে।

বসন্ত এলে বাড়িটা যেন আরও বেশি প্রাণবন্ত হবে। গাছগুলোতে ফুটে উঠবে ছোট্ট ফুলের কুঁড়ি, চারদিকে মিষ্টি মধুর গন্ধ ভেসে বেড়াবে। সেই গন্ধে মন ভরে যাবে আনন্দে। দুপুরের আলো গাছের পাতা ছুঁয়ে মাটিতে এসে পড়বে।

গ্রীষ্মের বিকেলে, পায়ে পায়ে হাঁটতে হাঁটতে জলের স্রোতের দিকে তাকিয়ে ভাববো এই দীর্ঘ জীবনের চলার পথে কিছু পরিচিত পরিজন স্বজনকে; খুব অভিমানে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৬

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: একলা কি সবসময় থাকা যায়? :|

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৮

সামিয়া বলেছেন: একলা থাকা নিয়ে একটু ফ্যান্টাসি চিন্তা ভাবনা করলাম :)

২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০২

এ পথের পথিক বলেছেন: খুব সুন্দর চাওয়া । আমারও ঠিক একইরকম চাওয়া আছে ।
এসব চাওয়া পাওয়া পুরন হলেও বাস্তবে খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভাল লাগে ।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪

সামিয়া বলেছেন: এসব চাওয়া পাওয়া পুরন হলেও বাস্তবে খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভাল লাগে । Exactly আমিও ভীষণ উপভোগ করি।

৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

জুল ভার্ন বলেছেন: খুভ সুন্দর উপস্থাপন, সুন্দর প্রত্যাশা।


(মনের সমুদ্রই আসল সমুদ্র, তাই টাকা পয়সা খরচ করে সমুদ্র দর্শনের কি দরকার!)

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২২

সামিয়া বলেছেন: থ্যাঙ্ক ইউ ভালো বুদ্ধি দেওয়ার জন্য :) এবং মন্তব্য করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.