![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ভিতর থেকে অসম্ভব একা একজন মানুষ। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি আর নিজের মতো ঘুরি। বলতে পারেন অনেকটা যাযাবর।
পঞ্চম বন্ধু
“এই তুই কার ছাবাল লে, তোল বাপেক জায়া কয়া দিবোনি”। রইজুদ্দিনের চিৎকারে আমরা দে-দোড় বাড়িতে গেলে আজ নির্ঘাৎ মার খেতে হবে। হারানের গাছের পিয়ারার খুব সুনাম ছিল। আমরা চার বন্ধু তার গাছের পিয়ারার লোভ সামলাতে না পেরে প্রায়ই রইজুদ্দিনের টং ঘরে হানা দিতাম। অত্যন্ত কৃপণ ছিল হারান ব্যাপারি। বাগান ভরা ফলমুলের গাছ। তার মধ্যে পিয়ারা গাছ দুইটির ডাসা ডাসা পিয়ারা কাউকে ছুঁতে দেয় না। তাই ও বাড়ির রাখাল রইজুদ্দিন আমাদের ভরসা। তোতলামি তার স্বভাব। তাই আমরাও মাঝেমাঝে তোতলামি করতাম। “ও লইজদ্দি ভাই তোমার নাকি বিয়া, কাল সাথে গো” রইজুদ্দিন আল্লাদে মেয়েদের মতো লাল হয়ে উঠতো আর বলতো - হ'লে মাই কইছে বিয়া দিবি, মিয়া খুব সুনদল” বন্ধু অপু ছিল খুব চটপটে, সে চট কলে বলে ফেললো- “তোমার যে সুন্দর চেহারা তোমার বউ হবে আরো সুন্দর কিন্তু সমস্যা কি জান রইজুদ্দিন ভাই তেমার গৃহস্থ যা কিপ্টা, তুমি তার চেয়ে বেশি কিপ্টা, তোমার বউ দুইদিন পর পালাবে। রইজুদ্দিনের মুখ লাল হয়ে যায়। আবার প্রতিবাদও করে উঠতো থিত আছে, তোলা কি খাবি বল। আমি ব্যাপালিল মতো কিপতা না। সুযোগ বুঝে বন্ধু বলে ফেলে “তাহলে চারটা পিয়ারা দেও”। রইজুদ্দিন বলে “নালে হালান চাচা পাচসেল মাপি দিগিছে, এখন চালসেল †বতিতি, একসেল আছে, কাল আতিত। অগত্যা চার বন্ধু মিলে একসের পিয়ারা কিনে দারুন মজা করে খেতে খেতে স্কুলে গেলাম। পরদিন এভাবে আবার রইজুদ্দিন ভাইয়ের কাছে গেলাম। চার বন্ধু আনোয়ার একটু মুখ চোরা টাইপের। কথায় কথায় লজ্জা পায়। থাকে আমাদের সঙ্গেই কিন্তু কোন কথা বলে না। হ্যাংলা শরীরটা দুলায় শুধু দাঁত বের করে হাসে। আমরা ওকে নিয়ে বেশ মজা করি। তবে ওর মনটা খুব উদার। বাপের টাকা আছে, তাই পিয়ারা কেনার প্রায় বেশি ভাগ টাকা আনোয়ার দেয়। আমরা তাই রইজুদ্দিন ভাইয়ের কাছে গিয়ে পিয়ারা, আম, আমরা, কদবেল কিনতাম। কিনতাম মানে ২টাকার পিয়ারা কিনলে ২টাকার ফ্রি। এভাবে রইজুদ্দিন ভাই আমাদের পঞ্চম বন্ধু হয়ে গেল। স্কুলের পর খেলার উপকরণ যেমন ডাংগুলি, পানি থেলার পিচকারী, গুলি (মার্বেল) খেলার ডিপ, গাদন খেলার ঘর এই কাজগুলো আমাদের রইজুদ্দিন ভাই করে দিতো। একবার অপুর খুব জ্বর, রইজুদ্দিন ভাই অপুর পাশে সারা রাত জেগে বসে থাকলো। আমরা চার বন্ধু তোতলা, বোকা, মুর্খ রইজুদ্দিন ভাইয়ের প্রাণের বন্ধু হয়ে উ?লাম।
বছর দুয়েক পরে আমরা তখন হাই স্কুলে পড়ি। বাবু ও অপু অন্য স্কুলে চলে গেছে। ফলে গেখা হয় কম। রইজুদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গেও কম দেখা হয়। পড়াশুনার খুব বেশি চাপ। হঠাত শুনলাম রইজুদ্দিন ভাইকে কুকুরে কামড়িয়েছে। কোন কবিরাজ নাকি থালা পড়া দিয়ে গাছ বেধে দিয়েছে। আমরা ভয় পেয়ে গেলাম, খ্যাপা কুকুরে কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগ হয়। ঝাঁড় ফুঁকে কোন কাজ হবে না। ছুটে †গলাম রইজুদ্দিন ভাইকে দেখতে। ডান পায়ের হাঁটুর নীচে অনেকগুলো কামড়ের দাগ, রইজুদ্দিন ভাই আমাদের দেখে উ?বার চেষ্টা করছিল। কিন্তু হাত পায়ে শক্তি পাচ্ছে না। রইজুদ্দিন মায়ের একমাত্র ছেলে। বাবা নেই। আমরা জানি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচতে হলে ইনজেকশন দিতে হবে। কিন্তু এতো টাকা কোথায় পাবে। হারান ব্যাপারি একটি টাকাও তার চিকিৎসার জন্য দেয়নি। আমাদের কয়েক বন্ধুর টিফিনের বাচানো টাকা একসঙ্গে করে এবং স্যারদের বলে কিছু টাকা সংগ্রহ করলাম। তাই দিয়ে রইজুদ্দিন ভাইয়ের জন্য ইনজেকশন কিনলাম, ছুটে গেলাম রইজুদ্দিন ভাইয়ের কাছে, রইজুদ্দিন ভাই তখন ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছেন। হাতগুলো কেউ যেন দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে, মাঝে মাঝে হা- করে পানি চাচ্ছে। লাল চোখগুলো বড় বড় করে আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। আমারা শুধু বলতে পারলাম রইজুদ্দিন ভাই তুমি আমাদের পরম বন্ধু, তোমার কষ্ট দেখে আমরা সহ্য করতে পারছি না। তুমি কি খুব বেশি কষ্ট পাচ্ছো? রইজুদ্দিন ভাই শুধু আমার দিকে নিস্পলক তাকিয়ে থাকলো। আর কোন কথা হলো না।
২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৯
শেষ বেলা বলেছেন: এই আর...., ছোট বেলায় যা হয়, ধন্যবাদ
৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
সুমন কর বলেছেন: শুভ ব্লগিং........
৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১০
শেষ বেলা বলেছেন: ধন্যবাদ, নতুনদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৭
নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: শুভ ব্লগিং........
৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩
শেষ বেলা বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৭
দুষ্টু মেয়ের মিষ্টি হাসি বলেছেন: আপনি কি চোর ছিলেন...